শনি পোহালে রবিবারেই জামাইষষ্ঠী। পছন্দের মেনু নিয়ে সারা দিনই প্রায় হেঁশেলে সময় কাটানোর দিন। জামাইবরণ থেকে তার পাতে বাজারের সেরা উপাদান তুলে দেওয়ার ইচ্ছা কমবেশি সব শ্বশুর-শাশুড়িরই থাকে। সকালে আম-কাঁঠালের ফলাহার থেকে শুরু, রাতের পাতে লোভনীয় সব পছন্দের খাবারে সাঙ্গ হয় উৎসব।
তবে ব্যস্ততার যুগে অনেকেই বাড়িতে সব আয়োজন করে উঠতে পারেন না, কোনও পরিবার আবার প্রায় সারা বছরই বাইরে খেতে যাওয়ার নানা ছুতো খোঁজে। আবার কোথাও হাঁটুর ব্যথা, কোমরের অসুখে নাজেহাল শাশুড়িরা। তা বলে জামাইয়ের পাত কি শূন্য রাখা যায়? সে সম্ভাবনা যাতে বিন্দুমাত্র তৈরিই না হয়, সে আয়োজনেই এ বার শাশুড়িদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ‘চিলেকোঠা’। নামেই মালুম বাঙালি রান্নার ঠেক। বয়সে একেবারে নবীন হলেও জামাইষষ্ঠীর আয়োজনে পাকা খেলোয়াড়।
আম-কাঁঠালের মরসুমে আম দিয়ে নানা রান্নাকেই তাই শাশুড়িদের মুশকিল আসানের হাতিয়ার হিসাবে মজুত রাখছে ডোভার লেনের এই রেস্তরাঁ। সময়, পকেটসই কি না এ সব হিসেব তো কষতেই হবে, তবে তার আগে মেনু না জানলে কিন্তু ষোলো আনাই মাটি। কী থাকছে এ বার জামাইষষ্ঠীর বিশেষ মেনুতে?
আরও পড়ুন: মটন-হাঁস-তিতির-মাছ, কী নেই বিরিয়ানির থালায়! কলকাতার কোথায়? কত দাম জানেন?
ইলিশ আম-তেল। ‘চিলেকোঠা’-র জামাইষষ্ঠীর মেনুর অন্যতম আকর্ষণ।
‘চিলেকোঠা’-র ষষ্ঠীর থালা সাজছে প্রচলিত রান্নার সঙ্গে কিছু হারিয়ে যাওয়া রান্না ও আম-সহযোগে কিছু রান্না দিয়ে। এি গরমে শরীর-মন শীতল করার জন্য প্রথম পাতেই থাকছে শরবত। এ বার সাদা ভাত ও পোলাও দু’জনেই হাজির হবে পাতে। সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত পাঁচ রকম ভাজা (মাছ ভাজা –সহ)ও কড়াইশুটির ডাল। এর পর পোলাও, সব্জি, ভেটকি পাতুরি, ইলিশ আম তেল, ওপার বাংলার জনপ্রিয় পদ পাথর কষা মটন, মাছের ডিমের চাটনি, পায়েস ও আম জিলিপি।
এ ছাড়াও অর্ডার করতে পারেন এদের গ্রীষ্মের বিশেষ থালি ‘মাছ ম্যাঙ্গো মোর’-ও। এর মেনুতেও থাকচে নানা চমক। এই থালি অর্ডার করলে জামাইয়ের পাতে তুলে দিতে পারেন আম চিতল, পাবদা টক-ঝাল, রসকলি মুরগি, আম-কাসুন্দি মটন, আমসত্ত্ব পনির ও ভেজ পকোড়াও। আবার জামাই থালি অর্ডার করেও মাছ-ম্যাঙ্গো মোর থেকে পছন্দসই কোনও পদ অতিরিক্ত হিসাবেও নিতে পারেন।
নিরামিষাশীদের জন্যও মেনুতে থাকছে নানা বিকল্প। ভেজ পকোড়া থেকে শুরু করে আমসত্ত্ব পনির, আম-আঙুর চাটনি, আম কালাকাঁদ, আম ক্ষীর-সহ নানা লোভনীয় পদ।
জামাই থালির জন্য মূল্য পড়বে ১২০০ টাকা, সঙ্গে অতিরিক্ত কর। মাছ ম্যাঙ্গো মোর-এর থালি মিলবে মাত্র ১১৫০ টাকা ও অতিরিক্ত করের বিনিময়ে। জামাই থালির সঙ্গে অতিরিক্ত কিছু নিলে, নিয়ম অনুসারেই বিলে কেবল যোগ হবে করসহ সেই মেনুর আলাদা ধার্য দামটুকু।
আরও পড়ুন: শরৎ শেষের রোদ্দুরে রংবেরঙের ডানা মেলে উড়ে বেড়ায় প্রজাপতি বিস্কুট
আমসত্ত্ব পনির।
শুধু খাবারই নয়, জামাইষষ্ঠীর দিন শাশুড়িদের জন্য থাকছে একটি মজার খেলাও। লাকি ড্র-য়ে যে শাশুড়ির নাম উঠবে, তিনি এক দিনের জন্য পাবেন ‘চিলেকোঠা’-র রান্নাঘরে তাঁর পছন্দের পদ রান্না করতে। এবং তাঁর সেই পদ তিনি তো বিনামূল্যে পাবেনই, সঙ্গে টানা এক মাস ধরে ‘চিলেকোঠা’-র মেনুতে যোগ হবে সেই পদ।
চিলেকোঠার রান্নার স্বাদ ও গন্ধ এমনিতেই বাঙালি কুইজিনে ছাপ ফেলেছে ইতিমধ্যে। ৭/বি, ডোভার লেনের এই রেস্তরাঁ জামাইষষ্ঠীর দিন খোলা থাকবে বেলা ১২ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত। অতএব হেঁশেল থেকে ছুটি নিয়ে আপনিও সে দিন ঘরোয়া আড্ডা ও গল্পের মজলিশে নিজেকে জুতে দিতেই পারেন, ‘রান্নাবান্না কে করবে’— এই অবধারিত দুশ্চিন্তার ফাঁদে পা না দিয়েই।