এই ভাবে করা হয় কোভিডের নাসাল সোয়াব পরীক্ষা। -ফাইল ছবি।
কোভিড পরীক্ষা করিয়ে বাড়ি ফেরার পর থেকেই নাক দিয়ে অনর্গল বেরোতে থাকল সেই রস (‘সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড’) যা মস্তিষ্ক থেকে বেরিয়ে সুষুম্না কাণ্ডের মধ্যে দিয়ে শুধুই নীচের দিকে নামে। রোগী তা টেরই পাননি টানা ৯ মাস ধরে। ভেবেছিলেন, নাক দিয়ে জলের মতো তরল বেরোচ্ছে সব সময়। হয়তো অ্যালার্জি হয়েছে বলেই।
গল্প নয়, এই প্রায় বিরলতম ঘটনা ঘটেছে চেক প্রজাতন্ত্রে। সেই খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা গবেষণা পত্রিকা ‘জামা অটোল্যারিঙ্গোলজি- হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি’। বৃহস্পতিবার।
আন্তর্জাতিক চিকিৎসা গবেষণা পত্রিকাটি জানিয়েছে, কোভিডে আক্রান্ত এক রোগীর সংস্পর্শে আসার পরই ওই ব্যক্তি কোভিডের নাসাল সোয়াব পরীক্ষা করিয়েছিলেন। ২০২০ সালের মার্চে। সেই পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হয়।
কিন্তু তার পর থেকেই তাঁর নাক দিয়ে অনর্গল বেরোতে থাকে জলের মতো তরলের ধারা। তিনি ভেবেছিলেন, সেটা বোধহয় অ্যালার্জির জন্য। ভুল ভাঙে গত ডিসেম্বরে এক চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পর। জানতে পারেন বেরিয়ে আসছে সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড।
নাসাল সোয়াব পরীক্ষা হয় কী ভাবে?
কোভিডের নাসাল সোয়াব পরীক্ষায় একটি লম্বা স্টিক ঢুকিয়ে দেওয়া হয় নাকের ভিতরে। যাতে তা নাসারন্ধ্রের মধ্যে দিয়ে ঢুকে নাক যেখান থেকে তৈরি হয়েছে একেবারে সেই উৎসে পৌঁছতে পারে। ওই লম্বা স্টিকের শেষ প্রান্তে থাকে খুব নরম একটি ব্রাশ। যা দিয়ে কয়েক সেকেন্ড ধরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নাকের সেই উৎস থেকে সোয়াব তুলে আনা হয় কোভিড পরীক্ষার জন্য। সোয়াব ও কোষ তুলে আনার জন্য ওই স্টিক নাকের উৎস থেকে শুরু করে গলার পিছন দিক পর্যন্ত পৌঁছে যায়, যেখানে নাক ও গলার মধ্যে যোগাযোগের একটা স্বাভাবিক পথ রয়েছে।
ধরা পড়ল কী ভাবে?
ওই রোগীর মাথার খুলির সিটি স্ক্যান করে দেখা যায়, স্পঞ্জের মতো যে হাড় দিয়ে নাকের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে মস্তিষ্কের সেখানে কিছুটা চিড় ধরেছে।
আর সেটা যে কোভিডের নাসাল সোয়াব পরীক্ষায় স্টিক দিয়ে খোঁচাখুঁচি করার জন্যই হয়েছে, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত হয়েছেন চিকিৎসকরা।
এই ভাবে সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড অনর্গল বেরিয়ে যেতে থাকলে মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে যথেষ্টই, জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।