Science

গণিতে প্রথম হয়েও বাধ্য হন রাশিবিজ্ঞান পড়তে

তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান রাশিবিজ্ঞানী কল্যাণপুড়ি রাধাকৃষ্ণ রাও। কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে তাঁর পথচলা শুরু। ভারতীয় রাশিবিজ্ঞানের ভগীরথ প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের পর তাঁর নেতৃত্বেই বিষয়টি এগিয়ে চলে। সম্প্রতি ‘ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ় ইন স্ট্যাটিসটিক্স’ পেলেন ১০২ বছর বয়সি এই বিজ্ঞানী।

Advertisement

অতনু বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:১০
Share:

সম্মানিত: কল্যাণপুড়ি রাধাকৃষ্ণ রাও। (ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস)।

সেটা ১৯৪০ সাল। অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতের স্নাতকোত্তরে প্রথম হয়ে চাকরি খুঁজছেন বছর কুড়ির এক যুবক। গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর আবেদনপত্র বাতিল হয়ে যায় নেহাতই কিছু প্রশাসনিক আনুষ্ঠানিকতার কারণে। সেনাবাহিনীর সার্ভে ইউনিটেও তিনি আবেদন করেন গণিতবিদের চাকরির জন্য, এবং কলকাতায় যান ইন্টারভিউ দিতে। কিন্তু দেখা গেল তাঁর বয়স নির্দিষ্ট নিম্নসীমার চাইতে কম। ভাগ্যিস! যুবকটি, অর্থাৎ কল্যাণপুড়ি রাধাকৃষ্ণ রাও, যিনি সি আর রাও নামেই পরিচিত হবেন ভবিষ্যৎ কালে, ঘটনাচক্রেই এসে পড়েন রাশিবিজ্ঞানের দুনিয়ায়। বলতে গেলে প্রায় ‘শেষ উপায়’ হিসেবেই।

Advertisement

কলকাতায় এক দক্ষিণ ভারতীয় হোটেলে বসবাসকালে সুব্রহ্মণ্যম নামে এক জনের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। তিনি চাকরি করতেন বোম্বেতে। তাঁকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট (আইএসআই)-এ একটা প্রশিক্ষণ নিতে। সুব্রহ্মণ্যমই রাওকে বলেন আইএসআই-তে আবেদন করতে। তত দিনে কোথাও চাকরি না-পাওয়া রাও ভাবলেন, এই অতিরিক্ত যোগ্যতা চাকরির বাজারে সাহায্য করতে পারে। তিনি আবেদন করলেন, এক বছরের এক ট্রেনিং প্রোগ্রামে। এবং চটপট উত্তরও পেলেন।

ইতিহাস সাক্ষী, রাশিবিজ্ঞানের ইতিহাসে এ এক দিকচিহ্ন। সেই যুবক শতায়ু হয়েছেন। এই তো, ২০২০-তে উদযাপন হল তাঁর শতবার্ষিকীর। ১০২ বছরের অধ্যাপক রাও আজ এক ‘জীবন্ত কিংবদন্তি’। হায়দরাবাদের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তাটার নাম ‘প্রফেসর সি আর রাও রোড’। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরেই রয়েছে তাঁর নামাঙ্কিত প্রতিষ্ঠান। রাশিবিজ্ঞানে ভারতের জাতীয় পুরস্কারও দেওয়া হয় তাঁর নামে। এবং ২০২৩-এর ‘ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ় ইন স্ট্যাটিস্টিক্স’-ও পেয়েছেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান। পুরস্কারটার নামটি খুব একটা আকর্ষণীয় নয় বটে, তবে একে রাশিবিজ্ঞানের দুনিয়ায় নোবেল-সমতুল্য হিসেবেই গণ্য করা হয়। রাওয়ের এই স্বীকৃতিতে আমাদেরও শ্লাঘার কারণ রয়েছে বিলক্ষণ। কারণ তা ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার অন্তর্নিহিত সম্ভাবনার নির্দেশক। রাও তো এই শিক্ষাব্যবস্থারই ফসল। তাঁর বেশির ভাগ সাড়া-জাগানো গবেষণাই ভারতে থাকাকালীন করা।

