ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব ৪
Novel

বৃশ্চিকবৃত্ত

মনুভাই একটা কিছু চাইছে, আর বাবু সেটা দিতে পারছে না— শালা ইনসে বড়া বেইজ্জতি অওর ক্যা হো সকতা।

Advertisement

সুপ্রিয় চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:০৬
Share:

ছবি: দীপঙ্কর ভৌমিক

পূর্বানুবৃত্তি: সম্ভাব্য কোনও জায়গাতেই নিরুদ্দেশ মেয়েগুলোকে পাওয়া যায়নি। ডি সি সাহেব তাই চাইছেন, রুদ্র যদি রুটিন কাজের ফরম্যাট ভেঙে এই সমস্যার সমাধান খোঁজে। সেই বার্তা নিয়েই এসেছেন মজিদসাহেব। কিন্তু কিছুতেই রাজি হয় না রুদ্র। অন্য দিকে, ত্বকের জৌলুস কমে আসা সুপারমডেল রিচা মিরচন্দানি ডায়মন্ড মার্চেন্ট মনুভাই পারেখকে ফোন করে হুমকি দেয়, সাত দিনের মধ্যে তার সাপ্লাই না এলে সে হোটেল চেনের মালিক ভিক্রান্ত পারমারের কাছে যাবে।

Advertisement

আপাতদৃষ্টিতে অত্যন্ত সাদামাটা চেহারা বাবুরাওয়ের। কিন্তু তার মধ্যে চোখে পড়ে খাড়া টিকোলো নাক, আর এক জোড়া তীক্ষ্ণ এবং অন্তর্ভেদী চোখ— অনেকটা এক্স-রে মেশিনের মতো, যে কারও ভেতরটা যেন পড়ে ফেলতে পারবে এক মুহূর্তে। সাঙ্গোপাঙ্গদের সঙ্গে ঝুঁকে পড়ে নিচু গলায় কথা বলছিল বাবুরাও। এমন সময় শার্টের বুকপকেটে মোবাইলটা বেজে উঠল। স্ক্রিনে নম্বরটা দেখেই চেয়ার ছেড়ে উঠে ঘরের এক কোণে চলে গেল বাবুরাও। খুব নিচু গলায় কথাবার্তা বলল মিনিটপাঁচেক ধরে। যখন ফিরে এল, মুখের চেহারা যারপরনাই গম্ভীর, বাকিদের বলল, “তু সব থোড়া দূর মে যাকে বাত কর, মেরেকো কৃষ্ণান সে কুছ প্রাইভেট বাতেঁ করনা হ্যায়।” সঙ্গে সঙ্গে বাবুরাওয়ের সামনে থেকে উঠে চলে গেল সবাই। বাবুরাওয়ের দীর্ঘ কালের বিশ্বস্ত সহচর কৃষ্ণান, তড়িঘড়ি চেয়ারটা টেনে এগিয়ে এল সামনে।

Advertisement

“মনুভাই কা ওহ কাম কা ক্যা হুয়া?” চাপা ঠান্ডা গলায় প্রশ্ন করল বাবুরাও। “উসমানভাই সে বাত হুয়া দো দিন পহলে। বোলা কি অওর দো-তিন হফতা টাইম লাগেগা,” একটু ভয়ে ভয়েই উত্তর দিল কৃষ্ণান। কৃষ্ণানের জবাবটা শোনামাত্র চাপা গলায় সাপের মতো হিসহিস করে উঠল বাবুরাও, “কিঁউ! ওহ শালা উসমান, ইতনা দিন সে ক্যা উখাড় রহা থা? তিন মাহিনা পহলে বাত হুয়া উসসে, দশ পেটি (লাখ) অ্যাডভান্স ভি লে লিয়া, অওর সাপ্লাই কা টাইম মে শালা যিতনা নৌটঙ্কি! সুন কৃষ্ণান,” ক্রমাগত হিংস্র হয়ে উঠছিল বাবুরাওয়ের গলা, “উসমান কো বোল, এক হফতা কে অন্দর মেরেকো সাপ্লাই চাহিয়ে। আগর নহি মিলা, তো হামসে বুরা কোই নহি হোগা।”

“জি ভাই,” পকেট থেকে ফোন বার করে নম্বর খুঁজতে লাগল কৃষ্ণান। চোখ বন্ধ করে চিন্তায় ডুবে গেল বাবুরাও। সেই কত কাল আগের কথা। সাউথ আফ্রিকা থেকে ভায়া আরব হিরে আর ২৪ ক্যারেট সোনার বিস্কুট নামত মুম্বই ডকে। মাল খালাসের দায়িত্বে উঠতি গ্যাংস্টার বাবুরাও আর তার গ্যাংয়ের ছেলেছোকরারা। সেই মাল পুরোটাই কিনে নিত জাভেরি বাজারের মনুভাই পারেখ। মোটা কমিশন পেত বাবুরাও গ্যাং। সময় যত এগিয়েছে, মনুভাইয়ের ব্যবসাও তত ফুলেফেঁপে উঠেছে। জাভেরি বাজারের একটা দোকান থেকে দুনিয়াজোড়া ডায়মন্ড রিটেল চেন, বিশাল সব ফ্যাক্টরি আর ওয়ার্কশপ। রাজ্যে তো বটেই, গহেরা জানপহচান তৈরি হয়েছে সেন্ট্রাল মিনিস্ট্রির অনেক কেষ্টবিষ্টুর সঙ্গেও। মনুভাইয়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতা আর টাকা, দু’টোই কয়েকশো গুণ বেড়েছে বাবুরও। গ্যাংস্টার গুন্ডা থেকে ভাই, ভাই থেকে কর্পোরেটর— রাজনীতির দুনিয়ায় ওর ঢুকে পড়ার পিছনেও খুব জোরালো ভাবে কাজ করেছিল মনুভাইয়ের হাত। স্টেট থেকে সেন্ট্রাল, তাবড় তাবড় পলিটিক্যাল লিডারের সঙ্গে বাবুর আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন মনুই। বাবুর মিউনিসিপ্যাল ইলেকশনে ক্যান্ডিডেট হয়ে দাঁড়ানোর বুদ্ধিটাও মনুরই দেওয়া। সেই ইলেকশনে বাবুকে জেতাতে জলের মতো টাকা খরচ করেছিলেন মনু। মনুর টাকা আর বাবুর মাসল পাওয়ার, এই দুইয়ের জোরে আজ কর্পোরেটর বাবু। প্রতি বছর এলাকায় কয়েক খোখা (কোটি) রোকড়া (টাকা) খরচ করে যে বিশাল গণপতি পুজো করে বাবু, তার অনেকটাই আসে মনুভাইয়ের তহবিল থেকে। সেই মনুভাই একটা কিছু চাইছে, আর বাবু সেটা দিতে পারছে না— শালা ইনসে বড়া বেইজ্জতি অওর ক্যা হো সকতা। আগে হলে নিজেই ময়দানে নামত, কিন্তু দিনকাল পাল্টেছে। বাবু এখন পাতি মহল্লার গ্যাংস্টার নয়, কর্পোরেটর বাবুরাও পাটিল। থানায়, সরকারি দফতরে গেলে দু’-দশটা সরকারি অফসর উঠে দাঁড়িয়ে সেলাম ঠোকে। এ ব্যাপারে উসমানের মতো গুন্ডার সঙ্গে কথা বলাটা মানায় না ওকে। কৃষ্ণান কথা বলছে বলুক, ইনস্পেক্টর তাওড়েকে দিয়ে একটু কড়কে দিতে হবে শালা উসমানকে। পকেট থেকে ফোন বার করল বাবুরাও।

ভোর পাঁচটা। শীত-রাতের নাছোড় অন্ধকার তার জায়গা ছাড়তে নারাজ এখনও। কাকভোরের কুয়াশা পাতলা চাদরের মতো জড়িয়ে রয়েছে নোনাখালের দু’পারে, জঙ্গলের সুন্দরী, গরান আর বাইনের ডালে। ঘাটে দাঁড়ানো ঝাপসা দুটো অবয়ব। নিশ্চুপ দু’জনেই। ঘাটলার শেষ ধাপে খুঁটিতে বাঁধা একটা ভুটভুটি নৌকো। ঝুঁকে পড়ে মোটরের ট্যাঙ্কে ডিজেল ঢালছে বয়স্ক মাঝি। সে দিকে পা বাড়াবার আগে মজিদসাহেবের হাতদু’টো চেপে ধরলো রুদ্র, “কিছু মনে করবেন না মজিদসাহেব, আপনার প্রস্তাবে রাজি হতে পারলাম না বলে। কাল রাতেও আপনাকে বলেছি, আবারও বলছি, অনেক অনেক কষ্টে ছিঁড়ে যাওয়া সম্পর্কের তারগুলো জোড়াতালি দিয়ে লাগানোর চেষ্টা করছি আমরা খুব দুঃখী দু’জন মানুষ। তার মধ্যে আবার কোনও জটিলতা এসে ঢুকে পড়ুক, এটা চাইছি না কেউই। জানি, বড়সাহেব আমাকে খুবই স্নেহ করেন। ওঁকে একটু বুঝিয়ে বলবেন ব্যাপারটা।”

রুদ্রর কথায় বিষণ্ণ হাসলেন মজিদ আলি, “সে আপনি যখন বলছেন স্যর, তখন নিশ্চয়ই আমি যথাসাধ্য বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করব সায়েবকে। কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা। ঠিক এই মুহূর্তে আমি যার সামনে দাঁড়িয়ে আছি, সেই মানুষটা সত্যিই রুদ্রনারায়ণ ব্যানার্জি তো? যে মানুষটা তার একমাত্র সন্তান, সংসার সব হারিয়েও সন্তানহারা আর এক জন বাবাকে জাস্টিস পাইয়ে দেওয়ার জন্য গোটা দুনিয়া এফোঁড়-ওফোঁড় করে ফেলেছিল! সে তো ছিল একটা মেয়ের ব্যাপার। আর এখানে!” উত্তেজিত শোনাচ্ছিল মজিদের গলা, “এক সঙ্গে এতগুলো বাচ্চা মেয়ে, জাস্ট উধাও হয়ে গেছে আমাদের চারপাশ থেকে। তারা কাতর চিৎকার করে ডাকছে আপনাকে ওদের বাঁচানোর জন্য, আপনি সে ডাক শুনতে পাচ্ছেন অথচ সাড়া দিচ্ছেন না। দাঁড়িয়ে রয়েছেন চুপ করে...” এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে মিনিটখানেক মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলেন মজিদ। ফের যখন মুখ খুললেন, তখন গলা ধরে গেছে, “জানি, কথা বাড়িয়ে কোনও লাভ নেই, তবু ম্যাডামের কাছে আমার নম্বরটা দিয়ে গেলাম। মনে হলে ফোন করবেন।”

ঘাটলায় ভুটভুটির মোটর চালু করার ভুট ভুট আওয়াজ... “চইলে আসেন বাবু, নাও রেডি!” গলুই থেকে হাঁক পাড়ল বুড়ো মাঝি। মুখ ঘুরিয়ে ঘাটের সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেলেন ইন্সপেক্টর মজিদ আলি। আর একটিও কথা না বলে। একদৃষ্টে সে দিকে তাকিয়ে রইল রুদ্র, যত ক্ষণ না দৃষ্টির আড়ালে চলে যায় নৌকোটা।

ডোংরির ঘিঞ্জি সংখ্যালঘু মহল্লা। তস্য সরু গলিগুলোয় বাড়ি থেকে বাড়ি, মাথার ওপর টাঙানো সবুজ রঙের চাঁদ তারা আঁকা অসংখ্য ছোট ছোট প্লাস্টিকের পতাকা। রাস্তার ওপর গায়ে গায়ে অগুনতি খাবারের স্টল। চাট, পাও ভাজি, কাবাব, ফলের রস। ঠেলা, ভ্যানগাড়ি, স্কুটার, বাইকের প্যাঁ-পোঁ। লোকজনের হল্লাগুল্লা, ভিড়ভাড়াক্কা। সকাল দশটা-সাড়ে দশটা। মসজিদ ঘেঁষা বহু পুরনো তিনতলা বাড়িটার ছাদে আরামকেদারায় হেলান দিয়ে বসে ছিল উসমান শেখ, ওরফে কালিয়া উসমান। দীর্ঘকায় বলিষ্ঠ চেহারা। মেহেন্দিরঙা চুল ও দাড়ি। পরনে ক্রিমরঙা পাঠান স্যুট। মাথায় গাঢ় সবুজ রঙের নামাজি টুপি। গলায় কারসুতোয় বাঁধা রুপোর তাবিজ। কব্জিতে প্ল্যাটিনামের চেন আর বিদেশি ঘড়ি। এই মুহূর্তে গভীর চিন্তার ছাপ চোখেমুখে। চিন্তার কারণ আছে। গত রাতে ফোন করেছিল কৃষ্ণান। বলছিল, বাবুভাই নাকি বহোত গরম হয়ে রয়েছে। আভি তক সাপ্লাই নহি আয়া। বেধড়ক গালি-গুফতা করেছে সবাইকে। চোখ বন্ধ করে ভাবছিল উসমান। গুসসা হওয়ারই কথা বাবুরাওয়ের। দশ পেটি অ্যাডভান্স দিয়ে বসে আছে বেশ কয়েক মাস হল। তবু মাল পাচ্ছে না। ইন হালত মে... চিন্তার তারটা কেটে গেল হানিফের কথায়, “উসমানভাই, ক্রাইম ব্রাঞ্চ সে ইনস্পেক্টর তাওড়ে আয়েঁ হ্যায়।”

শোনামাত্র ভুরুজোড়া ধনুকের মতো কুঁচকে গেল উসমানের। ইনস্পেক্টর তাওড়ে। ক্রাইম ব্রাঞ্চ কা সবসে খতরনাক অফিসার। নব্বে সে ভি জিয়াদা এনকাউন্টার কা কেস হ্যায় সালে কা নাম পে। হঠাৎ এ রকম সকাল সকাল!

“অন্দর ভেজ হারামি কো,” বেজার মুখে হানিফকে নির্দেশ দিয়ে ইজ়িচেয়ারে সোজা হয়ে বসল উসমান।

মিনিটতিনেক বাদে হানিফের সঙ্গে ছাদের দরজা দিয়ে ঢুকল ইনস্পেক্টর যশবন্ত তাওড়ে। ছিপছিপে পেটানো চেহারা। হাসিমুখের আড়ালে শেয়ালের মতো ধূর্ততার ছাপ স্পষ্ট।

“ক্যা উসমানভাই, আপনা খোলি (ঘর) কো তো একদম কিল্লা বানাকে রাখ দিয়া। শালা এক তলা থেকে তিন তলায় উঠতে তিনখানা কোল্যাপসিবল গেট। ইয়া মোটা মোটা তালা লাগানো। হর গেট মে দোঠো ছোকরা। সবার কোমরে ঘোড়া সাঁটানো। টোটাল বডি এমন ভাবে সার্চ করল, আমাদের কমিশনারের ঘরে ঢুকতে গেলেও শালা এ রকম সার্চ হয় না!”

তাওড়ের দিকে চেয়ে মুচকি হাসল কালিয়া উসমান। “আপ পোলিসওয়ালোঁ কো ক্যা ভরোসা। এ লাইনে সাহাব, আমরা সবাই জানি, কারও এনকাউন্টার করতে হলে আপনারা দু’-একটা লাইসেন্স ছাড়া ঘোড়া কোমরে সাঁটিয়ে রাখেন। বে-কানুনি পিস্তলের গুলিতে কেউ খালাস হয়ে গেলে, আপনারা সিধা বলে দেবেন কি ওহ শালা ক্রিমিনালকা মওত গ্যাংওয়ার মে হুয়া। ইস মে পোলিসকা কোই হাত নহি হ্যায়। ডোন্ট মাইন্ড স্যর, এর জন্যই থোড়া তলাশি করে নিতে হয়।”

কথাটা শোনামাত্র ধূর্ত হাসির আড়ালে আরও হিংস্র হয়ে উঠল ইনস্পেক্টর তাওড়ের ঠান্ডা চোখজোড়া। চেয়ার থেকে উসমানের সামনে ঝুঁকে পড়ে হিসহিস করে উঠল সাপের মতো, “শুনো উসমানভাই, আগর এক হফতা কে অন্দর বাবুভাইকো সাপ্লাই নহি মিলা তো আপকা দো-চার লড়কেকো সহি মে এনকাউন্টার করনা পড়েগা মুঝকো, অওর আপ ভি সেফ নেহি রহোগে। ভাল করে বুঝে নাও কথাটা। আমি উঠছি এখন। টাইম মনে রাখবে, সির্ফ এক হফতা।”

চেয়ার ছেড়ে উঠে বেরিয়ে গেল তাওড়ে।

চিন্তাটা কয়েক গুণ বেড়ে গেল উসমানের। তাওড়ের কথাতেই বোঝা যাচ্ছে, এক হফতার মধ্যে সাপ্লাই না এলে যা বলছে সেটাই করবে হারামিটা। মাথার ওপর কর্পোরেটর বাবুরাওয়ের হাত রয়েছে শালার। পলিটিক্সের উঁচা মহল তক জানপহেচান বাবুর। তিন-চারটে এনকাউন্টার হয়ে গেলে ডর পয়দা হয়ে যাবে গ্যাংয়ের ছোকরাদের মধ্যে। ধান্দা চালানোই শালা মুশকিল হয়ে পড়বে বিলকুল। হানিফকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকল উসমান, বলল, “কলকাত্তা, শিলিগুড়ি, রক্সওল, পিথোরাগড়— চারোঁ তরফ ফোন লাগা হারামিলোগোঁকো। এক হফতার মধ্যে চালান না এলে আখখা (পুরো) মুম্বইয়ে আর কোনও দিন ধান্দা করে খেতে হবে না শুয়ারদের। মেরা নাম কালিয়া উসমান, মনে রাখে যেন শালারা।”

রাত দশটা। হাড় ফুটো করে দেওয়া বরফঠান্ডা শীত-লহর বয়ে যাচ্ছিল নেপালের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার ছোট গ্রামটার ওপর দিয়ে। আঁকাবাঁকা অমসৃণ পাথুরে পথঘাট একদম জনশূন্য এই মুহূর্তে। চারপাশ আপাদমস্তক মোড়া ঘন কুয়াশার চাদরে। এতটাই ঘন যে, দু’হাত দুরের কিছুও ঠাহর করতে অসুবিধে হয়। ঝুপড়ি কুঁড়েঘরটার ভেতরেও এক কোণে আগুনের মালসা। কাঠকুটোর আগুন থেকে ওঠা ধোঁয়ায় নাকচোখ জ্বালা করছে রীতিমতো। দরজার এক পাশে দড়ির খাটিয়ায় বসা কিম বাহাদুর। বয়স চল্লিশ ছুঁই-ছুঁই। গায়ে বেজায় মোটা আর খসখসে একটা ভুটিয়া কম্বল। হাতে একটা লম্বাটে পাইপ। থেকে থেকে ভুড়ুক ভুড়ুক টান দিচ্ছে পাইপে। সস্তা তামাকের কড়া কটু গন্ধ মিশে যাচ্ছে মালসার ধোঁয়ার সঙ্গে। ঘরের আর এক কোণে তিনকোনা মাটির উনুনে রান্না চড়িয়েছে তাশি। কিম বাহাদুরের বৌ।

ক্রমশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement