লাল গ্রহের আকাশে সেই দীর্ঘতম মেঘ। ছবি- ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সৌজন্যে।
‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলের আকাশে সেই দীর্ঘতম মেঘের আবির্ভাব ও উধাও হওয়ার রহস্যের জট খুলল ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এসা)-র মহাকাশযান ‘মার্স এক্সপ্রেস’। দীর্ঘ দিন ধরে রহস্যে মোড়া মেঘবালিকাটির নাম- ‘আরসিয়া মন্স ইলঙ্গেটেডে ক্লাউড’। এর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ১১৮ মাইল (বা, ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার)। চওড়ায় ৯৩ মাইল (বা, ১৫০ কিলোমিটার)।
মেঘটিকে মঙ্গলের একটি বিশেষ অংশের আকাশে প্রতি বছরই দেখা যায় ৮০ দিন ধরে। প্রতি দিনই দেখা দেওয়ার কিছু ক্ষণ পর মেঘটি উধাও হয়ে যায়। আবার পরের দিন মেঘটিকে দেখা যায়। সে দিনও কিছু ক্ষণ পর সেটি উধাও হয়ে যায়। এই ভাবেই চলে টানা ৮০ দিন।
মেঘটিকে প্রতি বছরই একটি নির্দিষ্ট সময়ে দেখা যায় লাল গ্রহের একটি আগ্নেয়গিরি ‘আরসিয়া মন্স’-এর উপরে। এত দীর্ঘ মেঘ আর একটিও দেখা যায়নি মঙ্গলের আকাশে এত দিনে। মেঘটি খুব উজ্জ্বলও। তার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে বরফকণা থাকে বলে। মঙ্গলের সবচেয়ে বড় আগ্নেয়গিরি ‘অলিম্পাস মন্স’-এর দিকে যাওয়ার পথেই পড়ে আরসিয়া মন্স আগ্নেয়গিরিটি। যা মাউন্ট এভারেস্ট তো বটেই এই সৌরমণ্ডলের সবক’টি গ্রহে যতগুলি পর্বতশৃঙ্গ রয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু।
এসা-র মহাকাশযান মার্স এক্সপ্রেস-এর ভিস্যুয়াল মনিটরিং ক্যামেরা (ভিএমসি) দেখেছে, লাল গ্রহের এই দীর্ঘতম মেঘটিই মঙ্গলের ভয়ঙ্কর ধুলোর ঝড়ের কারণ। এই ধুলোর ঝড়েই মঙ্গলের মাটিতে নামা নাসার রোবটযান ‘অপরচুনিটি’ অচল হয়ে গিয়েছিল।
শুধু তা-ই নয়, এই মেঘটির জন্যই মঙ্গলের দুই মেরুর বরফ কমা-বাড়া করে।
এ-ও দেখা গিয়েছে লাল গ্রহে সূর্যোদয়ের পরেই মেঘটিকে দেখা যায় ওই আগ্নেয়গিরিটির (আরসিয়া মন্স) উপরের আকাশে। তার পর আড়াই ঘণ্টা ধরে সেই মেঘ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে। ঘণ্টায় ৩৭৩ মাইল (বা, ৬০০ কিলোমিটার গতিবেগে)। তার পর যেখান থেকে উৎপত্তি সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মেঘটির বাকি অংশ। তার পর গোটা মেঘটিই উধাও হয়ে যায়। এমন মেঘ পৃথিবীর আকাশেও তৈরি হয়। কিন্তু বিশালত্বের নিরিখে সেটি মঙ্গলের রহস্যে মোড়া মেঘের কাছে নস্যি!