খুব শীঘ্র চাঁদের মাটি ছোঁবে ল্যান্ডার বিক্রম।
আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। সোমবার দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট থেকে ১টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে চাঁদের কক্ষপথে ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযান-২ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে ল্যান্ডার বিক্রম। তার আগে, এ দিন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তরফে টুইট করে জানানো হয়েছে, আজ ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২১ মিনিটে চাঁদের পঞ্চম কক্ষপথে সফল ভাবে পাঠানো সম্ভব হয়েছে চন্দ্রযান-২কে। এই কক্ষপথটি প্রায় বৃত্তাকার। যে কক্ষপথে চন্দ্রযান-২ ঘুরছে, সেখানে চাঁদের থেকে তার দূরত্ব হবে ১২৭ এবং ১১৯ কিলোমিটার।
গত ২২ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় ইসরোর সতীশ ধওয়ন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল চন্দ্রযান-২। তার ৪৪ দিনের মাথায় সোমবার দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট থেকে ১টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে চন্দ্রযান-২ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে ল্যান্ডার বিক্রম। এই ল্যান্ডার বিক্রমের শরীরের ভিতরে লুকনো রয়েছে রোভার ‘প্রজ্ঞান’। সেই অবস্থাতেই বৃত্তাকার কক্ষপথে চাঁদকে প্রদক্ষিণ করবে সেটি এবং সেই কক্ষপথে প্রদক্ষিণের সময় যখন চাঁদের পিঠ থেকে ল্যান্ডার বিক্রমের দূরত্ব কমে আসবে ১০০ কিলোমিটারে, তখনই ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে চাঁদের পিঠে নামা শুরু করবে বিক্রম। তার পর ৬ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ৫৫ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি অঞ্চলে পালকের মতো নেমে ল্যান্ডার বিক্রম।
আনন্দবাজার ডিজিটালের তরফে এ দিন কলকাতার ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের অধিকর্তা তথা দেশের বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী অধ্যাপক সন্দীপ চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, ‘‘উপবৃত্তাকার পথে চাদকে প্রদক্ষিণ করতে করতে বৃত্তাকার কক্ষপথে পৌঁছে গিয়েছে চন্দ্রযান-২। অর্থাৎ ল্যান্ডার বিক্রম থেকে এ বার পৃথক করার অবস্থায় আনা হয়েছে সেটিকে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পুরোপুরি বৃত্তাকার কক্ষপথে থাকলে ল্যান্ডার বিক্রমের গতিশক্তি কমানোর কাজটা কম হবে। ফলে তাঁদের পিঠে নিরাপদে অবতরণ করতে পারবে বিক্রম।’’
আরও পড়ুন: কোন্নগরের গৌতমের বানানো হোয়াটসআপ যাচ্ছে ধূমকেতুদের পাড়ায়!
আরও পড়ুন: ক্যাম স্ক্যানারে ভাইরাস! স্টোর থেকে সরিয়ে দিল গুগল প্লে
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ৬ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে চাঁদের দক্ষিণ মেরু এলাকায় ‘ম্যানজিয়াস-সি’ এবং ‘সিম্পেলিয়াস-এন’ ক্রেটারের মাঝের একটি উচ্চভূমিতে (যা তুলনায় সমতল) নামবে ল্যান্ডার বিক্রম। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ল্যান্ডারের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসবে রোভার ‘প্রজ্ঞান’। সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা, চিনের পর ভারতই হবে চতুর্থ দেশ, যারা চাঁদের পিঠে পা ছোঁয়াবে। আর ভারতই হবে প্রথম দেশ, যারা নামবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে।