অর্থাভাবে, অনাহারে আত্মহত্যাই ছিল বহু শ্রমিকের পরিণতি। তার উপরে ছিল সাহেব মালিকদের অত্যাচার। ছিল না অসুস্থতা কিংবা মাতৃত্বের জaন্য ছুটি। ফলে অকালমৃত্যু হত শিশুদেরও। বিচার আর আইনও ছিল সাহেবদের হাতে।
Tea workers

Dwarakanath Gangopaddhay: অসংখ্য চা-শ্রমিকের জুটত না পানীয় জলও

এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নিরন্তর সংগ্রামের ফলেই একটু একটু করে উন্নতি হয় অসমের চা-বাগানের শ্রমিকদের।

Advertisement

রূপম দেব

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:৪৩
Share:

সংগ্রামী: দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়। ডান দিকে, তখন অসমের চা-বাগানে কর্মরত মহিলারা

আমরা অধিকাংশ বাঙালিই দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়কে চিনি ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বামী হিসেবে। কিন্তু শুধু স্ত্রীর পরিচয়েই নয়, নিজের পরিচয়ে খ্যাত হওয়ার মতো বহু কীর্তি তাঁর আছে। তাঁকে অনেকে ব্রাহ্মসমাজের এক নতুন রূপকার হিসেবেও মনে করেন। ব্রাহ্মসমাজের বহু সদস্যদের মধ্যে ধর্মীয় গোঁড়ামি ও নারী স্বাধীনতায় দ্বিধাগ্রস্ত ভাব থাকায় দ্বারকানাথ নতুন করে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ গঠন করেন। সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় আন্দোলনকে নতুন রূপ দেওয়ার সঙ্কল্প নিয়ে ১৮৭৬ সালে ভারতসভা প্রতিষ্ঠা করেন। এর অন্যতম কান্ডারি ছিলেন দ্বারকানাথ। দুর্ভিক্ষ ও মহামারিতে আর্ত মানুষের সেবা, শ্রমজীবী মানুষের সংগঠন, ভারতসভা পরিচালিত কৃষক রায়ত আন্দোলন, গ্রামে অবাধে মদ তৈরির বিরুদ্ধে আন্দোলনের ক্ষেত্রেও দ্বারকানাথের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।

Advertisement

১৮৪৪ সালের ২০ এপ্রিল ঢাকা জেলার বিক্রমপুরে সমাজ-সংস্কারক দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম। তাঁর বিশেষ উল্লেখযোগ্য কীর্তি হল অসমের চা-শ্রমিকদের উপর হওয়া ব্রিটিশদের অমানবিক শোষণের কথা সবার সামনে তুলে ধরা ও চা-শ্রমিকদের হয়ে অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া। শুধু নিজের সম্পাদিত পত্রিকা ‘অবলাবান্ধব’ (১৮৬৯), ‘সমালোচক’ (১৮৭৮) বা ‘সঞ্জীবনী’ (১৮৮৩) পত্রিকায় নারীজাতির সর্বাবিধ উন্নয়ন বা নিপীড়িত শ্রেণির হয়ে কলম ধরেই ক্ষান্ত থাকেননি। নীলকর, চা-কর এবং সামাজিক গোঁড়ামির বিরুদ্ধে অবিরাম লড়াই করে গিয়েছেন।

চা-শ্রমিকদের প্রতি হওয়া অন্যায়ের কথা দ্বারকানাথ প্রথম জানতে পারেন রামকুমার বিদ্যারত্নের কাছ থেকে। সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের সদস্য রামকুমার বিদ্যারত্ন, শিবনাথ শাস্ত্রী এবং গণেশচন্দ্র ঘোষ অসমের প্রচারক হিসেবে মনোনীত হন। এই প্রচারের ফলেই রামকুমার বিদ্যারত্ন ‘উদাসীন সত্যশ্রবার আসাম ভ্রমণ’ নামে একটি বই লেখেন। যাতে অসমের চা-শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের কাহিনি লেখা আছে। ১৮৮৩ সালে বাংলা ভাষায় ‘সঞ্জীবনী’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করতেন ব্রাহ্ম আন্দোলনের নেতা কৃষ্ণকুমার মিত্র। সেখানে চা-করদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত মামলা চলছিল এবং তাতে ইংরেজ বিচারকরা কী রকম একতরফা রায় দিচ্ছিলেন তার কাহিনি লিখতে শুরু করলেন রামকুমার বিদ্যারত্ন। এর মধ্যে উমেশের মামলা খুব চর্চিত। মিস্টার গর্ডন ছিলেন কালাজোলা নামে সিলেটের এক চা-বাগানের সর্বময় কর্তা। তিনি রাগের চোটে উমেশ নামে এক ১৪ বছরের বালকের সারা শরীর জুতো-সহ পা দিয়ে মাড়িয়ে দেন। যন্ত্রণায় বালকটির মৃত্যু হয়। গর্ডনকে বন্দি করে জেলা আদালতে আনার পর জেলা বিচারক মিস্টার পোপ, গর্ডনকে মুক্ত করে দেন। এই বিষয়টি ‘সঞ্জীবনী’ পত্রিকাতে প্রকাশ পেলে শিক্ষিত মহলে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে।

