Chandrayaan 2

সফ্‌ট ল্যান্ডিং নয়, চাঁদের বুকে আছড়েই পড়েছিল ‘বিক্রম’, জানাল নাসা

যে ছবি নাসা প্রকাশ করেছে, সেটি গত ১৭ সেপ্টেম্বর তুলেছিল তাদের লুনার রিকনাইস্যান্স অরবিটার (এলআরও)। নাসা জানিয়েছে, ছবিটি সন্ধ্যাবেলায় তোলার জন্য বিজ্ঞানীরা বিক্রম-এর সঠিক অবস্থান চিহ্নিত করতে পারেননি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১১:১১
Share:

—ছবি সৌজন্য নাসার টুইটার।

পাখির পালকের মতো নয়। চাঁদের বুকে আছড়েই পড়েছিল চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। সেই অবতরণ স্থলের একটি ছবি টুইট করে এ কথা জানাল নাসা। এও জানানো হয়েছে, ঠিক কোন জায়গায় বিক্রম ভেঙে পড়েছে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। এর আগে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরো’-র চেয়ারম্যান কে শিবনও জানিয়েছিলেন, ‘‘সফ্‌ট ল্যান্ডিং নয়, চাঁদের বুকে হার্ড ল্যান্ডিং (আছড়ে পড়া) হয়েছে বিক্রমের।’’

Advertisement

যে ছবি নাসা প্রকাশ করেছে, সেটি গত ১৭ সেপ্টেম্বর তুলেছিল তাদের মহাকাশযান ‘লুনার রিকনাইস্যান্স অরবিটার (এলআরও)। নাসা জানিয়েছে, ছবিটি চাঁদে সন্ধ্যা নেমে আসার সময় তোলা হয়েছিল। তাই বিজ্ঞানীরা বিক্রম-এর সঠিক অবস্থান চিহ্নিত করতে পারেননি। তবে আগামী অক্টোবরে এলআরও ফের ছবি তোলার চেষ্টা করবে বলে নাসা জানিয়েছে।

গত ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ‘সিম্পেলিয়াস এন’ এবং ‘ম্যানজিনাস সি’, এই দু’টি ক্রেটারের মাঝে সমতলভূমিতে অবতরণের কথা ছিল ল্যান্ডার বিক্রম-এর। কিন্তু চাঁদের মাটি ছোঁয়ার আগেই সেটার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ইসরো-র পাঠানো ‘চন্দ্রযান-২-এ থাকা অরবিটার ও ইসরোর ‘গ্রাউন্ড স্টেশনে’র। তার পর থেকেই একটা সংশয় তৈরি হয়েছিল বিজ্ঞানী মহলে, বিক্রম কি তা হলে হারিয়েই গেল?

Advertisement

যদিও ইসরো প্রধান কে শিবন আশার কথা শুনিয়েছিলেন। ইসরোর তরফে এমনও বলা হয়েছিল, বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, আশা ততই ক্ষীণ হয়েছে। বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের সম্ভাবনার শেষ দিন ছিল গত শনিবার। তার পর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে রাত নেমে এসেছে। ফলে বিক্রমের ‘জীবিত’ থাকার যেটুকু আশা ছিল সেটাও শেষ হয়ে গেল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, বিক্রমকে সচল, সক্রিয় রাখার জন্য যে সৌর প্যানেলগুলি রয়েছে, সূর্যালোকের অভাবে তা আর কাজ করতে পারবে না। তা ছাড়াও চাঁদের রাত অসম্ভব রকমের ঠান্ডা। সেই হাড়জমানো ঠান্ডায় পৃথিবীর যে ১৪টি দিন ধরে রাত থাকবে চাঁদে, তখন বিক্রমের যন্ত্রগুলির ঠিকঠাক থাকা কিছুটা মুশকিলই।

আরও পড়ুন: বিজ্ঞানে বাংলার জয়জয়কার, ভাটনগর পুরস্কারে ১২ জনের মধ্যে ৫ জন বাঙালি​

আরও পড়ুন: তিন ফুট বেড়ে যাবে সমুদ্রের স্তর: রিপোর্ট

আরও পড়ুন: লাল গ্রহে পাড়ি দিচ্ছে মিস কৌতূহলের ‘দিদি’

বৃহস্পতিবারই চন্দ্রযান ২-এর পরিণতি নিয়ে বিশ্লেষণ বৈঠকে বসেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। ইসরো প্রধান কে শিবন জানান, একটা জাতীয় পর্যায়ের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। কেন ল্যান্ডারের থেকে কোনও সঙ্কেত পাওয়া যায়নি এবং এই মিশনে ঠিক কোথায় গলদ ছিল তা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখবে ওই কমিটি। সেই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা করা হবে। বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে ইসরো। সেটার উপরই কাজ চলছে বলে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন শিবন। ইসরো প্রধান আরও বলেন, “আমাদের পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ মিশন গগনযান।”

গত ২২ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উত্‌ক্ষেপণ করা হয় চন্দ্রযান ২। ইসরো সূত্রে জানানো হয়েছিল, চাঁদের পিঠ (লুনার সারফেস) থেকে ১০০ কিলোমিটার উপরের কক্ষপথে অরবিটার থেকে আলাদা হয়ে চাঁদের বুকে নামতে শুরু করবে ল্যান্ডার বিক্রম। সময় লাগবে ১৫ মিনিট। রোভারটিকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় দেড় টন ওজনের ল্যান্ডার খুব ধীরে পা ছোঁয়াবে (সফ্‌ট ল্যান্ডিং) চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ৭০ ডিগ্রি অক্ষাংশে। পরিকল্পনা মতো এই মিশনের সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ৭ সেপ্টেম্বরে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ যখন হাজির হল, দুঃসংবাদটা তখনই পৌঁছেছিল ইসরোর গ্রাউন্ড সেন্টারে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement