ছবি: সুমন চৌধুরী
বারান্দায় একখানা হাতলভাঙা চেয়ারের উপর বসে পা নাচাতে নাচাতে অঘোরনাথ বলল, ‘‘বুঝলে বউমা, আমি এট্টা পিলান কত্তিলাম...’’
কুঞ্জরানি মনে মনে বলল, আপদ!
কুঞ্জরানির নাকটা একটু চাপা, তবে দেখতে মন্দ নয়। মুখখানা বেশ টুলটুলে, চোখ দুটো ঘন কালো এবং গভীর। মাজা রঙের মধ্যে লালচে ঝিলিক, ডাঁটো শরীর। কুঞ্জ রান্নার ফাঁকে বারবার রাস্তার দিকে চাইছিল। বেআক্কেলে অঘোরনাথ ঠিক রাস্তা জুড়ে বসে আছে। ফলে কুঞ্জর সঙ্গে অঘোরনাথের চোখাচোখি হয়ে গেল, কিন্তু সে চোখে যা আগুন, তাতে অঘোরনাথের একেবারে ভস্ম হয়ে যাওয়ার কথা।
অঘোরনাথকে বিমল কাকাবাবু বলে ডাকে। বাগেরহাটে বিমলদের পাড়ায় এক কালে বাড়ি ছিল। পাড়াতুতো সম্পর্ক। কুঞ্জ মুখ বাঁকিয়ে বলে, ‘‘আদিখ্যেতা! ’’
অঘোরনাথের সঙ্গে সে বড় একটা বাক্যালাপ করে না, ডাকাহাঁকা তো নয়ই। বিমলের মুখে শুনেছে, লোকটা চিরকাল অকম্মার ধাড়ি। ও দেশে থাকতে বাপ-ঠাকুরদার জমি-জিরেত বেচে চালাত, এখন এ দেশে এসে দিনরাত বুড়ো ‘এট্টা পিলান’ করে যাচ্ছে। বুড়োর দ্বিতীয় পক্ষের বউ বিন্দুবাসিনী এমন ডাকসাইটে কুঁদুলে যে ঘরের চালে কাক-চিল বসতে পারে না। বুড়ো তাই সকাল হলেই কোনও চায়ের দোকানের বেঞ্চে কিংবা কারও দাওয়ায় বসে নানা রকম ‘পিলান’ করে বেড়ায়। লোকে মজা করে বলে, বুড়োর এতই যখন ‘পিলান’-এর বাতিক, তখন সময় মতো ফ্যামিলি ‘পিলান’ করলে আজ অন্তত এতগুলো আন্ডাবাচ্চা সামলানোর ভয়ে গা-ঢাকা দিয়ে বেড়াতে হত না। বিমলের সঙ্গে কুঞ্জ এই নিয়েও হাসাহাসি করে।
ইদানীং অঘোরনাথ বিমলের বাড়ির দাওয়াখানায় ভর করেছে। সকাল হলেই গুটিগুটি এসে হাতল ভাঙা চেয়ারখানায় বসে কুঞ্জ কী রান্না করছে, লোভীর মতো জুলজুল করে দেখে। মাঝে মাঝে চেয়ারের অবশিষ্ট হাতলখানার উপর খোলের বোলের কেরামতি শোনাতে শোনাতে খুব মোলায়েম করে বলে, ‘‘বুঝলে বউমা, বয়েসকালে তুড়ি লাফ দে এমন খোল বাজাতি পাত্তাম, বললি বিশ্বেস করবা না, দশটা গাঁয়ের লোক অবাক হয়ে যেত। মিছে কতা কব না, তুমার পেত্থম কাকিমাও তো ওই খোলের বোল শুনেই... হেঁ হেঁ... কত বড় বংশের মেয়ে! আমার পেত্থম পক্ষের শোউর তো পিরায় গাতিদার ছেল গো। এক বার চিংড়েয় খোল বাজানোর কম্পিটিসানে গে... হেঁ হেঁ... বুঝলে কি না, শোউরির চোকি পড়ে গিলাম... হেঁ হেঁ...’’
একই কথা শুনতে শুনতে কুঞ্জরানির কান পচে গেল।
সবে ফাল্গুনের মাঝামাঝি। এরই মধ্যে বেলা আটটা বাজতে না বাজতেই বাতাসে বেশ তাত। উনুনের আঁচে কুঞ্জর মুখখানা থমথমে লাল, নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম। কপালে সিঁদুরের টিপটা ভিজে সামান্য ধেবড়ে নেমে এসেছে।
কুঞ্জরানি ধোঁয়া-ওঠা তেলের কড়াইয়ে সবে রাঁধুনি আর শুকনো লঙ্কার সম্বরা দিয়েছে। অঘোরনাথ এক বার সুড়ুত করে ঝোল টানল। বিড়বিড় করে বলল, ‘‘আহ্! দিব্যি বাস ছেড়েছে! বউমা রাঁধে চমৎকার!’’
কথাটা শুনে কুঞ্জর মনে মনে বলল, ঘাটের মড়ার নোলা দেখ! পাছে বুড়োর নজর-দেয়া মাছ খেলে পেট খারাপ হয়, তাই একটা অ্যালুমিনিয়ামের বাটিতে খানিকটা গরম পুঁটি মাছের ঝাল নিয়ে অঘোরনাথের সামনে ঠকাস করে রাখল। তার পর রসহীন গলায় বলল, ‘‘বাটিটা নিয়ে যান, পরে পুন্নিকে দিয়ে পাঠিয়ে দেবেন।’’ কথার মধ্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত, এ বার আপনি উঠুন।
অঘোরনাথ কুঞ্জর কথার ঝাঁঝ গায়ে মাখল না। একমুখ বিগলিত খোশামুদে হাসি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে চেয়ারের হাতলে খোলের বোল তুলতে লাগল। বিরক্ত কুঞ্জ ঘড়িটার দিকে চাইল। প্রায় ন’টা। এখনও চান বাকি। অথচ বুড়োটা ওঠার নাম করছে না। হঠাৎ অঘোর খোলের বোল থামিয়ে বলল, ‘‘বাটিটা চাপা দে রাকো, তোমার ঘরে ঝা মেকুরির উৎপাত, মুক দেবেনে।’’
কুঞ্জর একটা পোষা বিড়াল আছে, ঝুনপুকি। খাবারে মুখ দেওয়া দূরে থাক, কুঞ্জ ভাত মেখে খাইয়ে না দিলে ঝুনপুকি খেতেই চায় না। অঘোরনাথের ইঙ্গিত যে ঝুনপুকির দিকে, সেটা বুঝতে পেরে পিত্তি জ্বলে গেল কুঞ্জর। মুখে কিছু বলল না, শুধু আগুনচোখে তাকাল।
কুঞ্জর মুখের দিকে তাকিয়ে ঘাবড়ে গেল অঘোরনাথ। কথাটা বেফাঁস বেরিয়ে গিয়েছে বুঝতে পেরে বলল, ‘‘কুকুর-মেকুরির কোনও বিশ্বেস আচে বউমা? ফাঁক পালি ওরা খাবারে মুক দেবেই! কতায় আচে না, ছ্যাঁচোগোচো মারো নাথি, লাজ নাইকো বিরেলজাতি!’’
অঘোরনাথ ভাবল, বিরাট এক দার্শনিক কথা বলে ফেলেছে। একচোট হেসে যখন কুঞ্জর দিকে তাকাল, তখন তার সব উৎসাহ উবে গেল। কুঞ্জ থমথমে মুখে রান্নাঘরের দরজাটা দড়াম করে আছড়ে বন্ধ করে ঘরে ঢুকে সশব্দে দরজায় খিল দিল।
কুঞ্জর সন্দেহ, ‘বউমা’ ডাকাটা বুড়োর অছিলামাত্র! অমন ন্যাকাশশী কুঞ্জ ঢের দেখেছে! আসলে এঁটুলিটার নজর নিশ্চয় কুঞ্জর শরীরের আনাচে কানাচে ঘোরে! বাড়িতে একলা মেয়েমানুষ সে। আস্ত একটা ব্যাটাছেলে যদি সারাক্ষণ মুখের সামনে হাঁ করে বসে থাকে, তবে কার না গা জ্বলে যায়! আজকাল তাই অঘোরনাথকে দেখলেই মাথায় রক্ত চড়ে যায় কুঞ্জর। মনে মনে ঘাটের মড়া বলে গাল পাড়ে।
বিমল আটটা নাগাদ চা-জলখাবার খেয়ে দোকানে বেরিয়ে গেলে গুটিগুটি পায়ে বুড়োটা হাজির হয়। বিমলকে দু’এক বার কথাটা বলেছে বটে, কিন্তু সে হেসে উড়িয়ে দিয়েছে। রসিকতা করে বলেছে, ‘‘কুঞ্জরানির টানে আমারই দোকানে যেতে ইচ্ছে করে না, তো বুড়োটার দোষ কী বলো? ও সব বুড়ো-হাবড়া নিয়ে আমার কোনও ভয় নেই। যত চিন্তা জোয়ান-মদ্দদের নিয়ে!’’
