-ফাইল ছবি।
পরিযায়ী পাখিদের দেহে এক ধরনের প্রোটিনের হদিশ মিলল, যা আকাশে তাদের সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় চুম্বকের মতো কাজ করে। দিক ভুল হতে দেয় না। আর সেই চুম্বককে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা নেচার-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র সেই প্রোটিন আবিষ্কারের খবর দিয়েছে।
আকাশে সুদীর্ঘ পথ দিতে পা়ড়ি দিতে পরিযায়ী পাখিদের দিক ভুল হয় না কেন, আগের বার শীতে যে দেশে এসেছিল কী ভাবে পরের বারও তারা সেই দেশেই আসতে পারে, তার কারণ আঁচ করা গিয়েছিল আগে। বোঝা গিয়েছিল পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রই পরিযায়ী পাখিদের কম্পাসের কাজ করে। তাদের দিক ভুল হতে দেয় না। সময় এলে ফিরেও যেতে পারে নিজেদের পুরনো বাসায়।
কিন্তু পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সেই কম্পাসকে কাজে লাগাতে হলে তো পাখিদের দেহে কোনও চৌম্বক পদার্থ থাকতে হবে। এত দিন তার কোনও হদিশ মিলছিল না।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও জার্মানির ওয়েইল্ডেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ বার পাখিদের দেহে সেই প্রোটিনের হদিশ পেয়েছেন। তার নাম ‘ক্রিপটোক্রোমস’। থাকে পাখির চোখের রেটিনায়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, আকাশে কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার সময় পরিযায়ী পাখিদের দেহে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের জন্য এক ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়। তাতে ক্রিপটোক্রোমস প্রোটিন তৈরি হয় বেশি পরিমাণে। সেই প্রোটিনই পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের কম্পাসের সঙ্গে তাল-মিল রেখে আকাশে পাখিদের পথ ভুল হতে দেয় না। পৌঁছে দেয় তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে। যে দেশে যাচ্ছে, সেই ঠিকানাও যেমন থাকে অভ্রান্ত, তেমনই তাদের ঘরে ফেরার পথেও দিশা হারানোর ঘটনা ঘটতে দেয় না।