অভিযুক্ত: লালকৃষ্ণ আডবাণী। ডান দিকে, আনন্দবাজার পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রকাশিত মামলার প্রথম দিনের রিপোর্ট। ১ জানুয়ারি, ১৯৯৩
সন্ধ্যাবেলা হঠাৎই আমাদের দিল্লির ব্যুরো চিফ বললেন, ‘‘কী রে দেবু! কাল তো আডবাণীদের বিচার শুরু। যাবি না কি?’’ ব্যুরোর অন্য সদস্যরা বললেন, গিয়ে কোনও লাভ হবে না। জেলের মধ্যেই কোর্ট বসছে। প্রেসকে ঢুকতে দেবে না। বললাম, একটা লাক ট্রাই করব? বস বললেন, “দেখ না, খুব বেশি হলে কপি হবে না। যা ঘুরে আয়।”
এ তো সাধারণ জেল নয়। ‘মেকশিফট’ জেলের নাম মাতাটিলা ড্যাম। উত্তরপ্রদেশ-মধ্যপ্রদেশের সীমানায়, বেতোয়া নদীর ধারে, টিলার উপর সেচ বাংলো। নীচে পাহাড় ঘেরা বিশাল জলাধার। চার দিক ছবির মতো সুন্দর। সেই মাতাটিলা ড্যামের সেচ বাংলোকে রাতারাতি ভিভিআইপি জেলে পরিণত করা হয়েছে। কড়া প্রহরা।
সেখানে বন্দি মাত্র ছ’জন। বন্দিদের তালিকায় তখনকার ভারতীয় রাজনীতির হু’জ হু’--- লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশি, অশোক সিঙ্ঘল, বিষ্ণুহরি ডালমিয়া, বিনয় কাটিয়ার এবং উমা ভারতী। সপ্তাহ তিনেক আগের অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ‘ষড়যন্ত্রী’দের বিচার শুরু। আনা হয়েছে ললিতপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বাংলোর চত্বরে বসবে আদালত। সাংবাদিকদের প্রবেশের প্রশ্নই নেই। সেই কারণে দিল্লি থেকে কোনও সংবাদপত্রই অকারণে তাঁদের রিপোর্টার পাঠাচ্ছে না।
৩০ ডিসেম্বরের দিল্লি। কনকনে ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশার মধ্যেই ভোর পাঁচটার মধ্যে চিত্তরঞ্জন পার্ক থেকে পৌঁছে গেলাম নয়াদিল্লি স্টেশনে। কারেন্ট বুকিং থেকেই ভোপাল শতাব্দীর এগজ়িকিউটিভ চেয়ার কারের একটা টিকিট কেটে নিলাম। রাতেই ফিরব। তাই ঝাড়া হাত-পা। পকেটে নোটবই আর পেন। ট্রেনে উঠে বসেছি। কাঁটায় কাঁটায় ৬টায় ট্রেন ছাড়বে। এই শীতের ভোরে অধিকাংশ আসনই খালি। ট্রেন ছাড়ার কয়েক মিনিট আগে হঠাৎ দেখি কামরায় উঠছেন দু’টি চেনা মুখ। সিকন্দর বখত এবং জে পি মাথুর। বিজেপির দুই নেতা। বখত রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা। মাথুর রাজ্যসভার সাংসদ। ওঁরাও আমাকে দেখে অবাক। সিকন্দর সাহেব জানতে চাইলেন, ‘‘কাফের (উর্দু ভাল বুঝতাম না বলে উনি ওই নামেই ডাকতেন), কহাঁ জাওগে?’’ বললাম, আপনারা যেখানে, আমিও সেখানে। উঠে গিয়ে ওঁদের সঙ্গেই বসলাম। মাথুর সংশয়ে, আমায় ঢুকতে দেবে কি না তা নিয়ে। সিকন্দর সাহেব অত নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না। বললেন, আরে আমাদের গাড়িতেই যাবে। আটকাবে না। ভাবলাম, তা হলে আর চিন্তা নেই। পরিচয় গোপন করেই ঢুকে যাব। মনে তবু সংশয়, শেষরক্ষা হবে তো!
