ছবি: সুমন চৌধুরী
তনু একা-একা বসে রান্নাবাটি খেলছিল। মাটির খেলনা গ্যাস সিলিন্ডারটা সরিয়ে আনল টিনের আভেনটার কাছাকাছি। ছোট্ট হাড়িতে বালি দিয়ে ভাত চড়াল। কাগজ পড়তে-পড়তে ওর দিকে চোখ যেতেই একটা বিরক্তি তন্ময়ের মনটাকে ছেয়ে ফেলল।
‘বাপি ভাত খাবে? তাহলে এসে বসো।’
‘বিরক্ত করিস না। আমার সময় নেই।’ অকারণেই তন্ময় কিছুটা কর্কশ।
‘কী হল, মেয়েটাকে বকুনি দিচ্ছ কেন?’ রান্নাঘর থেকে বলল মধুশ্রী।
কথা বাড়াল না তন্ময়। কাগজে খবরটা পড়ার পর থেকেই অস্থির লাগছে। একই নাসিংহোমে তনুও জন্মেছে। সকাল ঠিক সাড়ে আটটার সময় টিফিনকৌটো, জলের বোতল ভর্তি ব্যাগটা পিঠে নিয়ে, সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। স্টেশনে পৌঁছতে-পৌঁছতে শুনল, মাইকে আটটা পঁয়তাল্লিশের লোকালের ঘোষণা হচ্ছে। রোজকার মতোই মানুষের ভিড়ের মধ্যে শরীরটা গলিয়ে দিয়ে ঝুলন্ত আংটায় কোনও রকমে হাত রাখল তন্ময়, তার পর দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়েই খানিকটা ঝিমিয়ে নেওয়া। হাওড়া স্টেশনে নেমে আবার মিনিবাসে কোনও রকমে শরীরটাকে সেঁধিয়ে দিতে হবে। তার পর অফিস। প্রতি দিনের একই রুটিন।
টেবিলে বসতেই পীতাম্বর চায়ের কেটলি নিয়ে হাজির। ড্রয়ার থেকে গ্লাসটা বার করে টেবিলে ঠক করে রাখতেই পীতাম্বর চা ঢালল। হাতের কায়দা, অত বড় কেটলি থেকে প্রতি দিন চা ঢালে, কিন্তু এতটুকু বেশি-কম হয় না। মাঝে-মাঝে আশ্চর্য হয় তন্ময়। চায়ের সঙ্গে দুটো বিস্কুট হাতে গুঁজে দিয়েই পা বাড়ায় পীতাম্বর। আজ তাড়াহুড়োয় তন্ময়ের হাত থেকে একটা বিস্কুট পড়ে গেল।
‘অত তাড়া কীসের! একটু দেখেশুনে দিতে পারো না!’ তন্ময় বোধহয় একটু জোরেই চেঁচিয়ে উঠেছিল। বড়বাবু সঞ্জয় ওর দিকে ঘুরে তাকাল। যেতে গিয়েও পীতাম্বর থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছিল। কোনও কথা না বলে তন্ময়ের দিকে আর একটা বিস্কুট বাড়িয়ে দিল। রাগ দেখিয়ে তন্ময় বলল, ‘দরকার নেই।’
গ্লাসটা ধোবে বলে উঠে বেসিনের কাছে চলে এল তন্ময়। ফেরার পথে সঞ্জয় বলল, ‘মাথা একটু ঠান্ডা কর, চট করে অত রেগে যাচ্ছিস কেন? প্রেশার চেক করা। আমরা কিন্তু চল্লিশের কোঠায়, এখন থেকেই সাবধান হওয়া উচিত।’
তন্ময় চুপ করে থাকে, কী বলবে? সামান্য কারণে অত রাগ দেখানো উচিত হয়নি। গত দু’দিন হল সে বেশ ডিসটার্বড। কাগজে কলকাতার বিশেষ এক নার্সিংহোমের নাম শিশু পাচারচক্রে জড়িত থাকতে দেখে ওর সবকিছু গোলমাল হয়ে যাচ্ছে।
তন্ময় একটা সরকারি অফিসের করণিক। পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ থাকে, যাদের জীবন মোটামুটি নিস্তরঙ্গ। জীবনের ঘটনাপ্রবাহ এমন হয়ে থাকে যেন তার বাইরের কোনও কিছু হওয়া অপ্রয়োজনীয়, অনুচিত। যা কিছু ঘটেছে একেবারে পারফেক্ট, বেশি হলে অতিরিক্ত, কম হলে ঘাটতি। তন্ময় ছাত্রজীবনে মেধাবী ছিল। কলেজ পাশ করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে এই চাকরিটা পেয়েছে। বত্রিশ বছর বয়সে মধুশ্রীর সঙ্গে ওর বিয়ে। তার পর তিন বছরের হ্যাপি ম্যারেড লাইফ। পঁয়ত্রিশে কন্যা তনুশ্রীর মুখদর্শন। ওর নিটোল জীবনে তনু একটা অস্বস্তি। মেয়ে হয়েছে সে জন্য নয়, কিন্তু তনু যেন ওদের দু’জনের চেয়ে আলাদা। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই ধবধবে ফরসা। সেখানে তনুর গায়ের রঙ যথেষ্টই চাপা, কালোই বলা যায়। চোখমুখের ধরন একেবারেই আলাদা।
রাতে পুরনো ফাইলটা খুলে বসল তন্ময়। বছরখানেক আগে স্কুলে ভর্তি সময় তনুর ব্লাড গ্রুপ পরীক্ষা করাতে হয়েছিল। ‘এ’ পজিটিভ। অথচ, ও আর মধুশ্রী দু’জনেরই ‘বি’ পজিটিভ। রাত সাড়ে এগারোটা। সিগারেটের প্যাকেটটা টেবিলের উপর থেকে নিয়ে, তন্ময় শেষ সিগারেটটা বার করে প্যাকেটটা মেঝের উপর ছুড়ে ফেলল। কমপিউটার টেবিলের সামনে চেয়ারে বসে সিগারেট ধরাল। ঘরের মধ্যে সিগারেট খেতে মধুশ্রী পইপই করে বারণ করে। আজ কিন্তু ওর কথা মানতে ইচ্ছে করল না। বিরক্তিটা আবার পাক খেয়ে উঠছে।
কমপিউটার অন করে ইন্টারনেটে লগ ইন করল তন্ময়। গুগলে ব্লাড গ্রুপ রিলেশন্স উইথ পেরেন্টস টাইপ করে এন্টার টিপে দিল। কয়েকটা ওয়েবসাইট খুলে দ্রুত চোখ বোলায় তন্ময়। একটা সাইটে লেখা, ইফ বায়োলজিকাল পেরেন্টস আর বোথ ‘বি’ পজিটিভ, দেন চাইল্ড হ্যাভ আইদার ‘বি’ অর ‘ও’ ব্লাড টাইপ। চার্ট দিয়ে পরিষ্কার দেখানো আছে, বাবা-মা’র ব্লাড গ্রুপ কী-কী হলে সন্তানের ব্লাড গ্রুপ কী-কী হতে পারে। ঢোক গিলতে গিয়ে তন্ময় দেখল, গলা শুকিয়ে কাঠ। অস্ফুটে মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল, ‘হাউ ইজ ইট পসিব্ল!’
‘অনেক রাত হল, এখনও কমপিউটারের সামনে বসে আছ! শুয়ে পড়।’ মধুশ্রীর গলায় উদ্বেগ।
‘তুমি ঘুমোও, আমি যাচ্ছি,’ তন্ময়ের গলাটা যেন একটু রুক্ষই শোনাল। মনের মধ্যে বিরক্তি জন্মালে বোধহয় এমনই হয়, বিরক্তির ঝাঁঝটা কথা, আচার-আচরণে নিজের অজান্তেই বেরিয়ে পড়ে। শিক্ষিত মনও তাকে তখন গোপন করতে পারে না। মধুশ্রী কি কিছু ভাবল? যা ভাবে ভাবুকগে।
কমপিউটার বন্ধ করে তন্ময় শুয়ে পড়ে। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসতে চায় না। দেওয়ালঘড়ির সেকেন্ডের কাঁটা যে এত সশব্দে স্থান পরিবর্তন করে, তন্ময়ের জানা ছিল না। বাইরের জগতের অনেক সূক্ষ্ম শব্দও কানে আসতে থাকে। বিশৃঙ্খল চিন্তাধারাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ঘুমের আড়ালে। কিন্তু এক প্রবল স্রোতের মুখে বালির বাঁধের মতো নিয়ন্ত্রণহীন বিশৃঙ্খল চিন্তাপ্রবাহ সব কিছু ভেঙেচুরে দেয়।
কাগজে লিখেছে, কলকাতার ওই নার্সিংহোম গত আট-দশ বছর ধরে শিশুপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত। সেখানে পাচার হওয়া শিশুদের মধ্যে পুত্রসন্তানের সংখ্যা অনেক বেশি। মধুশ্রী বলেছিল, বাচ্চা হওয়ার সময় ঘোরের মধ্যে শুনেছিল, ওর ছেলে হয়েছে। সাত মাসের মাথায় আলট্রাসোনোগ্রাফি করার সময় চেনা ডাক্তারবাবু তো ছেলের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তনুর জন্মের সময়টাকে রেট্রোস্পেক্টে দেখতে চেষ্টা করে তন্ময়। নার্সিংহোম থেকে বলেছিল ওর মেয়ে হয়েছে। পাশেই দাঁড়িয়েছিল যে ভদ্রলোক, তার সন্তান নাকি জন্মের সময়েই মারা গিয়েছে। ভদ্রলোক থমথমে মুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তার পর কী হল, তন্ময় আর জানে না। কাগজে যে রিপোর্ট বেরিয়েছে তা এক কথায় ভয়াবহ।
না, আজ আর ঘুম আসবে না। তন্ময় ভাবার চেষ্টা করে, এর আগে কবে একটা পুরো রাত জেগে কাটিয়েছে সে। আশ্চর্য লাগল। মানুষের জীবনে কত নিদ্রাহীন দিন, কিন্তু নিদ্রাহীন রাত! অথচ ওর মনে পড়ছে না।
তনু ওদের দু’জনের মধ্যে নিশ্চিন্তে শুয়ে আছে। একটা পা ওর মায়ের গায়ে। আর একটা পা তুলে দিয়েছে তন্ময়ের কোমরের উপরে। শোওয়ার সময়ে বাবা- মা দুজনকেই ওর চাই। কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব নেই। দুই হাত-পা দিয়ে দুজনের শরীর ছুঁয়ে থাকে ঘুমের মধ্যে। মেয়েটার মুখের গড়ন, গায়ের রং, কোনও কিছুই ওদের দুজনের মতো নয়। চুলের হালকা কোঁকড়ানো ভাবটা..
রাত প্রায় চারটে। না, আজ আর ঘুম এল না। এখনও দু’চোখের পাতা এক হয়নি। মাথাটা ভার হয়ে আছে, যেন এক নেশার ঘোর, না আছে স্বস্তি, না আছে নিস্তার। এক রাতের মধ্যেই জীবনের সমস্ত মসৃণতা দুমড়ে-মুচড়ে একাকার। মধুশ্রীর সঙ্গে ব্যাপারটা শেয়ার করতে পারলে ভাল হত। কিন্তু তন্ময় জানে, মধু ব্যাপারটাকে একদম আমল দেবে না।
বিছানা থেকে এক সময় তন্ময় উঠে পড়ল। আবার কমপিউটার অন করল। গুগল-এ ‘ডিএনএ টেস্টিং’ লিখে এন্টার টিপতেই অনেকগুলো সাইট দেখাল। কলকাতার একটা ল্যাবরেটরির ফোন নম্বর মোবাইলে সেভ করে নিল তন্ময়।
পর দিন বিকেল। অফিসে হঠাৎ মধুশ্রীর ফোন, ‘হিরণ্ময়দা ওর ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে!’
‘কী আজেবাজে বলছ! মেরে ফেলেছে! মানে? নিজের ছেলেকে মেরে ফেলেছে? কী করে মারল?’
‘না... না, বাবু সুইসাইড করেছে।’ ফোনটা নিজে থেকেই কেটে গেল। কল ড্রপ।
মোবাইল হাতে নিয়ে কিছু ক্ষণের জন্য ভ্যাবলা হয়ে গেল তন্ময়। এ অবিশ্বাস্য। হিরণ্ময় ওর ছেলে বাবুকে অসম্ভব ভালবাসে। ছেলের প্রশংসায় সর্বদা পঞ্চমুখ। ছোটবেলা থেকেই বাবু পড়াশোনাতে বেশ ভাল। মাধ্যমিকে ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট। আর ওই রেজাল্টই ওর কাল হল। হিরণ্ময় ছেলেকে প্রতিটা বিষয়ের জন্য দুটো করে মাস্টার দিল। তার উপর ভর্তি করল কোচিং ক্লাসে। পাশাপাশি স্কুলের রেগুলার ক্লাস। হিরণ্ময় বলত, ‘ছেলেটাকে মেডিকেলে চান্স পাওয়াতেই হবে। বাবু অঙ্ক, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রিটা ভালই পারে। ও নিয়ে চিন্তা করছি না। কিন্তু বায়োলজিটা একদম মনে রাখতে পারছে না। স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ওষুধ কিনে দেব?’
তন্ময় বলেছিল, ‘ওই সব আজেবাজে ওষুধ খাওয়াস না। তা ছাড়া অঙ্ক, ফিজিক্স যখন ভালই পারে বলছিস, তখন চিন্তা কী?’
হিরণ্ময় বলেছিল, ‘কিন্তু বায়োলজি না পারলে মেডিকেলে চান্স পাবে কী ভাবে?’
তন্ময় বলেছিল, ‘ওকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া, জয়েন্টে বসা।’
‘কিন্তু ওর তো ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে।’ বলল হিরণ্ময়।
বাবুর জন্য একেবারে পাগল ছিল ও, আর এই পাগলামিতেই ছেলেটা মরল। এত ভাল একটা ছেলে অকালে চলে গেল। বাবুর জন্য মনটা খুব খারাপ হয়েছে তন্ময়ের। এক সময় ওরা এক পাড়াতেই থাকত। তন্ময়ের ভীষণ ন্যাওটা ছিল বাবু। যত আবদার ওর কাছে। সাইকেল চালাতে নিয়ে চলো, পাড়ার পুকুরে সাঁতার কাটবে, সঙ্গে চলো। হিরণ্ময়ের স্ত্রী সুস্মিতা স্বামীকে অনেকবার বুঝিয়েছে, ছেলেকে যেন এত চাপ না দেয়। মধুশ্রী এক দিন বলছিল, ছেলের হয়ে বলার জন্য হিরণ্ময়ের কাছে সুস্মিতাকে মারও খেতে হয়েছে!
মধুশ্রীর ফোন। তন্ময় ফোনটা ধরেই জিজ্ঞেস করল, ‘কী হয়েছিল?’
‘আজ সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল, বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছি বলে। দাদা জানত না যে আজই মেডিকেল- জয়েন্টের রেজাল্ট আউট হবে।’
‘তার পর!’
‘লিস্টে নাম নেই দেখে মেট্রোতে ঝাঁপ...’
‘কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে?’
‘ওর পকেটে একটা চিরকুট ছিল। তাতে লেখা ছিল, ‘আই অ্যাম ওয়ার্থলেস। নো রাইট টু লিভ। শুড ডিলিট মাইসেল্ফ।’
হিরণ্ময়কে ফোন করল তন্ময়। সুইচ অফ। ল্যান্ডলাইনে ফোন করতে সুস্মিতা ধরেছিল।
‘আমি তন্ময় বলছি।’ কথাটা শুনে সুস্মিতা বলেছিল, ‘আমার কিচ্ছু বলার নেই।’ ফোন ছেড়ে দিয়েছিল।
প্রায় মাঝরাতে বাড়ি ফিরল তন্ময়। বিছানায় শুয়েও ঘুম আসছিল না। খুব বিচ্ছিরি লাগছিল ছেলেটার জন্য। চেনা যাচ্ছিল না ওকে। হাত-পা মাথা সব দলা পাকিয়ে গিয়েছে। যে মস্তিস্কের মধ্যে উচ্চাশা ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল, সেটা ছিটকে পড়েছে চার দিকে। রক্তে আর ঘিলুতে মাখামাখি চারপাশ। হাসপাতালে হিরণ্ময় বলেছিল, ‘ও কিন্তু আমাদের ঠিক বুঝেছিল। পকেটের কাগজে কোনও কিছু লিখে রাখেনি। ও তো লিখতেই পারত, আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী আমার বাপ। হিটলার বাপ! লিখতেই পারত, বাবার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আমি...’ তন্ময়ের হাতদুটো ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেছিল, ‘আমি একটা খুনি।’
পুলিশের একজন কনস্টেবল ছিল হিরণ্ময়ের সঙ্গে, সে বলল, ‘এক সন্তান হওয়ার এই হচ্ছে ব্যাড এফেক্ট। নিশ্চয়ই পড়াশোনার জন্য বকুনি দিয়েছিলেন!’
তনু আজ মায়ের দিকে পাশ ফিরে শুয়েছে। ওর অপাপবিদ্ধ মুখের দিকে নীরবে কিছু ক্ষণ তাকিয়ে থাকে তন্ময়। তার পর বিছানা থেকে উঠে, বারান্দায় চলে আসে। আকাশের এক কোণে গুটিসুটি মারা চাঁদ। কুয়াশার আবরণ চারপাশে। এই কুয়াশাকেই তো কুহক বলে। বিষণ্ণ রাতের ফ্যাকাসে আলোর তলায় ঘরে-ঘরে হিরণ্ময়ের মতো দেখা স্বপ্নগুলো এখন কোমায়। বাবুর মৃত্যুর জন্য একটা প্রতিশোধ নিতে ইচ্ছে করছে। প্রচণ্ড আবেগে দাঁতে-দাঁত ঘষে তন্ময়। পকেট থেকে মোবাইলটা তুলে নেয়, তার পর ডিএনএ টেস্টিং ল্যাবরেটরির ফোন নম্বরটা ডিলিট করে দেয়। ডিলিট শব্দটার শেষে একটা জিজ্ঞাসার চিহ্ন থাকে। যতটা জোরে টেপা উচিত, তার থেকেও অনেক বেশি জোরে বোতাম টিপে ডিলিট করে ফোন নম্বরটা।
বিছানায় ফিরে আসে তন্ময়। এখন দরকার একটা প্রগাঢ় ঘুম।
‘রবিবাসরীয়’ বিভাগে ছোটগল্প পাঠান, অনধিক ১৫০০ শব্দে।
ইমেল: rabibasariya@abp.in সাবজেক্ট: rabibasariya galpa
ডাকে পাঠানোর ঠিকানা:
‘রবিবাসরীয় গল্প’,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১
অমনোনীত পাণ্ডুলিপি ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে না। পাণ্ডুলিপির সঙ্গে ফোন নম্বর বা ইমেল আইডি জানাবেন। প্রকাশনার সুবিধার জন্য ইউনিকোড ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়।