মাংসের ভুনা খিচুড়ি দিয়েই জমবে ভোজ। ছবি: সংগৃহীত।
রবিবার রাত থেকেই দাপট বাড়তে থাকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের, উত্তাল হয়ে ওঠে সমুদ্র। পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় প্রভাব ফেলতে শুরু করে রেমাল। সোমবারেও প্রবল বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া। কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় জল জমেছে। সেই জল পেরিয়ে কেউ কেউ অফিস গিয়েছেন বটে, তবে অনেকেই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করছেন।
যখন-তখন ঝমঝমিয়ে নামছে বৃষ্টি। নাকে আসছে সোঁদা মাটির গন্ধ। অসহনীয় গরমের পর এ যেন এক টুকরো স্বস্তি। অকাল শ্রাবণ হলেও বৃষ্টি মানেই বাঙালির মনে উঁকি মারে খিচুড়ি। বাইরে অঝোর ধারায় বর্ষণ, ঠান্ডা হাওয়া আর গরম ধোঁয়া ওঠা খিচুড়ির মেলবন্ধন যেন স্বর্গসুখ এনে দেয় ভোজনরসিক বাঙালির মনে। বৃষ্টিভেজা দিনে সহজেই বানিয়ে ফেলতে পারবেন, রইল সুস্বাদু তেমন কয়েকটি খিচুড়ির রেসিপি।
মাংসের ভুনা খিচুড়ি
ননস্টিক কড়াই গরম করে আঁচ কমিয়ে ভেজে নিন মুগ ডাল। মুগ ডালের রং বাদামি হয়ে এলে নামিয়ে চালের সঙ্গে ধুয়ে জল ঝরাতে দিন। আর এক বার কড়াই গরম করে তাতে পেঁয়াজ কুচি ও গরম মশলা ভেজে নিন। পেঁয়াজ বাদামি হয়ে এলে তাতে অল্প জল দিয়ে দিন। কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করার পর আদা ও রসুন বাটা দিয়ে আর এক বার নেড়ে নিন। কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করার পর সব রকম গুঁড়ো মশলা ও নুন দিয়ে দিন। নাড়তে নাড়তে তেল ছেড়ে এলে হাড় ছাড়া পাঁঠার মাংসের টুকরো দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। মিনিট কুড়ি ঢাকা দিয়ে মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কিছু ক্ষণ পর ঢাকা খুলে চাল ও ডালের মিশ্রণটি মশলায় দিয়ে দিন। মিনিট দশেক আরও ভেজে নিন। চেরা কাঁচালঙ্কা দিয়ে দিন। ভাজা হয়ে এলে তাতে গরম জল ঢেলে দিয়ে আবারও ঢাকা দিয়ে দিন। এক কাপ চাল-চালের মিশ্রণ হলে হলে দু’কাপ জল দিতে হবে। খানিক পরে ঢাকনা খুলে আরও এক বার নাড়াচাড়া করে ১০ মিনিটের জন্যে দমে বসান। ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ঘি ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন মাংসের ভুনা খিচুড়ি।
নারকেল দিয়ে খিচুড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
নারকেল দিয়ে খিচুড়ি
কড়াই গরম করে শুকনো খোলায় ডাল হালকা করে ভেজে নিন। তার পর নামিয়ে আলাদা করে রেখে দিন। অন্য দিকে চাল ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন। এ বার কড়াইয়ে তেল ও ঘি দিন। তেল-ঘি গরম হলে তাতে তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, গোটা জিরে ও গোটা গরমমশলা দিন। এ বার চাল দিয়ে হালকা করে ভাজতে থাকুন। কিছু ক্ষণ নাড়ার পর একটু মিশে এলে ডাল দিয়ে ভাজুন। এ বার আদা-লঙ্কা বাটা, জিরে বাটা, হলুদ, নুন ও কাঁচা লঙ্কা দিয়ে নাড়তে থাকুন। এর পর সামান্য গরম জল দিন। অন্য একটি কড়াইয়ে তেল দিয়ে টুকরো করে কেটে রাখা আলু, গাজর, বিন্স, মটরশুঁটি ভেজে নিন। এ বার চাল ও ডাল একটু সেদ্ধ হয়ে গেলেই তাতে আলু ও সব্জি মিশিয়ে নাড়তে থাকুন। তার পর চিনি ও নারকেল কোরা উপর থেকে ছড়িয়ে দিন। সিদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ বন্ধ করুন ও উপরে গরম মশলা, ঘি ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন নারকেলের খিচুড়ি।
পালং খিচুড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
পালং খিচুড়ি
পালং শাক সেদ্ধ করে ধনেপাতা আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে ভাল করে বেটে নিন। এ বার কুকারে তেল গরম করে জিরে, তেজপাতা, ফোড়়ন দিয়ে ভেজে রাখা চাল-ডাল, নুন, হলুদ আর পরিমাণ মতো জল দিয়ে ভাল করে সিদ্ধ করে নিন। এ বার একটি কড়াইয়ে তেল গরম করে আদা, রসুন, দিয়ে ভাল করে ভেজে নিন। তার পর পেঁয়াজ কুচি, টম্যাটো কুচি, ধনে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো ভাল করে কষিয়ে নিন। মশলা থেকে তেল ছেড়ে এলে বেটে রাখা পালং শাকের মিশ্রণ দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। তার পর সিদ্ধ করা ডাল-চাল মিশিয়ে নিন। শেষে গরম মশলার গুঁড়ো ছড়িয়ে দিন। এ বার আর একটি কড়াইয়ে ঘি গরম করে রসুন কুচি, শুকনো লঙ্কা কুচি ভেজে খিচুড়ির উপরে ছড়িয়ে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু পালং খিচুড়ি।