কুঞ্জ জানে, বিমল বড় বউ-সোহাগী। কিন্তু ‘জোয়ান-মদ্দ’-র কথা তুললেই সন্দেহ হয়, বিমল কি অন্য কিছু ইঙ্গিত করছে?
বছরখানেক হল এক রকম জেদ করেই কুঞ্জ গান শিখতে শুরু করেছে। বিমলের একদম ইচ্ছে ছিল না। তার ধারণা, গান-বাজনা করা লোকদের মধ্যে নানা রকম গোলমাল থাকে। গোলমালটা যে কী, তা স্পষ্ট করে বলেনি বটে বিমল, কিন্তু বাকিও রাখেনি কিছু।
গানের মাস্টার চাঁদু পাল সপ্তাহে তিন দিন সকাল দশটা নাগাদ আসে কুঞ্জকে গান শেখাতে। সে সময় বিমল দোকানে থাকে। এ নিয়েও বিমলের মৃদু আপত্তি ছিল। আভাসে সে কথা বলতেই ফুঁসে উঠেছিল কুঞ্জ, ‘‘তার মানে আমার ওপর তোমার বিশ্বাস নেই?’’
বউ-অন্ত প্রাণ বিমল এমন কথার পরে আর কথা খুঁজে পায়নি।
চাঁদুর বয়স কম, দেখতে লক্কা পায়রার মতো। ইদানীং গান শেখাতে এসে এমন মুগ্ধ চোখে কুঞ্জর দিকে চেয়ে থাকে যে, কুঞ্জর সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। চাঁদু খুব ভাব নিয়ে বলে, ‘‘তোমার গলার টেক্সচারটা খুব ইউনিক। মন দিয়ে শিখলে তোমাকে ঠেকায় কে?’’ আহ্লাদে গলে যায় কুঞ্জ। সারা শরীর রোমাঞ্চিত হয়। চাঁদু চলে গেলে ডিকশনারিতে ‘টেক্সচার’-এর মানে খুঁজতে বসে যায়।
গান শেখানোর সময়ে অঘোরনাথের বসে থাকাটা চাঁদু বা কুঞ্জ, কেউই পছন্দ করে না। বেহায়া বুড়োটা যে কান পেতে ওদের কথা শোনে, মাঝে মাঝে ফুট কাটা শুনে বোঝা যায়। চাঁদু সে দিন বিরক্ত হয়ে বলেছিল, ‘‘বিমলদা কি বিড়ালকে মাছ পাহারায় রেখেছে?’’
রাগে, লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিল কুঞ্জ। সেই থেকে বিমলের অভিসন্ধি সম্পর্কেও কুঞ্জর মনে একটা ক্ষীণ সন্দেহ ঢুকে গিয়েছে। তবে কি বিমলই...! হাড়-হাভাতে বুড়োটার উপরও আক্রোশ বেড়েছে কুঞ্জর।
একটু বাদেই চাঁদুর আসার কথা। অথচ বুড়োটার ওঠার লক্ষণ নেই! রাগে দাঁত কিড়মিড় করছিল কুঞ্জ।
অঘোরনাথ চেয়ারে বসে প্রথমে চাপা গলায় গান ধরল, ‘‘মরিব মরিব সখি, নিচ্চয়ই মরিব...’’ কুঞ্জর সাড়াশব্দ নেই। অঘোরনাথ গান থামিয়ে বারকয়েক গলাখাঁকারি দিল। এ সময়ে একটা পান পেলে বেশ হতো। অঘোরনাথ জানে, কুঞ্জর ঘরে সব সময় পান মজুত থাকে। কিন্তু তার বাইরে বেরোবার কোনও লক্ষণ না দেখে আরও কিছু ক্ষণ গুনগুন করল। শেষে হতাশ হয়ে পুঁটি মাছের বাটিটা নিয়ে উঠতে যাবে, এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে অঘোরনাথের ছোট মেয়ে বেলি এসে বলল, ‘‘বাবা, শিগগির বাড়ি চলো, বড়দা বাড়ি আইয়েচে।’’
অঘোরনাথ অত্যন্ত খুশি হয়ে বলল, ‘‘তাই নাকি? বড়খোকা আইয়েচে? চল চল।’’
বেলি হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, ‘‘শুদু বড়দা না, সঙ্গে এট্টা মেয়েও আইয়েচে। কী সুন্দুর দেকতি। ঠিক য্যান মা দুগগা। কিন্তু মা খুব চোটপাট করতি নেগেচে। আমারে বলল, যা তোর বাপেরে ডেকে নে আয়। ঘরে রান্নার কিচু নেই, ইদিকি এসব সেলেংখানা...’’
তার পর বেলি বারকয়েক মাথা চুলকে নিয়ে বলল, ‘‘মা তুমারে আরও য্যান কী সব কতি বলল! তুমি শিগগির চলো বাবা।’’
গোলমালের শব্দ শুনে কুঞ্জরানি বেরিয়ে এসে বলল, ‘‘কী হয়েচে রে বেলি? হাঁপাচ্ছিস কেন?’’
বেলি চোখমুখে অদ্ভুত ভঙ্গি করে বলল, ‘‘বড়দা আইয়েচে বউদি, এত্ত বড় বড় রসগোল্লা আনিচে। সঙ্গে কী সুন্দুর এট্টা মেয়েও আইয়েচে ! দেকতি যাবা বউদি? চলো না। মা খুব ঝগড়া কত্তি নেগেচে। সে এক সেলেংখানা! ’’
বেলির খালি গা। ইজেরটাতে বোধ হয় দড়ি নেই, তাই বাঁ হাত দিয়ে সেটাকে চেপে ধরে ডান হাত দিয়ে রসগোল্লার সাইজ দেখাচ্ছে। একমাথা রুক্ষ চুল, ভারী মিষ্টি দেখতে মুখখানা। প্রাইমারিতে এ বছর ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছে। ওর কচিমুখে বার বার ‘সেলেংখানা’ শুনে হাসি পেয়ে গেল কুঞ্জরানির। ঘর থেকে একখানা বিস্কুট এনে বেলির হাতে দিল। আদর পেয়ে বেলি কুঞ্জর হাতখানা ধরে ঝুলতে ঝুলতে বলল, ‘‘ইস! তুমার হাত কী নরম বউদি! ঠিক যেন বুড়ির চুল!’’
বড়দা মানে অঘোরনাথের প্রথম পক্ষের ছেলে। আগেও তাঁকে দেখেছে কুঞ্জ। বছর পঁচিশেক বয়েস হবে। খিদিরপুরে কোনও এক গেঞ্জির মিলে কাজ করে। সাংঘাতিক চালিয়াত। বাগজোলায় যখন আসে, তখন এক্কেবারে ফুলবাবুটি। কথায় কথায় ‘আমাদের কলকাতা’ শোনায়। এ পক্ষেরও গোটা দুয়েক অপোগন্ড আছে অঘোরনাথের। তাদের এক জন তারাপদর পাইস হোটেলে, অন্যটা ফকির আলির গমকলে কাজ করে। কোনওটা পাতে দেওয়ার যোগ্য নয়। তাই সুযোগ পেলেই অঘোরনাথ গর্ব করতে বড় খোকার প্রসঙ্গ টেনে আনে।
বড় খোকার কথা শুনে অঘোরনাথ আর দাঁড়াল না। ছেঁড়া ধুতিটা কোনও রকমে সামলে নিয়ে দুদ্দাড় ছুটতে শুরু করল।
মাছের বাটিটা পড়ে রইল দেখেও কুঞ্জরানি রা কাড়ল না। তড়িঘড়ি চানঘরে ঢুকে পড়ল।
বারান্দায় চেয়ার খালি দেখে চাঁদু হেসে বলল, ‘‘আজ তোমার পাহারাদারটিকে দেখছি নে যে বড়?’’
কুঞ্জ সদ্য স্নান সেরে এসেছে। ভেজা চুলে হালকা শ্যাম্পুর গন্ধ। লাজুক মুখে একটু হাসল শুধু।
চাঁদু কাঁধের ঝোলা ব্যাগখানা নামিয়ে রেখে বলল, ‘‘বুঝলে কুঞ্জ, গান হচ্ছে গুরুমুখী বিদ্যে। গুরুর উপর ভক্তি না থাকলে শেখা যায় না।’’ হারমোনিয়াম নিয়ে নিজেই গাইতে শুরু করল, ‘‘যে জন প্রেমের ভাব জানে না...’’
কুঞ্জর মনে হল, আজ মাস্টার যেন কেমন উসখুস করছে। হারমোনিয়াম বাজানোর সময় বারবার মাস্টারের হাত যেন কুঞ্জর আঙুল ছুঁয়ে যাচ্ছে। ভিতরে ভিতরে সঙ্কুচিত হচ্ছিল সে। আড়চোখে দেখল, মাস্টার যেন কেমন আঁশটে চোখে ওর দিকে চেয়ে আছে। একলা বাড়িতে খুব অস্বস্তি হচ্ছিল। মাস্টারের চোখে মুগ্ধতার বদলে যেন অন্য রকম ইঙ্গিত। বুকের কাপড় ঠিক করল সে। চাঁদু ক্রমশ গা-ঘেঁষে এগিয়ে আসছে। সরে বসতে বসতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেল কুঞ্জর। কুলকুল করে ঘামতে শুরু করল সে। চাঁদুর তপ্ত নিশ্বাসের গন্ধে গা গুলিয়ে উঠল। মরিয়া হয়ে চিৎকার করতে যাবে, ঠিক সেই সময়ে বাইরে অঘোরনাথের গলা পাওয়া গেল...
‘‘বউমা, ফিরে আলাম, মাছের বাটিটা নে যাতি মনে ছেল না। কুকুর-মেকুরি মুক দেয়নি। আমার মা-র ভালবেসে দেয়া জিনিস, মেকুরি কি খাতি পারে? এই দ্যাখো, তুমার কাকিমা তুমার জন্যি আবার দুটো রসগোল্লা পাঠায়ে দেলে।’’
হঠাৎ অঘোরনাথকে দেখে কী যে স্বস্তি পেল কুঞ্জ! ধড়ে যেন প্রাণ ফিরে পেল। বাইরে বেরিয়ে দেখল, বুড়োর হাতে পরম যত্নে ধরা একটা বাটির মধ্যে দুটো রসগোল্লা।
ডুবন্ত মানুষের মতো আর্ত গলায় কুঞ্জ ডেকে উঠল, “কাকাবাবু!’’
জীবনে প্রথম বার বউমার মুখে ‘কাকাবাবু’ ডাক শুনে খানিক ক্ষণ চেয়ে রইল অঘোরনাথ। তার পর আচমকা ডুকরে কেঁদে উঠল।
‘রবিবাসরীয়’ বিভাগে ছোটগল্প পাঠান, অনধিক ১৫০০ শব্দে।
ইমেল: rabibasariya@abp.in সাবজেক্ট: rabibasariya galpa
ডাকে পাঠানোর ঠিকানা:
‘রবিবাসরীয় গল্প’,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১
যে কোনও একটি মাধ্যমে গল্প পাঠান। একই গল্প ডাকে ও ইমেলে পাঠাবেন না। পাণ্ডুলিপিতে ফোন নম্বর বা ইমেল আইডি জানাবেন। ইউনিকোড ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়।