পৌনে এগারোটা নাগাদ ঝাঁসি স্টেশনে নেমে দেখলাম সিকন্দর সাহেবের কনভয় রেডি। লাল আলো লাগানো গাড়ি। আগে-পিছে নিরাপত্তারক্ষীদের গাড়ি। পাইলট কার। পিছনের সিটে মাথুর আর সিকন্দর বখতের মাঝখানে বসলাম। কনভয় ছুটল। সওয়া ঘণ্টার রাস্তা। কোর্ট বসবে বেলা বারোটায়।
মাতাটিলা ড্যামের প্রবেশ পথে কনভয়। গাড়িতে দু’জনকে শেখাতে শেখাতে গেলাম, আমার পরিচয় যেন পুলিশকে কেউ না বলেন। সিকন্দর সাহেবকে বললাম, বলতে হলে বলবেন আপনার সিএ। প্রায় পাখি-পড়া করে শেখানোর পরও প্রবেশ পথে, ‘আমি কে’— দুই শিখ আমলা, ঝাঁসির জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রশ্নের মুখে সরল, সাদাসিধে সিকন্দর সাহেব সেই বলেই ফেললেন, “আরে ইয়ে তো আনন্দবাজার পত্রিকা কা বরিষ্ঠ পত্রকার! দিল্লি সে হমারা সাথ আয়ে হেঁ!” ব্যস, আর কোনও কথা নেই। আমাকে না নামালে গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতাকে সবিনয়ে জানিয়ে দিলেন দুই আমলা। আমার তখন তীরে এসে তরি ডোবার অবস্থা। সিকন্দর সাহেবকে খুব ‘বকলাম’, হতাশায় চেঁচালাম। নেমে গেলাম গাড়ি থেকে। যাওয়ার আগে আশ্বাস দিয়ে গেলেন সিকন্দর বখত।
তখন আর কিসের আশ্বাস! ওঁদের গাড়ি গেট পেরিয়ে টিলার ঘোরালো পথে উঠে গেল ওপরে। একা দাঁড়িয়ে আছি গেটের বাইরে। বিশাল ড্যামের চার পাশে পাহাড়, নাকি উঁচু টিলা। কুয়াশায় আবছা তাদের অবয়ব। জলাধারের জলের উপর ঢেউ তুলে ছুটে আসছে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। সঙ্গী বলতে জ্যাকেটের পকেটের কয়েক প্যাকেট সিগারেট। গেটের ও পারে নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখ আমার ওপর নিবদ্ধ। গেটের বাইরে, রাস্তার পাশের একটা পাথরের ওপর বসে তখন ভাবছি, এত কষ্ট করেও শেষ রক্ষে হল না! না এলেই বোধহয় ভাল হত।
সাত-পাঁচ ভাবছি। আর একটার পর একটা সিগারেট টেনে যাচ্ছি। ভিতরে তীব্র হতাশা! ঘড়ির কাঁটা তখন সওয়া বারোটার কাছাকাছি। বসে বসে ভাবছি কোর্ট শুরু হয়ে গিয়েছে। শেষ হলে ওঁরা ফিরবেন। ওঁদের গাড়িতেই ফিরতি পথে রওনা হতে হবে আমাকে। হঠাৎই দেখি গেটের মুখে এসে দাঁড়াল একটা গাড়ি। আর তার থেকে নেমে এলেন স্বয়ং জেলাশাসক ও এসপি। একই সঙ্গে এক জেলায় পুলিশ ও প্রশাসনের দুই মাথাই শিখ, এই প্রথম দেখছি। দেখি এসপি গেট খুলে আমার দিকেই এগিয়ে আসছেন। সামনে এসে বললেন, “আরে পত্রকার সাব, চলিয়ে। হামলোগোকো তো মুসিবৎ মে ডাল দিয়া আপনে।” জিজ্ঞেস করলাম, কোথায়? এসপি বললেন, ‘মেকশিফট’ জেলের চত্বরে আদালত তো বসেছে কাঁটায় কাঁটায় বারোটায়। এর পরেই আডবাণীজি সবিনয়ে উঠে দাঁড়িয়ে জজসাহেবকে বলেছেন, দিল্লি থেকে পত্রকার এসেছেন। তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের প্রতিনিধিকে বাদ দিয়ে আদালতের কাজ কী ভাবে হতে পারে? এই নিয়ে বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে খানিকক্ষণ সওয়াল-জবাব চলার পর জজসাহেব বেলা দুটো পর্যন্ত আদালত মুলতুবি করে দিয়ে জেলাশাসক ও এসপিকে বলেছেন, অবিলম্বে সেই পত্রকার-সহ দশ জন পত্রকারকে আদালতে হাজির করতে হবে। তাঁদের উপস্থিতিতে বেলা দুটো থেকে ফের আদালতের কাজ শুরু হবে। আর সে কারণেই দৌড়ে এসেছেন দুই আমলা। তবে দশ জন পত্রকার আর পাবেন কোথায়! একা আমিই তো দেশের পত্রকারকুলের প্রতিনিধি হয়ে দাঁড়িয়ে আছি মাতাটিলা বাংলোর গেটে। ওঁদের বললাম, তখন ঢুকতে দিলেই তো এই সমস্যা হত না। সমস্যা তো আপনারাই তৈরি করলেন। জেলাশাসক বললেন, “কী করব বলুন! আমরা তো হুকুমের গোলাম।”
