ছবি: দীপঙ্কর ভৌমিক
পূর্বানুবৃত্তি: কেরিয়ারের শুরুতে ঘুষ খেয়ে বেআইনি ডেথ সার্টিফিকেট ইসু করে ফেঁসে গিয়েছিলেন ডক্টর সমর্থ। কেরিয়ার বরবাদ হওয়া থেকে তাঁকে বাঁচায় কর্পোরেটর বাবুরাও আর কালিয়া উসমান। সেই থেকে তাদের সমস্ত দু’নম্বরি কাজকর্মের শরিক তিনি। সদানন্দ আর বৈজু ভাড়ুয়া গোপন চালান নিয়ে আসে কৌশল্যার কাছে। চম্পা সেই চালান পৌঁছে দেবে মুম্বইয়ে কালিয়া উসমানের কাছে। অন্ধকার জগতের এক সময়ের বাদশা রফিকের কাছে কেসের খোঁজখবর নিতে আসে রুদ্র ও মজিদ।
পাশ থেকে বাঁকা হেসে মজিদ প্রশ্ন করলেন, “তোমার মতো একজন হিম্মতদার মানুষ, কী এমন স্বপ্ন দেখে এরকম কেঁপে গেলে রফিকমিয়াঁ?”
ত্রস্ত চোখে মজিদসায়েবের দিকে তাকাল রফিক, “বোলনে সে আপ ইয়াকিন নেহি কিজিয়েগা মজিদসাহাব, যেদিন আপনার কাছে স্যরের লওটে আসবার খবরটা শুনলাম, সেই রাতেই সপনাটা দেখলাম আমি... এক ভয়ানক রাত। ভয়ঙ্কর আঁধি-তুফান চল রহা। আশমান চিরে বিজলি চমকাচ্ছে। লাগতা হ্যায় ক্যয়ামত কা দিন আ গয়া!... একটা কালা ঘোড়া। খুন কি তরহা লাল লাল দো আঁখে। নাক দিয়ে আগ অওর ধুঁয়া ছাড়ছে। চিল্লাচ্ছে হিঁ হিঁ ই ই ই!” রুদ্রর দিকে ঘুরে তাকাল রফিক, “দু’পা উপরে তুলে বার কুচলে দিতে চাইছে আপনাকে। ঘোড়াটার লাগাম খিঁচে ওটাকে জমিনে নামানোর বহোত জোর কোশিশ করছেন আপনি, লেকিন পারছেন না কিছুতেই...” বলতে বলতে থরথর করে কাঁপছিল একসময় আন্ধেরি দুনিয়ার বাদশার গোটা শরীরটা! তীব্র অসহনীয় যন্ত্রণার ছাপ দু’চোখে!
নিজের জায়গা ছেড়ে উঠে গিয়ে রফিকের কাঁধে হাত রেখে ধীরে ধীরে মানুষটাকে শান্ত করল রুদ্র। তার পর দৃঢ় গলায় বলল, “চিন্তা কোরো না রফিকমিয়াঁ। আমাকে ক্ষুরের তলায় পিষে মারবার আগেই ওটাকে মাটিতে টেনে নামাব আমি... মজিদসাহেব,” রুদ্রর চোখের ইশারায় দু’পকেট থেকে তিনটে একশো টাকার বান্ডিল টেনে বের করে সামনে ছোট টেবিলটায় রাখলেন মজিদ।
হাত দিয়ে ফের বান্ডিলগুলোকে মজিদের দিকে ঠেলে দিয়ে রুদ্রর দিকে তাকাল রফিক, দু’দিকে মাথা নেড়ে বলল, “আপনার থেকে বহোত বার রুপিয়া নিয়েছি। এও ভি ঠিক, পুলিশকে খবর দেওয়ার জন্য রুপিয়া নেয় ক্রিমিনাল ইনফর্মাররা,” একটু থেমে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল একদা আন্ধেরি দুনিয়ার বেতাজ বাদশা, “লেকিন আমি আর আপনি দু’জনেই আভি রিটায়ার হয়ে গেছি আমাদের কাম থেকে। এখুন এই কামঠো করছি সির্ফ ভালবেসে। সোচবেন না স্যর। জরুরত হোনে সে যিতনা রুপিয়া লাগেগা সেটা আমি লিয়ে লিব মজিদসাহাবসে। লেকিন আপনি সাবধানে থাকবেন। অওর যিতনা জলদি হো সকে ইয়ে কাম খতম করকে লওট যাইয়েগা আপনা ঘর, মোহতরমাকে (স্ত্রী) পাস।”
শান্ত হেসে রফিকের দিকে তাকাল রুদ্র, “তোমার কথাটা আমার মনে থাকবে রফিকমিয়াঁ।”
উত্তরবঙ্গের বাংলা-বিহার সীমান্তবর্তী এক নিষিদ্ধ পল্লির একটা ছোট ঘরে ভিকির মুখোমুখি বসা সুনীল আর সন্তোষী। দরজার সামনে দাঁড়ানো লোকাল থানার একজন সাদা পোশাকের কনস্টেবল। তিন দিন হল সন্তোষীদের নর্থ বেঙ্গলে পাঠিয়েছে রুদ্র। এর পিছনে তিনটে কারণ। প্রথমত, নেপাল সীমান্তঘেঁষা এলাকা হওয়ার জন্য নেপালি মেয়েদের সংখ্যা এই অঞ্চলের লালবাতি এলাকাগুলোয় প্রচুর। দ্বিতীয়ত, এই এলাকাগুলোয় প্রচণ্ড দাপট নট সম্প্রদায়ের। নট। হবহু সোনাগাছির আগ্রাওয়ালিদের মতোই আর একটি গোষ্ঠী। বংশানুক্রমিক বেশ্যাবৃত্তি আর দালালিই যাদের একমাত্র পেশা। সামাজিক নিয়মকানুনও বলতে গেলে প্রায় একই রকম। বেরিয়া অর্থাৎ আগ্রাওয়ালিদের মতোই বহুকাল আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে এরা চলে এসেছিল বাংলায়। বিচরণক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিল কলকাতার বদলে বাংলার অন্যান্য অঞ্চল। ধান্দায় মেয়ে কেনাবেচা অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার নটদের কাছে। ফলে এইসব জায়গায় একটা থরো ফিল্ড ইনভেস্টিগেশন চালানো দরকার বলে মনে হয়েছে রুদ্রর। তৃতীয়ত, সন্তোষী নিজে নেপালি হওয়ার ফলে এখানকার নেপালি মেয়েদের সঙ্গে স্বজাতীয় ভাষায় কথাবার্তা চালাতে সুবিধে হবে। সঙ্গে হিন্দিটাও চোস্ত সন্তোষীর। আধা-হিন্দুস্থানি এই অঞ্চলে মানুষজন, বিশেষত নটদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর সে কারণেই গত তিন দিন ধরে টানা সেই শিলিগুড়ি থেকে শুরু করে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর বাংলার প্রতিটি নিষিদ্ধ পল্লিতে ঘুরে ঘুরে তদন্ত চালাচ্ছে সন্তোষী। সঙ্গে সুনীল।
ভ্রু কুঁচকে ভিকির দিকে তাকাল সন্তোষী, “খুব ভাল করে মনে করার চেষ্টা করো ভিকি, এমন কোনও নাবালিকা নেপালি মেয়ে, একা অথবা কয়েক জন, তোমাদের এলাকায় না রেখে অন্য কোথাও আশপাশে রাখা হয়েছে, নয়তো পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে দূরে কোনও খানে, এরকম কারও কথা মনে পড়ছে তোমার?”
