ছবি: বৈশালী সরকার
পূর্বানুবৃত্তি: উত্তীয়কে মঞ্জীরা বলে, তাকে বিয়ে করার সঙ্গে সঙ্গে উত্তীয় একটি এগারো বছরের ছেলের বাবা হয়ে যাবে, পরিবারের সদস্য হিসেবে মেনে নিতে হবে এক মেজাজি কলেজছাত্রীকেও। উত্তীয় কি তৈরি? উত্তীয় স্তব্ধ হয়ে যায়। মঞ্জীরা তাকে নানা ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে। উত্তীয়র ভাল লাগে না। সে উঠে চলে আসে। তার পর থেকেই উত্তীয় একটু ছন্নছাড়া। তাকে অভিরাজ বোঝায়, ম্যাচ শেষ হওয়ার আগে উত্তীয় কখনও হার মানেনি, এ বারও কি চেষ্টা করে দেখবে না!
অধ্যাপক বেরিয়ে যেতেই ক্লাস মুহূর্তে হরি ঘোষের গোয়াল। তমাল লাফিয়ে দুটো বেঞ্চ টপকে প্রিয়াঙ্কার পাশে গিয়ে বসল, ছেলেরা একটা টেবিলে বসে গজল্লা চালাচ্ছে, মেয়েরা প্ল্যান করছে আজ যদি বিকেলের শোয়ে কোথাও সিনেমায় যাওয়া যায় বা নতুন কোনও শপিং মলে উইন্ডো শপিং।
মিহিকা খাতা ভরল ব্যাগে, তাকে বেরোতে হবে। পরের ক্লাস তার করা হবে না। আজ একটা বিশেষ দিন, আজ তার কোনও দিকে তাকানোর ফুরসত নেই।
জয়িতা তার দিকে তাকাল, “অ্যাই মিহিকা, কাটবি না কি? চললি?”
“হ্যাঁ,” সংক্ষিপ্ত উত্তর মিহিকার।
“তা আমার সঙ্গে একটু চল না রে। মা এক বার দিদাকে দেখে আসতে বলেছে কলেজ-ফেরতা। একা একা যাব? তুইও চল না।”
“নাঃ কাজ আছে। আজ হবে না রে।”
“কিসের এত কাজ রে তোর? সেমিস্টারের প্রথম দিকে অ্যাটেনডেন্স না বাড়িয়ে রাখলে শেষের দিকে পারবি ম্যানেজ করতে? আগের বার কী হয়েছিল মনে নেই?”
মিহিকা জয়িতার দিকে তাকাল। বাবা-মায়ের নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা জয়িতার মধ্যে এখনও বালিকাভাব প্রবল। বাবার পছন্দমতো সাবজেক্ট বেছে নিয়েছে, মায়ের পছন্দ করে দেওয়া ব্র্যান্ডের কসমেটিক্স ছাড়া ব্যবহার করে না। দু’দিকে বিনুনি করা মেয়েটাকে দেখলে আজকাল মিহিকার গা জ্বলে যায়। যে নিজের জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তের জন্য বাবা-মায়ের ওপর নির্ভরশীল, সে আসে মিহিকার উপরে গার্জেনগিরি ফলাতে!
যে কারণে মিহিকা হরিসাধন স্যরের ভালমানুষি সহ্য করতে পারে না, ঠিক সেই কারণে জয়িতার মতো গুডি-গুডি গার্লকেও দেখলে বিরক্তিতে মন ভরে যায় তার।
কী করবে আজ থেকে দু’-তিন বছর পর জয়িতা? বাবা-মায়ের দেখানো পথে গ্র্যাজুয়েশন সেরে মাস্টার্স, তার পর বিদ্যেয় কুলোলে পিএইচ ডি অথবা চাকরির পরীক্ষা, আর এরই মধ্যে যদি তার কপাল খুলে যায় তবে চোখে চশমা-আঁটা, মোটা-গোঁফ কাকু টাইপের পুরুষের সঙ্গে সংসার পেতে ফেলতেও আটকাবে না জয়িতার, মিহিকা জানে।
বরসোহাগি মেয়ে তো কম দেখল না সে। নিজের বাড়িতেই তো উদাহরণ জ্বলজ্বল করছে।
মিসেস মঞ্জীরা গাঙ্গুলি।
বরের জন্য ওইটুকু ছেলে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসতে হল। গুণধর হাজ়ব্যান্ডটি যে কী
চিজ়, জানতে কারও বাকি নেই, তবু তার পাঠানো ডিভোর্স পিটিশনে পাঁচ বছরেও সই করে উঠতে পারল না দিদিয়া।
দিদিয়ার মনস্তত্ত্ব বুঝে উঠতে পারে না মিহিকা। এমনিতে দিদিয়া খুব প্র্যাক্টিক্যাল, সেল্ফ সাফিশিয়েন্ট, সিঙ্গল মাদারের দায়িত্ব পালন করা এক আধুনিক নারী, কিন্তু যখনই ওই আকাশদীপ গাঙ্গুলির কথা আসে তখনই কেমন যেন ‘গাঁয়ের বধূ’ টাইপের ভাব এসে যায় দিদির মধ্যে। আজন্ম যে দিদিকে তার এত ভাল লাগে, তার প্রতিও এক আবছা বিরাগ আসে মিহিকার।
এই বিরাগের অন্য কারণও আছে।
সে নিজের চোখে দেখেছে ভেঙে পড়া শরীর নিয়েও মা শেষের দিকে কী ভাবে দিদির জন্য খেটে গেছে। শ্বশুরঘর ছেড়ে এসে দিদি পি জি ডিপ্লোমা করল, ধাড়ি মেয়ের পড়ার টেবিলের পাশে রাত জাগল মা। ডাম্বোর খেয়াল রাখা, তার লেখাপড়া, দেখাশোনায় মা নিজেকে এক রকম বিলিয়ে দিয়েছিল বলা যায়। এই যে ভাল একটা চাকরি জুটিয়ে নিয়েছে দিদি, মাস গেলে স্যালারি আর ইনসেন্টিভ নিয়ে কম টাকা ঘরে ঢোকে না, আবার কোম্পানি পাল্টালেই যে এক লাফে আমদানি অনেকটা বেড়ে যাবে, তা কি আর জানে না মিহিকা?
মা না থাকলে একার জোরে এত সব করতে পারত দিদি?
অথচ যখন মিহিকার ভবিষ্যতের পথ বেছে নেওয়ার সময় এল, তখনই চলে গেল মা। ভাবলেই মন ভারী হয়ে যায় মিহিকার। সে তো ঠিক বি এ, এম এ টাইপের নয়, তার স্বপ্নগুলো গড়পড়তা বাঙালি ছেলেমেয়েদের চেয়ে অনেক অনেক আলাদা। দিদি পর্যন্ত গুটিয়ে যায় তার ফিউচার প্ল্যান শুনে। আর তারই সঙ্গে জেদটা আরও বেশি করে ডালপালা মেলে মিহিকার ভিতরে। তাকে তার স্বপ্ন ছুঁতে হবে, আর তার জন্য কারও সাহায্য নিতেই সে পিছপা হবে না। হ্যাঁ, প্রয়োজনে আকাশদীপ গাঙ্গুলির ইনফ্লুয়েন্স নিতেও দ্বিতীয় বার ভাববে না মিহিকা।
দিদির কথা মনে হতেই মনটা তেতো হয়ে গেল মিহিকার, সে জয়িতাকে বলল, “তুই আমার চিন্তা বাদ দে জয়ী। নিজের কথা ভাব। কাল যদি তোর মা হঠাৎ করে তোর একটা বিয়ে ফিক্স করে দেয় তা হলে হয়তো তোর আর ডিগ্রি কোর্সটাই শেষ করা হবে না, তাই না? তাই আমি কী করছি না করছি সেটা না ভেবে নিজের চরকায় তেল দে।”
জয়িতা আহত স্বরে বলল, “আচ্ছা! আমি বুঝি বাবা-মার কথা ছাড়া কিচ্ছু করি না! সে দিন যে কলেজের নাম করে তোদের সঙ্গে ইকো পার্ক ঘুরে এলাম! তার পর পুজোর সময় স্বাতীদের বাড়িতে গিয়ে এক চুমুক ভদকাও খেয়েছিলাম। এ সব জানে আমার বাবা-মা?”
মিহিকা হো হো করে হেসে উঠে দু’হাতে গাল টিপে দিয়েছে বান্ধবীর, “অনেক করেছ খুকুমণি, তোমার বাপ-মায়ের অঢেল পুণ্যের ফল যে দু’চামচ ভদকা পেটে গিয়ে তুমি প্রেগন্যান্ট হয়ে যাওনি।”
জয়িতা ক্ষুণ্ণ হল, মিহিকা রীতিমতো জোরে জোরে কথা বলছে, ক্লাসের বাকিরা তাকাচ্ছে মাঝে মাঝে তাদের দিকে। এই মেয়েটা এক আশ্চর্য প্রজাতির জীব। যে কোনও দিন সেমিস্টার পরীক্ষার রেজ়াল্ট ঝুলে যাবে বোর্ডে কিন্তু মিহিকার খেয়াল আছে সে দিকে? এখন আবার টো টো করতে বেরোলেন। একটু মাঞ্জাও দিয়ে এসেছে আজ।
ক্ষীণ প্রত্যাঘাতের চেষ্টা করল জয়িতা, “কী রে! তোর সেই তালপাতার সেপাই বয়ফ্রেন্ডটা আসবে নাকি পক্ষীরাজ নিয়ে? তার সঙ্গেই হাওয়া কাটার প্ল্যান না কি?”
মিহিকা ব্যাগ কাঁধে উঠে দাঁড়াল, একটু হেসে বলল, “কেন? তালপাতার সেপাই কেন হতে হবে? কোনও নাবিকও তো আসতে পারে ময়ূরপঙ্খি নিয়ে। তাই না?”
হতবাক জয়িতাকে পিছনে ফেলে ক্লাসরুমের বাইরে প্রশস্ত প্যাসেজে বেরিয়ে এসেছে মিহিকা।
এ বার সেমিস্টারের রেজ়াল্ট বেরোনোর আগেই ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। এখনও ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত আসতে শুরু করেনি ক্লাসে।
সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে ঘড়ি দেখল মিহিকা। না, বেশি দেরি হয়নি। মনে হয় সময়ে পৌঁছতে পারবে সে।
সকাল থেকেই এক চিরন্তন সংস্কার বার বার পথরোধ করছে মিহিকার, কাজটা ঠিক হচ্ছে তো? মা থাকলে আজ কী ভাবত? দিদি যদি কোনও দিন জানতে পারে, তা হলেই বা কী প্রতিক্রিয়া হবে তার?
চিন্তাটাকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলল মিহিকা। তার গল্প ন’টা-পাঁচটার চাকরির গল্প নয়, আধহাত ঘোমটা দিয়ে আন্ডা-বাচ্চা মানুষ করার গল্পও না। তার গল্প অনেক উঁচু উড়ানের গল্প, সাধারণের ধরা-ছোঁওয়ার বাইরে চলে যাওয়ার গল্প।
তার জন্য এটুকু ঝুঁকি নেবে না মিহিকা? সমাজ তাকে কী দিয়েছে, কেন পরোয়া করবে সে সমাজের?
কলেজের মেন গেটের দিকে যেতে যেতে মিহিকা মনে মনে আওড়াল, ‘সাকসেস মে হ্যাভ সো মেনি ফাদার্স, বাট ফেলিয়োর ইজ় এ বাস্টার্ড।’
তবু কলেজের গেট পেরনো হয়ে উঠল না মিহিকার। ঠিক সেই সময়েই তাদের কলেজের বাতাসে এক তীব্র কলরব সৃষ্টি হল, মেঘের গর্জনের মতো গুরুগম্ভীর যান্ত্রিক শব্দ শুনতে পেল সে। কে যেন নাটকীয় গলায় তার নাম ধরে ডেকে উঠল, “মি-হি-কা!”
মিহিকার পাশে একটা মস্ত মোটর সাইকেল এসে দাঁড়াল। কায়দার বাইক। লাখ দুয়েক টাকা দাম। হিন্দি সিনেমায় এমন বাইক দেখা যায়, এক আশ্চর্য ঘড়ঘড় জলদগম্ভীর শব্দ করে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢোকে সেই বাইক। আশপাশের সুন্দরীরা সচকিত হয়ে ওঠে, তাদের ঠোঁটে খেলে যায় সপ্রশংস হাসির ঢেউ। আর বাইক থেকে নেমে বাহারি চশমা খুলে দাঁড়ায় নায়ক, রোদের আলো ঠিকরে পড়ে তার সুগঠিত হাতের পেশিতে, পুরুষালি বক্ষ বিভাজিকায়। আর ঠিক এই জায়গাটায় সিনেমা আর বাস্তবে তাল কেটে গেল।
বাইক থেকে যে ছেলেটি নেমে এল, সে অতি ক্ষীণজীবী, তার দু’লাখি অতিকায় বাইকের ওপর অসম্ভব বেমানান।
জীয়ন বাইকের চাবি ঘোরাতে ঘোরাতে বলল, “এই! কখন থেকে ডাকছি শুনতে পাচ্ছিস না?”
“এখন শুনছি, বল,” মিহিকা চুল ঠিক করল।
“কোথায় যাচ্ছিস? পি এস-এর ক্লাসটা করবি না? আর বলিস না। আজকে বাড়িতে আবার কিচাইন। আমার আসতে দেরি হয়ে গেল।”
মিহিকার সামনে এসে দাঁড়াল জীয়ন। এই প্যাচপেচে গরমেও তার জামার নীচে মোটা টি-শার্ট। শুধু জামা পরে প্রকাশ্যে আসে না জীয়ন, কলেজে তো নয়ই। একটা জামায় তার চৌত্রিশ ইঞ্চির খাঁচা অত্যন্ত প্রকট হয়ে ওঠে। বন্ধুরা হাসি-তামাশা করে। তাই এই উপায়। জামার নীচে মোটা টি-শার্ট পরলে তার শারীরিক দৈন্য কিছুটা হলেও ঢাকা পড়ে।
“যা তা হলে ক্লাস কর, আমি চলি, কাজ আছে,” মিহিকা অধৈর্য হয়ে ঘড়ি দেখল।
জীয়নের মুখেচোখে অসহায় ভাব ফুটে উঠল। পি এস-এর নীরস লেকচার শুনতে যে সে কলেজে আসেনি, সেটা মিহিকাই শুধু জানে না। বাকি কলেজের বেশিরভাগ ছেলেমেয়ে মিহিকার জন্য জীয়নের ব্যথার কথা জেনে ফেলেছে। প্রকাশ্যে বা আড়ালে নাগাড়ে সেই নিয়ে খিল্লি করে বেড়াচ্ছে সবাই, অথচ মিহিকাই আশ্চর্য রকম নিরুত্তাপ। যেন জীয়ন বলে কেউ এই পৃথিবীতে নেই।
জীয়নের মন খারাপ হয়ে গেল। সত্যিই সে এক বেমানান মানুষ। বাড়ির অমন রমরমা পেন্টস-এর ব্যবসা, সেখানেও দাদাদের আধিপত্যের সামনে গুটিয়ে থাকে বাড়ির ছোট ছেলে জীয়ন মুখার্জি। এমন যে রাজসিক একখানা বাইক বাবা তাকে গত জন্মদিনে গিফ্ট দিয়েছে, সেই বাইকে সওয়ার হলেও পঞ্চাশ কেজি ওজনের জীয়নকে বেমানান লাগে।
আর আছে মিহিকা। এই মুহূর্তে ফাগুন পেরিয়ে যাওয়া গরম হাওয়ায় কপাল আর ঠোঁটের উপর সামান্য ঘামের বিন্দু নিয়ে যে অসামান্য সুন্দরী মেয়েটি তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, তার পাশেও কী বেমানান লাগছে না জীয়নকে! কলেজের সবাই কি হাসাহাসি করে না তাকে নিয়ে?
