ক্যামেরা, বনকর্মীদের ছাড়াই এ বার বন্যপ্রাণীর হদিশ মিলবে? -ফাইল ছবি।
বাতাসের ‘গন্ধ’ই এ বার দিতে পারবে লুকিয়ে থাকা প্রাণীর খবরাখবর!
বক্সা বা আর কোনও অভয়ারণ্যে বহু দিন পর বাঘ ফিরে এল কি না, তা সেই অরণ্যেই রয়েছে কি না তা জানতে এ বার আর ট্র্যাপ ক্যামেরা লাগাতে হবে না। বনাঞ্চল, অভয়ারণ্য বা চিড়িয়াখানায় এ বার যে কোনও প্রাণী বা তাদের যে কোনও প্রজাতির অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে সেখানকার বাতাসের ‘গন্ধ শুঁকেই’।
যে ‘গন্ধ’ থাকে বনাঞ্চল, অভয়ারণ্য বা চিড়িয়াখানা বা তার আশপাশের এলাকার বাতাসে। বাতাস থেকে প্রাণীদের ডিএনএ খুঁজে বার করেই এ বার জেনে নেওয়া সম্ভব হবে কোন কোন প্রাণী রয়েছে, তাদের কোন কোন প্রজাতি রয়েছে সেই এলাকায়। এই ধরনের ডিএনএ-কে বলা হয় ‘এনভায়রনমেন্টাল ডিএনএ’ বা ‘ইডিএনএ’।
সাম্প্রতিক দু’টি গবেষণা এই খবর দিয়েছে। দু’টি গবেষণা করা হয়েছে আলাদা আলাদা ভাবে। দু’টি গবেষণাপত্র একই সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘কারেন্ট বায়োলজি’-তে। একটি গবেষণা চালিয়েছেন লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানীরা। অন্য গবেষণাটির নেতৃত্বে রয়েছে জার্মানির কোপেনহাগেন বিশ্ববিদ্যালয়।
কোনও বনাঞ্চল বা অভয়ারণ্যে কোন কোন প্রাণী রয়েছে বা নতুন কোন প্রাণী ঢুকেছে এখন তার উপর নজর রাখেন হয় বনকর্মীরা, না হলে নজর রাখা হয় ট্র্যাপ ক্যামেরায়। নিরাপত্তার অভাব ও অপর্যাপ্ত বনকর্মী দিয়ে কাজটা খুব জটিল হয়ে ওঠে। ট্র্যাপ ক্যামেরা ব্যবহারেরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ক্যামেরা খুব মেপেজুপে বসাতে হয়। বেশি সংখ্যায় তা বিশাল বনাঞ্চলে বসানোও সম্ভব নয়। বসানো হলেও বরাত জোরে সেই ক্যামেরায় ধরা পড়ে বাঘ-সহ বিভিন্ন প্রাণীর অস্তিত্ব। প্রাণীরা যদি গভীর জঙ্গলে গা ঢাকা দিয়ে থাকে তা হলেও তাদের হদিশ মেলা দুষ্কর। কারণ খুব গভীর জঙ্গলে ঢুকে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোও সম্ভব হয় না।
বাতাসে মিশে থাকা প্রাণীদের ডিএনএ পরীক্ষা করে সেই কাজটা অনেক সহজে অনেক বেশি নিখুঁত ভাবে করা সম্ভব, জানিয়েছে দু’টি গবেষণাপত্র। তবে অসুবিধাও রয়েছে। কারণ, এই ভাবে কোনও হ্রদ বা নদীতে বিভিন্ন প্রাণীর অস্তিত্বের হদিশ পাওয়ার কাজটা যতটা সহজ বাতাসে মিশে থাকা ডিএনএ খুঁজে সেই কাজটা ততটা সহজ নয়। কারণ, বাতাস থেকে প্রাণীদের ডিএনএ খুঁজে বার করার কাজটা জটিল। বাতাসে নানা ধরনের দূষণকণা অনেক বেশি পরিমাণে থাকে বলে। দু’টি গবেষণারই কৃতিত্ব, সেই কাজটিকে সহজতর করা হয়েছে।