ভিকি। নট সম্প্রদায়ের ছেলে। বছর তিরিশেক বয়স। দুধে-আলতা গায়ের রঙ। মেহেদি রঙা চুল। নীল চোখের মণি। গলায় ভরিদশেকের একটা মোটা সোনার চেন। পরনে গাঢ় লাল রঙের টি-শার্ট আর ক্রিম কালারের বারমুডা। চেহারা একটু ভারীর দিকে। প্রশ্নের জবাবে নির্লিপ্ত চোখে তাকাল সন্তোষীর দিকে। বলল, “ইয়ে আপ ক্যা বোল রহেঁ ম্যাডামজি। নাবালিগ লড়কির বাত তো ছাড়ুন, এক সাল সে কোই ভি নয়ি লড়কি নহি ঘুসা ইস মহল্লে মেঁ। বিশোয়াস করুন আমার কথা।”
ভিকির দিকে তাকিয়ে হিমশীতল মুখে হাসল সন্তোষী, “ঠিক হ্যায় ভিকি। তোমার কথাই মেনে নিলাম আমি। লেকিন এক বাত ইয়াদ রাখনা, চারদিকে খবরি ছড়ানো আছে আমাদের। কোনও সেয়ানাপট্টি করার কোশিশ করলে ফের আসব আমরা। ট্রানজ়িট রিমান্ডে তুলে নিয়ে যাব কলকাতায়। সেখানে সেন্ট্রাল লকআপে মজিদসাহেব আর সুনীল মিলে তোমার অ্যায়সান হালত করবে, তুমহারা পয়দা করনেওয়ালি মা ভি পহেচান নহি সকেগি তুমকো। চলো সুনীল।”
চেয়ার ছেড়ে উঠে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল দু’জনে। পিছনে পিছনে থানার কনস্টেবল।
সন্তোষীরা বেরিয়ে যাওয়ার পর মিনিট তিনেক লাগল ভিকির, পেট খামচে উঠে আসা গুড়গুড়ে ভয়টাকে সামলাতে। বাপ রে! কী রকম বিষনি নাগিনের মতো হিসহিস করে কথা বলছিল ইনস্পেক্টর মাগিটা! বহোত তকলিফ হচ্ছিল নিজেকে সামলে রাখতে। সব সময় মনে হচ্ছিল, এই বুঝি ধরা পড়ে গেল। যাক বাবা! লম্বা একটা স্বস্তির শ্বাস ফেলল ভিকি। মনে হয় কিছু ধরতে পারেনি শালি। ঝুটমুটই ধমকেধামকে পেটের কথা টেনে বার করতে চাইছে। কিন্তু ওই যে ব্যাপারটা, শালা বারবার খুঁচিয়ে চলেছে মনের মধ্যে। গত এক বছরের মধ্যে নেপাল থেকে কমসে কম হাফডজন নাবালিগ ছোকরি লিয়ে এসেছে ওই শালা বৈজু আর সদানন্দ ভাড়ুয়া। লেকিন ক্যা তাজ্জব কী বাত, মহল্লায় এনে তোলেনি লড়কিগুলোকে! ছুপাবার আলাদা খুফিয়া ঠেকের বন্দোবস্ত করে দিতে হয়েছে। ভিকির কাছে যদিও সেটা কোনও ব্যাপার নয়। মহল্লার এক নম্বর ভাইয়া ও। ও রকম হাজারটা ঠিকানা জানা আছে ওর। বিহার লাগোয়া এই জেলায় অনেক বেশি টাকা কবুল করেছিল সদানন্দরা। কাম হয়ে গেছে। কিন্তু খটক লাগছে অন্য জায়গায়। লড়কিগুলোকে মহল্লায় না বিক্রি করে, ধান্দায় না বসিয়ে অন্য জায়গায় তোলা হল কেন? দিনতিনেক বাদে নিয়েই বা যাওয়া হল কোথায়? শালা! এইখানেই কেমন পেঁচিদা লাগছে মামলা। আর এই জন্যই কি শালা খাকি ডেরেসওয়ালারা আজ এসেছিল এখানে? এখনই শালা ওই ভাড়ুয়া সদানন্দের কাছে জানতে হচ্ছে ব্যাপারটা। বুকপকেট থেকে স্মার্টফোনটা টেনে বার করতে গিয়েও থমকাল