Advertisement

সেই যে আইএসআই-তে ঢুকলেন রাও, এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন পরবর্তী চার দশক। ১৯৭৯-তে সেখান থেকে অবসর নিয়ে পাকাপাকি ভাবে মার্কিন মুলুকে বসত করার আগে পর্যন্ত। ইত্যবসরে তিনি রাশিবিজ্ঞানেও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৯৪৩ সালে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচে। ১৯৪৬-৪৮ সময়সীমায় কেমব্রিজের কিংস কলেজ থেকে পিএইচ ডি করেছেন আধুনিক রাশিবিজ্ঞানের জনক স্যর রোনাল্ড ফিশার-এর কাছে, এবং বিবিধ দায়িত্ব সামলেছেন আইএসআই-তে— শিক্ষক, গবেষক, ‘সংখ্যা’ নামক জার্নালের সম্পাদনা, নানাবিধ শিক্ষা-সম্পর্কিত প্রশাসন, এমনকি মহলানবিশের মৃত্যুর পর প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কাজ পর্যন্ত।

উল্লেখযোগ্য যে, অধ্যাপক রাওকে নোবেল-সমতুল্য এই পুরস্কারটা দেওয়া হয়েছে তাঁর ১৯৪৫-এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রের জন্য, যা ছাপা হয় ‘বুলেটিন অব দ্য ক্যালকাটা ম্যাথমেটিক্যাল সোসাইটি’ নামক জার্নালে, এমনিতে যা রাশিবিজ্ঞানের জগতে পরিচিত নয় বিশেষ। সে কিন্তু এক অনন্যসাধারণ গবেষণাপত্র, যাতে রয়েছে তিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব, যার যে কোনও একটাই গবেষণাপত্রটিকে উত্তীর্ণ করতে পারত ‘ক্লাসিক’-এর স্তরে। এর একটা রেজ়াল্ট— যার পোশাকি নাম ‘ক্র্যামার-রাও বাউন্ড’— কষার পিছনে আছে এক আশ্চর্য গল্প। এটি রাশিবিজ্ঞানের নিরিখে কোনও স্থিতিমাপ অনুমানের ‘ভেদাঙ্ক’ বা ‘ভিন্নতা’র সীমা পরিমাপ করে। খুব বেশি ‘স্যাম্পল সাইজ়’ বা নমুনা সংখ্যার জন্য ইতিমধ্যেই এর রূপায়ণ করেছিলেন রোনাল্ড ফিশার। ১৯৪৪-এ, সদ্য স্নাতকোত্তর রাও ক্লাসে পড়াচ্ছিলেন ফিশারের সেই রেজ়াল্ট। এক ছাত্র তাঁকে বলে বসে, “আপনি কেন এটা সীমিত নমুনা সংখ্যা (‘ফাইনাইট সাম্পেল’)-র জন্য বার করছেন না?” চব্বিশ বছরের রাও চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই তা বার করে ফেললেন। প্রথম থেকেই রেজ়াল্টটি হয়ে ওঠে গাণিতিক পরিসংখ্যানের ভিত্তি। গবেষকরা এর দিগন্তকে প্রসারিত করেছেন বিভিন্ন উপায়ে; এর প্রয়োগ ঘটেছে কোয়ান্টাম ফিজ়িক্স থেকে সিগন্যাল প্রসেসিং, স্পেকট্রোস্কোপি থেকে রাডার সিস্টেম, মাল্টিপল-ইমেজ রেডিয়োগ্রাফি থেকে রিস্ক অ্যানালাইসিস, কিংবা সম্ভাব্যতা তত্ত্ব, কোথায় নয়! এই ‘ক্র্যামার’ হলেন প্রখ্যাত সুইডিশ অঙ্কবিদ হ্যারল্ড ক্র্যামার। ‘ক্র্যামার-রাও বাউন্ড’ ছাত্রমহলে কী পরিমাণ পরিচিত হয়ে যায় তা নিয়েও মজার গল্প আছে। এক বার বিমানযাত্রায় ব্যাগ হারিয়ে যায় রাওয়ের। এয়ারলাইনসের লোক পরে তাঁর খোঁজে এলে এক ছাত্র ফোনে রাও-কে বলেন, “প্রোফেসর ক্র্যামার রাও, ওরা আপনার ব্যাগ খুঁজে পেয়েছে।” রাওকে বুঝিয়ে বলতে হয়, তাঁর নাম ‘সি আর রাও’, ‘ক্র্যামার রাও’ নয়!

১৯৪৫-এর গবেষণাপত্রের দ্বিতীয় রেজ়াল্টটার নাম ‘রাও-ব্ল্যাকওয়েল উপপাদ্য’, যা কোনও স্থিতিমাপের অনুমানকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করে। এই দু’টি তত্ত্বই রাশিবিজ্ঞানের স্নাতক স্তরে অবশ্যপাঠ্য দীর্ঘ দিন ধরেই। গবেষণাপত্রের তৃতীয় তত্ত্বটি ‘ইনফরমেশন জিয়োমেট্রি’, যা সময়ের অনেক আগেই ভাবতে পেরেছিলেন রাও; নির্দিষ্ট মাপে তা বিকশিত হয়েছে অনেক পরে, আশির দশকে। সামগ্রিক ভাবে, আধুনিক রাশিবিজ্ঞানের বিকাশ এবং আধুনিক গবেষণায় তার ব্যাপক প্রয়োগের ক্ষেত্রে রাও-এর ১৯৪৫-এর গবেষণাপত্রটির অবদান অসামান্য।

তবে এটাই তাঁর একমাত্র সাড়া-জাগানো কাজ নয়। দীর্ঘ গবেষক-জীবনে প্রায় পাঁচশো গবেষণাপত্র লিখেছেন অধ্যাপক রাও। মজার কথা হল, ২০১৬-তে ফ্রান্সের ইকোলে পলিটেকনিক-এর কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক ফ্র্যাঙ্ক নিয়েলসনকে দেওয়া এক ইন্টারভিউতে অধ্যাপক রাও নিজে কিন্তু রাশিবিজ্ঞানে তাঁর সেরা তিনটি অবদানের তালিকায় রাখেননি ১৯৪৫-এর এই যুগান্তকারী গবেষণাপত্র বা তার কোনও রেজ়াল্টকে। রাওয়ের নিজের বর্ণনায় ‘সেরা’র তালিকার একটি— ‘কোয়াড্রেটিক এনট্রপি’— ছাপা হয় ১৯৮২-তে; অন্য দু’টি অবদান অবশ্য সেই চল্লিশের দশকেরই, তাঁর বয়স তখনও তিরিশের কম। এর একটি ‘স্কোর টেস্ট’, যা রাশিবিজ্ঞানে প্রস্তাবনা যাচাইয়ের একটি পদ্ধতি। এ সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি ১৯৪৮-এর। এর পিছনেও রয়েছে ছোট একটা ঘটনা। এস জে পোতি নামে আইএসআই-এর এক টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টের তখন কলকাতায় থাকার জায়গা ছিল না। তিনি কিছু দিন রাওয়ের সঙ্গে একই ঘরে থাকতেন। সে সময়ে এক দিন তিনি রাওকে জিজ্ঞেস করেন, বিকল্প এক দিকের হলে নেম্যান-পিয়ারসনের বহুল প্রচলিত তত্ত্বের সাহায্যে প্রস্তাবনা যাচাই আদৌ সম্ভব কি না। রাও প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এর সমাধান করে দেন। সেটাই ‘স্কোর টেস্ট’-এর অগ্রদূত। তাই রাওয়ের রাশিবিজ্ঞানের জগতে আসার মতোই রাশিবিজ্ঞানে তাঁর অবদানের অনেক কিছুই হঠাৎ ঘটে যাওয়া— সম্ভাবনার ফসল। জার্জি নেম্যান আর ই এস পিয়ারসনের ‘লাইকলিহুড রেশিয়ো টেস্ট’, আব্রাহাম ওয়াল্ড-এর ‘ওয়াল্ড টেস্ট’ আর রাওয়ের ‘স্কোর টেস্ট’কে এখন এক সঙ্গে বলা হয় রাশিবিজ্ঞানের ‘পবিত্র ত্রয়ী’ (‘হোলি ট্রিনিটি’)।

১৯৪৯-এর একটি গবেষণাপত্রও রাও-বর্ণিত ‘সেরা’র তালিকার অন্তর্ভুক্ত, যার অবদান ‘অর্থোগোনাল অ্যারে’, যা সংমিশ্রণবিদ্যার (কম্বিনেটোরিক্স) ধারণার নির্যাস। পরবর্তী কালে রাশিবিজ্ঞান-সম্বন্ধীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলির রূপচিত্র আঁকতে এটি বহুল-ব্যবহৃত। ‘ফোর্বস’ ম্যাগাজিনের ১৯৬৯-এর নিবন্ধে একে বর্ণনা করা হয়েছে শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ‘এক নতুন মন্ত্র’ হিসাবে।

পরবর্তী কালে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন রাও, তবে রাশিবিজ্ঞানের ইতিহাসে চল্লিশের দশকটা মোটের উপর অধ্যাপক রাওয়েরই। অকুণ্ঠচিত্তে এমন কথাই বলেছেন অস্ট্রেলীয় রাশিবিজ্ঞানী টেরি স্পিড। আসলে বিশ শতকের প্রথমার্ধটা রাশিবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সার্বিক ভাবেই এক স্বর্ণযুগ, এবং অধ্যাপক রাও যে তার অন্যতম প্রধান কারিগর, সে বিষয়ে সংশয়ের লেশমাত্র নেই।

রাওয়ের এই চোখ-ধাঁধানো সাফল্য, অর্থাৎ, নোবেল-সমতুল্য পুরস্কারের নেপথ্যে ঠিক কী, তার হিসাব-নিকাশ সহজ নয় নিশ্চয়ই। তাঁর প্রতিভা, হঠাৎ-আলোর-ঝলকানি-লাগা সম্ভাবনাময় কিছু মুহূর্তের বাস্তবায়ন, এ সব অবশ্যই আছে। সেই সঙ্গে কে অস্বীকার করবে তাঁর দীর্ঘ-জীবনব্যাপী নিরলস সাধনাকে! তিনি লিখেছেন অজস্র গবেষণাপত্র এবং বই, পিএইচ ডি করিয়েছেন বহু ছাত্রকে, যোগ দিয়েছেন দুনিয়া জুড়ে অজস্র কনফারেন্সে। অল্প বয়সেই শুধু নয়, বৃদ্ধাবস্থাতেও। কিন্তু, সেই সঙ্গে সম্ভবত এর পিছনে রয়েছেন এক যুগস্রষ্টা— প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ, যিনি ভারতের রাশিবিজ্ঞানের ভগীরথ। তবে শুধুমাত্র রাশিবিজ্ঞানকে এ দেশে নিয়ে এসেই বা নিজে কিছু বিশ্ব পর্যায়ের গবেষণা বা তত্ত্বের প্রয়োগ ঘটিয়েই ক্ষান্ত হননি তিনি, জীবনব্যাপী নিরন্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ দেশে তৈরি করে গিয়েছেন রাশিবিজ্ঞানের এক বলিষ্ঠ বনিয়াদ। আইএসআই প্রতিষ্ঠা, রাশিবিজ্ঞান পড়ানো ও গবেষণার পরিকাঠামো তৈরি, দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার রূপরেখা নির্মাণ, এনএসএসও বা সিএসও-র মতো সরকারি প্রতিষ্ঠান তৈরি, বিবিধ ছোট-বড় সমীক্ষা নির্দেশনা ইত্যাদির পথ বেয়ে। সে এক ব্যতিক্রমী সময়কাল। কোনও এক অনিবার্য চৌম্বক আকর্ষণে মহলানবিশের চার পাশে এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত আইএসআই-তে জড়ো হন ঝাঁকে ঝাঁকে ঝকঝকে প্রতিভা। তাঁদের সযত্নে লালন করেন তিনি। এ ভাবেই আমরা পাই বেশ কিছু শীর্ষ পর্যায়ের রাশিবিজ্ঞানী এবং গণিতবিদকে। যেমন রাজচন্দ্র বসু, সমরেন্দ্রনাথ রায়। এবং সি আর রাও, অবশ্যই। ভারতীয় বংশোদ্ভূত একমাত্র অ্যাবেল পুরস্কারজয়ী এস আর শ্রীনিবাস ভারাধন-ও পিএইচ ডি করেছেন আইএসআই-তে, সি আর রাও-এর কাছেই। দেখা যাক, সি আর রাওকেই আইএসআই-তে ধরে রাখতে কতটা সচেষ্ট ছিলেন মহলানবিশ। সেটা ১৯৪৩-এর শেষ দিক। রাও আইএসআই-তে মাইনে পাচ্ছিলেন মাসে ৭৫ টাকা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি চাকরির অফার পান ১০০ টাকা মাইনেয়। রাও মহলানবিশকে অনুরোধ করেন তাঁর বেতন বাড়াতে। মহলানবিশ এক কথায় তা দ্বিগুণ করে দেন। কালক্রমে এই রাওই হয়ে ওঠেন মহলানবিশের যোগ্য সহায়ক, তাঁর উত্তরসূরি। বিখ্যাত জার্মান-আমেরিকান রাশিবিজ্ঞানী এরিখ লেম্যান ঠিকই বলেছেন, মহলানবিশের পরে ভারতে রাশিবিজ্ঞানকে নেতৃত্ব দিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন রাও-ই।

সি আর রাও-এর দুনিয়া জয়-করা সাফল্যকে কুর্নিশ জানাতে গিয়ে তাই স্মরণ করতেই হয় মহলানবিশকে। ভারতে রাশিবিজ্ঞানের সংস্কৃতির যে বীজ তিনি বপন করেছিলেন, জল সিঞ্চন করেছেন জীবনভর, তাই ক্রমে পরিণত হয় মহীরুহে। অধ্যাপক রাওয়ের নোবেল-সমতুল্য পুরস্কার সেই মহীরুহেরই অন্যতম সেরা একটি ফল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement