শৈলেন মান্না। —ফাইল চিত্র।
হাওড়ার এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ফুটবল টুর্নামেন্ট কভার করে ফিরছি। রাস্তার মাঝে এক সাংবাদিক বন্ধু হঠাৎ চিৎকার করে গাড়ি থামিয়ে ছুট লাগাল পিছনের দিকে। কয়লার খনিতে হঠাৎ হিরে পাওয়ার আনন্দ নিয়ে সে ফিরে এল। সঙ্গে ছিপছিপে টানটান চেহারার এক জন। জোর করে তুলে নিল গাড়িতে। জানা গেল, পাশের গ্রামে তিনিও গিয়েছিলেন এক টুর্নামেন্টে অতিথি হয়ে। অনুষ্ঠানের শেষে তাঁর ফেরার ব্যবস্থা হয়নি তখনও। ইনি শৈলেন্দ্রনাথ মান্না। সকলের মান্নাদা। বিশ শতকের অন্যতম সেরা ভারতীয় ফুটবলার। ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের বিচারে (১৯৫৩) একমাত্র এশিয়ান ফুটবলার, যিনি বিশ্বের সেরা দশ অধিনায়কের এক জন।
অন্ধকার রাস্তায় একা দাঁড়িয়ে থাকার কথা এক বারের জন্যও প্রকাশ করলেন না। বাচ্চা-বাচ্চা ছেলেরা কী উৎসাহ নিয়ে খেলছে, তাদের এই উজ্জ্বল মুখগুলো ভবিষ্যতের ভারতীয় ফুটবলকে কতটা আলোকিত করতে পারে, তারই পথ খোঁজার পরামর্শ দিয়ে গেলেন সারাটা রাস্তা।
এ ভাবে বাছবিচার না করে যেখানে সেখানে চলে যান কেন? উত্তর তৈরিই ছিল, “আমরা সামনে গিয়ে না দাঁড়ালে ওদের পথটা দেখাবে কে? আমি পদ্মশ্রী, অলিম্পিয়ান, ভারতীয় সোনাজয়ী দলনেতা। গর্ববোধ করি এই ভেবে যে, আমার এই সাফল্যগুলো নিয়ে ওদের সামনে দাঁড়াতে পারি। আমার অভিজ্ঞতার কথা ওদের শোনাতে পারি। ঘরে বসে দেখার জন্য তো সমাজ আমাকে এগুলো পেতে সাহায্য করেনি!”
একশো বছর আগে, ১৯২৪ সালের আজকের দিনে হাওড়ার ব্যাঁটরায় জন্মেছিলেন ভারতীয় ফুটবলের এই দিকপাল। শৈশবে মধুসূদন পাল চৌধুরী স্কুলের গেম টিচারের শিক্ষায় ফুটবলের প্রতি আকৃষ্ট হন। ১৯৪১ সালে যোগ দেন কলকাতা লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনের ক্লাব হাওড়া ইউনিয়নে। পরের বছরই মোহনবাগানে। এখানেই খেলোয়াড় জীবনের প্রায় দু’দশক অতিবাহিত করেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৫ মোহনবাগান ক্লাবের অধিনায়ক ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ক্লাব ডুরান্ড কাপ পেয়েছে পাঁচ বার। আইএফএ শিল্ড ছ’বার। তাঁর নেতৃত্বে চার বার সন্তোষ ট্রফি পেয়েছে বাংলা। ১৯৪৮ সালে লন্ডন অলিম্পিক্সে ভারতীয় ফুটবলের প্রথম বিদেশ সফর। শৈলেন মান্নারও। ১৯৫১ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত প্রথম এশিয়ান গেমসে সৈয়দ আব্দুল রহিমের প্রশিক্ষণে আর শৈলেন মান্নার নেতৃত্বে ভারত ছয় দেশীয় ফুটবলে সোনা পায়। ইন্দোনেশিয়া এবং আফগানিস্তান দু’দলের বিরুদ্ধেই ভারতের জয় ৩-০ গোলের ব্যবধানে। ফাইনালে ভারত হারায় ইরানকে ১-০ গোলে। এই সম্মান পুনরুদ্ধার করতে ভারতকে অপেক্ষা করতে হয়েছে দশ বছর। ১৯৬২ সালে জাকার্তা এশিয়ান গেমসে ভারত চুনী গোস্বামীর নেতৃত্বে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে দ্বিতীয় এবং এখনও পর্যন্ত শেষ বারের মতো সোনা জিতেছে। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৫ সালের মধ্যে পর পর চার বছর চার দেশীয় আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে ভারতে সোনা আসে শৈলেন মান্নার নেতৃত্বে।
সে সময় ফুটবল-বিশেষজ্ঞরা মনে করতেন, গোষ্ঠ পালের পর এ দেশ শৈলেন মান্নার মতো এত বড় ডিফেন্ডারের সন্ধান আর পায়নি। খালিপায়ে রুখে দিয়েছেন দেশ-বিদেশের স্ট্রাইকারদের। দলের দুর্গ শৈলেন মান্নার ট্যাকল অতিক্রম করে এগোনো প্রতিপক্ষের কাছে ছিল দুরূহ ব্যাপার। এমন ডিফেন্ডারকে তাঁর সারা জীবনে এক বারের জন্যও রেফারির কার্ড দেখতে হয়নি। এটাও বিশ্ব ফুটবলে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। শুধু ট্যাকলই নয়, বিশেষ পারদর্শী ছিলেন ফ্রি-কিক মারায়। অসাধারণ দক্ষতায় বল স্যুইং করাতেন। খেলতেন লেফ্ট ব্যাকে। দু’পা সমান চলত তার। তাঁর দূরপাল্লার জোরালো শট বিপক্ষ অনুমানই করতে পারত না। তবে ফ্রি-কিক মারতেন ডান পায়ে। বলেছেন, একমাত্র ডান পায়েই বলকে স্যুইং করাতে পারতেন। সাফল্যের মতো শৈলেন মান্নার স্বীকৃতি প্রাপ্তিও উল্লেখযোগ্য। ১৯৭১ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে। ২০০০ সালে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের বিচারে পেয়েছেন একশো বছরের সেরা ফুটবলারের সম্মান, ‘ফুটবলরত্ন’ উপাধি। ২০০১ সালে হয়েছেন ‘মোহনবাগানরত্ন’। ২০১১ সালে রাজ্য সরকার দিয়েছে ‘বঙ্গবিভূষণ’।
প্রাক্তন ভারতীয় দলের অধিনায়ক, অলিম্পিয়ান সমর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার শৈলেন মান্না। তাঁর অমায়িক ব্যবহারের জন্য তিনি সবার মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন।” সুযোগ পেলেই শিশু-কিশোরদের শৃঙ্খলাপরায়ণ হওয়ার কথা বলতেন। পরিমিত খাদ্যাভ্যাসের পরামর্শ দিতেন। নিজেও তা মানতেন। অভ্যাস হয়ে যাওয়ার ভয়ে চা খেতেন না। ভাত খেতেন সপ্তাহে এক বার। জিম বা ব্যায়াম নয়, স্বাস্থ্যের জন্য প্রচুর হাঁটতেন। খেলার আগে কোচ বলাইদাস চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে ফুটবলাররা এক-দেড় মিনিট মেডিটেশন করতেন। নিজে দীর্ঘকায় ছিলেন বলে হেডে বাড়তি সুবিধা পেতেন। কিন্তু তিনি মনে করতেন, উচ্চতার চেয়ে বেশি জরুরি শরীরকে নমনীয় রাখা।
মোহনবাগান ক্লাবে বিদেশি ফুটবলারদের খেলা নিষিদ্ধ ছিল। প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অসম হয়ে পড়ায় ক্লাব সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয়। শৈলেন মান্না মানতে পারেননি। যেমন মানতে পারেননি স্পনসরের সাহায্য নিয়ে ক্লাব পরিচালনা করা। মনে করতেন, এতে হয়তো ক্লাবে ট্রফি আসবে, কিন্তু বাংলার ফুটবলের উন্নতি হবে না।
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের স্নাতক শৈলেন মান্না জিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-তে চাকরি করতেন। থাকতেন হাওড়ায় মামার বাড়িতে। মামাদের কাছে মোহনবাগান ক্লাব ছিল মন্দিরের মতো। সেই ক্লাব থেকে শৈলেন মান্না পারিশ্রমিক নিক, চাইতেন না মামারা। সারা জীবন সে কারণে বিনা পারিশ্রমিকে মোহনবাগান ক্লাবে খেলে গেছেন। বলেছেন ফুটবল খেলেন ভালবাসা থেকে, টাকা উপার্জন করেন চাকরি থেকে। সারা জীবন মোহনবাগানে খেললেও ভালবাসা পেয়েছেন সব ক্লাব, সর্বস্তরের ফুটবল অনুরাগীর কাছে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা স্বপন বল বলেছেন, “মান্নাদার মতো বিশালকায় মানুষকে বিশেষ কোনও ক্লাবের তকমায় সীমাবদ্ধ রাখা যায় না।”
এ কথা শৈলেন মান্না নিজেও বিশ্বাস করতেন। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও তাঁকে যথেষ্ট সম্মান করেছেন বরাবর। তিনি বলেছেন, “তবে কোন সমর্থকই বা চায় তাদের ক্লাব আমার জন্য সাফার করুক। একটা অভিমান তো কাজ করতই যে, সারা জীবন আমি কেন তাদের ক্লাবে না খেলে মোহনবাগানে থেকে গেলাম।”
তাঁর প্রশিক্ষণে খেলা প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ফুটবলার ছিলেন মান্নাদা।” তাঁকে ‘জেন্টলম্যান’ আখ্যা দিয়েছেন ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়া। বলেছেন, “খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তা হিসাবে মান্নাদা ভারতীয় ফুটবলের এক বর্ণময় চরিত্র।”
সাফল্য ও স্বীকৃতির এত প্রাপ্তির মাঝেও অনুশোচনার কাঁটা বিদ্ধ করেছে শৈলেন মান্নাকে। ১৯৫০ সালে বিশ্বকাপের মূল পর্বে সুযোগ পেয়েও ভারতীয় দলের না যাওয়া, ১৯৪৮-এর লন্ডন অলিম্পিক্সে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত খেলেও পেনাল্টি মিস করা তাঁকে বার বার যন্ত্রণা দিয়েছে। সেই অলিম্পিক্সে ভারত প্রথম ম্যাচেই ফ্রান্সের কাছে ১-২ গোলে হেরে বিদায় নেয়। ভারতের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছিলেন এস রামন। প্রথম পেনাল্টি মিস করার পর শৈলেন মান্না ভয়ে আর দ্বিতীয় পেনাল্টি পেয়েও মারতে যাননি। মহাবীর প্রসাদ মারেন এবং তিনিও নষ্ট করেন। হারলেও ভারতের খেলা দেখে সে দিন মুগ্ধ হয়েছিলেন লন্ডনের হাজার হাজার দর্শক। অবাক হয়েছিলেন ভারতীয়দের খালিপায়ে খেলতে দেখে। ‘রাজকুমারী’ এলিজ়াবেথ, তাঁর বোন মার্গারেট এবং স্বামী ফিলিপকে নিয়ে খেলা দেখতে এসেছিলেন। শোনা যায়, এলিজ়াবেথ শৈলেন মান্নার পা ছুঁয়ে দেখতে চেয়েছিলেন তা সত্যিকারের রক্তমাংসের পা কি না।
খালিপায়ে খেলার কারণ হিসেবে শৈলেন মান্না জানিয়েছিলেন, সে কালে ইংল্যান্ডে তৈরি একজোড়া বুটের দাম পড়ত হাজার টাকা। ফুটবলাররা পেতেন মাসে ১৯ টাকা। বুট কেনার সামর্থ্য ছিল না। খালিপায়ে আর বুট পরে খেলার টেকনিকের ফারাক ছিল বিস্তর। ১৯৪৮ লন্ডন অলিম্পিক্সে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ভারত খালিপায়ে ভাল খেললেও ১৯৫২ হেলসিঙ্কি অলিম্পিক্সে বাধ্যতামূলক বুট পরে খেলতে গিয়ে যুগোস্লাভিয়ার কাছে পর্যুদস্ত হয়।
খেলা ছাড়াও নানা সামাজিক কাজে শৈলেন মান্নাকে ছুটে গেছেন। নানা প্রসঙ্গে পক্ষে বিপক্ষে নিজের মতামত দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন। বলেছেন, “আমার সব কথা সবার পছন্দ হত না হয়তো। কিন্তু সকলে শুনত। দীর্ঘ দিন মাঠের বাইরে থাকা এক জন ফুটবলারের কথা মানুষ শুনছে, তার বক্তব্যকে গুরুত্ব দিচ্ছে, এটা ভেবেই আনন্দ পেতাম।”
একমাত্র মেয়ে নীলাঞ্জনাকে অসম্ভব ভালবাসতেন। মেয়ে তখনও অবিবাহিত, বাবার দেখাশোনা করতেন। রসিকতা করে বলেছিলেন, “আমি খুশি যে, আমার মেয়ে আমার সঙ্গে আছে। জামাই এলে মেয়ে হয়তো আমায় দেখার সময় কিংবা সুযোগ পেত না। ওর ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হতাম। তার চেয়ে উভয়েই বেশ আছি। এ ব্যাপারে আমায় স্বার্থপর বলতেই পারো তোমরা।”
বাবা যা-ই বলুন, বাবাকে স্বার্থপর বলতে নারাজ মেয়ে নীলাঞ্জনা। তাঁর কথায়, “আমার ব্যাপারে বাবা স্বার্থপর ছিলেন না। আমি নিজেই তখন বিয়ে করতে রাজি ছিলাম না। তবে বাবা তাঁর শেষ সময়ে হাসপাতালে দেখে গেছেন হবু জামাইকে।”
বাবার প্রসঙ্গে বরাবরই স্মৃতিমেদুর মেয়ে বললেন, “বাবা খেলা ছাড়ার দশ বছর বাদে আমার জন্ম। ফুটবলের প্রতি আকর্ষণ কমেনি এতটুকু। চারণকবির মতো মাঠে-ময়দানে, গ্রামে-গঞ্জে চলে যেতেন খেলা দেখতে, খেলার কথা বলতে। অজাতশত্রু, নির্লোভ এই মানুষটার কাছে মাঠই ছিল মন্দির। মৃত্যুর কয়েক দিন আগেও সল্ট লেকের এক বেসরকারি হাসপাতালে শুয়ে হাসিমুখে বলছেন, তিনি এখানে ভাল আছেন। কারণ হাসপাতালের জানলা দিয়ে তিনি সল্ট লেক স্টেডিয়ামটাকে দেখতে পান।” বিছানায় শুয়েও বলতেন, “আমার বয়স কত হল মনেই থাকে না। আমায় মারে কার সাধ্য! মনের জোরে আবার উঠে দাঁড়াব। হেঁটে যাব গ্রাম-গ্রামান্তরে।”
আর উঠে দাঁড়াতে পারেননি দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার। রেখে যান স্ত্রী আভা দেবী ও একমাত্র কন্যা নীলাঞ্জনাকে। মেয়ে জানালেন, “বরাবর আমাকে আর মাকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তা করতেন। তাঁর অবর্তমানে আমাদের কী হবে? মা মারা গেছেন ২০১৭ সালে। আমি বিয়ে করেছি। বাবাকে বলি, তুমি যেখানেই থাকো, নিশ্চিন্তে ঘুমোও। আমরা ভাল আছি।”
শৈলেন মান্নার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কলকাতার রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণে তাঁর দেহ শায়িত রাখা হয়। দেশের সর্বস্তরের ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ ছুটে আসেন সেখানে। বহু প্রজন্মের প্রেরণা, ভারতীয় ফুটবলের মেরুদণ্ড শৈলেন মান্নাকে শ্রদ্ধা জানাতে দিল্লির প্রধান কার্যালয়ে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ভারতীয় ফুটবলাররা আজারবাইজান জাতীয় ফুটবল দলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচে হাতে কালো ব্যান্ড পরে খেলতে নামে।
২০১২-র ২৭ ফেব্রুয়ারি, তাঁর প্রয়াণের সেই মর্মান্তিক দিনে দূরদর্শন থেকে এই প্রতিবেদকের ডাক আসে শৈলেন মান্নার অবিচুয়ারি লাইভ করার জন্য। শৈলেন মান্নার সঙ্গে বহু অনুষ্ঠানে গিয়েছি, তাঁর সাক্ষাৎকারও নিয়েছি। কিন্তু তাঁকে নিয়ে তাঁর মৃত্যুদিনে স্মৃতিচারণ করাটা ছিল আমার কাছে অত্যন্ত পীড়াদায়ক। তবু কর্তব্যের খাতিরে যেতে হয়েছিল প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য ও বিদেশ বসুকে নিয়ে এই দিকপাল খেলোয়াড়ের নানা কথা তুলে ধরতে।
আজ পূর্ণ হল শৈলেন মান্নার জন্মশতবর্ষ। তার জন্মদিনে নানা প্রান্ত মেতে ওঠে ফুটবল খেলতে। শুরু হয় নতুন উদ্যমে শপথ নেওয়া। জেগে ওঠে বাংলার ফুটবল। স্মরণ করা হয় তাঁর কথা, “বিদেশ থেকে নয়। এ দেশে সম্পদ যা আছে, তাকে যত্নে লালন পালন করে শক্তিশালী দল গড়তে হবে।” তাঁর স্মরণে হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে শৈলেন মান্না স্টেডিয়াম। ২০২০ সালে হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের নাম রাখা হয় শৈলেন মান্না ইনডোর স্টেডিয়াম। তবে তা না হলেই বা কী, প্রত্যেক ফুটবলপ্রেমী বাঙালির বুকে তাঁর নাম সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে চিরকাল।
(লেখক রাজ্য ক্রীড়া পর্ষদের প্রাক্তন ক্রীড়াসাংবাদিক)