ভিকি। মামুরা এসেছিল মানে ফোন ট্যাপ হলেও হতে পারে। বুকপকেট থেকে হাত বের করে বারমুডার পকেটে ঢোকাল। একটা বহু পুরনো মডেলের মামুলি মোবাইল। অন্য পকেট থেকে বেরিয়ে আসা ব্র্যান্ড নিউ একটা সিমকার্ড দ্রুতহাতে লাগিয়ে নিয়ে সদানন্দের নম্বর ডায়াল করল ভিকি। মিনিট পনেরোর দীর্ঘ কথাবার্তা হল নিচু গলায়। কান থেকে ফোন নামিয়েই পেছনের ডালাটা খুলে সিমটা বের করে ফেলল ভিকি। লাইটার জ্বেলে সিগারেট ধরাল একটা। সেই আগুনেই পুড়িয়ে ফেলল সিমকার্ডটাও। তার পর দরজা টেনে দিয়ে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে।
ফোনটা নামিয়ে রেখে এই পৌষের শীতেও দরদর করে ঘামছিল সদানন্দ সিসোদিয়া। ভিকি আর পুলিশের মনে ঠিক সেই সন্দেহটাই জেগেছে, যেটা জেগেছিল সদানন্দর মনে। ছুকরিগুলো যাচ্ছে কোথায়? তবে এ নিয়ে জিয়াদা ছানবিন করতে গেলে যে বিপদ ঘটবে, সেটা ভাল করেই জানে ও। বরাবরই ওর ধারণা, অনেক বড় কোনও কিছুর হাত রয়েছে পিছনে। সেই হাত অনেক লম্বা, একই সঙ্গে বহোত খতরনাক ভি। জিয়াদা বাড়াবাড়ি করলে জান চলে যেতে পারে এক সেকেন্ডে! অন্য দিকে শালা ডিডি-র মামুদেরও নজর পড়ে গেছে কেসটার ওপর। ভিকি জিজ্ঞেস করছিল এ ব্যাপারে সত্যিই কিছু জানে কি না ও। সদানন্দ সাচ বাতটাই বলেছে। ও সির্ফ মাল নিয়ে এসে জমা করে দিয়েছে কৌশল্যা মওসির জিম্মায়। উসকে বাদ অওর কুছ পতা নহি। ভিকি ওকে বলেছে, কম সে কম ছে মাহিনা এদিক না মাড়াতে। পা দেওয়া তো দূর কি বাত, ছ’মাসের জন্য এ শালার ধান্দাই বন্ধ করে দেবে সদানন্দ। লম্বা কামাই হয়েছে বছরখানেক এ লাইনে। বসে বসে খাবে ঘরে। সেকশন ঠান্ডা হলে ফের দেখা যাবে। খাটের একপাশে রাখা একটা তোয়ালে। ভাল করে কপালের ঘাম মুছে নিয়ে ট্রে-র ওপর রাখা রামের গ্লাসটা তুলে নিল সদানন্দ।
মৌলালি মোড় ছাড়িয়ে বাঁ হাতের ফুটে সাদা বড় গাড়িটা পার্ক করল তারক। গাড়ির দরজা খুলে নেমে এল রুদ্র। পিছনে মজিদসাহেব। সামনে একটা ছোট কিন্তু ঝাঁ-চকচকে রেস্তরাঁ। গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিল প্রতাপ। প্রতাপ বিশ্বাস। রেস্তরাঁর মালিক। এক সময় এলাকার বেতাজ বাদশা। বাঘে-গরুতে একঘাটে জল খেত ওর নামে। সেসব কারবার চুকিয়ে দিয়েছে বছরকয়েক হল। তার বদলে এই রেস্তরাঁ। কালো দুনিয়া থেকে সরে এলেও যোগাযোগটা রয়ে গেছে। পুলিশের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের ঝানু ঝানু অফিসাররা আন্ডারওয়ার্ল্ডের তাবড় সব খলিফাদের সঙ্গে মিটিংয়ের জন্য প্রতাপের এই রেস্তরাঁটা খুব পছন্দ করে। রুদ্রদের নামতে দেখে বিনীত হেসে এগিয়ে এল সামনে।
“ওরা এসে গেছে?” নিচু গলায় প্রশ্ন করল রুদ্র।
“হ্যাঁ স্যর, আপনার জন্যই ওয়েট করছে সবাই,” একই ভাবে জবাব দিল প্রতাপ।
“গুড! আসুন মজিদসাহেব,” সামনে এগিয়ে গেল রুদ্র।
ড্রাইভারের সিটে বসে রুদ্রদের ভেতরে ঢুকে যেতে দেখল তারক। যাক, কমসে কম ঘণ্টাখানেকের জন্য নিশ্চিন্ত এখন। আয়েশ করে গুটখা চিবোনো যেতেই পারে। স্যরের ধমক খাওয়ার ভয় নেই। পকেট হাতড়ে বের করল একটা গুটখার প্যাকেট। সঙ্গে আকারে আর একটু ছোট একটা জর্দার পাউচ। দুটোকে ভাল করে মিশিয়ে পুরোটা ঢেলে দিল মুখে। হালকা ঝিমঝিম ভাব একটা। মস্তিতে চোখ বুজে ঢুলতে লাগল তারক।
রেস্তরাঁর দোতলায় ছোট একটা কেবিন। সাউন্ডপ্রুফ। হাল্কা এসি চলছে। গোলাকার একটা টেবিল। পাশাপাশি বসে ছিল রফিকমিয়াঁ আর ঊর্মিলা সিং আগ্রাওয়ালি। বয়স ষাট-পঁয়ষট্টি। সোনাগাছিতে ‘নাইট ড্রিম’ ফ্ল্যাটবাড়ির দাপুটে মালকিন। পরনে অবাঙালি কায়দায় পেঁচিয়ে পড়া হালকা রঙের আটপৌরে তাঁতের শাড়ি। গলায় চওড়া একটা পুরনো ডিজ়াইনের ভারী বিছেহার। এক একটা কানে কমসে কম গোটাতিনেক করে হিরে বসানো সোনার দুল। কেবিনের মৃদু এল ই ডি আলোয় ঝিলিক মারছে সেগুলো। দামি জর্দার গন্ধে ভুরভুর করছে গোটা কেবিন। ঊর্মিলা। বহু দিন ধরে রুদ্রর বিশ্বস্ত ইনফর্মার। অন্বেষা মিত্র খুনের মামলাতেও প্রচুর সাহায্য করেছিল। রুদ্রকে দেখে হাসল কালচে বাদামি ছোপলাগা দাঁত বের করে। “নমস্তে সাহাব, আপনাকে ফির লওটে আসতে দেখে ভাল লাগছে। আব বতাইয়ে ক্যা খিদমত কর সকতেঁ আপকা?”
কথার মাঝখানে কেবিনের কাচের দরজায় মৃদু খুটখুট আওয়াজ। বড় একটা ট্রে-তে প্রচুর স্ন্যাক্স আর চারটে চায়ের কাপ সাজিয়ে ঢুকল সাদা ইউনিফর্ম পরা একটা ছেলে। চা খেতে খেতে নিচু স্বরে আলোচনা চলল দীর্ঘ ক্ষণ ধরে।
একসময় চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল রুদ্র, বলল, “কেসটা তো তুমি পুরোটাই শুনলে ঊর্মিলাবহেন। কেন জানি না বারবার আমার মনে হচ্ছে অন্য রকম আর ভয়ঙ্কর খতরনাক একটা খেল চলছে মেয়েগুলোর এভাবে উধাও হয়ে যাওয়ার পেছনে, যা আমার-তোমার আন্দাজের একদম বাইরে। সেই অচেনা দরজাটায় ধাক্কা দিতে হবে আমাদের সবাইকে। যেহেতু তোমার মহল্লার প্রতি ইঞ্চি জমির খবর তোমার নখদর্পণে, সে কারণেই এ কেসে তোমার সাহায্য খুব জরুরি...”
“আপ একদম শোচিয়ে মত সারজি,” কথার মাঝখানেই বলে উঠল ঊর্মিলা সিং, “মেরা পুরা ফওজ লাগা দেঙ্গে ইস কাম কে পিছে। এক হফতার অন্দর কুছ না কুছ খবর বার করে আনবই। ইয়ে ওয়াদা রহা আপসে।”
“শুক্রিয়া ঊর্মিলাবহেন, আমাকে ভরসা দিলে তুমি,” চওড়া হেসে বলল রুদ্র।
ক্রমশ