চার থেকে ছ’মাসের মধ্যে ল্যান্ডারটি চাঁদে অবতরণ করবে বলে আশা করছে জাপান। ছবি: সংগৃহীত।
ভারতের তৃতীয় চন্দ্রযানের সাফল্যকে ঘিরে হইচইয়ের মধ্যেই চাঁদে যান পাঠালো জাপান। বৃহস্পতিবার জাপানের ‘তানেগাশিমা স্পেস সেন্টার’ থেকে এইচ-২এ রকেটের কাঁধে ভর করে চাঁদের উদ্দেশে উড়ে গিয়েছে ‘মুন স্নাইপার’ যান। জাপানের মহাকাশ সংস্থা ‘জাপানিজ অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জাক্সা)’ মহাকাশযানটির সফল উৎক্ষেপণের কথা জানিয়েছে। যদি জাপানের অভিযান সফল হয়, তা হলে এটিই হতে চলেছে চাঁদের বুকে জাপানের প্রথম অবতরণ।
জাক্সা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৪২ মিনিটে ‘স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেশন মুন (এসএলআইএম)’ ল্যান্ডার নিয়ে চাঁদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে ‘মুন স্নাইপার’। চার থেকে ছ’মাসের মধ্যে জাপানের ল্যান্ডার চাঁদে অবতরণ করবে বলে আশা করছে ‘উদীয়মান সূর্যের দেশ’। জাক্সার এসএলআইএম ল্যান্ডারটি চাঁদের মাটি ছুঁলে, ‘চাঁদ হাতে পাওয়া’ পঞ্চম দেশ হবে জাপান। জাক্সার তরফে জানানো হয়েছে, তাদের ল্যান্ডারের উচ্চতা ৯ ফুট (প্রায় ২.৪ মিটার), প্রস্থ ৮.৮ মিটার (২.৭ মিটার), গভীরতা ৫.৬ মিটার (১.৭ মিটার)। পৃথিবীর উপগ্রহের বুকে নেমে গবেষণা চালাবে সে। তার জন্ম, বিবর্তন নিয়ে তুলে আনবে অনেক নতুন তথ্য। স্লিম ল্যান্ডার থেকে যে রোভার নামবে চাঁদের বুকে, তা এক্স-রে ছবি তুলবে। সে কারণে এই অভিযানের নাম এক্স-রে ইমেজিং অ্যান্ড স্পেকট্রোস্কোপি মিশন (এক্সরিজ়ম)।
জাক্সা সূত্রে খবর, অবতরণের পথে কোনও বাধা থাকলে তা আগে থেকেই আঁচ করতে পারবে এই ল্যান্ডার। সেই মতো পদক্ষেপও করতে পারবে। জাক্সা সূত্রের খবর, চাঁদের যে জায়গায় অবতরণ করতে হবে, তার ছবি আগে থেকেই ধরা থাকবে ল্যান্ডারের। সেই ছবি মিলিয়েই সঠিক জায়গায় অবতরণ করতে পারবে সে। লক্ষ্যবিন্দুর ৩২৮ ফুট (১০০ মিটার) দূরত্বের মধ্যে অবতরণ করাই আপাতত লক্ষ্য ওই ল্যান্ডারের। সূত্রের খবর, এই ল্যান্ডারের একটি র্যাডার রয়েছে, যা নির্দিষ্ট স্থানে অবতরণে সাহায্য করবে। চাঁদের ঠিক কোথায় অবতরণ করতে পারে তাদের ল্যান্ডার, তা-ও আগেই জানিয়েছিল জাক্সা। ভারতের ল্যান্ডার নেমেছে দক্ষিণ মেরুতে, যে পিঠ পৃথিবী থেকে দেখা যায় না। জাপানের ল্যান্ডার নামবে সেই পৃষ্ঠে, যা পৃথিবী থেকে দেখা যায়। জাক্সার তরফে জানানো হয়েছে, তুলনামূলক ভাবে নতুন তৈরি হওয়া শিওলি গহ্বরে অবতরণ করবে সে।
এইচ-২এ রকেটটি ল্যান্ডারের পাশাপাশি, একটি গবেষণা উপগ্রহও বহন করছে যা নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং জেএএক্সএ-র যৌথ উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে।
এর আগে খারাপ আবহাওয়ার কারণে তিন বার জাপানের এই চন্দ্র অভিযান স্থগিত হয়ে যায়। তবে বৃহস্পতিবার সেই যানের সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে। জাপানের প্রায় ৩৫ হাজার নাগরিক সেই বিশেষ মুহূর্ত চাক্ষুষ করার জন্য অনলাইন মাধ্যমে যোগ দেন।