-ফাইল ছবি।
ফাইজার-বায়োএনটেক-এর প্রথম টিকার ৩ সপ্তাহ পরে না নিয়ে দ্বিতীয় টিকা ১২ সপ্তাহ পর নিলে মানবদেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। প্রথম টিকা ৩ সপ্তাহ পর মানবদেহে যে পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, ১১ থেকে ১২ সপ্তাহ পর তার পরিমাণ সাড়ে ৩ গুণ বেড়ে যায়। ফলে, তড়িঘড়ি করে ফাইজার-বায়োএনটেকের দ্বিতীয় কোভিড টিকা নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি যৌথ গবেষণার ফল এই তথ্য দিয়েছে। আরও উল্লেখযোগ্য, গবেষণাটি চালানো হয়েছে ৮০ বছর বয়সেরও বেশি পুরুষ ও মহিলাদের উপর। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবশরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার গতি ও পরিমাণ কমে বলে যেখানে বহু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সেখানে এই গবেষণার ফলাফল যথেষ্টই আশাপ্রদ, মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ৮০ বছর বয়সেরও বেশি পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে যদি এই ফলাফল পাওয়া যায়, তা হলে তরুণ প্রজন্ম ও অল্পবয়সিদের ক্ষেত্রে তা আরও বেশি সঠিক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ব্রিটেন যে সম্প্রতি কোভিড টিকার দু’টি ডোজের মধ্যে সময়ের ব্যবধান বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই গবেষণার ফলাফল তাকেই সমর্থন করল।
গবেষণা এও জানিয়েছে, যাঁরা টিকার দু’টি ডোজই নিয়ে নিয়েছেন, পরে সংক্রমণের শঙ্কা ও কোভিডের ভয়াবহ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থেকে তাঁরা অনেকটাই দূরে থাকতে পারেন। কিন্তু যাঁরা শুধু প্রথম ডোজটি নিয়েছেন তাঁদের দ্বিতীয় ডোজটি ১২ সপ্তাহের মাথায় নিয়ে নেওয়া উচিত। না হলে তাঁদের দেহে অ্যান্টিবডির পরিমাণ আবার কমে যেতে শুরু করবে। তাতে প্রথম ডোজটি অর্থহীন হয়ে পড়বে। দ্বিতীয় ডোজটিও ততটা কার্যকর হবে না।
ঘটনা হল, ফাইজার-বায়োএনটেক এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা-র টিকার যখন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো হয়েছিল গত বছর, তখন দেখা গিয়েছিল ওই টিকা দু’টির দ্বিতীয় ডোজটি ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ পর নিলে মানবদেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা জানায়, দ্বিতীয় ডোজটি ১২ সপ্তাহ পর নিলে মানবদেহে অ্যান্টিবডির পরিমাণ ২ গুণেরও বেশি বাড়ে। এই গবেষণায় ৮০ বছরেরও বেশি বয়সিদের ক্ষেত্রে তা আরও বেশি প্রমাণিত হল।