গত মাসেই মঙ্গলে সূর্যাস্তের ছবি তুলেছিল নাসার মঙ্গলবাসী রোবট ‘কিউরিওসিটি’। ছবি : কিউরিওসিটি রোভারের টুইটার থেকে।
লাল গ্রহের মাটি লাল, আকাশও কি লাল? উঁহু, সব জায়গায় নয়, সব সময়ও নয়। মঙ্গলের আকাশে তেমনই বহু রঙের সমাহারের একটি ছবি তুলল নাসার মঙ্গলযাত্রী যান কিউরিওসিটি। ছবিটি সূর্যাস্তের সময় তোলা। তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সূর্যের রশ্মির এক একটি রেখা। ছবিটি মঙ্গলে তোলা এ যাবৎকালের সবচেয়ে স্পষ্ট সূর্য কিরণের ছবি বলে জানিয়েছে নাসার মঙ্গল গবেষণা দল।
ছবিটি কিউরিওসিটি রোভারের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেই পোস্ট করা হয়েছে। নাসার মঙ্গলবাসী রোবটের বয়ানেই দেওয়া হয়েছে বর্ণময় ছবিটির বর্ণনা। কিউরিওসিটি সেখানে ‘লিখেছে’, ‘‘গত মাসে যখন এই মঙ্গলে সূর্যাস্ত দেখছিলাম, তখন কয়েকটা দারুণ ছবি তুলেছিলাম। আমার গবেষক দল বলেছে, মঙ্গলে দেখতে পাওয়া সূর্যের ছটার এর থেকে ভাল ছবি আর কখনও ওঠেনি।’’
কিউরিওসিটির তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, চারপাশে অন্ধকার নেমে এসেছে। গোধূলির মুহূর্ত। সামনে একটি পাহাড়ের পিছনে সদ্য ডুবেছে সূর্য। দৃশ্যমান শুধু তার ফেলে যাওয়া রশ্মি বা ছটা। যা মঙ্গলের আকাশে তৈরি করেছে নানা রঙের প্রতিফলন। কোথাও হালকা সবুজ, কোথাও লালচে বেগনি, কোথাও আবার হালকা গোলাপির আভা। যেন মুঠোয় ভরে নানা রঙের আবির ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে! আকাশের যে অংশটুকু দৃশ্যমান সেখানেও মঙ্গলের চিরাচরিত লাল আকাশের চিহ্ন নেই। বরং কিছুটা পৃথিবীর মতোই সন্ধ্যার ধূসর নীলচে রঙের ছোঁয়া তাতে।
অবশ্য মঙ্গলে নীলচে আকাশ নতুন ঘটনা নয়। সূর্যের চারপাশে এমনিতেই মঙ্গলের আকাশে নীলচে ছোঁয়া থাকে। মঙ্গলের আকাশের লালচে ভাব আসলে আসে এর বাতাসে ভেসে বেড়ানো ধুলোর উপস্থিতির জন্য। ওই ধুলো আকাশের নীলচে আলো প্রতিফলিত হতে দেয় না মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে। তবে সূর্যের আলোর তীব্রতা এবং আয়তনের জন্য এই বিষয়টি সূর্যের আশপাশে কাজ করে না। সেই জায়গাটুকু নীলচে আলোরই প্রতিফলন হয়। মঙ্গলে সূর্যাস্তের সময় সূর্যের শেষ আলোতেও তা-ই হয়েছে।