প্রতীকী ছবি।
মহাজাগতিক রশ্মি আর সূর্য থেকে প্রতি মুহূর্তে ছুটে আসা হানাদারদের হাত থেকে যা পৃথিবীকে বাঁচায়, সেই ‘বর্ম’ চৌম্বক ক্ষেত্রের দুই মেরুর দিক বদলানোর ফলে মহাপ্রলয় হয়েছিল ৪২ হাজার বছর আগে। তার পরিণতিতে গণবিলুপ্তি (‘মাস এক্সটিংশন’) ঘটেছিল পৃথিবীর তাবৎ প্রাণীকূলের। স্তন্যপায়ীরাই যার শিকার হয়েছিল সবচেয়ে বেশি। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এ কথা জানিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান-গবেষণা পত্রিকা ‘সায়েন্স’-এ।
পৃথিবীর সেই বহু দূর অতীতের ইতিহাস গবেষকরা জানতে পেরেছেন উত্তর নিউজিল্যান্ডের গাওয়া স্প্রিংস এলাকা থেকে পাওয়া কউরি উদ্ভিদের ধ্বংসাবশেষ থেকে। এই উদ্ভিদগুলি ছিল ৪২ হাজার বছর আগে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের দুই মেরুর দিক বদলানোর সময় ছিল বলে জানা গিয়েছে গবেষণায়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই উদ্ভিদের ধংসাবশেষ তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখেছেন কউরিদের দেহের কোষ, কলাগুলিতে ওই সময় প্রচুর পরিমাণে কার্বন ১৪ পরমাণুর আইসোটোপের অধিক্য হয়েছিল। যা কার্বন পরমাণুর একটি তেজস্ক্রিয় রূপ।
ওই সময় কেন প্রচুর পরিমাণে তেজস্ক্রিয় কার্বন ১৪ পরমাণুর আইসোটোপ বেশি জমেছিল কউরি উদ্ভিদের দেহের কোষ, কলাগুলিতে?
গবেষকরা জানিয়েছেন, তাঁদের ধারণা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে সেই তেজস্ক্রিয় কার্বন ১৪ পরমাণু এসেছিল মহাজাগতিক রশ্মি ও সূর্য থেকে ছুটে আসা নানা ধরনের হানাদারদের কাছ থেকে। আর সেটা হয়েছিল তখন পৃথিবীর বর্ম চৌম্বক ক্ষেত্র দুর্বল হয়ে গিয়েছিল বলে। তার ফলে সেই বর্ম আর ওই হানাদারদের ঠেকাতে পারেনি। দুই মেরুর দিক বদলানোর জন্যই সেই সময় দুর্বল হয়ে পড়েছিল পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র। তবে তা খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। বড়জোর এক বা দেড় হাজার বছর।