ছবি: পিয়ালী বালা।
পূর্বানুবৃত্তি: ময়ঙ্ক মেহুলিকে জানায়, সে বিয়ে করতে চলেছে। বাড়ির ঠিক করে দেওয়া মেয়ে। শুনে মেহুলি একটু আনমনা হয়ে যায়। অদ্ভুত একটা খারাপ লাগা তার মনকে গ্রাস করে। সে একাই হঠাৎ ছুট লাগায় মাঠের উপর দিয়ে। আকিঞ্চন বাড়ি ফিরে মেয়ের কীর্তি শোনে। তাকে কিছু ক্ষণ পরে কস্তুরী খুঁজে পায় বাথরুমের সামনে। অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে সে। অন্য দিকে শুটিংয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে অভিনেত্রী মিশুক মুখার্জি। রাত্তিরে মাচা আছে বলে স্টুডিয়োয় এসেছেন তার মা।
রিখি, অনিরুদ্ধদা ডাকছেন...” কথাটা শুনে আরতি দেবী চোখ তুলে দেখলেন, লম্বায় প্রায় ছ’ফুট একটা ছেলে দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকেছে। হাতে সিগারেট। ছেলেটি সম্ভবত আরতি দেবীকে এক্সপেক্ট করেনি। ঘরে ঢুকেই সিগারেট ট্যাপ করেছে, “ওঃ, কাকিমা আছেন। স্যরি।”
“কোনও অসুবিধে নেই বাবা। এস। আমি চলে যাচ্ছি।”
মিশুক সঙ্গে সঙ্গে উঠে বসল, “আরে না মা, তুমি বোসো। ও শাল্যদানী। এর মধ্যে শট রেডি হয়ে গেল? উফ, অনিরুদ্ধদা না, একটা মেশিন। তোর শট আছে না?”
“আছে বলেই তো ফ্লোরে যাওয়ার পথে তোকে ডেকে নিয়ে যেতে এলাম। আমার একটা ডায়লগ। টানা। হলেই আমি কাট।”
আরতি দেবী বললেন, “তোমরা গল্প করো। আমি পাশের রুমে যাই। আর আমার সিগারেটে কোনও অবজেকশন নেই।”
“থ্যাঙ্কস কাকিমা। হাতে ছ্যাঁকা লাগছিল।”
শাল্যদানী একটা পাফ নিল। মিশুক বলল, “সিগারেটের ধোঁয়ায় মা হ্যাবিচুয়েটেড।”
“কাকু বুঝি...”
“ঠিক তাই। দিনে দু’প্যাকেট। কিন্তু আমি টলারেট করতে পারি না, ইউ নো। খেতে হলে ও দিকে মুখ করে খা।”
“তা হলে কাকিমা বসুন। রিখি মানে মিশুকেরও একটা সিন। তবে আমার সঙ্গে হয়ে গেলে বাকিটা ওর সোলো। আমি কাটব। ও এসে যাবে।”
এই স্টুডিয়োগুলোয় অ্যাক্টরদের তাদের চরিত্রের নামে ডাকা একটা অভ্যেস, এটাও ঠেকে শেখা। তাই মিশুক মুখার্জি ‘রাঙামাটির মেয়ে’-তে রিখি সেন। অনেকেই, বিশেষ করে ডিরেক্টররা তো চরিত্রের নামেই ডাকেন।
এ বার দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকলেন একটি মোটাসোটা ভদ্রলোক। একে চেনেন আরতি দেবী। মলয়। এই প্রোডাকশনের ই পি। এত দিনে জানা হয়ে গেছে ই পি মানে এপিসোড প্রোগ্রামার। মানে কার পরে কার সিন, কার কাজ, কার ছুটি সেগুলোকে অ্যারেঞ্জ করেন। মলয় আরতি দেবীর দিকে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল, “রিখি সেন, সিন পাঁচ, টেন ওয়ান। লাস্টে একটা ডিফ্রিজ।”
মলয়ের কথা শেষ হতে হতে না হতে পিছন পিছন ঝিঙ্কি হাজির।
“শাল্য, তোরা যা, আমি আসছি।”
মলয় আর শাল্যদানী বেরিয়ে যেতেই ঝিঙ্কি যেন প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ল, “ও মা, মাসিমা, কদ্দিন পর! কেমন আছ গো?”
মিশুক উঠে বিশাল আয়নাটার সামনে বসে বলল, “আদিখ্যেতা করিস পরে, আগে আমার চুলটা দেখ।”
মিশুকের চুলে কী সব হিজিবিজি করতে করতে ঝিঙ্কি মুখ চালাল, “আমি কত দিন ধরে দিদিকে বলছিলাম, মাসিমাকে অনেক দিন দেখি না।”
আরতি দেবী মৃদু হাসলেন, “তোমাকে দেখতেই তো এলাম।”
খিলখিল করে হেসে উঠল ঝিঙ্কি, “ঝুট বোলে কাউয়া কাটে। আজ দিদির মাচা আছে, সেই জন্য এসেছ। তাই না? কত দিন বললাম আমার বাড়িতে চলো, সে তুমি গেলেই না।”
“যাব। আসলে সংসার সামলে টাইমই বের করতে পারি না।”
“ধুত, তোমার খালি বাহানা। মেসোমশাই তো এখন রিটায়ার্ড। দিদির বোনও তো শুনেছি বড় হয়ে গেছে। দিদির তো সামনের মাসে মনে হয় নৈহাটিতে মাচা। তাই না দিদি?”
“তুই কথা কম বলে হাত চালা। এক্ষুনি দেবদা চলে এলে বুঝবি ঝাড় কাকে বলে।”
“আমার হাতও চলে, মুখও। হি হি হি... শোনো না মাসিমা, দিদির যে দিন নৈহাটিতে শো থাকবে, আমায় জানিয়ো। আমি তোমাকে আমার বাড়ি নিয়ে যাব। সারা রাত আমরা গল্প করব। ভোর-ভোর দিদি এসে নিয়ে যাবে। কেমন? মজা হবে না?”
আরতি দেবী হাসেন প্রাণ খুলে, “যাব ঝিঙ্কি, নিশ্চয়ই যাব। তোমার বাড়িতে কে কে আছেন?”
“আমার বাড়িতে? মা আছে, মাসি আছে। আমার দুই দাদা, এক বোন। সব্বাই আছে।”
“মাসি? মানে...”
“ওই, বাবাটা তো মরে গেল। সে ধরোগে বছর দশেক হবে। তখন আমরা ছোট ছোট। সংসার চলবে কী করে? মাসি চাকরি করত সরকারি হাসপাতালে। মাসি এসে আমাদের পাশে দাঁড়াল। সেই থেকে মাসি রয়েই গেল। এখনও বিয়ে করেনি।”
“দাদারা কী করে?”
ঝিঙ্কির চুল সেট আপ করা শেষ। আয়নায় এক বার নিজেকে দেখে নিয়ে মিশুক বলল, “পরে শোনাস তোর কেত্তন। এখন চল।”
মিশুকের সঙ্গে ঝিঙ্কি বেরিয়ে যেতেই ঘরে একটা নিস্তব্ধতা নেমে এল। এত ক্ষণ ওরা, বিশেষ করে ঝিঙ্কি, ছিল বলেই ঘরটা বেশ রমরমে হয়েছিল। সেই কোন ছোটবেলা থেকে সংসার সামলাতে কাজে নেমে পড়েছে মেয়েটা। নিজের সাধ-আহ্লাদ বলতে কিছুই নেই। রোগা টিংটিঙে চেহারা। তবে মুখটা বেশ গোলগাল, মায়া মাখানো। আগে যখন ভারতলক্ষ্মী স্টুডিয়োতে আসতেন আরতি দেবী, তখন থেকেই ঝিঙ্কির সঙ্গে আলাপ। মিশুকের বয়সি। কে জানে ওর দাদারা কী করে, শোনা হল না। হয়তো কিছুই করে না। বোন আর মাসির টাকায় বসে বসে খায়। আরতি দেবীর একটা নিঃশ্বাস পড়ে নীরবে। জেনেই বা কী হবে? তিনি তো আর কিছু করতে পারবেন না। মিশুকদের না-হয় প্রোডাকশনের গাড়ি পৌঁছে দিয়ে যায়, ঝিঙ্কিদের জন্য তো সেই সুবিধেও নেই। এক যদি নৈহাটি থেকে কোনও চেনাশোনা সিনিয়র আর্টিস্ট আসে, তখন হয়তো এরা লিফট পেতে পারে, তাও রোজ নয়। এক বার শুনেছিল নৈহাটি স্টেশনে থেকে ঝিঙ্কিদের বাড়ি সাইকেলে মাইল দুয়েক। রাতবিরেতে, আধা গ্রামের রাস্তায়... চার দিকে কত বদমাশ লোক... যদি কোনও বিপদ আপদ... ভাবতে গিয়েই শিউরে ওঠেন আরতি দেবী। পরক্ষণেই ভাবেন, তিনি একটা ঝিঙ্কিকে চেনেন। আজকাল কত চ্যানেল, কত সিরিয়াল। তা হলে কত কত ঝিঙ্কিরা রোজ আসছে আর ফিরে যাচ্ছে। কত জনের কথা বাইরের মানুষ জানতে পারে। তারা তো চেনে শুধু অ্যাক্টরদের।
“ও মাই গড! একটু দাঁড়া ঝিঙ্কি। না, তুই যা, গিয়ে বল আমি আসছি এক মিনিটে।”
ঝিঙ্কিকে কিছু প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে মিশুক কার্যত দৌড়ল মেকআপ রুমের দিকে। ঝিঙ্কিটা বড্ড ভাট বকে। কী দরকার ছিল মাকে নৈহাটির কেসটা বলার? মিশুক ভেবেছিল মাকে বন্ধুর বার্থডে পার্টির ভুজুং-ভাজুং দিয়ে নৈহাটি যাবে। ওখানে ম্যাক্স টু ম্যাক্স ঘণ্টা দুয়েকের মামলা। তার পর সব্যসাচীর সঙ্গে আউটিং। ঝিঙ্কিটা সব ঘেঁটে দিল। এখন নৈহাটির দিন এলে তো মাকে নিয়েই যেতে হবে। এখন মা ফের জানতে চাইবে। ধ্যাত! ঝিঙ্কিকে কন্ট্রোল করতে হবে। এই সব মুখআলগা বেড়েপাকা মেয়ে আর জুনিয়র আর্টিস্টদের কেমন ট্রিট করতে হয় এত দিনে শিখে গেছে সে।
“কী রে? কিছু ফেলে গিয়েছিস? ফোন না কি?”
“দেখো তো মা, ফোনটা কোথায় ফেলে গেলাম।”
“বড়টা, না ছোটটা?”
“বড়টা।”
“ওই যে দেখ।”
ঠিকই তো। মেকআপ করতে গিয়ে বিশাল আয়নার সামনে পাউডারের কৌটোর উপর রেখেছিল মোবাইলটা। সে খেয়াল করেনি, মা ঠিক আন্দাজ করে দেখে নিল। চট করে ফোনটা তুলে বাইরে বেরোতেই ভাইব্রেট হল। সব্য! এখন!!
“কী রে? এখন ফোন করলি?”
“একটা গুড নিউজ় আছে, আগে চুমু দে।”
“সব্য, আমি শটে যাচ্ছি। জাস্ট সময় নেই।”
“ইভনিংয়ে দেখা করবি? ভূতের রাজার সামনে?”
“তোর মাথায় গোবর। কাল লিখলাম না? আজ আমার মাচা।”
“ওহ শিট! তা হলে যাওয়ার পথে ফোন করব। ওহ না, তখন তো আন্টি থাকবে। আচ্ছা মাচা শেষ হলে...”
“থাক বেবি, আর রাত জাগতে হবে না আমার জন্য। কাল শুনে নেব। না হলে হোয়াটসঅ্যাপ করে রাখ, দেখে নেব। এই, আমি ফ্লোরে ঢুকছি। এখন কথা বলতে পারব না, ইউ নো। বাই।”
“লাব্বিউ।”
“লাব্বিউ টু।”
ফোনটা কেটে দিতেই অনুরুদ্ধর গলা ভেসে এল, “পলাশ, তুই মনিটরে থাক। রিখি, ওখানে দাঁড়া। একটা শোল্ডার নেব। সাইলেন্স!”
বরাবরই কস্তুরীর উপস্থিত বুদ্ধি অসাধারণ। অযথা কান্নাকাটি না করে ম্যাক্সির উপরে গাউন চাপিয়ে সে চুপিসারে নেমে গেল একতলায়। সিঁড়ির নীচের ধাপে নেমে এসে দেখল ড্রয়িংরুম ফাঁকা। পাশের ঘরে উঁকি দিয়ে দেখল, শ্বশুরমশাই বিছানায় টান-টান হয়ে ঘুমোচ্ছেন। শাশুড়িমা বিছানার পাশে একটা বেতের চেয়ারে ম্যাগাজ়িন হাতে ঘাড় কাত। তার মানে তিনিও ঢুলছেন। কস্তুরী অত্যন্ত পা টিপে টিপে ল্যাচ খুলে বাইরে বেরিয়ে গেল। তার পর লম্বা লম্বা পা ফেলে ক্লাবের দিকে দৌড়ল।
ক্লাব থেকে অন্তত জনা পনেরো ছেলে বেরিয়ে এল। কস্তুরী জানে এই ক্লাবে আকিঞ্চনের ওয়েট কতখানি। কস্তুরী শুধু একটা ইনস্ট্রাকশন দিয়ে দিল, “যাই করো তোমরা, আমার শাশুড়িমা যেন জানতে না পারে। জানলে হুলস্থুল বাধিয়ে দেবে।”
কস্তুরীর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনেই জনাপাঁচেক ছেলে বিড়ালের মতো উঠে এল দোতলায়। বাকিরা তত ক্ষণে কিওর-অন নার্সিং হোমে ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকিয়ে নিয়েছে। ওই চার জনই ধরাধরি করে আকিঞ্চনকে একতলায় নামিয়ে এনে যে ভাবে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে দিল, তাতে মনে হচ্ছিল একটা মূকাভিনয়ের মহড়া চলছে। বাইরে এসে এক জন বলল, “দাদার মোবাইলটা ধরুন। পকেটে ছিল। আমরা তো আপনার নাম্বার জানি না। ওখানে দাদাকে ভর্তি করে দিয়ে এই নাম্বারে ফোন করে সব জানাব। তার পর দরকার হলে আপনি আসবেন, তেমন সিরিয়াস কিছু না হলে কাল সকালে এসে আমরা নিয়ে যাব।”
প্রায় আধ ঘণ্টা পরে আকিঞ্চনের ফোনটা বেজে উঠল।
“ম্যাম, আমি পলাশ বলছি। নার্সিং হোম থেকে।”
“হ্যাঁ, বলো। ডাক্তার কী বলল? সিরিয়াস...”
“দাদার তেমন কিচ্ছু হয়নি। সব ঠিক আছে। প্রেশার ফল করে গিয়েছিল। যাই হোক। কাল ছেড়ে দেবে। আপনি সকালে আসতে পারেন।”
“হুম। সকালে কখন ভিজ়িটিং আওয়ার?”
ছেলেটা অস্ফুটে হাসল, “ভিজ়িটিং আওয়ার কিছু নেই। সব চেনাজানা। আমাদের ক্লাবের ছেলেরা থাকবে নীচে। আপনি যখন খুশি চলে আসবেন। মনে হচ্ছে কালকেই ছেড়ে দেবে। নয়তো পরশু মর্নিং পাক্কা।”
“তাই?”
