এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের উচ্চতার আড়াই গুণ গ্রহাণু ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে
ASTEROIDS

Asteroid: চারটি গ্রহাণু ধেয়ে আসছে মঙ্গলবার, একটি এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের আড়াই গুণ উচ্চতার

পৃথিবীর খুব কাছেপিঠে এসে পড়ার সময় গ্রহাণুটির গতিবেগ দাঁড়াবে সেকেন্ডে প্রায় সাড়ে ১৯ কিলোমিটার বা ঘণ্টায় ৪৩ হাজার ৭৫৪ মাইল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:২৮
Share:

পৃথিবীর খুব কাছেপিঠে এসে পড়ার সময় গ্রহাণুটির গতিবেগ দাঁড়াবে সেকেন্ডে প্রায় সাড়ে ১৯ কিলোমিটার বা ঘণ্টায় ৪৩ হাজার ৭৫৪ মাইল। -ফাইল ছবি।

এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের আড়াই গুণ উচ্চতার একটি দানবাকৃতি গ্রহাণু ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে। মঙ্গলবার। ভয়ঙ্কর গতিবেগে। পৃথিবীর খুব কাছেপিঠে এসে পড়ার সময় গ্রহাণুটির গতিবেগ দাঁড়াবে সেকেন্ডে প্রায় সাড়ে ১৯ কিলোমিটার বা ঘণ্টায় ৪৩ হাজার ৭৫৪ মাইল। মঙ্গলবারই পৃথিবীর খুব কাছে এসে পড়বে আরও তিনটি মাঝারি ও ছোট আকারের গ্রহাণু।

Advertisement

আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা মঙ্গলবার এই খবর দিয়ে জানিয়েছে, এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের আড়াই গুণ উচ্চতার গ্রহাণুটি পৃথিবীর পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই নাসা একে ‘পোটেনশিয়াল হ্যাজার্ডাস অ্যাস্টারয়েড্‌স’ শ্রেণিভুক্ত করেছে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শুধুই বিশালত্ব নয়; গ্রহাণুটি সভ্যতার পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আরও একটি কারণ রয়েছে— গ্রহাণুটি খানিকটা ঘন ঘনই এসে পড়ছে পৃথিবীর কাছাকাছি। গ্রহাণুদের কক্ষপথ সাধারণত আগেভাগে খুব একটা আঁচ করা যায় না। তা বদলায়ও ঘন ঘন। কোনও গ্রহের খুব কাছাকাছি এসে পড়লে সেই গ্রহের জোরালো অভিকর্ষ বলের টানে গ্রহাণুদের আছড়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এমনই একটি গ্রহাণু আছড়ে পড়ায় ডাইনোসরদের বিলুপ্তি হয়েছিল বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের একটি বড় অংশের।

Advertisement

নাসা জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহের গোড়ার দিকে আমেরিকার এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের উচ্চতার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি উঁচু যে গ্রহাণুটি পৃথিবীর খুব কাছাকাছি এসে পড়বে সেটি দৈর্ঘ্যে এক কিলোমিটার বা ৩ হাজার ২৮০ ফুট। গ্রহাণুটির নাম— ‘(৭৪৮২) ১৯৯৪ পিসি-১’।

এই সৌরমণ্ডলে গ্রহাণুদের আদত ঠিকানা মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানে থাকা গ্রহাণুপুঞ্জ (‘অ্যাস্টারয়েড বেল্ট’) থেকে আসছে না এই গ্রহাণু। দানবাকৃতি গ্রহাণুটি আসছে পৃথিবীর খুব কাছেপিঠের এলাকা থেকেই। তাই এদের ‘নিয়ার-আর্থ অবজেক্টস (এনইও)’-এর শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এমন প্রায় ২৬ হাজার এনইও-র কথা এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছে নাসা। যাদের মধ্যে অন্তত এক হাজারটি গ্রহাণুকে পৃথিবীর পক্ষে ‘আজ নয়তো কাল বিপজ্জনক হতে পারে’ বলে চিহ্নিত করেছে তারা।

১৯৯৪ সালে প্রথম এই দানবাকৃতি গ্রহণুটির হদিশ পান জ্যোতির্বিজ্ঞানী রবার্ট ম্যাকনট। অস্ট্রেলিয়ার সাইডিং স্প্রিংস অবজারভেটরিতে আকাশ পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে। তার ২০ বছর আগে, ১৯৭৪-এও এই দানবাকৃতি গ্রহাণুটি পৃথিবীর কাছাকাছি এসে পড়েছিল। তবে খুব কাছে এসে পড়েছিল ৮৯ বছর আগে। ১৯৩৩ সালের ১৭ জানুয়ারি।

১৯৯৪ সালে যখন এই গ্রহাণুটি এসেছিল পৃথিবীর খুব কাছাকাছি। ছবি- নাসার সৌজন্যে।

নাসা জানিয়েছে, গ্রহাণুটি ফের পৃথিবীর খুব কাছে এসে পড়বে ৮৩ বছর পর। ২১০৫ সালের ১৮ জানুয়ারি।

নাসার খবর, এখনও পর্যন্ত গ্রহাণুটির গতিপথ যা সেই হিসাবে বলা যায় খুব কাছে এসে পড়লেও এ বার হয়তো তেমন বিপদ নেই পৃথিবীর। কারণ, এখনকার গতিপথ বজায় থাকলে গ্রহাণুটি খুব কাছে আসার সময় পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব থাকবে চাঁদের দূরত্বের ৫ গুণ।

নাসা জানিয়েছে, এই দানবাকৃতি গ্রহাণুটি ছাড়াও মঙ্গলবার পৃথিবীর খুব কাছে এসে পড়বে আর যে তিনটি গ্রহাণু, তাদের নাম— ‘২০২১বিএ’, ‘২০২২এডব্লিউ’ এবং ‘২০২২এএ৬’। এদের মধ্যে প্রথম গ্রহাণুটি পৃথিবীর কাছ ঘেঁষে বেরিয়ে যাবে ঘণ্টায় ৩২ হাজার ৭২৪ কিলোমিটার গতিবেগে। গ্রহাণুটি চাঁদের কাছে এসেছিল গত বছর। পৃথিবীর কাছে দ্বিতীয়টির গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৩৬ হাজার ৪৬৮ কিলোমিটার। ২০২৯ সালের জুলাইয়ে এটি ফের কাছে আসবে পৃথিবীর। আর তৃতীয়টির পৃথিবীর কাছে আসার সময় গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৬ হাজার ২০০ কিলোমিটার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement