যুক্তিনিষ্ঠ: ডাঃ মহেন্দ্রলাল সরকার জনসাধারণের মধ্যে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন বিজ্ঞানচেতনা ।
এক বার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ফিফথ ইয়ারের ক্লাস চলছিল। পড়াতে পড়াতেই ছাত্রদের একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন সাহেব অধ্যাপক। সারা ক্লাস নিশ্চুপ। সেখান দিয়ে যাচ্ছিল সেকেন্ড ইয়ারের একটি ছাত্র। কারও জন্য ওষুধ নিতে এসেছে সে। প্রশ্নটি তার কানেও গিয়েছে। সকলে নীরব দেখে সে দাঁড়িয়ে উত্তরটি দিয়ে দিল। অবাক হলেন অধ্যাপক। পর পর আরও কয়েকটি প্রশ্ন করলেন, প্রতি বারই ঠিক উত্তর দিল ছেলেটি। সেই অধ্যাপকের বিস্ময় ছড়িয়ে পড়ল বাকি অধ্যাপকদের মধ্যেও। এর পর থেকে বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয়ে লেকচার দেওয়ার জন্য ছেলেটির ডাক পড়ত। তার অসামান্য জ্ঞান, মেধা ও স্মৃতির কথা ছড়িয়ে পড়ল। সেই ছেলেটিই পরবর্তী কালের ডাঃ মহেন্দ্রলাল সরকার।
১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের ২ নভেম্বর মহেন্দ্রলাল সরকারের জন্ম হয়। জন্মস্থান হাওড়া জেলার পাইকপাড়া গ্রামে। বাবার নাম তারকনাথ, মায়ের নাম অঘোরমণি। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তিনি পিতাকে হারান। তার পর থেকে কলকাতায় মামাদের কাছে চলে আসেন ও ১৮৪০ সালে হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন। ১৮৪৯ সালে তিনি এই স্কুল থেকে প্রথম স্থান অধিকার করে জুনিয়র স্কলারশিপ পেয়ে হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। কয়েক বছর হিন্দু কলেজে লেখাপড়া করার পর তাঁর বিজ্ঞানের বিষয়ে আগ্রহ বেড়ে যায় এবং ১৮৫৪ সালে তিনি ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। তখন সেখানে শারীরবিদ্যার সঙ্গে সঙ্গে রসায়নবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যা ইত্যাদি বিষয়ও পড়ানো হত। ১৮৬৩ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এম ডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
শৈশব ও কৈশোর কেটেছিল তীব্র দারিদ্র ও অসহায়তার মধ্যে। এর ফলে তাঁর স্বভাবে এসে গিয়েছিল একরোখা কাঠিন্য। তিনি হৃদয়ের ভাব বাইরের কঠোর আবরণ দিয়ে চাপা দিয়ে রাখতেই অভ্যস্ত ছিলেন। প্রথম যৌবনে ইংরেজ শিক্ষাবিদদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষা গ্রহণ করে তিনি প্রখর যুক্তিবাদী হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র ভারতীয় হওয়ার কারণে ইংরেজরা ভারতীয়দের যে বঞ্চনা করত, তা তিনি মেনে নিতে পারতেন না। অনেক সময়েই ভারতীয়রা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে গেলেও, পদমর্যাদা ও বেতন ছিল ইউরোপীয়দের তুলনায় অনেক কম। এ রকম উদাহরণ আছে অসংখ্য। শুধু চাকরি বা পেশাগত ক্ষেত্রে যে বঞ্চনা চলছিল তা নয়, অন্যত্রও সব জায়গাতেই অবস্থা ছিল অনুরূপ। বৈষম্যের চাপে শিক্ষিত ভারতীয়রা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারছিলেন না।
সম্ভবত এর প্রতিবাদেই তিনি তাঁর চিকিৎসার ভিজ়িট রেখেছিলেন সেই সময়ে সর্বোচ্চ, যা তখনকার অনেক ইউরোপীয় ডাক্তারের তুলনায় বেশি। কঠিন রোগে আক্রান্ত রোগী এলে অন্য ডাক্তারবাবুরা তাঁর কাছে পাঠাতেন বা তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতেন। তিনি ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর বেঙ্গল শাখার সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
