ছবি- নাসার সৌজন্যে।
জেনে রাখুন, চিনে রাখুন। যাকে দেখছেন ছবিতে, সে-ই এই সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে দূরে থাকা কোনও মহাজাগতিক বস্তু। সূর্য থেকে প্লুটো যতটা দূরে রয়েছে তার ৪ গুণ দূরত্বে রয়েছে সে। আদ্যোপান্ত বরফে মোড়া।
আকারে, ওজনে, আচার, আচরণে পুরোপুরি গ্রহ হয়ে উঠতে পারেনি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এদের বলেন- ‘প্ল্যানেটয়েড’।
আকারে খুবই ছোট। তাই একে পুরোপুরি গ্রহের মর্যাদা দিতে রাজি নন বিজ্ঞানীরা। সকলেই মনে রাখতে পারে তার এমন একটা নামও দেওয়া হয়েছে। ‘ফারফারআউট’। বাংলায়- ‘অনেক অনেক দূরের বাসিন্দা’। বিজ্ঞানীদের কাছে সরকারি ভাবে অবশ্য তার নাম- ‘২০১৮এজি৩৭’। এটি আদ্যোপান্তই একটি বরফে মোড়া বলে মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
সূর্য থেকে প্লুটো রয়েছে ৩১০ কোটি মাইল দূরে। আর সূর্য থেকে ফারফারআউট-এর দূরত্ব কত জানেন? ১ হাজার ২২০ কোটি মাইল। ওয়াশিংটনের কার্নেগি ইনস্টিটিউশন ফর সায়েন্স-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী অধ্যাপক স্কট শেপার্ডই প্রথম এর সন্ধান পান।
সৌরমণ্ডলে সবচেয়ে হতভাগ্য যদি কেউ থাকে তা হলে সে প্লুটো। অনেক কষ্টে সে গ্রহের মর্যাদা অর্জন করেছিল। কিন্তু সেই মর্যাদা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল। তাই পরে বেশ কয়েক বার তার মাথা থেকে কেড়ে নেওয়া হয় গ্রহের মুকুট। আবার ফিরিয়েও দেওয়া হয়। শেষ বার, আড়াই বছর আগে ২০১৯-এর নভেম্বরে প্লুটোর সেই মর্যাদা কেড়ে নেয় ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (আইএইউ)’। তাকে দেওয়া হয় ‘বামন গ্রহ’ (‘ডোয়ার্ফ প্ল্যানেট’)-এর তকমা।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন সূর্যের থেকে যে দূরত্বে রয়েছে প্লুটো, তার ৪ গুণ দূরে থাকা এই সদ্য আবিষ্কৃত ফারফারআউট ‘না ঘরকা না ঘাটকা’! গ্রহ তো নয়ই, বামন গ্রহও নয়। প্ল্যানেটয়েড। বলা ভাল, গ্রহের কিছু লক্ষণ আছে তার মধ্যে। তাই সৌরমণ্ডলের যে নবম গ্রহ হবে ফারফারআউট, সেই সৌভাগ্যও হয়নি তার। ব্যাস সাকুল্যে ২৫০ মাইল বলে তাকে বামন গ্রহ বলেও মেনে নিতে রাজি নন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অনেকেই। তবে খুব শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক ভাবে তার আরও একটি নাম দেওয়া হবে।
নবম গ্রহের সন্ধান করতে গিয়েই এর খোঁজ মিলেছে। দেখা গিয়েছে একটি মাত্র কক্ষপথে সে প্রদক্ষিণ করে সূর্যকে। ১ হাজার বছরে ১ বার (পৃথিবীর লাগে ৩৬৫ দিন)।
এর আগেও এমনতরো একটি প্ল্যানেটয়েডের খোঁজ মিলেছিল সৌরমণ্ডলে। তার নাম ছিল ‘ফারআউট’। সদ্য আবিষ্কৃতটি তার চেয়েও দূরে আছে বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে ফারফারআউট, জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।