‘গগনযান’-এর মডেল। ছবি- ইসরোর সৌজন্যে।
মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রথম ভারতীয় অভিযানে আরও বেশি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিল রাশিয়া। বায়ুমণ্ডলহীন পরিবেশে শূন্য অভিকর্ষ বলে (মাইক্রোগ্র্যাভিটি) মহাকাশচারীদের বেঁচে থাকার জন্য জরুরি শ্বাসের বাতাস, জল, খাবারদাবার সরবরাহ করবে রুশ মহাকাশ সংস্থা ‘রসকসমস’। প্রযুক্তির পরিভাষায় যাকে বলা হয়, ‘লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম’। আগেই রাশিয়ার তরফে জানানো হয়েছিল, কী ভাবে মহাকাশে বায়ুমণ্ডলহীন পরিবেশে নিরাপদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটানো যায়, সে ব্যাপারে তারা তালিম দিতে প্রস্তুত ভারতীয় মহাকাশচারীদের।
ইসরোর ‘গগনযান’ প্রকল্পের জন্য বেঙ্গালুরুতে গঠিত ‘হিউম্যান স্পেস ফ্লাইট সেন্টার (এইচএসএফসি)-এ এ ব্যাপারে একটি চুক্তি হয়েছে গত সপ্তাহে। চুক্তিতে সই করেছেন এইচএসএফসি-র প্রধান উন্নিকৃষ্ণন নায়ার ও ‘রসকসমস’-এর সাহায্যপ্রাপ্ত সংস্থা ‘গ্লাভকসমস’-এর ডিরেক্টর জেনারেল দিমিত্রি লোসকুতোভ।
রুশ মহাকাশ সংস্থার এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ১০ হাজার কোটি টাকার ‘গগনযান’ অভিযানে ইসরোকে তারা দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম সরবরাহ করবে।
আরও পড়ুন- ‘চন্দ্রযান ২’-এর কাহিনি এখনই শেষ নয়: শিবন
আরও পড়ুন- ২০ বছর পেরিয়ে গেল বয়স, এরপর সমুদ্রে ছুড়ে ফেলা হবে মহাকাশ স্টেশনকে
সেই সরঞ্জামগুলির একটি, মহাকাশে ‘লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম’। মহাকাশচারীদের বেঁচে থাকার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা দেবে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম। দেবে শ্বাসের বাতাস, জল, খাবারদাবার। মহাকাশের হাড়জমানো ঠান্ডাতেও যাতে মহাকাশচারীরা তাঁদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারেন, সেটাও সুনিশ্চিত করবে এই লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম। মহাকাশচারীদের প্রতিদিনের বর্জ্য সংগ্রহ ও তার রূপান্তরও হবে ওই সিস্টেমের আর একটি কাজ।
এ ছাড়াও মহাকাশযানের তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার যাবতীয় সর্বাধুনিক উপকরণও দেবে রুশ মহাকাশ সংস্থা। যা অভিযানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মহাকাশযানের তাপমাত্রাকে একটি কাঙ্খিত সীমার মধ্যে ধরে রাখতে পারবে। যাতে প্রচণ্ড তাপমাত্রায় মহাকাশযানের কোনও অংশ নষ্ট বা নিষ্ক্রিয় হয়ে না যায়।
ছয়ের দশক থেকেই মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু করায় এই সব প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম বানানোর ক্ষেত্রে অন্য দেশগুলির চেয়ে এগিয়ে রয়েছে রাশিয়া। ভারতের প্রধানমন্ত্রী যেহেতু ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছেন, ২০২২ সালে ভারত মহাকাশে মানুষ পাঠাবে, তাই ওই সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম উদ্ভাবন করে আর সময় খরচ করতে চাইছে না ইসরো।
সে ক্ষেত্রে, রাশিয়াই হয়ে উঠতে চলেছে ইসরোর বন্ধু।