Space

মহাকাশে রেস্তরাঁ, চমক ২০২৫-এ

আপাতত ছ’জন অতিথির জন্য টেবল থাকছে রেস্তরাঁয়। চারপাশে বড় বড় জানলা, চোখ চলে যাবে সুদূরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১ লক্ষ ফুট উচ্চতায় বসে সূর্যোদয় দেখতে দেখতে খাবার উপভোগ করতে পারবেন অতিথিরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৪ ০৫:১৯
Share:

এমনই দেখতে হবে মহাকাশ-রেস্তরাঁ। ছবি: সমাজমাধ্যম।

‘আজ ম্যায় উপর, আসমাঁ নীচে...’। ৯০-এর দশকের কবিতা কৃষ্ণমূর্তির সেই গান আজ এক্কেবারে সত্যি! পায়ের নীচে আকাশ, আরও অনেক নীচে সাদা-নীল রঙা পৃথিবী, শূন্যে ভাসমান এক রেস্তরাঁর রিক্লাইনিং চেয়ারে হেলান দিয়ে সুখের পানীয়তে চুমুক দিতে কেমন লাগবে? সেই স্বাদের সন্ধান দিতে পৃথিবীর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ভাসমান এক রেস্তরাঁ খুলছে নিউ ইয়র্কের ‘স্পেসভিআইপি’ নামে একটি পর্যটন সংস্থা। বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা এক ড্যানিশ শেফকে নিয়োগও করে ফেলেছে তারা। সামান্য কিছু কাজ বাকি। অতিথিদের স্বাগত জানাতে তাই অপেক্ষা আরও একটি বছরের।

Advertisement

‘স্পেসভিআইপি’ তাদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে রেস্তরাঁর বেশ কিছু ছবি শেয়ার করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, রেস্তরাঁটি দেখতে হবে অনেকটা বেলুনের মতো। ছ’ঘণ্টার জন্য সেই হাইটেক স্পেস-বেলুনে মহাকাশ-সফরে নিয়ে যাওয়া হবে অতিথিদের। তবে পকেটের জোর থাকতে হবে। মাথাপিছু খরচ প্রায় ৫ লক্ষ ডলার। তাতে অবশ্য কিছু আটকাচ্ছে না। ‘স্পেসভিআইপি’ জানিয়েছে, তাদের ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বুকিং সংক্রান্ত অসংখ্য প্রশ্ন আসতে শুরু করেছে। অনেকেই জানতে চাইছেন, এই সফরে নাম লেখাতে কোথায় সাইন আপ করতে হবে।

আপাতত ছ’জন অতিথির জন্য টেবল থাকছে রেস্তরাঁয়। চারপাশে বড় বড় জানলা, চোখ চলে যাবে সুদূরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১ লক্ষ ফুট উচ্চতায় বসে সূর্যোদয় দেখতে দেখতে খাবার উপভোগ করতে পারবেন অতিথিরা। ওয়াইফাই-ও থাকবে। ফলে কেউ চাইলে মহাকাশ থেকেই লাইভস্ট্রিম করতে পারবেন, বন্ধুদের সঙ্গে কিংবা পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। বিশ্বের অন্যতম সেরা ড্যানিশ রেস্তরাঁ ‘অ্যালকেমিস্ট’-এর শেফ রাসমুস মাঙ্ক মেনু তৈরি করছেন। এখনও মেনু চূড়ান্ত হয়নি, তবে ৩২ বছর বয়সি শেফ জানিয়েছেন, বিস্ময়ে ভরা ওই মহাকাশ সফরের মতো মেনুতেও স্বাদে-গন্ধে চমক থাকবে ষোলোআনা। উদ্ভাবনী চিন্তায় থাকছে ‘এরোসল-ইনস্পায়ারড’ খাবার, ‘এনক্যাপসুলেটেড অ্যারোমা’। মাঙ্ক জানিয়েছেন, খরচ অনেকটাই বেশি, তবু মানুষের মধ্যে প্রবল উৎসাহ। তাঁর কথায়, ‘‘এই সফরের বিপুল খরচ সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। তবে এটাই প্রথম যাত্রা কি না, তাই এতটা দামি।’’ মাঙ্ক নিজেও প্রথম সফরে অংশ নেবেন। জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আরও অনেক সফর হবে। টিকিটের দাম ধীরে ধীরে কমবে। আরও বেশি মানুষ এই অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারবেন।

Advertisement

‘স্পেসভিআইপি’-র প্রতিষ্ঠাতা রোমান চিপোরুখা বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে কয়েক ডজন আবেদন জমা পড়েছে আমাদের কাছে। সকলেই প্রবল উৎসাহী। কিন্তু আমাদের কাছে মাত্র ছ’টি আসন রয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যাত্রী-তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।’’

মহাকাশে ভাসমান বেলুন-রেস্তরাঁটি নির্মাণ করেছে ‘স্পেস পারসপেকটিভস’। অতিথিদের কোনও বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হবে না। জানা গিয়েছে, রকেট নয়, একটি স্পেস বেলুনের সাহায্যের এক ধরনের ক্যাপসুলে বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে যাত্রীদের। প্রযুক্তিটির পিছনে রয়েছে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। আগামী মাস থেকে পরীক্ষামূলক উড়ান শুরু হবে।

তবে শুধু ‘স্পেসভিআইপি’ নয়, ২০২৫ সালের পর্যটন-বাজারে তাদের প্রতিযোগীরাও হাজির। গত বছরই ফ্রান্সের একটি সংস্থা ‘জ়েফাল্টো’ ঘোষণা করেছিল, তারা মহাকাশ-রেস্তরাঁ খুলতে চলেছে। তাদের দেওয়া খরচ খতিয়ান তুলনায় অনেকটাই কম— একটি টিকিটের দাম ১ লক্ষ ৩২ হাজার ডলার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement