গুড় কী ভাবে রাখলে দীর্ঘ দিন ভাল থাকবে? ছবি: ফ্রিপিক।
শীত মানেই গুড় আর তা দিয়ে তৈরি পিঠেপুলি, পায়েস, মিষ্টি— হেঁশেল ম-ম করে সুঘ্রাণে। তবে তরল নলেন গুড় বা পাটালি, যেটিই কিনে আনুন না কেন, সঠিক ভাবে তা রাখতে না পারলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে দ্রুত। নলেন গুড়ের চেয়ে পাটালির মেয়াদ বেশি হয়। তবে দুই ধরনের গুড় কিন্তু সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
কী ভাবে রাখবেন পাটালি?
শীতের টাটকা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে ঘন করে জমিয়ে তৈরি হয় পাটালি। সামান্য গরমেই গলে তরল হয়ে যায় এটি। পাটালি যদি ঠিক ভাবে রাখা না হয়, তা হলে ছত্রাক হয়ে যেতে পারে।
১. পাটালি একটি প্লাস্টিকের ‘জিপ লক’ ব্যাগে ভরে রাখুন। এই ধরনের ব্যাগের সুবিধা হল, চাইলে মুখটি খুলে বার করা যায়, আবার মুখ চাপ দিয়ে আটকে দেওয়া যায়। এতে ভিতরে বাইরের বাতাস ঢুকতে পারে না। ফলে অনেক দিন পর্যন্ত ভাল থাকে পাটালি।
২. শীত যতই পড়ুক না কেন, বাইরে না রেখে ফ্রিজে রাখলেই পাটালি বেশি দিন ভাল থাকবে। কোনও বায়ুনিরোধী কৌটোয় পাটালি ভরে তা ফ্রিজে রেখে দিন।
৩. পাটালিতে অনেক সময় ছত্রাক বাসা বাঁধে। সমস্যার সমাধানে পাটালি যে কৌটোয় রাখছেন, তার এক পাশে শুকনো কড়ায় নেড়েচেড় নেওয়া কয়েকটি তেজপাতা ফেলে রাখুন। তেজপাতায় অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান থাকে, যা ছত্রাকের সংক্রমণ প্রতিহত করতে সাহায্য করে।
৪. শুকনো শালপাতার বাটি বা থালায় মুড়িয়ে রাখলেও ভাল থাকে পাটালি।
নলেন গুড়
নলেন গুড়ের স্থায়িত্ব সাধারণত পাটালির চেয়ে কম হয়। বিক্রির সময় নলেন গুড় মাটির পাত্রে রাখা হয়। এতে এর গন্ধ, বর্ণ দুই ঠিক থাকে। তবে বাড়িতে নলেন গুড় ফ্রিজে রাখলেই বেশি দিন ভাল থাকবে। মাটির পাত্রে রাখতে না পারলে কোনও বায়ুনিরোধক কৌটোয় তা ভরে ফ্রিজে রাখতে পারেন।
গুড়ের গুণ
পুষ্টিবিদেরা বলেন ভিটামিন এবং খনিজে সমৃদ্ধ গুড়ের রকমারি উপকারিতা। গুড়ে থাকা জ়িঙ্ক, সেলেনিয়ামের মতো খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে আয়রন, জ়িঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাসের মতো খনিজ। ভিটামিন এ, বি, ডি।
খাবারে কী কী ভাবে গুড় জুড়তে পারেন?
১. চা-এ চিনি খান? বদলে একটু গুড় মিশিয়ে নিতে পারেন। তবে ডায়াবিটিস থাকলে কিন্তু চায়ে গুড় মেশানো যাবে না। মিষ্টি ছাড়াই খেতে হবে।
২. নলেন গুড়ে ডুবিয়ে রুটি খেতে পারেন। আবার গরম রুটিতে পাটালির ছোট ছোট টুকরো দিয়ে মুড়িয়ে নিয়ে কামড় বসালেও দারুণ খেতে লাগবে। পরোটার পুর হিসাবেও দিতে পারেন পাটালি।
৩. কোনও কোনও তরকারি সামান্য মিষ্টি হলে খেতে ভাল লাগে। কুমড়োর ছক্কা থেকে লাউ, চাইলে সামান্য গুড় মিশিয়ে নিতে পারেন।
৪. পায়েস, মিষ্টি, হালুয়া— যে কোনও খাবারে নলেন গুড় বা পাটালি মিশিয়ে নিলেই স্বাদ এবং গন্ধ বেড়ে যাবে।