সুরসাধক: দিলীপকুমার রায়। তাঁর হাসির মতো সঙ্গীতও ছিল অমলিন
বলতেন, তাঁর অনুভবই তাঁর গান। সঙ্গীতজ্ঞ বাবাকে খুব বেশি দিন পাননি। নিজের রাস্তা তৈরি করেছিলেন নিজেই। পাশ্চাত্যের উন্মাদনা, প্রাচ্যের তানের সঙ্গে নিজস্ব ঈশ্বরচেতনা তাঁর সঙ্গীতের অনুপান। আজও তাঁর গান গাওয়ার লোক বড় কম। তাই হয়তো কখনও সে ভাবে আলোচিত হননি দিলীপকুমার রায়। আগামী শনিবার তাঁর জন্মের ১২৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে।
দিলীপকুমার রায়, কবি নাট্যকার ও সঙ্গীতস্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সুযোগ্য পুত্র। তাঁর নাম উচ্চারণ করলেই মানসপটে ভেসে ওঠে দিব্যকান্তি, প্রসন্নচিত্ত, স্নিগ্ধ হাস্যময় এক জন মানুষের মুখচ্ছবি। তাঁকে শুধু কবি বললে সবটা বলা হয় না। তিনি ছিলেন সুরসাধক, ঈশ্বরে নিবেদিতপ্রাণ, এক শান্ত উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বময় পুরুষ।
এই বছরটিতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবর্ষ নিয়ে দিকে দিকে নানা অনুষ্ঠান। দিলীপকুমার রায়, বয়সে সুভাষচন্দ্র বসুর চেয়ে ঠিক এক দিনের বড়। তাঁর জন্মতারিখ ১৮৯৭ সালের ২২ জানুয়ারি। জন্মস্থানে কলকাতা। বয়সে এক দিনের ছোট-বড় এই দুই কৃতী ব্যক্তিত্ব পরস্পরের বন্ধু ছিলেন।
দিলীপকুমার শিশু বয়সে, মাত্র ছ’বছর বয়সে তিনি মা সুরবালা দেবীকে হারান। ষোলো বছর বয়সে, তাঁর পিতা দ্বিজেন্দ্রলালও যাত্রা করেন অমৃতলোকে। ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিয়ে জন্মেছিলেন তিনি, তাই পরম্পরার ঐতিহ্য তিনি সার্থক ভাবে বহন করে নিজেও হয়ে উঠতে পেরেছিলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
বহু কৃতী মানুষ সে ভাবে আলোয় আসেন না বা আলোচিত হন না। অন্ততপক্ষে যতটা সম্মানিত বা সমাদৃত হওয়ার কথা ছিল, ততটা হন না। দিলীপকুমার রায়ও তেমনই। কিন্তু সাঙ্গীতিক শিক্ষার বাইরেও তিনি যে কতখানি মেধাবী ছিলেন, তা তাঁর জীবনের ইতিহাস দেখলে বোঝা যায়।
কলকাতার মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনে তাঁর শিক্ষার সূচনা। ১৯১০ সালে তৃতীয় শ্রেণিতে এই স্কুলে ভর্তি হন তিনি। ১৯১৩ সালে মেধাবৃত্তি-সহ তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। সে বছরেই ১৭ মে তারিখে প্রয়াত হন দ্বিজেন্দ্রলাল। পিতাকে হারিয়ে কষ্ট পেলেও মনোবল হারাননি তিনি। দৃঢ় মানসিক চরিত্রের অধিকারী দিলীপকুমার ১৯১৩ সালেই প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৯১৮ সালে গণিতে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক হন। ১৯১৯ সালে তিনি পাড়ি দেন ইংল্যান্ডের কেম্ব্রিজে, গণিত বিষয়ে উচ্চশিক্ষা করার উদ্দেশ্যে। তখনই তিনি সহপাঠী হিসেবে পেয়েছিলেন সুভাষচন্দ্রকে। কেম্ব্রিজে গণিতের সঙ্গে সঙ্গে লেখাপড়া করেন সঙ্গীত নিয়েও। কেম্ব্রিজ থেকে তিনি পাশ করেছিলেন ১৯২১ সালে।
কেম্ব্রিজ থেকে পাশ করার পর শুরু হয় দিলীপকুমারের সঙ্গীতসফর। প্রথমে যান বার্লিনে। তার পর জার্মান ও ইটালিয়ান ভাষা শিক্ষা করেন, চালিয়ে যান পাশ্চাত্য রীতিতে কণ্ঠচর্চা এবং পিয়ানো চর্চাও। এই সময়ই দিলীপকুমার সান্নিধ্য লাভ করেন
রম্যা রঁলার। তাঁর প্রয়াসেই দিলীপকুমার ‘ইন্টারন্যাশনাল পিস অ্যান্ড ফ্রিডম সোসাইটি’-র পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত হন এবং সুইটজ়ারল্যান্ডের লুগানো-তে ভারতীয় সঙ্গীত বিষয়ে ভাষণ দেন।
দিলীপকুমারের সঙ্গীতরসের পিপাসা ছিল আকণ্ঠ। বিদেশি সুরচর্চায় নিজেকে তৈরি করেই তিনি থেমে যাননি। ১৯২২ সালে দেশে ফিরে, ভারতীয় সঙ্গীতের ঐতিহ্য ও পরম্পরার খোঁজে তিনি বেরিয়ে পড়েন ভারতভ্রমণে। দেশে ফিরে বাংলা গানের জন্য যা তিনি সংগ্রহ করলেন, বহুমূল্য রত্ন সংগ্রহেরই শামিল। গানপাগল তরুণ ভারতের বহু সুরসাধনার আখড়ায় ঘুরেছেন। বিভিন্ন বাইজিদের কাছেও গিয়েছেন গান শুনতে, আত্মস্থ করতে। এই সময় তিনি বহু গুণিজনের সান্নিধ্যলাভ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে আবদুল করিম খান, ফৈয়াজ় খান, পণ্ডিত ভাতখণ্ডে, চন্দন চৌবে, হাফিজ় আলি খান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
দিলীপকুমার আবার বিদেশে যান ১৯২৭ সালে। সুরের সমুদ্রে ঝিনুক কুড়োনো আর মুক্তা সংগ্রহ করাই ছিল তাঁর জীবনের উদ্দেশ্য। তিনি যেন ছিলেন সুরের জাদুকর। বিদেশি সুরের গতি, উন্মাদনা, ওঠাপড়া যেমন আত্মস্থ করেছিলেন, তেমনই গ্রহণ করেছিলেন ভারতীয় সুরের বৈচিত্র, চমক, কারুকাজ, তার আনন্দ-বেদনার অনুভূতি। বাংলা গানের মীড়, গমক, তান, পাশ্চাত্যের সুর মিলিয়ে মিশিয়ে সঙ্গীতের বিশ্বজনীন ভাষ্য রচনায় মেতে উঠেছিলেন তিনি। নিজে অত্যন্ত সুকণ্ঠের অধিকারী ছিলেন। তাঁর সৃষ্ট গান তাঁর নিজের গলায় শ্রোতাদের এক অন্য জগতে নিয়ে যেত। তাঁর বিখ্যাত গান ‘সেই বৃন্দাবনে লীলা অভিরাম সবই আজও পড়ে মনে মোর’ বা ‘রূপে বর্ণে ছন্দে আলোকে আনন্দে/ কে এলে গো মেলে পাখা?’ শুনলে আজও বিভোর হয়ে যেতে হয়। সৃষ্টির আনন্দেই তিনি রচনা করতেন গান। বাংলা সঙ্গীতের জগতে আধুনিকতার নির্মাণে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক অলৌকিক কিন্নর। দিলীপকুমার বলতেন, ‘‘আই সিং হোয়াট আই ফিল।’’
১৯২৮ সালে দিলীপকুমার পণ্ডিচেরির শ্রীঅরবিন্দ আশ্রমে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেন এবং এই সময় থেকেই শুরু হয় তাঁর যোগজীবন। পণ্ডিচেরিতে থাকার সময়ও সঙ্গীত বিচ্যুত হয়নি তাঁর জীবন থেকে। কলকাতায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন গানের জন্যই, এ সময় বহু রেকর্ডও বের করেছিলেন। প্রিয় শিষ্যা উমা বসুকে দিয়ে তিনি বহু গান রেকর্ড করিয়েছিলেন। উমা বসুর কণ্ঠে দিলীপকুমারের গান যেন এক অনন্য মূর্ছনার সৃষ্টি করত। উমা বসুর আকস্মিক প্রয়াণ দিলীপকুমারকে ব্যথিত করেছিল। ১৯৪৯ সালে পণ্ডিচেরিতে তাঁর শিষ্যা কন্যা ইন্দিরাকে দীক্ষা দিয়েছিলেন দিলীপকুমার। এর পর ১৯৫০ সালে শ্রীঅরবিন্দের প্রয়াণে একটু হলেও থমকে যায় তাঁর জীবন। তবু সব আঘাতের মতো একেও বুকে নিয়েই চলিষ্ণুতা বজায় রাখলেন তিনি। ১৯৫৩ সাল থেকে তিনি ইউরোপ, আমেরিকা-সহ বিশ্বের নানা দেশে সঙ্গীত পরিবেশন করে মুগ্ধ করলেন শ্রোতাকুলকে। তিনি যে অসংখ্য গান রচনা করেছিলেন তার মধ্যেই ছিল দেশমাতৃকার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করে তৈরি বহু দেশাত্মবোধক গান। এখানে বন্ধু সুভাষচন্দ্রের বন্ধুত্বের প্রভাব তাঁর উপর পড়েছিল বলে অনেকে মনে করেন।
গীতিকবি অতুলপ্রসাদ সেনের সঙ্গে দিলীপকুমারের সম্পর্ক ছিল খুবই গভীর। অতুলপ্রসাদের সৃষ্ট ঠুংরি, কীর্তন নানা ভাবে গেয়ে গানগুলিকে বহুল জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। এ প্রসঙ্গে এক বার দিলীপকুমার নিজেই বলেছিলেন, “মনে পড়ে কাশীতে একবার গেয়েছিলাম অতুলপ্রসাদের একটি অনবদ্য কীর্তন। কীর্তনের রস বইয়েছেন নিজের স্বকীয় সুরকার প্রতিভার আহ্বানে। গানটি শুনেছিলেন দু’জন বিশিষ্ট গুণী, উভয়েই শ্রীবিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর মন্ত্রশিষ্য, শ্রীরেবতীমোহন সেন ও কিরণচাঁদ দরবেশ। রেবতীমোহন ছিলেন কীর্তনীদের মুকুটমণি, কিরণচাঁদ দরবেশ ভাবুক বাউল। দু’জনেই ‘আহা, আহা’ করে উঠেছিলেন গানটি শুনে। কিরণচাঁদ বললেন, ‘মরি মরি, পরাণে লাগলে ব্যথা ভাবি বুঝি আমায় ছুঁলে— এ চরণটির তুলনা নেই।’ রেবতীবাবুরও চোখে জল। শুধু পুণ্যভূমি কাশীতেই নয়— ধূমল কলকাতার এক ওস্তাদ আসরে, ম্যাডান থিয়েটার রঙ্গমঞ্চেও একবার আমি ওস্তাদের দুর্দান্ত ওস্তাদির পর বুক ঠুকে আধঘণ্টা ধরে গেয়েছিলাম গানটি। শুনে সভায় সে কী জয়ধ্বনি।” অতুলপ্রসাদের যে গানটি প্রসঙ্গে এই কথাগুলো বলেছিলেন দিলীপকুমার, সেই গানটি হল ‘আর কতকাল থাকবো বসে, দুয়ার খুলে বঁধু আমার।’
১৯৫০ সালে শ্রীঅরবিন্দের প্রয়াণের পর ১৯৫৩ সালে সর্বত্যাগী দিলীপকুমার প্রথমে বন্ধু চুনীলালের আমন্ত্রণে তাঁর পুণের গৃহে বসবাস করেন এবং তার পরে নিজেই স্থাপন করেন তাঁর আরাধ্যের দেবালয়, হরিকৃষ্ণ মন্দির। তিনি ছিলেন কৃষ্ণগত প্রাণ। বাঁশের বাঁশির সুরেই তিনি বার বার অনুভব করেছেন প্রাণপ্রিয় ইষ্টকে। ভাবে আকুল হয়ে কখনও বাংলায় কখনও হিন্দিতে রচনা করেছিলেন বহু কৃষ্ণভজন।
কৈশোর পেরিয়েই বাবাকে হারিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু বাবার শেখানো আদর্শ থেকে ভ্রষ্ট হননি কখনও। দিলীপকুমারের স্মৃতিচারণ থেকেই পাওয়া যায়, দ্বিজেন্দ্রলাল তাঁর পুত্রকে বলতেন, “আর যাই করিস বাবা, দু’টি কাজ করিসনি। মিথ্যাচার আর খোশামোদ। আর একটি কথা সর্বদাই মনে রাখিস— যে, ঠিক ভুল হলে ভয় নেই যদি সত্যনিষ্ঠা থাকে, কিন্তু সত্যে যদি আঁট না থাকে তবে শেষে দেউলে হতেই হবে। কারণ জীবনের বনিয়াদেই সত্য— তাকে ছাড়লে দাঁড়াবি কোথায়?”
দ্বিজেন্দ্রলাল রায় প্রথম জীবনে ছিলেন নাস্তিক। স্ত্রীবিয়োগের পর তাঁর জীবনে পরিবর্তন আসে।
মাত্র ১৫ বছর বয়সি দিলীপকুমারকে তাঁর বাবা বলতেন, ‘সব কিছুই যাচিয়ে নিবি বাজিয়ে নিবি... ধাঁ করে মেনে নিসনি কোনো কিছুকে অকাট্য সত্য বলে... তর্ক বিচার প্রবৃত্তি আমাদের খানিকটা দেখতে শেখায় বৈকি কোনটা টেকসই, কোনটা অপল্কা।’ সেই যাচাই করতেই দিলীপকুমার বার বার ছুটে গেছেন দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব সম্বন্ধে জানতে— সত্যিই কি তিনি ভগবান? তাঁর পিসতুতো দাদা তাঁকে নিয়ে গেছেন ঠাকুরের অমৃতকথার লিপিকার শ্রীম, অর্থাৎ মহেন্দ্রনাথ গুপ্তের কাছে। তিনি দিলীপকুমারকে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘কেন এসেছ?’
সমস্ত তর্কচিন্তা, যাচাই করার ভাবনা ভুলে গিয়ে দিলীপকুমার বলেছেন, ‘এসেছি ঠাকুরের কথা শুনতে।’ শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে শ্রীম সকলকে ডেকে ডেকে বলেছেন, ‘আহা, তোমাদের এ পূর্বজন্মের সুকৃতি নইলে কি এমন জিজ্ঞাসা জাগে তোমাদের বয়সে?’ এই অধ্যাত্মচেতনাসম্পন্ন দিলীপকুমার যে উত্তরজীবনে কৃষ্ণপ্রাণ হয়ে উঠবেন, তাতে আর আশ্চর্য কী!
দিলীপকুমারের রচিত গানের সংখ্যা যত, গানে বৈচিত্রও ততোধিক। তাঁর গান সহজ নয়, গাইতে হলে বহু চর্চা ও অধ্যবসায় প্রয়োজন। দিলীপকুমারের গানের একেবারে স্বতন্ত্র একটি গায়নভঙ্গি ছিল, যাকে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ‘দৈলিপী ঢং’। তাঁর গায়নভঙ্গিকে আত্মস্থ করা খুব একটা সহজ হয়নি কখনওই। তরঙ্গের মতো সুরবিন্যাস, তার সঙ্গে গানের কথার অর্থগত সাযুজ্য এবং চলনে এক আধ্যাত্মিক দর্শন সুস্পষ্ট। ওই তানকর্তব এবং ভাবপ্রবণতা অনুসরণ করে গাইতে গিয়েও খেই হারিয়েছেন অনেকেই। আজও তাঁর গান গাওয়ার লোকের বড় অভাব। পুরনো দিনের বহু মানুষ সাগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন, আয়োজন হয় না। হলেও সেভাবে তার প্রচার হয় না। একেবারে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যেমন সুরকাব্য ট্রাস্ট, শ্রীঅরবিন্দ ভবন, শ্রীঅরবিন্দ ইনস্টিটিউট অব কালচার— এঁরাই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। সুরকাব্য ট্রাস্ট নিয়ম করে প্রতি বছর ২২ জানুয়ারি তাঁর জন্মদিন পালন করে আসছে সঙ্গীতানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। তাঁর হাতে তৈরি হরিকৃষ্ণ মন্দির আজও তাঁর স্মৃতি ও ঐতিহ্য বহন করে চলেছে পুণেয়। সেখানেই আমৃত্যু ঈশ্বরসাধনায় ব্রতী ছিলেন এই অনন্য সঙ্গীতব্যক্তিত্ব।
৮৩ বছর বয়সে, ১৯৮০ সালের ৬ জানুয়ারি পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন দিলীপকুমার। মৃত্যুর পরদিন দিলীপকুমার প্রতিষ্ঠিত হরিকৃষ্ণ মন্দিরেই হয় শেষকৃত্য। এই মন্দিরেই তাঁর সমাধির গায়ে উৎকীর্ণ তাঁরই রচিত দু’টি পঙ্ক্তি— ‘‘প্রেম আমার সাধন জানি,/ আমার জীবন মানি/ বন্ধনে মণিমুক্তোতারা প্রেম/ বিরহে প্রেম উদ্দীপন, মিলনে প্রেম উন্মাদন।’’— যেন তাঁর জীবনের দর্শনভাষ্যকেই তুলে ধরে।
তাঁর সুরের ঐশ্বর্যে ডুবে গিয়েই মন যেন তাঁর উদ্দেশে বার বার নীরবে বলতে চায়— পূজা আমার সাঙ্গ হলো/ হৃদয় মাঝে তোমায় পেয়ে/ এখন শুধু চলছি পথে/ তোমারি গান গেয়ে গেয়ে...