সুযোগটা এসেছিল প্রায় এক দশক আগে। এত দিন পরে, বৃহস্পতিবার ফের ভারত থেকে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। তবে এ বার ভারতের দক্ষিণ ভাগ ছাড়া অন্যান্য অংশের ভাগ্য তত প্রসন্ন নয়। বলয়গ্রাসের পথটি কর্নাটকের সামান্য অংশ এবং কেরল ও তামিলনাড়ুর একাংশের উপর দিয়ে যাবে। ফলে ওই তিনটি রাজ্যেই বলয়গ্রাস দেখার সুযোগ থাকছে। দেশের বাকি অঞ্চলে দেখা যাবে আংশিক গ্রহণ।
কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের বাসিন্দারা ততটুকুও দেখতে পাবেন কি না, সন্দেহ। কারণ, বড়দিন এবং তার পরের দিন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের আকাশ মেঘলা থাকবে। বৃষ্টিও হতে পারে বলে জানিয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস।
কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন জানান, ২০১০ সালের ১৫ জানুয়ারি সহস্রাব্দের দীর্ঘতম বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণের পথটি ভারতের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তের উপর দিয়ে গিয়েছিল। আগামী বৃহস্পতিবারের পরে ২০২০ সালের ২১ জুন ভারত থেকে আবার বলয়গ্রাস গ্রহণ দেখা যাবে।
বলয়গ্রাস গ্রহণে গোটা সূর্য চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়ে না। তার ফলে সূর্যের বাইরের অংশটিকে উজ্জ্বল বলয় হিসেবে দেখা যায়। পৃথিবী থেকে চাঁদ এবং সূর্যের আপেক্ষিক দূরত্বের ফারাকের কারণেই এটা ঘটে। সঞ্জীববাবু জানান, দক্ষিণ ভারতের কান্নুর, কোয়ম্বত্তূর, কোঝিকোড়, উটি, মাদুরাই, মেঙ্গালুরু, কোচি, তিরুচিরাপল্লি-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে এ বার বলয়গ্রাস স্পষ্ট দেখা যাবে। বলয়গ্রাসের পথ থেকে যত উত্তরে বা দক্ষিণে যাওয়া যাবে ততই সূর্যের কম অংশকে আংশিক গ্রহণ হিসেবে ঢাকা পড়তে দেখা যাবে।
পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টার জানিয়েছে, কলকাতা থেকে সূর্যের সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ, দার্জিলিং থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ শতাংশ এবং শিলিগুড়ি ও কোচবিহার থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ ঢাকা পড়তে দেখা যাবে। কলকাতায় গ্রহণ শুরু হবে সকাল ৮টা ২৭ মিনিটে এবং শেষ হবে বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে। সকাল ৯টা ৫৩ মিনিটে গ্রহণের তুঙ্গ মুহূর্ত দেখা যাবে।
গ্রহণ দেখতে আগ্রহীদের উদ্দেশে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টার। তারা জানিয়েছে, খালি চোখে গ্রহণ দেখা উচিত নয়। তাতে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। অ্যালুমিনাইজ়ড মাইলার, কালো পলিমার কিংবা ১৪ নম্বর শেডের ঝালাই কাচ দিয়ে সূর্যগ্রহণ দেখা উচিত। তবে টেলিস্কোপের সাহায্যে সাদা বোর্ডে সূর্যের প্রতিবিম্ব তৈরি করে নেওয়াটাই গ্রহণ দেখার সব থেকে ভাল উপায়।