শুরু থেকে বরাবর তিনি হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসার ঘোর বিরোধী ছিলেন, কিন্তু পরবর্তী কালে তিনি অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা পরিত্যাগ করে হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসায় আত্মনিয়োগ করেন। মরগ্যানের লেখা ‘ফিলসফি অব হোমিয়োপ্যাথি’ বইটি রিভিউ করার জন্য পড়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন ঘটে। আরও ভাল করে হোমিয়োপ্যাথি বোঝার জন্য তিনি তৎকালীন বিখ্যাত হোমিয়োপ্যাথিক চিকিৎসক রাজেন্দ্রলাল দত্তর সঙ্গে দেখা করেন। ডা. দত্তের চিকিৎসার ফলাফল দেখে তিনি নিজেও কয়েকটি হোমিয়োপ্যাথি ওষুধ প্রস্তুত করেন এবং রোগীর ওপর প্রয়োগ করে সন্তুষ্ট হন। তখন তাঁর বিশ্বাস জন্মায় যে হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসা পুরোপুরি বিজ্ঞানসম্মত।
এইখানেই মহেন্দ্রলাল সরকারের যুক্তিবাদী ও সংস্কারমুক্ত মনের পরিচয় পাওয়া যায়। অ্যালোপ্যাথি ডাক্তার হিসেবে তাঁর খ্যাতি ও প্রতিপত্তির চূড়ায় থাকাকালীন— শুধুমাত্র যা সত্য বলে জেনেছেন তার স্বার্থে— সমস্ত ত্যাগ করে চিকিৎসার ধরন পরিবর্তন করা সহজ ছিল না।
১৮৬৭ সালে ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর চতুর্থ বছরের সভায় তিনি হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসার প্রশস্তি করে বক্তৃতা দেন। এর ফলে তাঁকে ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন থেকে বহিষ্কৃত করা হয়। কিন্তু ডা. সরকারকে নিরুৎসাহিত করা যায়নি, তিনি অচিরেই নামকরা হোমিয়োপ্যাথি ডাক্তার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। যার জন্য আমরা দেখতে পাই পরবর্তী কালে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের চিকিৎসার ভার প্রধানত তাঁর হাতে অর্পণ করা হয়েছিল।
মহেন্দ্রলাল সরকারের যুক্তিবাদী, সংস্কারমুক্ত মনে তখনকার সমাজের সাধারণ মানুষের অন্ধ বিশ্বাস খুব পীড়া দিত। তিনি বুঝেছিলেন সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রসার না ঘটলে মন ও চিন্তাশক্তির প্রকাশ ঘটবে না, এবং এ ব্যাপারে ব্রিটিশ শাসনকর্তারা একেবারেই উদাসীন। তাই তিনি, ‘ক্যালকাটা জার্নাল অব মেডিসিন’-এ একটি ভারতীয় বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রস্তাব আনলেন। যে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি অনুদান ছাড়া, স্বদেশি মানুষজনের দানে গড়ে উঠবে, যেখানে সাধারণ মানুষ ও ছাত্রদের জন্য বিজ্ঞানের নানা বিষয় ব্যাখ্যা করা হবে এবং হাতেকলমে পরীক্ষা করে দেখানো হবে। তা ছাড়া সেখানে বিজ্ঞানের গবেষণারও সুযোগ থাকবে।
১৮৭০ সালের ৩ জানুয়ারি, ‘দ্য হিন্দু পেট্রিয়ট’ পত্রিকায় মহেন্দ্রলাল সরকার একটা বিজ্ঞান চর্চাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। তাঁর উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘বঙ্গদর্শন’-এ (১৮৭৩) দীর্ঘ প্রবন্ধ লেখেন। সেখানে তিনি সমস্ত ধনী ও প্রতিষ্ঠিত মানুষদের এগিয়ে এসে মুক্তহস্তে দানের জন্য আবেদন জানান। বঙ্কিমচন্দ্রের আবেদনে জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, জাস্টিস দ্বারকানাথ মিত্র, কৃষ্ণদাস পাল, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, কেশবচন্দ্র সেন, রাজা দিগম্বর মিত্র, ফাদার লাফোঁ, স্যর গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর, প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্ট নাগরিকরা এগিয়ে এলেন। তা ছাড়াও উদার ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন পাটিয়ালার মহারাজ, কাশিমবাজারের মহারাজ, কোচবিহারের মহারাজ, কালীকৃষ্ণ ঠাকুর প্রমুখ।
অবশেষে ১৮৭৬ সালের ২৯ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হল ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স’ (আইএসিএস), ২১০ বৌবাজার স্ট্রিটে, একটা ভাড়াবাড়িতে। মহেন্দ্রলাল সরকার শুরু থেকে আজীবন এর সম্পাদক ছিলেন এবং অ্যাসোসিয়েশনের উন্নতির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন। তিনি নিজে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে বক্তৃতা তো দিতেনই, তা ছাড়া সেই সময়ের বিখ্যাত মনীষীরা, যেমন জগদীশচন্দ্র বসু, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, ডা. চুনিলাল বসু, স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায়রাও সেখানে নিয়মিত বক্তৃতা দিতেন।
তবে তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘আইএসিএস’ যে এক দিন ভারতবাসীর মুখ উজ্জল করবে, তা তিনি দেখে যেতে পারেননি। তাঁর প্রয়াণের তিন বছর পর, ১৯০৭ সালে ভারত সরকারের অর্থ বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মচারী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন কলকাতার অফিসে কাজ করার সময় ‘আইএসিএস’-এ যোগদান করেন ও অবসর সময়ে এখানে গবেষণা শুরু করেন। ১৯১৭ সালে স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায় সি ভি রমনকে সায়েন্স কলেজে অধ্যাপনায় নিযুক্ত করেন। কিন্তু গবেষণার সুযোগ ‘আইএসিএস’-এ বেশি থাকায় প্রফেসর রমন সেখানেই গবেষণার কাজ চালিয়ে যান। ১৯৩০ সালে, আলো নিয়ে গবেষণায়, আলোকরশ্মির বিকিরণের নতুন একটি তথ্য, ‘রমন এফেক্ট’ আবিষ্কারের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান। ‘আইএসিএস’ ভারতে একমাত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেখান থেকে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার এসেছে।
মহেন্দ্রলাল সরকারের বিজ্ঞানচেতনা ও পরাধীন ভারতে স্বদেশিদের বিজ্ঞানচর্চার কেন্দ্র ‘আইএসিএস’ গড়ে তোলার জন্য তিনি চিরস্মরণীয়। কিন্তু তার সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণের চিকিৎসা করার জন্যও মানুষ তাঁকে মনে রাখবে। ডা. সরকার প্রতিমাপূজায় এবং ব্যক্তিপূজায় বিশ্বাসী ছিলেন না। তাই শ্রীরামকৃষ্ণ অবতার, এ কথা মানতে চাননি। মানুষ অশেষ গুণসম্পন্ন হলেও, ইশ্বরের পর্যায়ে কখনও উঠতে পারে না— এই ছিল তাঁর মত।
শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, জ্ঞান ও ভক্তি উভয় পথেই ভগবান লাভ করা যায়। কিন্তু ডা. সরকারের বিশ্বাস ছিল জ্ঞান না হলে সত্যকে জানা যায় না। তাই এক দিন কথামৃতের রচয়িতা শ্রীম অর্থাৎ মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত যখন ডাক্তারবাবুর বাড়িতে গিয়েছেন, দেখছেন ডাক্তারবাবু ময়দার গুলি ছুড়ে চড়ুই পাখিদের খাওয়াচ্ছেন, কিছু পাখি ভয়ে পালিয়ে যাওয়ায় উনি শ্রীমকে বললেন, “ঐ দেখ চড়ুই পাখী উড়ে গেল, ময়দার গুলি ফেললুম, ওর দেখে ভয় হলো। ওর ভক্তি হলো না, জ্ঞান নাই বলে। জানে না খাবার জিনিস।” অর্থাৎ উনি শ্রীরামকৃষ্ণের কথা সব সময় মেনে নিতে চাইতেন না, কিন্তু অবচেতনে ওই কথাগুলি তাঁকে ভাবাত।
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃতে শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁর চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকারের বহু কথোপকথন রয়েছে। এক বার রামকৃষ্ণদেবের ভাবসমাধি হয়েছে। ডাক্তারবাবু তখন উপস্থিত। জ্ঞান ফেরার পর শ্রীরামকৃষ্ণ জিজ্ঞেস করলেন, “এই যে ভাবটাব দেখলে তোমার সায়েন্স কী বলে? তোমার কি এ সব ঢং বলে বোধ হয়? যদি ঢং মনে কর তা হলে তোমার সায়েন্সমায়েন্স সব ছাই পড়েছ।” শুনে মহেন্দ্রলাল সরকার উত্তর দিয়েছিলেন, “যদি ঢং মনে করি, তা হলে কি এত আসি? এই দ্যাখো, সব কাজ ফেলে এখানে আসি। কত রোগীর বাড়ি যেতে পারি না। এখানে এসে ছ’সাত ঘণ্টা থাকি। রোজ দু’-তিনটে কলে যাওয়া হচ্ছে না। পরের দিন আপনিই রোগীদের বাড়ি যাই, ফি নিই না। আপনি গিয়ে ফি নেব কেমন করে?”
এক বার শিবনাথ শাস্ত্রী মহাশয়ের এক কন্যার চিকিৎসা করেছিলেন ডা. সরকার। কিন্তু চিকিৎসায় বিশেষ উন্নতি না হওয়ায়, শাস্ত্রী মহাশয়ের উদ্বেগক্লিষ্ট অভিব্যক্তি দেখে তাঁকে বলেছিলেন, “যে বস্তু তোমার আয়ত্তের বাইরে তার দায়িত্ব নিয়ে কষ্ট পাও কেন? যা কিছু এ ক্ষেত্রে করবার তা তো তুমি করেছ, এ ভেবেই সন্তুষ্ট থাক। ফলাফলের চিন্তায় লাভ কি? তা তো তোমার হাতে নেই— সে ভার ঈশ্বরের ওপর ছেড়ে দাও। শেষ ফলাফল বা পরিণতি মানুষের আয়ত্তের বাইরে। তুমি চিন্তা করে দেখ, ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি বা বিশ্বাস যদি সুখে দুঃখে মানুষের চিত্তে এটুকু স্বস্তি বা নির্ভরতা আনতে না পারে, তবে কি প্রয়োজন সে বিশ্বাসে?”
শাস্ত্রী মহাশয় লিখেছেন, “ডাঃ সরকারের মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম, তা কেবলমাত্র তাঁর মুখের কথা না, এটাই তাঁর জীবনদর্শন। সুপ্রতিষ্ঠিত, অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সমস্ত জীবন প্রবাহটি ভগবত ইচ্ছার স্রোতে মিলে গেছে তা বুঝতে দেরি হল না। সংসারে মানুষ স্রষ্টার কথা ভুলে গিয়ে সাধারণত সব কাজে নিজের শক্তিই জাহির করে। কিন্তু ডাঃ সরকার সম্পূর্ণ এক ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ। চিকিৎসাশাস্ত্রের মত জড়বিজ্ঞান নিয়েই তাঁর জীবন কেটেছে। তবু সদাজাগ্রত মনটি কোন সময়েই জড়বাদী হয়ে পড়েনি। তিনি সব সময় সব কাজের মধ্যে স্রষ্টার মহত্ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করতেন।”
মহেন্দ্রলাল সরকার কয়েকটি গান রচনা করেছিলেন, তার মধ্যে একটি হল ‘যা মনে করি আমার,/ তা সকলি তোমার,/ কি দিয়ে তবে পূজিব তোমায়।/ আত্ম অর্পণ করি,/ লহ হে নাথ দয়া করি,/ তোমার ধন তুমি/ লহ, কাজ নেই আমার তায়...’। এই গানটির মধ্য দিয়ে তাঁর ভগবৎনিষ্ঠা
প্রকাশ পেয়েছে।
প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যায় দীর্ঘ দিন কষ্ট পাওয়ার পর ১৯০৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, মহেন্দ্রলাল সরকার পরলোক গমন করেন।