বিচিত্র: বাঁ দিকে ২৩তম সংখ্যার জন্য সত্যজিতের আঁকা টেলপিস। ডান দিকে উপরে অলঙ্করণ ‘নবাব ও শূকরী’, নীচে ‘আম আঁটির ভেঁপু’র সেই ছবি
ভোর সাড়ে-পাঁচটা। অপু জল আনতে গঙ্গায় গেছে— এই দৃশ্য নিয়ে শুরু করা গেল। ঠিক ছিল অপুকে সামনে রেখে একটা লংশট্ নেব, দৃশ্যের অন্যপ্রান্তে থাকবে একলা একটি পালোয়ান, আর কেউ না। কিন্তু ততক্ষণে স্নানার্থীরা ঘাটে এসে গেছে, দৃশ্যটি না-তোলা পর্যন্ত স্নান থেকে বিরত করে তাদের ক্যামেরা ফিল্ডের বাইরে রাখতে গিয়ে আমাদের হিমসিম খেতে হল।”— লিখেছেন সত্যজিৎ রায়। তাঁর রোজনামচায়, ১৯৫৬-র ২২ মার্চ তারিখে। ‘অপরাজিত’-র শুটিং চলছে তখন। ইংরেজিতে সেই ডায়েরি বিখ্যাত হলেও বাংলায় লেখা সত্যজিতের এই এক টুকরো ‘বারাণসীর ডায়েরি’ বেরিয়েছিল পরের বছরে, সিগনেট প্রকাশিত ‘টুকরো কথা’য়। ১ মার্চ থেকে ২২ মার্চের মধ্যে সাতটি তারিখের দিনলিপি ছিল সেখানে, সেই সঙ্গে তাঁর আঁকা পাঁচটি অলঙ্করণ।
এর বছর দুয়েক আগে, ‘টুকরো কথা’র আশ্বিন সংখ্যার প্রচ্ছদপৃষ্ঠার শিরোনাম ছিল: ‘বাঙালীর গৌরব ‘পথের পাঁচালী’’। সেখানে লেখা হল, ‘তাঁর (সত্যজিতের) আঁকা ছবি কিম্বা প্রচ্ছদপটের সঙ্গে বাঙালী পাঠকের খুবই পরিচয় আছে। বিশেষ করে ‘টুকরো কথা’র পাঠকের। এবং ‘পথের পাঁচালী’র কিশোর-সংস্করণ ‘আম আঁটির ভেঁপু’ যাঁরা পড়েছেন তাঁরা সে বইতেও সত্যজিৎ রায়ের আঁকা অনেক ছবি দেখতে পাবেন।” সত্যজিতের সঙ্গে সিগনেটের সম্পর্ক কতটা নিবিড়, বিশ্বনন্দিত ছায়াছবিটির সঙ্গে কী ভাবে জড়িয়ে আছে তা, সেই দাবি যেন আরও জোরালো হল এর পরের কথাগুলিতে: ‘এই বইটির কথা এ-সূত্রে এই জন্য বিশেষ করে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে এতে আঁকা ছবিগুলি পুনরায় চলচ্চিত্রে দেখতে পেয়ে পাঠক-দর্শকরা বুঝবেন কত দীর্ঘদিন ধরে এই ফিল্মটি তৈরি করার জন্য তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে মনে-মনে প্রস্তুত হচ্ছিলেন।’ কথাগুলির সপক্ষে প্রমাণ এনে হাজির করা হল পরের দু’টি পৃষ্ঠায়। সেখানে উপরের দিকে মুদ্রিত হল ‘আম আঁটির ভেঁপু’ থেকে সত্যজিতের দশ বছর আগে আঁকা ছবি, তার ঠিক নীচে দশ বছর পরে তোলা ফিল্মের সেই দৃশ্যের স্থিরচিত্র। একটিতে প্রবল বৃষ্টিতে গাছতলায় অপুকে নিজের আঁচলে ঢেকে রাখার মরিয়া চেষ্টায় দুর্গা, অন্যটিতে পাঠশালায় প্রসন্ন গুরুমশায়ের বিখ্যাত সেই দৃশ্য। সত্যজিৎ রায় এক স্মৃতিকথনে লিখেছেন: ‘সত্যি বলতে কি, ডি. কে-কৃত ‘পথের পাঁচালী’র সংক্ষিপ্ত সংস্করণ ‘আম আঁটির ভেঁপু’ আমাকে চিত্রনাট্যের কাঠামো নির্ধারণ করতে অনেকটা সাহায্য করেছিল।’
‘টুকরো কথা’ বাংলা সাহিত্যে এক অদ্বিতীয় সংঘটন। এটি একটি বিশেষ বিবৃতিপত্র যেখানে এক-একটি মাসে প্রকাশিত এবং প্রকাশ আসন্ন এমন গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের পরিচয় স্বল্প কথায় লেখা হত। প্রকাশক সিগনেটের বইয়ের খবরের পাশাপাশি অন্যান্য প্রকাশনার বই-সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ এর মূল উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়িত করেছিল। সিগনেটের কর্ণধার দিলীপকুমার গুপ্তর উদ্দেশ্য ছিল রুচিমান পাঠকগোষ্ঠী তৈরি করা। আর সে কারণেই পাঠকের কাছে ভাল বইয়ের সংবাদ পৌঁছে দেওয়া অতি জরুরি। ব্যবসায়ী মনোবৃত্তির ঊর্ধ্বে ছিল ডি. কে.-র বিচরণ। তাঁর সুচারু পরিকল্পনার অঙ্গ হয়ে ‘টুকরো কথা’ গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে হয়ে উঠেছিল পাঠক-লেখক-প্রকাশক সেতুবন্ধ রচনার অনন্য প্রচেষ্টা। তবে প্রথম সংখ্যাটির নাম ছিল ‘নতুন পাণ্ডুলিপি’। কুড়ি পৃষ্ঠার এই পুস্তিকা পরের সংখ্যায় আকারে হয়ে যায় ভাঁজপত্র (ফোল্ডার), নতুন নাম নেয় ‘টুকরো কথা’। ডি. কে.-র সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কবি ও প্রাবন্ধিক নরেশ গুহর কলমে লিখিত হত এই অদৃষ্টপূর্ব নবপত্রিকা, আর তাকে সাজিয়ে তুলতেন সত্যজিৎ রায়। শুধুমাত্র অন্তিম সংখ্যার লেখক ছিলেন প্রাবন্ধিক নৃপেন্দ্র সান্যাল। প্রথম দিকে উল্লেখযোগ্য পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন-ক্রোড়পত্রের মতো করে ছাপানো হত, পরে সিগনেট ভাঁজপত্র বা পুস্তিকা আকারে ছাপতে শুরু করে। প্রকাশনার দু’টি বিপণি থেকে বিনামূল্যে বিতরণ ছাড়া, দূরের আগ্রহী যাঁরা, তাঁদের কাছে নিয়ম করে বিনা ডাকখরচে পৌঁছে যেত। কতটা জনপ্রিয় হয়েছিল এই বিবৃতিপত্র তা বোঝা যায় লীলা মজুমদারের কথনে: “দিলীপকুমারের ‘টুকরো কথা’য় কী চমৎকার সব বইয়ের মূল্যায়ন হ’তো।…পাঠকের মতামত সম্বলিত সব ‘টুকরো কথা’গুলিকে কেন রেখে দিইনি ব’লে আজ আমার আক্ষেপের শেষ নেই।”
১৯৪৪-এ সিগনেট প্রেসের যাত্রা শুরু। বইয়ের প্রচ্ছদ অঙ্কন, ইলাস্ট্রেশন, বিজ্ঞাপন লিখন ইত্যাদির মূল দায়িত্বে সত্যজিৎ রায়। এর ছয় বছর পরে, ১৯৫০-এর জুলাই মাসে ডি. কে.-নরেশ গুহ-সত্যজিৎ রায়ের ত্র্যহস্পর্শে এই বিবৃতিপত্রের আত্মপ্রকাশ। প্রথম সংখ্যায় লেখা হল সুকুমার রায়ের ‘খাই-খাই’ বইটির কথা: “…প্রতি পাতায় সত্যজিৎ রায়ের আঁকা ছবি। সত্যজিৎ রায়ের পিতা সুকুমার রায়। সাহিত্যে এমন যোগাযোগ দুর্লভ।” নমুনা হিসেবে এবং পত্রসজ্জার প্রয়োজনে দু’টি অলঙ্করণ ছাপা হল এর সঙ্গে। দ্বিতীয় সংখ্যা নাম বদলে ‘টুকরো কথা’ হলে এর নামাঙ্কন সত্যজিৎ রায় করলেন যা একটানা ৩৯তম সংখ্যা পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ৪০ ও ৪৪, আরও দু’বার দু’টি সংখ্যায় সত্যজিৎ রায় নামাঙ্কনটি বদলেছিলেন।
দ্বিতীয় সংখ্যার শেষাংশে ব্যবহার করা হল সত্যজিতের করা অসাধারণ একটি বিজ্ঞাপন-অঙ্কন: ‘সিগনেট বুকশপ শনিবার সারাদিন খোলা থাকে।’ মুদ্রণ-জগতের পরিভাষায় একে ‘টেলপিস' বলে। আয়তাকার চৌহদ্দিতে বাক্যটিকেই ছবি করে তোলার তথা অক্ষরবিন্যাসের অনন্য মুনশিয়ানা সদ্য-ত্রিশ সত্যজিতের জাত চিনিয়ে দেয়। সতেরো সংখ্যার টেলপিসে ধুতি-পাঞ্জাবি-উত্তরীয় শোভিত, কোঁচা ও চশমালাঞ্ছিত নিপাট এক বাঙালি ভদ্রলোক দুই হাত দুই দিকে টানটান করে মেলে দিয়ে কী বলতে চাইছেন? কলেজ স্ট্রিটের পর সিগনেটের বইবিপণি দেশপ্রিয় পার্কে খোলা হয়েছে, সেই বার্তাই দিতে চান ভদ্রলোকটি। হাস্যমুখ বাবুটির আকার যদি আপনাকে কম্পাসের কথা মনে করায় তবে আপনি দ্রুত বুঝে যাবেন প্রসারিত দুই হাত নির্দেশ করছে উত্তর আর দক্ষিণ কলকাতাকে।
একই ভাবে মন ভাল করে দেবে সত্যজিৎ-কৃত ২৩তম সংখ্যার টেলপিসটি। যামিনী রায়-ঘেঁষা এক আয়তচক্ষু ঘোমটা পরা বধূ, বুকের কাছে দুই হাতে ধরে আছেন একটি বই। ক্যাপশনে লেখা: ‘মনের মতো বই পাবেন’। মনের সঙ্গে হদয়ের যোগাযোগে নারীটির বুকের কাছে বই ধরে রাখার সত্যজিৎসুলভ সহজ অথচ গভীর প্রতীকী ব্যঞ্জনায় রসিকমাত্রেই মুগ্ধ হবেন। ৩৩তম সংখ্যার ‘টুকরো কথা’য় বিজ্ঞাপনী টেলপিসে সত্যজিৎ আঁকলেন দাঁড়ে বসা এক টিয়াপাখি। সে খাবারের পাত্রের উল্টোমুখী, উদ্গ্রীব হয়ে ঠোঁট খুলেছে: ‘সিগনেটে বই কিনে সুখ আছে’। প্রসঙ্গত, এগুলি পরবর্তী বিভিন্ন সংখ্যায় ঈষৎ ভোল পাল্টেও ব্যবহার করা হয়েছে।
এই ভাবে প্রায় সাত বছর ধরে প্রকাশিত মোট চুয়াল্লিশটি ‘টুকরো কথা’য় ছড়িয়ে আছে সত্যজিৎ রায়ের করা হেডপিস, টেলপিস, অলঙ্করণ, প্রতিকৃতি, প্রচ্ছদ ইত্যাদির অজস্র নমুনা। জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের ‘পরমপুরুষ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ’, লীলা মজুমদারের ‘পদিপিসীর বর্মিবাক্স’, বিষ্ণু দে-র ‘নাম রেখেছি কোমল গান্ধার’, নরেশ গুহর ‘দুরন্ত দুপুর’-এর প্রচ্ছদ যেমন পত্রসজ্জায় অথবা বইকথনে ব্যবহার করা হয়েছে, তেমনই পাতা সেজেছে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রাজকাহিনী’, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভোঁদড় বাহাদুর’, সুকুমার রায়ের ‘পাগলা দাশু’ বা লীলা মজুমদারের ‘দিন দুপুরে’ বইয়ের অলঙ্করণ দিয়ে। আবার গোপালচন্দ্র রায়ের ‘শরৎচন্দ্রের বৈঠকী গল্প’ বইটির সংবাদের সঙ্গে সত্যজিতের যে অলঙ্করণটি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটি মূল গ্রন্থে মুদ্রিত হয়নি। ‘নবাব ও শূকরী’র এই অঙ্কনটি এখনও পর্যন্ত ৪০তম ‘টুকরো কথা’র ‘এক্সক্লুসিভ’ হয়ে আছে। এ ছাড়া সত্যজিৎ বিভিন্ন সময়ে এই বিবৃতিপত্রের প্রয়োজনে এঁকেছেন যামিনী রায়, নন্দলাল বসু, জীবনানন্দ দাশ, কাজি নজরুল ইসলাম, জেমস জিন্স-এর প্রতিকৃতি। ২৫ বৈশাখকে কেন্দ্র করে ডি. কে. প্রচলন করেছিলেন ‘কবিপক্ষ’ উদ্যাপন। ১৫ নম্বর ‘টুকরো কথা’-য় নানা আয়োজনে ভরা সেই কবিপক্ষের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা থাকলেও ২৪তম সংখ্যায় প্রথম পাওয়া গেল এই বিষয়ে সত্যজিৎ-কৃত আর্টওয়ার্ক; এমন আর একটি কাজ ‘আশ্বিনে কেনার মতো বই’ শুধু দৃষ্টিসুখকরই নয়, শারদ উৎসবের আবহে আলপনার মোটিফ ব্যবহারে এক কথায় অনবদ্য। এমন নয় যে ‘টুকরো কথা’য় উল্লেখ করা আছে কোন আর্টওয়ার্কটির পিছনে লুকিয়ে আছে কোন শিল্পীর হাতযশ; আঠারো বছর আগে সমরেন্দ্র সেনগুপ্তের ‘বিভাব’ পত্রিকা নরেশ গুহর সম্পাদনায় ‘টুকরো কথা’র সটীক সঙ্কলন প্রকাশ না করলে প্রাসঙ্গিক অনেক তথ্যই বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যেত।
গত শতকে পঞ্চাশের দশকের মধ্যপর্বে ভারত সরকার প্রকাশন ও মুদ্রণকর্মের উৎকর্ষ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতারও আয়োজন শুরু করে। প্রথম বছরে নানা ধরনের মুদ্রণ-নমুনার তিন হাজার সেরা নিদর্শন বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে মুদ্রিত গ্রন্থের সংখ্যা ছিল হাজারের কাছাকাছি। সুকুমার রায়ের ‘খাই-খাই’ বইয়ে ছবি আঁকার জন্য শিল্পীর প্রথম পুরস্কার পান সত্যজিৎ রায়। ৪২তম ‘টুকরো কথা’ এই সংবাদ জানিয়েছে প্রচ্ছদে। তেতাল্লিশে আসছে আর একটি সুখবর: দিল্লিতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক গ্রন্থ প্রচ্ছদ প্রদর্শনীতে স্বর্ণপদক পেয়েছেন সত্যজিৎ রায়। পুরস্কারপ্রাপ্ত সুধীন্দ্রনাথ দত্তের ‘সংবর্ত’ গ্রন্থের প্রচ্ছদটিও ছাপা হয়েছিল এই টুকরো সংবাদটির সঙ্গে।
ডি. কে- সংস্পর্শে সত্যজিৎ যখন এলেন, তখন সদ্য শান্তিনিকেতন-ফেরত সুকুমার-পুত্রের বয়স তেইশ। ‘কীমার’ বিজ্ঞাপন সংস্থায় চাকরির পাশাপাশি গ্রন্থ-প্রকাশনায় সিগনেট প্রেসের রাজকীয় সিলমোহরের ছাপ রেখে যাবার দায়িত্বটাও সত্যজিৎ নিয়ে নিলেন নিজের চওড়া কাঁধে। প্রচ্ছদ, ইলাস্ট্রেশন, বিজ্ঞাপন— সব কিছুতেই সেরার সেরা তিনি সেই সময়েই। দিলীপকুমার গুপ্ত তাঁকে দিয়ে নিজের স্বপ্নপূরণ করাতে পেরেছিলেন, কারণ ডি. কে.-র প্রতিভা এই বিষয়ে বিস্ময়কর। প্রথম থেকেই সিগনেটের স্থায়ী আর্টিস্ট হিসেবে এলগিন রোডের অফিস ঘরে বসে সত্যজিতের একমাত্র কাজ ছিল ‘বিনা প্রয়োজনে এন্তার রেখাচিত্র এঁকে ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা’। নীলিমা দেবী মন্তব্য করেছেন: ‘‘আম আঁটির ভেঁপু’ আর সত্যজিৎ রায়ের ছবি— এই যোগাযোগের পিছনে দৈবের হাত ছিলো সন্দেহ নেই, কিন্তু সে-দৈব হয়তো সিগনেট প্রেসেরই উদ্ভাবনা।” ১৯৫৫ সালে ‘পথের পাঁচালী’ মুক্তি পেল। ‘টুকরো কথা’ তার সীমিত সাধ্যের পরিসরে সত্যজিতের চলচ্চিত্রপথের প্রথম যাত্রাকেও যথাযোগ্য অভিনন্দন জানিয়েছিল। ভারতীয় ছায়াছবির এই উদীয়মান নক্ষত্রের সঙ্গে তার অন্তরের যোগের কথা বলেছিল সগর্বে অথচ বিনয়ের সঙ্গে। এই যোগ কতটা সোনায় মোড়া তার প্রমাণ সত্যজিতের এই লেখা: “পথের পাঁচালী ছবি মুক্তি পাবার পর কীমারের চাকরি ছেড়ে দিয়ে বেশ কিছুদিন পর্যন্ত আমি সুযোগ পেলেই দুপুরে এলগিন রোডে ডি. কে-র বাড়িতে গিয়ে একতলার আপিস ঘরে ব’সে সিগনেটের কাজ ক’রে এসেছি।” ১৯৫০ থেকে ১৯৫৬ জুড়ে প্রকাশিত সত্তর ছোঁয়া ‘টুকরো কথা’র প্রতিটি সংখ্যাই সত্যজিতের সযত্ন স্পর্শে উজ্জ্বল হয়ে আছে।
কৃতজ্ঞতা: প্রদীপ ঘোষ, সৌম্যেন পাল, রাহুল সেন