রইল শহরের সেরা কিছু খাবারের তালিকা। ছবি: সংগৃহীত
পুরনো ও নতুন বছরের সন্ধিক্ষণে শহরজুড়ে শীত পড়েছে জাঁকিয়ে। কলকাতার শীত বড় মায়াময়। একবার এলে আর যেতে চায় না কিছুতেই। শহুরে এবং শীতকাতুড়ে বাঙালিও মাঙ্কি টুপি আর চাদর জড়িয়ে কাঁপতে কাঁপতে শীতের আমেজ উপভোগ করে। তবে শীতকালের সঙ্গে বাঙালির একটা অভ্যাস জড়িয়ে আছে বটে। খাদ্যরসিক বাঙালি ঠান্ডা পড়তেই আরও বেশি করে খাদ্যপ্রেমী হয়ে ওঠেন। চাইনিজ হোক বা ধোঁয়া ওঠা বিরিয়ানি, কন্টিনেন্টাল কিংবা দক্ষিণের খাবার— গোটাটাই রসনাতৃপ্তির উৎসবে মাতেন। কলকাতা শহর বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মোহনাস্থল।
পোশাকআশাক হোক কিংবা খাবারদাবার। চাইলে মেলে না এমন কিছু নেই। তাই নানা রকম খাবারের ভিড়ে যাতে হারিয়ে না যান, তার জন্য রইল শহরের সেরা কিছু খাবারের তালিকা। জেনে নিন কোথায় কী পাবেন।
আওয়াধি খাবার খেতে চাইলে
১৯২৯ সাল নাগাদ কলকাতায় প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় ‘আমিনিয়া’। শুরুর দিকে আমিনিয়া লখনউ ভিত্তিক বিভিন্ন আওয়াধি খাবার পরিবেশন করত। ধীরে ধীরে শহরের বুকে অন্যতম বিরিয়ানির দোকান হিসাবে জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। এখন তা তুঙ্গে। তবে এই শীতে শহরের মানুষের জন্য আমিনিয়া নিয়ে এসেছে নতুন কিছু আওয়াধি খাবার। যেমন— নালি নিহারি এবং তফ্তন( আওয়াধি রুটি), বিশেষ ভাবে তৈরি করা গাজরের হালুয়া।
নালি নিহারি এবং তফ্তন( আওয়াধি রুটি)।
কলকাতায় বসে তুরষ্কের খাবার খেতে চাইলে
ইদানীং নতুন প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘লর্ড অফ দ্য ড্রিঙ্কস’। শীতকাল উপলক্ষে খাদ্যতালিকায় বিশেষ বৈচিত্র এনেছেন এই রেস্তঁরা কর্তৃপক্ষ। ককটেল, বিয়ার, বেস লিকারের পাশাপাশি রয়েছে ক্লাসিক টার্কি পট পাই, স্প্যাগেটি, ম্যাপ্ল গ্লেজ্ড রোস্ট টার্কি। এছাড়াও শেষপাতে মিষ্টি মুখ করতে রয়েছে ক্র্যাব কেক, অরেঞ্জ ব্রাউনি, লেমন আইওলির মতো হরেক রকম খাবারের সম্ভার পেতে পারেন।
শীতের বিকালে গরম কফির কাপে চুমুক দিতে চাইলে
আজকালকার তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘পটবয়লার’ কাফেটি। শীতের মরসুমে এই কাফেতে পেতে পারেন বিভিন্ন ধরনের কফির স্বাদ। এখানে এসে চুমুক দিতে পারেন চকোলেট মোকা কফি, নলেন গুড় লাতে,হেজেলনাট ক্র্যাম্বেল লাতে, মিক্সড চকোলেট মোকা কফি। এছাড়াও পেতে পারেন ব্রকোলি ও আমন্ড স্যুপ, গ্লাস-নুডলসের মতো লোভনীয় খাবার। মিষ্টি জাতীয় খাবারের তালিকায় আছে স্ট্রবেরি ক্র্যাম্বেল প্যানকেক, নলেন গুড়ের আর বাদাম দিয়ে তৈরি চিজকেক।
গ্লাস-নুডলস।
স্ট্রবেরি ক্র্যাম্বেল প্যানকেক।
কব্জি ডুবিয়ে মাছ, মাংসের বৈচিত্রময় স্বাদ পেতে চাইলে
‘ক্যান্টিন পাব এবং গ্রাব’ কলকাতার বুকে গড়ে ওঠা বেশ জনপ্রিয় একটি রেস্তঁরা। মৎসপ্রেমী বাঙালির কথা মাথায় রেখেই মূলত ‘ক্যান্টিন পাব এবং গ্রাব’ তাঁদের শীতকালের বিশেষ খাদ্যতালিকায় রেখেছেন নতুনত্বের ছোঁয়া। এখানে আপনি পাবেন মুর্গমালাই সিজার সালাদ, তন্দুরি পর্ক বেলি, তাই পাই চিকেন, ব্রিক গ্রিলড চিকেন, কোরিয়ান প্রণালীতে তৈরি কাঁকড়া। এছাড়াও চিংড়ি মালাইকারি, চিকেন কষার মতো একেবারে ঘরোয়া বাঙালি রান্নারও স্বাদ নিতে পারেন।
শীতকালীন সন্ধ্যায় রকমারি সালাদের স্বাদ নিতে চাইলে
শীতের মরসুমে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে চাইলে যেতে পারেন ‘হার্ড রক কাফে’তে। এখানে পেতে পারেন চিকেন সিজার সালাদ, ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত কোবড সালাদ, স্মোকড বার্বিকিউ চিকেন, চিকেন বার্গার ইত্যাদি।
ভারতীয় থেকে চাইনিজ— এক ছাদের নীচে পেতে চাইলে
‘এল.এ বার অ্যান্ড কিচেন’ এই শীতে আপনার রসনাতৃপ্তিতে এনেছে বেশ কিছু ভিন্ন স্বাদের রকমারি খাবার। ব্রকোলি ক্রিম স্যুপ, চেলো কাবাব, পর্ক পেপারোনি পিৎজা, ল্যাম্ব স্প্যাগোটি। এছাড়া ভারতীয় খাবারের মধ্যে পাবেন টমেটো ধনিয়া শোর্বা, চিজ ভরা হরা ভরা কাবাব, মটন বুরা কাবাব। চাইনিজ খাবারে মধ্যে রয়েছে হুইস্কি চিকেন উইংস, পর্ক কোথে সুই মাই, ক্ল্যাসিক চিলি পর্ক। শেষপাতে পেতে পারেন ভ্যানিলা সিজলার, অ্যাপেল পাই।
চিজ ভরা হরা ভরা কাবাব।