ছবি: পিয়ালী বালা।
পূর্বানুবৃত্তি: মেয়ে মিশুকের কাজের জায়গায়, তার সহকর্মীদের সঙ্গে টুকটাক কথাবার্তায় বেশ সময় কেটে যায় মিশুকের মায়ের। হেয়ারড্রেসার ঝিঙ্কির সঙ্গে বেশ ভাল সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে তাঁর। সব্যসাচী নামে একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে মিশুকের। মাকে লুকিয়ে তার সঙ্গে আউটিংয়ের প্ল্যান করে মিশুক । নার্সিংহোমে সুস্থ হয়ে ওঠে আকিঞ্চন। তার প্রেশার ফল করে গিয়েছিল। আর মাঠ পেরিয়ে কুঁড়েঘরগুলোর সামনে আসতেই এক অজানা মানুষের টর্চের আলোর সামনে পড়ে মেহুলি।
লোকটি বলল, “আপনি কে? এখানে কেন?”
মেহুলির ভয়ের পরিবর্তে কৌতূহল হল। সে জিজ্ঞেস করল, “পাশের এই ঘরগুলোয় কেউ নেই?”
“আপনি ঘরে আসুন। বাইরে মশা। তা ছাড়া সাপখোপ থাকতে পারে।”
“আপনি কে?”
“পরিচয় পরে হবে। তার আগে যদি এখনই ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে প্রবল না হয় তো ঘরে আসুন।”
লোকটা সেই ভাবে লণ্ঠন উঁচিয়ে ধরে ভিতরে চলে গেল। মেহুলি খানিক থমকাল। এই ভাবে অচেনা অজানা লোকের ঘরে যাওয়াটা ঠিক হবে কি? এক বার পেছন ফিরে দেখল, খুব দূরে হাইওয়ে দিয়ে বিন্দু বিন্দু চলমান আলো। হয়তো ট্রাক বা অন্য গাড়ি। চার দিক শুনশান। এই অবস্থায়...
ঘরের ভেতর থেকে কথা ভেসে এল, “ভয় পেলে ফিরে যান।”
এই বার একটা অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধ পাচ্ছে মেহুলি। দেখাই যাক না। তা ছাড়া সে ক্যারাটেতে রেড বেল্ট। ঘরের ভিতরে পা দিয়ে মেহুলি দেখল, লোকটি তত ক্ষণে লণ্ঠন নিভিয়ে আর একটা বড়সড় আলোর বাতি জ্বালিয়ে ফেলেছে। সেই আলোয় দেখা যাচ্ছে, ঘরটা খুব একটা বড় নয়। ঘরের মধ্যে একটা খাটিয়া গোছের, এমন জিনিস সে দেখেছিল এক বার একটা হাইওয়ে ধাবার চত্বরে। লোকটি মেঝেয় বসে। মেঝে মাটির নয়, সিমেন্টের। লোকটির সামনে প্রচুর কাগজপত্র, পেন, স্কেল এই সব। ঘরের মধ্যে দৃষ্টি চালিয়ে আরও নজরে এল একটা টুলের উপর একটা ওয়াটার ফিল্টার। এক পাশে একটা স্টোভ, দু’-চারটে কৌটো। তাজ্জব ব্যাপার! এই নির্জন জায়গায় এ সব কী? এ বার লোকটিকে সে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে। বয়স আন্দাজ করা মুশকিল, তবে চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশের কাছাকাছি হবে, পরিষ্কার করে কামানো দাড়িগোঁফ, মাথার চুল বেশ ঘন কিন্তু এলোমেলো, ভুরুর পাশে একটা কাটা দাগ।
ভদ্রলোক সামান্য হেসে কাগজপত্রগুলো এক পাশে সরিয়ে রেখে বললেন, “অবাক হচ্ছেন? আমিও আপনাকে দেখে অবাক হয়েছিলাম। আসলে যাদের জমি, সেই নাজমুল আর ওসমান ছাড়া এখানে কেউ আসে না। আপনাকে বসতে দেওয়ার মতো কিছু নেই এই ঘরে। মাটি টেনে বসুন।”
‘মাটি টেনে বসুন’ কথাটা নতুন লাগল। মেহুলি ঠিক ধরতে পারল না, তবে ভদ্রলোকের সামনে থেবড়ে বসে পড়ল। কত দিন পরে সে মাটিতে বসল! স্ট্রেচেবল জিন্স বলে সমস্যা হল না। সামান্য গরম লাগছে। তবে দরজার ঠিক উল্টো দিকে বেড়ার দেওয়াল কেটে দুটো ছোট ছোট জানলা বার করা হয়েছে, যে দুটো থেকে এখন বেশ হাওয়া আসছে। ভদ্রলোক মেহুলির মুখের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়েছিলেন। মেহুলির কৌতূহলী চোখ সারা ঘর ঘুরে ভদ্রলোকের চোখে স্থির হতেই তিনি হাসলেন, “কিছু মনে করবেন না, আমি গেঞ্জি পরে আছি। প্লিজ় দরজাটা ভেজিয়ে দিন। আমি দুষ্টু লোক নই।”
মেহুলি নিঃশব্দে ফের ফিরে এসে মেঝেয় বসতেই ভদ্রলোক বললেন, “এ বার বলুন তো আপনি কে? আমি এত বছর ধরে এখানে আসি, কোনও মহিলা কেন, কোন পুরুষকেও আসতে দেখিনি। ওই হাইওয়েটা থেকে নেমে এলেন না কি?”
“এগজ়্যাক্টলি,” বলে মেহুলি।
“কেন? আই মিন, এই রাত্রি বেলা তো কেউ আসতে সাহস করবে না, তাই।”
“এমনি। মনে হল যাই দেখে আসি এই ঘরগুলোতে কারা থাকে।”
“স্ট্রেঞ্জ! ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টার। জাস্ট মনে হল আর অমনি চলে এলেন? আমার কাজে লাগবে।”
“মানে?”
“বলছি। তার আগে বলুন তো সত্যিটা কী? এটা তো আর গড়িয়াহাট নয় যে ব্রিজ থেকে নেমে এলেন। আপনি কে?”
“একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। এই ফাঁকা মাঠের মধ্যে একটা ঘরে আপনি কী করছেন? রিসার্চ ওয়ার্ক না কি?”
“আগে বলুন আপনি ফিরবেন কী ভাবে? গাড়ি নিয়ে এসেছেন?”
“না। এটা কিসের লাইট? ব্যাটারি অপারেটেড?”
“হুম। আমরা ছোটবেলায় বলতাম পেট্রোম্যাক্স। এখন ওই কী সব বলে। দিব্যি জিনিস। সারা দিন নাজমুল চার্জ দেয়। দুপুরের দিকে আমি আসি, আর নাজমুলও এটা আমাকে দিয়ে চলে যায়।”
“নাজমুল কে?”
“ফার্মার। দাঁড়ান। সন্ধের চা খাওয়াটা হয়নি। আপনি খাবেন?”
“না।”
ভদ্রলোক আর দ্বিতীয় বার অনুরোধ করলেন না। নিজেই হাত বাড়িয়ে স্টোভ জ্বালালেন এবং খাটিয়ার তলা থেকে একটা চায়ের প্যাকেট টেনে একটা টি-ব্যাগ বার করে মিনিট দুয়েকের মধ্যে এক কাপ চা বানিয়ে এক ঢোঁক গিলে বললেন, “আমি স্বর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। নামটা শোনা আছে কি?”
“না।”
“বাংলা পড়া হয় না বুঝি? মানে সাহিত্য-টাহিত্য?”
“নো।”
“বেশ। আমি রাইটার।”
“কবিতা লেখেন?”
ভদ্রলোক জোরে হেসে উঠলেন। মেহুলি খেয়াল করল, হাসলে ভদ্রলোকের চোখে জল আসে। চোখের জল মুছে বললেন, “চাইলে জল খেতে পারেন। নিজেকেই নিয়ে নিতে হবে। ওই দিকে।”
মেহুলির প্রচণ্ড জলতেষ্টা পেয়েছিল। সে এক গ্লাস জল নিতেই ভদ্রলোক বললেন, “বেশির ভাগ লোক ভাবে বাঙালি মাত্রই কবি। আই মিন, যারা বাংলা সাহিত্য নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে না, বা ইন্টারেস্টেড নয়।”
“এ মা! আমি সে কথা বলিনি।”
“বুঝলাম। এ বার ডিটেলসে বলছি। নইলে আপনার ভ্রুযুগল কুঞ্চিত হয়ে আছে, সেটা সমান্তরাল হবে না।”
মেহুলি এমন ভাষা শোনেনি। উপলব্ধি করে ভদ্রলোক বললেন, “মানে আপনার মনে যে ডাউট এসেছে সেটা যাবে না। নামটা আগেই বলেছি। আমি থাকি জ্যাংড়ায়, দমদমের কাছেই। একটাখবরের কাগজের সঙ্গে যুক্ত। চাকরির পাশাপাশি লেখালিখি আমার প্যাশন। আমি উপন্যাস লিখি। নভেল বোঝেন?”
মেহুলি হ্যাঁ-বাচক ঘাড় নাড়তেই তিনি বলে চললেন, “এই চাকরির সূত্রে আমাকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতে হয়। নাজমুলদের সঙ্গে সেখানেই আলাপ। এই যে ঘরগুলো, সকালে এলে দেখতেন সব ক’টা ঘরে লোক। সবাই চাষের মজুর। এইখানে তারা দুপুরে খেতে আসে, বিশ্রাম নেয়।”
মেহুলি মাঝপথে দাঁড় করাল, “বুঝলাম। কিন্তু আপনি তো ফার্মার নন।”
“সেটাই বক্তব্য। আসলে বাড়িতে থেকেও লেখালেখি করতে পারতাম। কিন্তু সারা দিন অফিসে কাজ, সন্ধেবেলা বাড়ি ফিরে যে একটু লেখা নিয়ে বসব উপায় নেই। কেউ আসবে লেখা চাইতে, কেউ আসবে অমুক দিনে তমুক সম্মাননা দেব, কেউ আবার স্রেফ গপ্পো করতে চলে আসে। পুজো আসছে। সম্পাদকের সাফ কথা, অজুহাত চাই না, নভেল চাই। তাই একটা নিরিবিলি জায়গা খুঁজছিলাম। চাইলে দেওঘর বা গিরিডি চলে যেতে পারতাম, কিন্তু অফিসের কাজ। সে তো আমায় ছুটি দেবে না মাসখানেক। আর শহরে কোনও হোটেলে থাকলে ঠিক লোকে জেনে যাবে, খরচাও দেদার। শেষে বছর চারেক আগে নাজমুল এক দিন উপায় বাতলাল। ওর সঙ্গে কাজের সূত্রেই আলাপ। বলল তার এই মাঠবাড়ির কথা। এসে দেখলাম খাসা জায়গা। সেই থেকে প্রতি বছর পুজোর মাসচারেক আগে এসে থাকি। অথবা কোনও ভাল প্লট এলেই। কেউ ডিস্টার্ব করার নেই। রাতের খাবার ওসমান এসে দিয়ে যায়। এই এল বলে। বুঝলে মা?”
“আমাকে এই সব মা-ফা নামে ডাকবেন না প্লিজ়। আমার দিদা ডাকতেন। বিচ্ছিরি লাগে। আমি মেহুলি। মেহুলি রায়।”
“হুম, সেটা জানতেই মা বলে ডাকা। তো মেহুলি, এ বার তোমার পালা, স্যরি আপনি-আজ্ঞে বেশি ক্ষণ চালাতে পরি না। তা ছাড়া তুমি আমার চেয়ে অনেক ছোট।”
“আপনি লিখুন, আমি যাই।”
“হুম। বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ঝামেলা?”
মেহুলি অবাক চোখে তাকাতেই ভদ্রলোক বললেন, “অবাক হচ্ছ? আমরা, লেখকেরা, খুব কল্পনাপ্রবণ হই। কী থেকে কী হতে পারে, আবার কী হওয়ার পিছনে কী কারণ থাকতে পারে, সেগুলো আন্দাজ করতে পারি। আসলে যা কিছু লিখি সবই তো পুরো কল্পনার উপরে নয়, বাস্তবের উপরেও ডিপেন্ড করতে হয় আমাদের। আসলে...”
এমন সময় বাইরে থেকে কে যেন অত্যন্ত নিচু গলায় ডাক দিল, “দাদা, আসব?”
ভদ্রলোক মেহুলির দিকে তাকিয়ে হেসে বললেন, “ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ওসমান খাবার নিয়ে এসেছে। ঘরে এসো ওসমান, দেখোকে এসেছে।”
মেহুলি সন্দিগ্ধ চোখে পিছন ফিরে দেখে, খুব আস্তে দরজাটা খুলে গেল এবং একটা খুব কালোকুলো লোকের মুখ উঁকি দিল। তার হাতে কলাপাতা দিয়ে ঢাকা একটা থালা। খালি গা, পরনে লুঙ্গি। লোকটি অত্যন্ত ভুরুটুরু কুঁচকে ঘরে প্রবেশ করতেই স্বর্ণেন্দুবাবু বললে, “মেহুলি, এ হল ওসমান, আর ওসমান এ হল আমার এক বোনের মেয়ে মানে আমার ভাগ্নি। আমাকে দেখতে এসেছে।”
লোকটার গলায় বিস্ময় ঘনিয়ে এল, “বুনঝি? এত রেতে? একেনে!”
“অনেক ক্ষণ এসেছে। আমি বললাম, এসেছিস যখন কিছুটা সময় থেকেই যা। একটু পরেই ওর দাদা এসে নিয়ে যাবে।”
“অ। আপনের জল কি ফুইরেচে, দাদা?”
“কাল সকাল অবধি চলে যাবে।”
“আমি কাল সকালে এনে দিব। যাই দাদা। আপনে লেকেন।”
লোকটা ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই মেহুলি বলল, “মিথ্যে বললেন কেন?”
ভদ্রলোক গম্ভীর ভাবে মাথা নাড়লেন, “ওরা থাকে কোথায় জানো? এই মাঠ থেকে আল ধরে সোজা উত্তরে মিনিট তিরিশেক হেঁটে গেলে বাজেমুকুন্দপুর গ্রাম আছে, ওখানে। গ্রামের লোক যদি জানতে পারে এক জন পুরুষের ঘরে একটা অচেনা মেয়ে এসে উঠেছে, তা হলে রাতেই দলবল নিয়ে চলে আসবে।”
“কেন!”
“তুমি কি কিছুই জানো না? গ্রামের লোকেরা খুব প্রিমিটিভ হয়। ওরা উল্টো বুঝবে। তখন ওসমান আর নাজমুলরাও ছেড়ে কথা বলবে না। আমার লেখার বারোটা বাজবে।”
“যাব্বাবা! একটা মানুষ কোথায় গিয়ে থাকবে, কার সঙ্গে কথা বলবে সেটাও অন্য লোকে ঠিককরে দেবে?”
“মেহুলি, আমি এখন লিখব। তুমি কী করবে? বাড়ি ফিরবে তো?”
“নাঃ।”
“সে আবার কী! সারা রাত এখানেইথাকবে নাকি?”
“যাব কী করে? যদি হেঁটেও মাঠ পার হই, ওই হাইওয়ে দিয়ে কোন বাস যোধপুর পার্ক যায় আমি জানি না।”
“এসেছিলে কী ভাবে?”
“এক বন্ধুর বাইকে। একটা সিগারেট হবে?”
“তুমি… স্মোকিং…”
“মেয়ে বলে! একটু আগেই না প্রিমিটিভ-ট্রিমিটিভ বলে কী সব জ্ঞান দিচ্ছিলেন?”
ভদ্রলোক হাসলেন, “চলো বাইরে যাই, ঘরে খেলে একটা সাফোকেশন ক্রিয়েট হয়।”
দু’জনেই বাইরে বেরিয়ে এল। মেহুলির এত ক্ষণে বুঝতে পেরেছে যে ভদ্রলোক বিপজ্জনক নন। মেয়েরা বুঝতে পারে। পুরুষের চোখের দৃষ্টি কার কী রকম সে বুঝতে শিখে গেছে। কিন্তু সে কী করে এখানে সারা রাত থাকবে? তার রাতে মাইল্ড এসির সঙ্গে ফুলস্পিড পাখা আর গায়ে হালকা র্যাপার না দিলে ঘুমই আসে না। ডবল বালিশও চাই তার। আচ্ছা, এত ক্ষণ তার বাপি-মা কী করছে? খোঁজাখুঁজি শুরু করে দিয়েছে? বাপিকে সে চেনে। ঠিক পুলিশে খবর দিয়ে দেবে। আচ্ছা, পুলিশ পারবে তাকে খুঁজে বের করতে? এক যদি না ময়ঙ্ক বলে দেয় সব কিছু। যদি ময়ঙ্ক সঙ্গে করে পুলিশ নিয়ে চলে আসে, তা হলে তাকে খুঁজে বার করতে সময় লাগবে না। কিন্তু আর একটা চিন্তা তাকে পেয়ে বসল। পুলিশ এলে ফর নাথিং এই লেখক ভদ্রলোককে হ্যারাস করবে। তবে সত্যি বলতে তার বেশ মজা লাগছে। এই বিশাল মাঠ, তার এক দিকে কোন এক বাজে না ভাল মুকুন্দপুর, এখান থেকে কিচ্ছুটি দেখা যাচ্ছে না। উল্টো পিঠে বহুদূরে ন্যাশনাল হাইওয়ে। বিন্দু বিন্দু আলো চলাফেরা করছে এ দিক-ও দিক। হাইওয়ে যদি পৌঁছেও যায়, তবুও এই সময়ে বাজে লোকের খপ্পরে পড়াটা অস্বাভাবিক নয়।”
“কী মনে হচ্ছে? অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধ ফুরিয়ে আসছে কী?”
মেহুলি চমকাল। সে শুনেছে এমন অনেকে হয়, যারা মাইন্ড রিড করতে পারে। ভদ্রলোক কিসেই গোত্রের?
“এটা গেস। তোমার চোখ ফলো করছিলাম। বাড়ির কথা ভাবছ হয়তো।”
“আপনার বাড়িতে কে আছে?”
“চেয়ার, টেবিল, ফ্রিজ অ্যালং ইউথ অল ফার্নিচার। আর শ্যাম।”
“শ্যাম!”
“হুম। একটা ছেলে। ছোটবেলায় এসেছিল। এখন গোঁফ গজিয়েছে। ও-ই সব দেখাশোনা করে, দোকানপাট, ধোপার বাড়ি এই সব। তবে ও-ও কিন্তু জানে না আমি কোথায় বেরিয়ে যাই সন্ধে হলেই।”
“বুঝলাম। মানে আর কেউ?”
“হুম। আছে। ড্রাইভার মানিক। আরও আছে। সকালে বিকেলে যে মহিলা রান্না করে দিয়ে যায় সেই বাসুর মা।”
“আর কেউ?”
“আর কেউ বলতে বাবা, মা? ওরা দায়িত্ব নিয়ে নক্ষত্র হয়েছেন। বিয়ে করিনি।”
ক্রমশ