টিলার পাকদণ্ডী বেয়ে গাড়ি উঠতে লাগল। নিরাপত্তা যে কম নয় তা পাঁচ-পাঁচটা গেটে নাম, বাবার নাম, ঠিকানা লিখে এবং চিরুনি তল্লাশির পর সেচ বাংলোয় পৌঁছেই বোঝা গেল। ছ’কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ছ’জনের পারিপার্শ্বিক নিরাপত্তার জন্য। সেচ বাংলোর হাতায় রয়েছে শ’খানেক কারারক্ষী। রয়েছে আডবাণীর বিশেষ নিরাপত্তা, ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি)-এর ১২ জন কমান্ডো।
কয়েক মিনিটের মধ্যেই মাতাটিলার মাথায়, বাংলোর চত্বরে। আমিই যেন তখন ভিআইপি! শীতের রোদে লনে বসে আছেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর জোশি, অশোক সিঙ্ঘলরা। রয়েছেন সিকন্দর বখত, জে পি মাথুরও। আমাকে দেখেই সিকন্দর বখত বলে উঠলেন, “ক্যা কাফের, আ গয়া না!” সবার মুখে হাসি। আমার মুখেও। আনন্দে ভিতরটা তিরতির করে কাঁপছে। যেন লটারির ফার্স্ট প্রাইজ় পেয়ে গিয়েছি। ভেবে চলেছি, কী কপি লিখব, কেমন করে লিখব, কপির ইন্ট্রো কী হবে। গিয়ে বসলাম ওঁদের সঙ্গে। এলেন ফৈজাবাদের সাংসদ বিনয় কাটিয়ার। ঘড়িতে তখন বোধহয় সাড়ে বারোটা। উমা ভারতী এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন, “সকাল থেকে কিছু খেয়েছ?” আমি কিছু বলার আগেই মাথুর বললেন, “আরে খাবে কী? আমরা তো সেই ভোরবেলা দিল্লি থেকে বেরিয়েছি।” দ্রুত চলে গেলেন উমা। ফিরলেন হাতে পুরি-সব্জির প্লেট নিয়ে। বুঝলাম জেলের রসুইয়ের দায়িত্বে উমা ভারতীই। তুমুল খিদে পেয়েছিল। গোগ্রাসে খেয়ে ফেললাম সবটা। দুটো ঘিয়ের লাড্ডুও খেলাম।
ইতিমধ্যে আডবাণীজিও উঠলেন। বললেন, “আপনারা কথা বলুন। আমি একটু আসছি।” শুরু হল কথা। বখত সাহেব সরস ভাবে বর্ণনা করছেন, গেটে যখন আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিল তখন আমার মুখের চেহারা কেমন হয়েছিল। আমি তাঁর উপরে কী রকম রেগে গিয়েছিলাম, তাঁকে কী ভাবে বকেছিলাম ইত্যাদি। সকলেই হাসছেন। এ বার জোশিজি কোর্টে কী হয়েছে তা বললেন। নোটবই আমি বের করিনি। জোশিজি বললেন, “শোনো কোর্টের রিপোর্ট করতে এসেছ, অন্য কিছু লিখো না। আদালত অবমাননা হবে। আফটার অল ইট’স আ জেল। যা কথা হবে সব ‘অফ দ্য রেকর্ড’।”
ঘড়ির কাঁটায় তখন দেড়টা। জেল তথা বাংলোর ঘরগুলোয় একটু উঁকিঝুঁকি মারলাম। আডবাণীজির রুমটা সিঙ্গল সিটার। দেখলাম গোছগাছ করছেন। ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন আডবাণীজি। মুখে
স্মিত হাসি। জিজ্ঞেস করলেন, “বাতচিত হুয়া?” ঘাড় নাড়লাম। বুঝলাম ওই কথাবার্তা থেকে কেন সরে এসেছিলেন তিনি। বরাবর বিতর্ক বাঁচিয়ে
চলা আডবাণীজি এ বারই অযোধ্যায় ফেঁসে গিয়েছেন। এমনটা যে হতে পারে, তেমন কোনও আভাস তাঁর কাছে থাকলে তিনি কিছুতেই
সে দিন অযোধ্যায় হাজির থাকতেন না বলে আমার বিশ্বাস। বললাম, রথযাত্রার পর মশানজোড় সেচ বাংলোর সঙ্গে মাতাটিলার সেচ বাংলোর মিল কোথায়? হাসলেন, “সে দিনও আপনারা (আনন্দবাজার) সেখানে পৌঁছে গেছিলেন। আজও।” উল্লেখ্য, মশানজোড়ে পৌঁছেছিলেন আনন্দবাজারের সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্ত, চিত্রসাংবাদিক তারাপদ বন্দ্যোপাধ্যায় ও টেলিগ্রাফের চিত্রসাংবাদিক