“হ্যাঁ। কাল আসার সময় অবশ্যই মনে করে দাদার মেডিক্লেমের কার্ডটা নিয়ে আসবেন।”
“আচ্ছা।”
ফোনটা কেটে গেল। কস্তুরী ঘড়ির দিকে তাকাল। মেয়েটা এখনও ফিরছে না কেন? তড়িঘড়ি মেহুলির নাম্বার খুঁজে বের করল। আকিঞ্চনের ফোনটা তার কাছে থেকে গিয়ে একটা লাভও হয়েছে। কস্তুরীর ফোন যদি নাও ধরে, বাপির নাম্বার দেখে নিশ্চিত ধরবে।
মেহুলির নাম্বার সুইচড অফ! কস্তুরী কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসে রইল।
অনেকটা দৌড়ে এসে হাঁপিয়ে পড়ল মেহুলি। কতটা চলে এসেছে বুঝতে পারছে না। চার দিকে ঘুরঘুট্টি অন্ধকার ঠিক নয়। আকাশে মেঘের আড়াল থেকে কিছুটা চাঁদের আলো এসে পড়ায় দেখা যাচ্ছে আবছা আবছা। পায়ের নীচে মচমচ শব্দে মেহুলি চমকে উঠল। কী একটা ভাঙছে পায়ের নীচে। মেহুলি মোবাইলের টর্চ অন করল। দেখল সে একটা ফুলকপির খেতের মধ্যে এবং তার পদক্ষেপে বেশ কয়েকটি ঘাড় মুচড়েছে এরই মধ্যে। মরেছে! এ বার সামনে দিকে তাকাল সে। সেই ঘরগুলো। সার্ভিস রোড থেকে যাদের দেখা গিয়েছিল। এখন সামনে। সব ক’টা ঘরের দরজা বন্ধ। ঘর না বলে কুঁড়েঘর বললেই হয়। কারা থাকে এই সব ঘরে? চার দিকে তাকিয়ে আর কোনও লোকালয় দেখতে পেল না সে। আদিগন্ত উন্মুক্ত মাঠের মাঝখানে সাকুল্যে এই পাঁচটি ঘরের অবয়ব। মেহুলি এক বার ভাবল সে ফিরে যাবে। অযথা অ্যাডভেঞ্চার হচ্ছে এটা। একটু আগেও দারুণ লাগছিল, এখন কেমন একটা বোকা বোকা লাগছে। সে বাকি ফুলকপিগুলোকে যথাসম্ভব যত্নের সঙ্গে এড়িয়ে আরও দশ পা এগোল এবং ঠিক তখনই একটা ঘরের ভিতর থেকে একটা পুরুষকণ্ঠ ভেসে এল, “কে?”
মেহুলি থমকে গেল। তার মানে লোক আছে। যদি বদমাশ লোক হয়? ভাবতে ভাবতে একটা ঘরের দরজা খুলে গেল মচমচ আওয়াজ তুলে একটা লোক বেরিয়ে এসেছে। আর এক বার ‘কে’ বলেই লোকটা হাতে ধরা টর্চের আলো ফেলল মেহুলির মুখের উপর। চোখ ধাঁধিয়ে গেল মেহুলির। কী অভদ্র লোক রে বাবা! সে বলল, “পুট অফ দ্য টর্চ।”
“স্যরি?”
“বলছি আলোটা নেভান।”
লোকটা টর্চটা নেভাল না, নীচে নামিয়ে আনল। তার পর কী ভেবে ফের ঘরে ঢুকে গিয়ে বেরিয়ে এল একটা লণ্ঠন হাতে নিয়ে। সেই দপদপে আলোয় মেহুলি দেখতে পেল, দীর্ঘদেহী মানুষটার পরনে লুঙ্গি আর হাফহাতা গেঞ্জি। দেখে ঠিক চাষাভুষো টাইপের মনে হচ্ছে না তো!
ক্রমশ