Advertisement

বিদ্যারত্নের এই খবরের উপর ভিত্তি করেই দ্বারকানাথ অসমে গিয়ে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর সঙ্কল্প নেন। ১৮৫৯ সালের ব্রিটিশ আইনের একটি ধারার সুযোগ নিয়ে চা-মালিকরা মূলত ছোটনাগপুর থেকে শ্রমিক সংগ্রহ করত। দালালদের মোটা টাকা দিয়ে আদিবাসীদের ছলে বলে কৌশলে অসমের জঙ্গল ও পাহাড়-ঘেরা বাগানে নিয়ে আসত। মহিলা ও শিশুদের অপহরণ করে বাগানে কাজ করানোর বহু ঘটনা সেই সময় দেখা যায়। হাজার হাজার শ্রমিককে নতুন বাগানে জমায়েত করা হয়েছিল কোনও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বা পানের উপযুক্ত জলের ব্যবস্থা ছাড়াই। ফলত বাগানে বাড়তে থাকে মৃত্যুর হার। অসুস্থতার জন্য ছুটি দেওয়া হত না, উল্টে মজুরি কাটা হত।

এমতাবস্থায় দ্বারকানাথ হাজির হলেন অসমের চা বাগানে তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে। এক বাগান থেকে আর এক বাগানে পাড়ি দিলেন বিভিন্ন ছদ্মবেশে। খড়ের গাড়িতে লুকিয়ে মাইলের পর মাইল গিয়ে বিস্তৃত তথ্য সংগ্রহ করলেন। যে সমস্ত তথ্য তিনি সংগ্রহ করেছিলেন তা প্রবন্ধের আকারে বাংলায় ‘সঞ্জীবনী’ পত্রিকায় একাধিক সংখ্যায় প্রকাশ করেন। ‘দ্য বেঙ্গলি’ নামক ইংরেজি পত্রিকায় ‘স্লেভারি ইন ব্রিটিশ ডমিনিয়ন’ নাম দিয়ে ১৩টি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন, ১৮৮৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ১৮৮৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। সেই সব প্রবন্ধ থেকেই আমরা যোরহাট চা কোম্পানির মেডিক্যাল অফিসার গ্রে-র রিপোর্ট পড়ে জানতে পারি, বর্ষাকালে ম্যালেরিয়া জ্বরে সর্বাধিক শিশুর মৃত্যু হত। শিবসাগরের ডেপুটি কমিশনারের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, মহিলারা শিশু প্রসবের পরদিন বা কয়েক দিন পর থেকেই কাজে যোগ দিতে বাধ্য হতেন। মাতৃত্বের জন্য কোনও ছুটি না দেওয়াতে বহু শিশুর অকালমৃত্যু হত। মায়েরা নির্মম সত্যের মুখোমুখি হয়ে গর্ভপাতের আশ্রয় নিতেন এবং দাইরা এই ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করত। দ্বারকানাথ লিখলেন, ১৮৮৪ সালে বাগানে শিশুমৃত্যুর হার হাজার প্রতি ৩৯.৭ জন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ জনে। ম্যানেজার খুশি না হলে বেত্রাঘাত ও চাবুকের মার যে শ্রমিকদের প্রাপ্য ছিল, তাও উল্লেখ করলেন। তিনি লিখলেন, চাবুক চা-বাগানের আধিকারিকদের অপরিহার্য সঙ্গী। ম্যানেজার থেকে শুরু করে খুদে সর্দার, সকলেই চাবুক আস্ফালনে অভ্যস্ত। স্ত্রী-পুরুষ, বয়স্ক-অল্পবয়স্ক, বালক-বালিকা নির্বিশেষে সকলের জন্য চাবুকের পীড়ন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। অসম সরকারের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক আত্মপরিচয় গোপন করে বাগান পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তিনি দেখলেন, এক জন চা-শ্রমিককে গাছের সঙ্গে হাত বাঁধা অবস্থায় ম্যানেজার নির্মম ভাবে চাবুক মেরে চলেছে। ১৮৮৪ সালে দাইগোরুন চা বাগানের ম্যানেজার ফ্রান্সিসের বিচার হয় আদালতে। অপরাধ, এক কুলি রমণীকে চাবুক মারতে মারতে মেরে ফেলা। ১৮৮১ সালের রিপোর্টে আমরা পাই, কাছাড় জেলার সাদার্ন সাবডিভিশনের পালিয়া বোয়ালিয়া চা বাগানের ম্যানেজারকে শ্রমিকরা কয়েক ঘণ্টা ঘরে বন্দি করে রাখে। কারণ ম্যানেজার শ্রমিকদের সামনে এক বালককে বেত্রাঘাত করছিল। এই ঘটনার ফলে প্রায় ১২ জন শ্রমিককে তিন দিন থেকে এক মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। ম্যানেজারের জন্য ২০০ টাকার জরিমানা ধার্য হয়। পরবর্তী বিচারপতি শ্রমিকদের প্রাপ্য শাস্তি বহাল রাখলেও ম্যানেজারের জরিমানা ২০০ থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা করে।

শ্রমিকদের জব্দ করার আর একটি পদ্ধতি ছিল তাঁদের তালা বন্ধ করে অন্ধকার ঘরে আটকে রাখা। দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা থেকে জানা যায়, বাগানে শ্রমিকদের সঙ্কীর্ণ জায়গায় আটকে রাখা হয়, যা ইতিহাস-কলঙ্কিত অন্ধকূপের থেকেও ভয়ঙ্কর। এক ফোঁটা জল চাইলেও তাদের দেওয়া হত না। ১৮৮৪ সালে ডিব্রুগড় জেলার দমদম চা তালুকের কেদারনাথ ঘোষ ও শশধর বর্মা নামে দু’জন অফিসার এক শ্রমিককে বেআইনি ভাবে আটক রাখার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়। এই মামলার সূত্র ধরে আসা সাক্ষীদের দেওয়া বয়ানে জানা যায় যে, বহু চা-বাগানেই ভূগর্ভস্থ অন্ধকার কারাকক্ষ আছে।

‘দ্য বেঙ্গলি’ পত্রিকায় ১৮৮৬ সালের ২৩ অক্টোবর একটি ঘটনার কথা প্রকাশ পায়। স্ত্রী-হত্যার অপরাধে অভিযুক্ত লখি বাগদি নামে এক শ্রমিককে অসমের এক এজলাসে বিচারার্থে উপস্থিত করা হয়েছিল। স্বামী অপরাধ স্বীকার করেই বলে, স্ত্রীর সম্মতি নিয়েই সে স্ত্রীকে হত্যা করেছিল। তারা দিনের পর দিন অর্ধাহারে অনাহারে কাটিয়েছে। অবশেষে আর কষ্ট সহ্য করতে না পেরে তারা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। স্বামী প্রথমে স্ত্রীকে বলে তাকে হত্যা করতে। কিন্তু স্ত্রী অস্বীকার করে। স্ত্রী প্রস্তাব দেয়, লখি প্রথমে তাকে হত্যা করুক। তার পর আদালতে অপরাধ স্বীকার করে প্রাপ্য শাস্তি মাথা পেতে নিক। স্ত্রীর প্রস্তাব মেনে নিয়ে স্বামী স্ত্রীকে হত্যা করে এবং এ ভাবেই দু’জন নিজেদের জ্বালা-যন্ত্রণার অবসান ঘটাতে চায়। সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে বোঝা যায়, স্ত্রী নিজেকে বাঁচানোর কোনও চেষ্টা করেনি। অভিযুক্ত স্বামী আদালতে অনুরোধ করে, আদালত যেন কারখানার অ্যাকাউন্ট বুক পেশ করার আদেশ জারি করে, খাতা পরীক্ষা করলেই বিচারক বুঝতে পারবেন তাদের কী ভাবে দীর্ঘকাল অনাহারে দিন কাটছে। কিন্তু বিচারক তা করলেন না।

তবে দ্বারকানাথ চা-বাগানের দুর্দশা সম্বন্ধে শুধুই যে লিখে গিয়েছেন, তা নয়। ১৮৮৯ সালের ১২ এপ্রিল দ্বারকানাথ খবর পেলেন, গঞ্জাম জেলার এক দল কুলিকে কলকাতায় চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অসমে চালান দেওয়া হচ্ছে। দ্বারকানাথ ময়দানে গেলেন এবং কুলিদের আশ্রয় ও বাসস্থানের বন্দোবস্ত করলেন। পুলিশ কমিশনারকে জানানো হলে তিনি সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিলেন। পরদিন সকালে দ্বারকানাথ জানতে পারলেন যে পুলিশের ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টের সহায়তায় আড়কাঠিরা জনজাতিদের অসমে চালান করে দিয়েছে। জনজাতি অধ্যুষিত সাঁওতাল পরগনা চা-শ্রমিক সংগ্রহের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র ছিল। দ্বারকানাথের অনুরোধে হাজারিবাগের উকিল হরিচাঁদ মৈত্র এবং গিরিডির উকিল কালীকৃষ্ণ চন্দ্র কুলি-সংক্রান্ত অনেকগুলি মামলা পরিচালনা করলেন।

১৮৮৭ সালে জাতীয় কংগ্রেসের মাদ্রাজ অধিবেশনে চা-বাগান শ্রমিক সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব এলে সেটিকে প্রাদেশিক সমস্যা বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়। দ্বারকানাথ উক্ত আবেদনের সমর্থনে বলেছিলেন যে, বিষয়টি মোটেই প্রাদেশিক নয়, বরং সর্বভারতীয়। কারণ দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে অন্যায় ভাবে শ্রমিক সরবরাহ করা হচ্ছে। দ্বারকানাথের অবিরাম প্রয়াসে মধ্যবিত্তের বিক্ষোভের তীব্রতা দেখে ১৮৯০ সালে চা-বাগানের শ্রমিকদের অবস্থা অনুসন্ধানের জন্য কমিশন নিয়োগের সিদ্ধান্ত সরকার কর্তৃক গৃহীত হয়। ১৮৯৬ সালে কলকাতায় কংগ্রেসের দ্বাদশ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অসমের চা-শ্রমিক বিষয়ক প্রস্তাবটি আবার উত্থাপন করলেন যোগেন্দ্রনাথ ঘোষ। যিনি ছিলেন ‘থিইস্টিক সোসাইটি অব ইন্ডিয়া’ নামক একেশ্বরবাদী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা। যোগেন্দ্রনাথ অসমের চা-শ্রমিকদের সম্বন্ধে নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দাসত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য জনৈকা নারীকে তিনি ব্রহ্মপুত্র নদে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে দেখেছেন। বিপিনচন্দ্র পাল প্রস্তাবটি সমর্থন করেন। তিনি বলেন যে ক্রমবর্ধমান চা-শিল্পের বিকাশকে ব্যাহত না করেই ‘স্লেভ অ্যাক্ট’ বা ‘ইনল্যান্ড এমিগ্রেশন অ্যাক্ট’ বাতিল করা যায়। সবশেষে বিষয়টি আলোচ্য সূচির অন্তর্গত হয়। দ্বারকানাথের সুদীর্ঘ প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত সার্থক হয়।

এ সব দেখে অসমের চিফ কমিশনার হেনরি কটনের নির্দেশে অসম সরকার শ্রমিকদের উন্নতির জন্য সংস্কার ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। আড়কাঠিদের অত্যাচার ও শোষণও ক্রমাগত কমে আসে। দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায় ও ব্রাহ্মসমাজের এই লড়াই ইংল্যান্ডেও আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। তা ছাড়া এই লড়াইয়ের নতুনত্ব হল, ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে শ্রমজীবী ও ‘আদিবাসী’দের লড়াই যুক্ত হয়ে পড়া, যা ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনেও এক নতুন বাঁক নিয়ে আসে।
মধ্যবিত্ত ও শিক্ষিত মানুষ প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে নতুন ভারত গড়ার স্বপ্ন দেখে। দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন তাঁদের মধ্যেই উজ্জ্বল একটি নাম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement