আদিত্য-এল১ যান থেকে তোলা সূর্যের ছবি। ছবি: ইসরো।
মহাকাশ থেকে সূর্যের সম্পূর্ণ ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠাল ভারতের সৌরযান আদিত্য-এল১। পাশাপাশি সূর্যের আরও কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার প্রমাণ দিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর পাঠানো সেই যান। ইসরো জানিয়েছে, আদিত্য-এল১ যানে থাকা ‘সোলার আল্ট্রাভায়োলেট ইমেজিং টেলিস্কোপ’ (এসইউআইটি)-এর মাধ্যমে সূর্যের ছবিগুলি তোলা হয়েছে। শুক্রবার ইসরোর তরফে সেই ছবি প্রকাশ্যেও আনা হয়েছে। আদিত্য-এল১-এর সূর্যের ছবি তোলার বিষয়টি ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানের অন্যতম নজির হিসাবে দেখছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
ইসরোর তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে সূর্যের সেই ‘ফুল ডিস্ক’ ছবিগুলি ২০০ থেকে ৪০০ ন্যানোমিটারের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিসরের মধ্যে তোলা। ফলে ছবিগুলিতে সূর্যের পৃষ্ঠদেশ এবং সূর্যের উপরভাগের স্বচ্ছ স্তরের ছবি ভাল ভাবে ফুটে উঠেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ইসরোর তরফে ‘এক্স (সাবেক টুইটার)’ হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, ‘‘এসইউআইটি পেলোড অতিবেগুনী তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কাছাকাছি সূর্যের পূর্ণাঙ্গ ছবি তুলেছে। ছবিগুলি ২০০ থেকে ৪০০ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মধ্যে তোলা। ছবিগুলির সাহায্যে সূর্যের ফটোস্ফিয়ার এবং ক্রোমোস্ফিয়ারের জটিল বিবরণ বোঝা যাবে।’’ ইসরো এক বিবৃতিতে এ-ও জানিয়েছে, এসইউআইটি যন্ত্রে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ফিল্টার ব্যবহার করা হয়। তাই নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিসরে সূর্যের ফটোস্ফিয়ার এবং ক্রোমোস্ফিয়ারের ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে।
ইসরোর বক্তব্য, এই ছবি থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সৌর বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে। পৃথিবীর উপর সৌর বিকিরণের প্রভাব বুঝতেও বিজ্ঞানীদের সাহায্য করবে ছবিগুলি।
প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর সকালে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা সতীশ ধাওয়ান স্পেস রিসার্চ সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল আদিত্য-এল১। প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষ কিলোমিটার ভ্রমণ করে গন্তব্যে পৌঁছবে সেটি। সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝের এল১ পয়েন্টে পৌঁছতে তার মোট চার মাস সময় লাগার কথা। এখনও পর্যন্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী সব ঠিক চলছে। মহাকাশে কোথাও বাধা পায়নি আদিত্য-এল১। সব ঠিক থাকলে জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকেই গন্তব্যে পৌঁছে যাবে এই সৌরযান।
সূর্যের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে, সূর্যকে আরও কাছ থেকে দেখতে, খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে আদিত্য-এল১। এটি ভারতের প্রথম সূর্যকেন্দ্রিক প্রচেষ্টা। এর ঠিক আগেই ইসরো চন্দ্র অভিযানে সাফল্য পেয়েছিল।