সরলা দেবী চৌধুরানী।
কয়েক দিন আগে রেডিয়ো থেকে ভেসে আসা ‘এ কী লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ’ শুনতে শুনতে এক গায়ক বন্ধু বললেন, রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে কী যে সব অসামান্য সুর দিয়েছেন! সবিনয়ে বললাম, এই গানের কথা রবীন্দ্রনাথের হলেও সুর আর এক জনের। তাঁর নাম সরলা ঘোষাল, কবির ন’দিদি স্বর্ণকুমারী দেবীর কন্যা, পরবর্তী জীবনে সরলা দেবী চৌধুরানী। একটি মহীশূরি গানের অনুসরণে এই গানের সুর তিনি জুগিয়েছিলেন তাঁর রবিমামাকে। গানের তথ্য খুঁজলে জানা যাবে, ১৮৯৩ সালে মাঘোৎসব উপলক্ষে রচিত রবীন্দ্রনাথের এই গানের স্বরলিপি করেছেন সরলা। বয়সে ‘রবিমামা’র থেকে মাত্র এগারো বছরের ছোট সরলার জন্মের সার্ধশতবর্ষ পূর্ণ হল ৯ সেপ্টেম্বর। সাহিত্যসাধনায়, পরাধীন দেশে জাতীয়তাবাদের সক্রিয় জাগরণে তাঁর নাম বার বার এসেছে। জীবনের অনেকটাই তিনি খরচ করেছেন সুরের মায়ায়। দাদামশাই মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের কাছে তিনি ‘সরস্বতী’। সমকালীন মানুষ তাঁর গানে উদ্দীপ্ত হয়ে জাতীয়তাবাদের যথাযথ অর্থ খুঁজে পেয়েছেন। আর তাঁর সুরলোকের সাধনা ও অবদানের কথা জ্যোতির্ময় মাতুল রবীন্দ্রনাথের প্রবল প্রতিভায় চাপা পড়ে গিয়েছে।
ছোটবেলা থেকেই সরলা গানের জন্য কাঙাল। তাঁর অনাদরে ঘেরা শৈশবে, যশস্বিনী সদাব্যস্ত মায়ের সান্নিধ্য প্রথম জুটেছিল এই গানের জন্য। বাড়ির অন্য মেয়েদের মতো সরলাও ছোটবেলায় পিয়ানো বাজাতে শিখেছিলেন। মায়ের হুকুমে নিয়মিত সময় ধরে পিয়ানো শিখতে হয়েছে। শিখেছেন বেহালাও। বাড়িতে দেশীয় গান শেখা ছাড়াও মেমদের কাছে ইউরোপীয় গান শেখায় উৎসাহ দিতেন তাঁর রবিমামা। পিয়ানোয় চমৎকার সব কম্পোজ়িশন করতে পারতেন সরলা। পরিণত জীবনে নিজের গভীর সঙ্গীতপ্রীতির প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “বিড়াল যেমন মাছের গন্ধে বিহ্বল হয়, আমিও তেমনি গানের গন্ধে উতলা হতুম, যত পারি লিখে নিতুম, শিখে নিতুম। নিজের ভাণ্ডারে না ভরলে আনন্দ পুরো হত না।” অল্প বয়সে, প্রবাসী মেজমামা সত্যেন্দ্রনাথের সূত্রে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে গেছেন সরলা। আর স্থানীয় মানুষের সান্নিধ্যে সংগ্রহ করেছেন হোলির গান, বৈষ্ণব গান। সেই রকমই কন্নড় ভাষা থেকে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি গান সংগ্রহ করেন, আর সে গানে কথা বসালেন রবীন্দ্রনাথ। বারো বছরের সরলা সেই ব্রহ্মসঙ্গীত ‘সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে’-র সুর দিয়েছিল পিয়ানোয় ব্যান্ড বাজানোর সুরে। উৎফুল্ল রবিমামা ভাগনিকে নিজের লেখা কবিতা ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’র পিয়ানো রূপ দিতে বলেন। বড় হয়ে সরলা তাঁর রবিমামার জন্য সুরের ডালি উজাড় করে দিয়েছেন। তাঁর নিজের কথায়, “আমি গানের বাতিকগ্রস্ত ছিলুম। যেখান সেখান থেকে নতুন নতুন গান ও গানের সুর কুড়তুম। রাস্তায় গান গেয়ে যাওয়া বাঙালী বা হিন্দুস্থানী ভিখারীদের ডেকে ডেকে পয়সা দিয়ে তাদের কাছে তাদের গান শিখে নিতুম— যা কিছু শিখতুম তাই রবিমামাকে শোনাবার জন্য প্রাণ ব্যস্ত থাকত, তাঁর মত সমজদার আর কেউ ছিল না। যেমন আমি শোনাতুম অমনি অমনি তিনি সেই সুর ভেঙ্গে কখনো কখনো তার কথাগুলিরও কাছাকাছি দিয়ে গিয়ে এক একখানি নিজের গান রচনা করতেন।”
‘জীবনের ঝরাপাতা’ নামের স্মৃতিকথায় সরলা আরও বলেছেন, “কর্তা দাদামহাশয় চুঁচড়োয় থাকতে তাঁর ওখানে মাঝে মাঝে থাকবার অবসরে বোটের মঝিদের কাছ থেকে অনেক বাউল গান আদায় করেছিলাম।— কোন আলোকে প্রাণের প্রদীপ, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, আমার সোনার বাঙ্লা প্রভৃতি অনেক গান সেই মাঝির কাছ থেকে আহরিত আমার সুরে বসান।”
সরলার শৈশবে ভদ্র বাঙালি পরিবারে সঙ্গীতচর্চা প্রায় নিষিদ্ধই ছিল। জোড়াসাঁকোর ব্যতিক্রমী ঠাকুর-পরিবারে মাঘোৎসবের দিন প্রকাশ্যে বাড়ির মহিলারা সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। ছোট থেকেই সেই অনুষ্ঠানে অথবা অন্যান্য ব্রাহ্ম পরিবারের অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার ডাক পেত সরলা। বাবা মায়ের পরিচিত বন্ধুবান্ধবদের বাড়ির অধিবেশনে, কিংবা সাহেব-মেমদের জন্য নির্দিষ্ট ডিনার বা ইভনিং পার্টিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গান গেয়েও ছোট্ট মেয়েটি ক্লান্ত হত না। সরলার সঙ্গীতদক্ষতার কথা দাদামশাই মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ নজর করলেন। নাতনিকে ডেকে বললেন, “আমি তোমায় হাফেজের এই কটি লাইন দিচ্ছি, এতে সুর বসিয়ে আমায় গেয়ে শোনাতে পারবে?” সেই সুফি কবিতার লাইনগুলির অর্থ ছিল, ‘আমার মতো এমন সুকণ্ঠ পাখির জন্য এই মর্ত্যলোক উপযুক্ত নয়, আমি সেই যুগের কাননে যাব, যেখানকার আমি।’ সাত দিনের মধ্যে সে কবিতায় সুরারোপ করে সরলা বেহালা বাজিয়ে গান পরিবেশন করল উপস্থিত সবার সামনে। সেই গানে মুগ্ধ ও বিস্মিত, সংস্কৃতি-অনুরাগী দাদামশাই হাজার টাকা দামের হিরে-চুনির সেট করা জড়োয়া নেকলেস দিয়ে গুণী দৌহিত্রীকে সম্মানিত করলেন, শিরোপা দিয়ে বললেন, “তুমি সরস্বতী। তোমার উপযুক্ত না হলেও এই সামান্য ভূষণটি এনেছি তোমার জন্য।”
সরলা দেবীর সাঙ্গীতিক দক্ষতা সমাজের সব স্তরে বিশেষ ভাবে স্বীকৃত ছিল। বিখ্যাত শিল্পপতি আর এন মুখোপাধ্যায়ের পার্টিতে গভর্নর, স্যর হারকোর্ট বাটলার পর্যন্ত তাঁর গানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাঁর গান ভালবেসেছেন গোপালকৃষ্ণ গোখলে। সরলার সুরসাধনায় বিশেষ মাত্রা যোগ করেছিল কর্মসূত্রে তাঁর স্বল্পকালীন মহীশূর বাস। সেখানে তিনি শিখেছিলেন গাম্ভীর্যপূর্ণ সুর পরিবেশনের উপযোগী রুদ্রবীণা বাজাতে। কলকাতায় বিএ পাশ করার পর প্রফেসর মাঞ্জাতা নামের লোরেটোর এক ইটালিয়ান শিক্ষকের কাছে বেহালা যেমন শিখেছিলেন, তেমনই মহীশূরি বেহালা বাজাতেও শিখেছিলেন। মহীশূরের শিক্ষা-শিল্পকলা সংস্কৃতিতে মুগ্ধ সরলা বেশ কিছু সুর সংগ্রহ করে রবিমামাকে নিবেদন করলেন। সেই সব সুরে সুরে নির্মিত হয়েছিল অসামান্য কিছু গান, ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’, ‘এস হে গৃহদেবতা’, ‘এ কি লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ’, ‘চিরবন্ধু চিরনির্ভর’ প্রভৃতি। রবীন্দ্রগানে দক্ষিণী সুরের প্রাধান্যের অন্যতম কারণ সরলার এই সুর সংগ্রহ।
পাশ্চাত্য সঙ্গীতেও পারদর্শিনী সরলা রবীন্দ্রনাথের আরও বেশ কিছু দেশীয় গানকে ইউরোপীয় ঘরানার গানে বদলে দিয়েছিলেন, যেমন, ‘আমি চিনি গো চিনি’, ‘হে সুন্দর, বারেক ফিরাও’ এ রকম আরও অনেক। নিজে যেমন সুর খুঁজতেন, তেমনই নতুন নতুন গানের প্রতিভাও আবিষ্কার করতেন। অমিয়া ঠাকুর ও ঢাকার রাণু সোমকে (প্রতিভা বসু) আবিষ্কার করে রবীন্দ্রনাথের কাছে হাজির করেন সরলাই।
শুধু রবীন্দ্রনাথের গান নয়, বঙ্কিমচন্দ্রের ‘বন্দে মাতরম্’-এর সুর সৃষ্টিতে সরলার অবদান রয়েছে। প্রথম দুই স্তবকের সুরকার রবীন্দ্রনাথ, বাকি স্তবকের সুরারোপ করেছেন সরলা, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের অনুরোধে। জাতীয় উৎসবে সমস্বরে বহু মানুষকে এই গান গাইতেও শিখিয়েছিলেন। তখন থেকেই সভাসমিতিতে পুরো গানটিই গাওয়া হত। সরলা নিজেও একক ভাবে এই গান পরিবেশন করেছেন বিভিন্ন সভায়। বারাণসী কংগ্রেসের অধিবেশনে জনস্রোতে তীব্র আলোড়ন তুলেছে এ গান। বন্দে মাতরম্ ছাড়াও সরলা বঙ্কিমচন্দ্রের নাটকের গান ‘সাধের তরণী আমার কে দিল তরঙ্গে’-তে বাগেশ্রী রাগে সুরারোপ করেন। প্রচলিত থিয়েটারের সুর বঙ্কিমের মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বয়ং সাহিত্যসম্রাটের আত্মীয়দের অনুরোধে সরলা দেবী এই সুর দিয়েছিলেন।
শুধু রবিমামা বা বঙ্কিমচন্দ্রের গানেই যে সরলা সুর করেছেন এমন নয়, নিজেও অনেক গান লিখেছেন, তাতে সুরারোপ করেছেন। গানের মাধ্যমে পরাধীন দেশের মানুষদের উদ্দীপিত করতে চেয়েছেন। সরলার নিজের লেখা যে ক’টি গান পাওয়া যায়, তার দু’টি ভাগ। ব্রহ্মসঙ্গীত আর যুদ্ধগীতি। এ রকম একটি ব্রহ্মসঙ্গীত ছিল মিশ্র সুরট রাগে, ‘এসো হে সুন্দর, চিত্তরঞ্জন’। যুদ্ধগীতি বিষয়ে উদ্দীপক গানটি ‘ভারতী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়, ‘রণরঙ্গিনী নাচে নাচেরে নাচে, ঐ নাচে’।
সরলার দেশাত্মবোধক গান জনমানসে নতুন প্রেরণা জাগিয়েছিল। ১৯০১ সালের কংগ্রেস অধিবেশন শুরু হয় তাঁর নিজের লেখা, নিজের সুরারোপিত গান ‘নমো হিন্দুস্থান’ দিয়ে। সে গানে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ এক রাষ্ট্রের মর্মবাণী। দেশের যুবসম্প্রদায়কে জাগিয়ে তোলার জন্য সূচনা করেছিলেন বীরাষ্টমী ব্রত। তার জন্য লিখেছিলেন বীরাষ্টমীর গান, ‘জান কি মানব কোথাকার ভূমি সোনা হতে মূল্যবান’। সরলা ছিলেন এক চারণিক সুরসাধিকা। কবিতা যখন লিখছেন তখনও গানের ধর্ম সেই কবিতায়। ‘ভারতী’ পত্রিকায় ১৩৩১ বঙ্গাব্দের আষাঢ় সংখ্যায় ‘ছায়ানট’ কবিতায় লিখছেন, ‘রিন রিন ঝিন সুর বাজে হৃদয় মাঝারে/ বাজে সুর বাজেরে/ দেরে দারা দ্রিম/ তান নারে রিম/ হৃদয় মাঝারে/ সুর বীণা বাজেরে।’
সারা জীবন সরলা ছিলেন এক গানের পাখি। যেখানে যা সুর পেতেন খড়কুটোর মতো বুকে করে শুধু তুলেই রাখতেন না, যোগ্য পাত্রে সে সব সুরের অঞ্জলি দিয়েছেন মহত্তর কিছু সৃষ্টির দায়ে। রবীন্দ্রনাথের বহু গান তার উজ্জ্বল নিদর্শন। অনেক গানের চিরস্থায়ী রূপ দেওয়ার জন্য নিজে স্বরলিপি তৈরি করেছেন। পুণায় এক বালিকা বিদ্যালয়ে একটি আট বছরের মেয়ের গলায় সংস্কৃত গান ‘মন্দং মন্দং বায়ৌ বিচলতি/ নীরে শীতে স্বচ্ছে নিবহতি/ গুঞ্জতি ভৃঙ্গে চলতি সুখং’— শুনে আপ্লুত হয়েছেন, কথা সবটুকু নির্ভুল ভাবে না পেলেও মিশ্র বেহাগ-কাওয়ালিতে তার স্বরলিপি অবধি তৈরি করেছেন। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ-কৃত একটি মাদ্রাজি ভজনের বাংলা রূপ— ‘প্রণমামি অনাদি অনন্ত সনাতন পুরুষ’— এর স্বরলিপি প্রস্তুত করেছেন। স্বরলিপি তৈরি করেছেন গুজরাতি সুরের আধারে দ্বিজেন্দ্রনাথের লেখা গান ‘অখিল ব্রহ্মাণ্ডপতি’ গানটির। রবীন্দ্রনাথের একাধিক গানের স্বরলিপিও করেছেন। উল্লেখ্য এমন কয়েকটি গান ‘কি হল তোমার? বুঝি বা সখী হৃদয় তোমার হারিয়েছে’ অথবা ‘ক্ষ্যাপা তুই আছিস আপন খেয়াল ধরে’। ইন্দিরা দেবী চৌধুরানী উল্লেখ করেছেন, বিখ্যাত বৈদিক শ্লোক ‘সংগচ্ছধ্বং সংবদধ্বং’-এর সুরটির ঈষৎ অদলবদল করে আর সামান্য স্বরসন্ধি লাগিয়ে তাঁর সরলাদিদি কত সভাস্থলে গান করিয়েছেন।
নিজের পছন্দের একশোটি গান নিয়ে সরলা দেবী চৌধুরানী গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন ‘শতগান’ (১৯০০) শিরোনামে। সঙ্কলিত এই গানের ডালিতে ছিল তাঁর নিজের গান, রবীন্দ্রনাথ, অতুলপ্রসাদ, দ্বিজেন্দ্রলাল, বঙ্কিমচন্দ্রের গানও। বহু জনসভায় তাঁর কণ্ঠে গান শোনার বিপুল চাহিদা ছিল। কংগ্রেসের অধিবেশনে এক সময় সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ‘বন্দে মাতরম্’ গান গেয়েও দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। গান তাঁর সারা জীবনে বহতা নদীর মতো ভাল লাগার কাজে সম্পৃক্ত হয়েছিল। আর একটি গানের সঙ্কলন ‘গীতি ত্রিংশতি’ প্রকাশিত হয় ১৯৪৫ সালে, তাঁর মৃত্যুর বছরে।
গান ছিল সরলার কাছে প্রতি দিনের জীবন-সঞ্চয়। তাই আজন্মলালিত ধর্মীয় সংস্কারকে দূরে রেখে, বারাণসীতে বিশ্বেশ্বরের মন্দিরের সান্ধ্য আরতি দেখে রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মসঙ্গীত ‘তাঁহারে আরতি করে চন্দ্র তপন’ গানটির কথা মনে পড়েছে, সমবেত ভক্তদের সঙ্গে তিনিও ভক্তিভরে প্রণত হয়েছেন। খবরটি জেনে পৌত্তলিকতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার অপরাধে রবীন্দ্রনাথ তাঁকে তিরস্কার করেছেন। উন্নতমনা সরলা কখনও কোনও ধর্মীয়-বেড়াজালে নিজেকে বেঁধে রাখেননি। ভারতের জাতীয়তাবাদের জাগরণে গানকেই তিনি প্রধান অস্ত্র করে তুলেছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের আলমোড়া আশ্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী মাদাম সেভিয়ার সরলার গান শুনে বলেছিলেন, “আর কিছু না, শুধু যদি জাতীয় গান গেয়ে ফেরো, তাতেই তুমি ভারতের নগরে নগরে গ্রামে গ্রামে, সমস্ত দেশকে জাগাতে পারবে।”
সারা পৃথিবীতে এই অদ্ভুত আঁধার ঘেরা, সংশয়দীর্ণ সময়ে এমন চারণিক গানের পাখির বড় প্রয়োজন, যিনি গান গেয়ে আমাদের তমসাচ্ছন্ন বিবেককে নতুন করে জাগিয়ে দিতে পারেন।