জীয়ন যেন কিছুটা নিভে গেল, “কোথায় যাবি, চল আমি ড্রপ করে দিচ্ছি।”
“একদম নয়। তুই ক্লাস করবি বলে এসেছিস। আমার জন্য প্রোগ্রাম পাল্টানোর দরকার নেই। যা, ক্লাসে যা...” মিহিকা হাঁটতে শুরু করল।
“আরে শোন। কোথায় যাচ্ছিস? এমন করছিস যেন আগে কখনও আমার বাইকে উঠিসনি! চল, দু’মিনিটে পৌঁছে দিয়ে আসি।”
মিহিকা প্রমাদ গুনল। হ্যাঁ, জীয়ন ছেলেটা মিউনিসিপ্যালিটির গারবেজ বক্সের মতো গলায় ‘ইউজ় মি’ লেখা বোর্ড ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সময়ে অসময়ে এই বাহনের সাহায্য যে নেয়নি মিহিকা তাও নয়। আজই তো, প্রায় আধঘণ্টা ভিড় বাসে চেপে যেতে হবে, ভাবতেও গায়ে জ্বর আসছে তার। কিন্তু আজ দিনটা অন্য রকম। আজ সে যেখানে যাচ্ছে সেখানে জীয়নকে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
কিন্তু যা গায়ে পড়া ছেলে, নরম ভাষায় কথা বললে শুনবে না। মিহিকা বাধ্য হয়ে কড়া গলায় বলল, “তুই বাংলা বুঝিস না জীয়ন? আমি একা যাব, তুই যাচ্ছিস না। তোর হেল্পের দরকার নেই আমার।”
জীয়ন মিইয়ে গেল। মিহিকাকে সে গত দু’বছর দেখছে। অস্বাভাবিক জেদি। মাঝে মাঝে মনে হয় মিহিকা তার কত কাছের, আবার মুহূর্তের অবহেলায় তাকে দূরে ছুড়ে ফেলে দেয় মিহিকা।
জীয়ন বলল, “আচ্ছা, বাইকটা রেখে আসছি। চল, তোকে বাসে তুলে দিয়ে আসি।”
পায়ে পায়ে বাস স্ট্যান্ডে এসেছে দু’জনে। এই পথটুকু কথা বলেনি জীয়ন। সে বুঝতে পারছে, যে কারণেই হোক মিহিকা আজ অন্য একটা জগতে রয়েছে, তিনটে প্রশ্ন করলে একটা উত্তর দেবে। এই উপেক্ষাগুলো এত দিনে গা সওয়া হয়ে গেছে জীয়নের। তবু মিহিকার পাশে পাশে দু’পা হাঁটতে ভাল লাগে তার। মিহিকা আজ একটু সেজেছে, তাতেই তাকে অসামান্য রূপবতী মনে হচ্ছে।
চেনা চেনা এক আশ্চর্য নারীগন্ধ পাচ্ছে জীয়ন, যা পৃথিবীর সেরা সুগন্ধগুলোর একটা। গভীর রাত কিংবা ভোরের সুষুপ্তিতে প্রায়ই এই গন্ধটা তাড়া করে জীয়নকে।
ক্রমশ