অলক মিত্র।
কিন্তু গোছগাছ করছেন কেন? বেতোয়ার তীরে গুছিয়ে বসার পর এখন ফের গঙ্গাতীরের চুনার ফোর্টে তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। আবার গোছগাছ। আবার অপেক্ষা। ঝাড়া হাতপায়ে চলায় বিশ্বাসী আডবাণীজি তাই ডজনখানেক বই তাঁর ব্যক্তিগত সচিব দীপক চোপড়ার হাত দিয়ে দিল্লি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। পরে চুনারে থিতু হয়ে দরকার মতো আনিয়ে নেবেন।
প্রথমে আগ্রা সেন্ট্রাল জেল, তার পরে মাতাটিলা ড্যাম, এখন আবার চুনার ফোর্ট— এই ভেসে বেড়ানো নিয়ে আডবাণীর তেমন কোনও বক্তব্য না থাকলেও শিল্পপতি তথা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুহরি ডালমিয়ার তা পছন্দ নয়। মাতাটিলার অস্থায়ী জেল তথা সেচ বাংলোর ৩ নম্বর ঘরে ‘প্যাক আপ’ করতে করতেই ডালমিয়া বললেন, “এখানে গুছিয়ে বসতেই তো তিন-চার দিন লাগল। এখন ফের গোছগাছ! কেন, এখানে কী নিরাপত্তা কম না কি যে দুর্গে বন্দি করবে!”
তাঁরই রুমমেট মুরলীমনোহর জোশি অবশ্য এ সব নিয়ে ভাবিত নন। সকালের পুজো-পাঠের পর ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার প্রাক্তন অধ্যাপক জোশি বাকি সময়টা পড়াশোনা নিয়েই থাকেন। কী পড়ছেন এখন? একই সঙ্গে তিনটি বই পড়ছেন বিজেপি সভাপতি— চৌ এন লাই-এর জীবনী, কাশ্মীর বিষয়ক এক প্রবন্ধ সঙ্কলন এবং ‘মেকানিস্টিক অ্যান্ড নন-মেকানিস্টিক সায়েন্স’।
সবুজ লনের উপরে শামিয়ানা টাঙিয়ে বসেছে আদালত। সামনে উঁচু মঞ্চ। সেখানেই জজসাহেব বসবেন। সামনে কয়েক সারি চেয়ার। পিছনের দিকের একটা চেয়ারে সিকন্দর বখত, জে পি মাথুরদের পাশে বসলাম। সামনের এক দিকে দু’পক্ষের আইনজীবীরা। অন্য দিকে, অভিযুক্ত ছ’জন। জজসাহেব এলেন। এজলাসে বসে তাঁর প্রথম প্রশ্ন, “হোয়্যার ইজ় মিস্টার ঠাকুর?” অপরাধীর মতো উঠে দাঁড়িয়ে হাতজোড় করে নমস্কার করলাম। হাসিমুখেই জজসাহেব বললেন, “আপনার
জন্যই আদালত মুলতুবি করতে হয়েছে। নাউ উই ক্যান স্টার্ট...”
ভারতবিখ্যাত একটি মামলার শুনানি শুরু হল। আমি তার সাক্ষী!
কী সওয়াল হল না হল আমার কাছে তখন আর সেটা খুব জরুরি নয়। কারণ আদালতের কপি তো চার লাইনের। এক পক্ষের বক্তব্য, ষড়যন্ত্র করেই ভাঙা হয়েছে বাবরি মসজিদ। অন্য জনের বক্তব্য, কোনও ষড়যন্ত্র নয়, তাঁদের মক্কেলরা রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। বাকিটা তো কালার কপি। মাতাটিলা ড্যাম, তার বন্দিরা কেমন আছেন, কী ভাবে আছেন, কী খাচ্ছেন ইত্যাদি। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আদালত পরবর্তী দিন ঘোষণা করে শেষ হল। সবার কাছে বিদায় নিয়ে ফের সিকন্দরসাব আর মাথুরজির সঙ্গে গাড়িতে ঝাঁসির পথে। ভোপাল-নয়াদিল্লি শতাব্দী এক্সপ্রেস ধরতে হবে আমাদের।
স্টেশনে এসে ভিভিআইপিরা ওয়েটিং রুমে গেলেন। আমি গেলাম ফোন করতে। তখন তো মোবাইলের যুগ নয়। ফোনের ও পারে আমার চিফ। জানালাম কপি হবে। কিন্তু ফিরতে ফিরতে বারোটা। গলায় আমার তখন অপার আত্মবিশ্বাস।
ও দিক থেকে প্রশ্ন, “ঢুকতে পেরেছিলি?”
উত্তর ছিল, “ই-য়ে-স!”