ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৭

শেষ নাহি যে

সাম্যব্রতকে মোবাইল ফেরত দিয়ে চোখ বুঁজল দরিয়া। পেটের ব্যথাটা মাঝে মাঝে একদম চলে যাচ্ছে। তখন শরীরের অন্য জায়গার ব্যথাগুলো চাগাড় দিচ্ছে। পায়ের যেখানে বোমার টুকরো ঢুকে রয়েছে, সেখানকার ব্যথার চলন মোটরবাইকের মতো

Advertisement

ইন্দ্রনীল সান্যাল

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:২০
Share:

ছবি: শুভম দে সরকার

পূর্বানুবৃত্তি: গণতান্ত্রিক মোর্চার নেত্রী মানসী বসু খুন হওয়ায় রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে হিংসা এবং বন্‌ধ। এর মধ্যে সাম্যব্রতর ফোনে দরিয়ার অবস্থা জানতে পেরেছে বিহান। সে চাকরির সমস্যার কথা গোপন করে ফোনে ভালবাসার কথায় মন ভাল করে দিল দরিয়ার।

Advertisement

আত্মসম্মানের শেষ ফোঁটা বিসর্জন দিয়ে সনতের পা ধরে হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করল বিহান। “আমার ভুল হয়ে গেছে সনৎ। তুই আমাকে ক্ষমা করে দে।”

“দাসদা আমাকে ফোন করেছিলেন। তুই আমার নামে ওঁকে যা যা বলেছিস, সব বলেছেন। যার নামে এক্ষুনি চুকলি কেটে এলি, তার পা ধরতে কেমন লাগে রে?”

Advertisement

বিহান নিচু গলায় বলল, “দরিয়াকে তুই ভালবাসতিস। কিন্তু দরিয়া তোকে কখনও ভালবাসেনি। তুই কেন ভাবিস যে, আমি দরিয়াকে তোর কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছি? ও কোনও দিনও তোর ছিল না। তুই বিয়ে করে ফেল সনৎ। একটা মেয়ের ভালবাসা পেলেই তুই পুরনো সব কথা ভুলে যাবি।”

বিহানের কথা শুনে সনৎ এক ঝটকায় পাশ ফিরল। বালিশের তলা থেকে মোটা মানিব্যাগ টেনে নিয়ে দুটো পাঁচশো টাকার নোট ছুড়ে দিয়ে বলল, “ভিখিরি কোথাকার! ফোট্‌ এখান থেকে! আমার এখন অনেক কাজ।”

দশ হাজার টাকা চেয়ে পাওয়া গেল এক হাজার টাকা। তাই সই। বিহানের পার্সে হাজার পাঁচেক টাকা আছে। আশা করি এতে হয়ে যাবে।

নোটদুটো তুলে নিয়ে বিহান বলল, “তুই কী ভাবে ফিরবি? রাস্তাঘাটের অবস্থা ভাল নয়।”

“তাই নিয়ে তোর না ভাবলেও চলবে। ফোট্‌ শালা!” আবার মোবাইল তুলে নিয়েছে সনৎ।

“আমার কাজটা থাকবে তো রে?”

“তুই যাবি এখান থেকে?” গর্জন করে উঠল সনৎ, “না কি লাথি মেরে বার করে দেব?”

বিহান ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে মাথা নিচু করে মেস থেকে বেরোল।

সাম্যব্রতকে মোবাইল ফেরত দিয়ে চোখ বুঁজল দরিয়া। পেটের ব্যথাটা মাঝে মাঝে একদম চলে যাচ্ছে। তখন শরীরের অন্য জায়গার ব্যথাগুলো চাগাড় দিচ্ছে। পায়ের যেখানে বোমার টুকরো ঢুকে রয়েছে, সেখানকার ব্যথার চলন মোটরবাইকের মতো। ভটভট করে আসছে, চারদিক কাঁপিয়ে দ্রুত চলে যাচ্ছে। মাথাব্যথার চলন রিকশার মতো। টুকটুক করে আসছে। আসছে তো আসছেই। যাওয়ার নামটি নেই। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা উপসর্গ। ঝিমুনি ভাব, এই শীতেও ঘাম হওয়া, বারবার জল তেষ্টা পাওয়া। কোনও মানে হয় এই সব ন্যাকামোর? দরিয়ার শরীরে রোগবালাই নেই বললেই চলে। তার আজ এই অবস্থা? ধুস!

বিহান বলেছে, খারাপ জিনিস নিয়ে না ভাবতে। তা হলে আরও শরীর খারাপ হবে। এখন তা হলে কী নিয়ে ভাববে দরিয়া? বিহানের সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার দিন নিয়ে? সেই যে, তপনস্যরের বাড়িতে সরস্বতী পুজোর দিন...

না। দরিয়া বরং ভাববে বিহানের সঙ্গে শেষ দেখা হওয়ার কথা। এই তো! গত সোমবার ভোরবেলা...

হাওড়া থেকে পোর্টের উদ্দেশে স্টেট বাস ছাড়ে আধঘন্টা পরপর। বিহান ধরে ভোর ছ’টার বাস। তা হলে ন’টার মধ্যে বকুলতলার মেসে পৌঁছে ব্যাগ রেখে ধীরেসুস্থে অফিস যাওয়া যায়। সোমবারের রান্নাটা আগে দরিয়াই করে দিত। বক্সে করে নিয়ে যেত বিহান। ডাক্তার মিত্র বারণ করার পরে বিহান আর খাবার নিয়ে যায় না। সাম্যব্রত বলেছিলেন, তিনি রান্না করে দেবেন। বিহান রাজি হয়নি।

শীতকালের ভোর। লেপ ছেড়ে যখন বেরোয় বিহান, দরিয়ার কান্না পায়। তার জন্য কত কষ্ট করছে ছেলেটা। ওই কনকনে ঠান্ডায় গ্যাসে জল গরম করে স্নান করছে, তাদের দু’জনের জন্যে চা বানাচ্ছে। দরিয়াকে নিজের হাতে চা খাইয়ে দিচ্ছে। বেরিয়ে যাওয়ার আগে তার দুই গালে আর কপালে চুমু খাচ্ছে। কৃতজ্ঞতায়, ভালবাসায়, তৃপ্তিতে দরিয়ার বুক ভরে যায়। তার বরের মতো ভাল মানুষ এই দুনিয়ায় আর একটাও আছে? এক দিন নিশ্চয়ই তারা এক সঙ্গে থাকবে। তখন দু’জনে খুব মজা করবে। খুব! অনাগত সেই দিনের কথা ভেবে চোখে জল চলে আসে দরিয়ার। গলার কাছে কী একটা পুঁটুলি পাকিয়ে ওঠে।

চোখ মুছে অ্যাম্বুল্যান্সের চালকের আসনের দিকে তাকাল দরিয়া। অ্যাম্বুল্যান্স চালাচ্ছে যে লোকটা, তার নাম রাজু হেলা। বছর চল্লিশ বয়স। চিমসে চেহারা, গাল ভর্তি ব্রণের খানাখন্দ, চুলে বাহারি টেরি কাটা। পরনে সিল্কের সাদা ফুলহাতা শার্ট আর বেলবটম ট্রাউজ়ার্স। গলায় লাল মাফলার। এই রকম আজকাল কেউ পরে না।

দরিয়ার নাম দরিয়া কেন, এই নিয়ে স্কুল-কলেজে অনেক কথা শুনতে হয়েছে। আসল কারণ, ‘দরিয়ায় আইল তুফান’ গানটি সাম্যব্রতর খুব পছন্দের। মন ভাল থাকলে মাঝেমধ্যে খাওয়ার টেবিলে তাল ঠুকে পুরো গানটিই গেয়ে থাকেন। দরিয়ার অবশ্য নিজের নাম একদমই পছন্দ নয়। সেই ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন লোকে তার নাম শুনে নানা মন্তব্য করে থাকে। “কী অদ্ভুত নাম!” “কে রেখেছে? খুব আঁতেল কেউ?”

রাজু তার নাম শুনে বলল, “খুব কায়দার নাম তো!” তার পরে টেরিতে হাত বুলিয়ে রাজেশ খন্নার কায়দায় গান ধরল, “নদিয়া সে দরিয়া, দরিয়া সে সাগর, সাগর সে গেহরা জাম।” দরিয়া বুঝতে পারল পোশাক, চুলের কায়দা বা কথাবার্তার ক্ষেত্রে রাজু হেলা রাজেশ খন্নাকে নকল করে। হয়তো রাজেশ থেকেই ওর নাম হয়ে গিয়েছে রাজু।

সাম্যব্রত বিরক্ত হয়ে বললেন, “এটা গান গাওয়ার সময় নয়। তুমি চলো।”

“চলো বললেই কী আর যাওয়া যায় স্যর! রাস্তাঘাটের অবস্থা দেখছেন তো। পুরো লাইফ রিস্ক কেস। ‘জ়িন্দেগি কা সফর হ্যায় ইয়ে ক্যায়সা সফর, কোই সমঝা নহি, কোই জানা নহি।’ জান হাথেলি পে নিয়ে যেতে হবে। খচ্চা আছে।”

“কত নেবে? ডক্টর মিত্র তো বলেছেন...”

“স্যর স্যরের কথা বলবেন। রাজু রাজুর কথা বলবে। এটা হিজ় হিজ় হুজ় হুজ়। পাঁচ হাজার টাকা লাগবে।”

“লিলুয়া থেকে হাওড়া ময়দান পাঁচ হাজার টাকা!” তেড়ে উঠেছেন সাম্যব্রত, “পাঁচ কিলোমিটারের জন্য তুমি এত টাকা নেবে? এই ঠান্ডায় এয়ার কন্ডিশনের দরকার নেই। আমার মেয়ের অক্সিজেনও লাগবে না। তুমি তো দিনে ডাকাতি করছ হে!”

“যাবেন না স্যর। রাজু হেলার সঙ্গে যেতে হবে এমন মাথার দিব্যি কেউ দিয়েছে? অন্য গাড়ি ডেকে নিন। বাজার মে হর চিজ় মিলতা হ্যায়!”

সাম্যব্রত অন্য অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য চেষ্টা করেছিলেন। কোনও অ্যাম্বুল্যান্স চালক যেতে রাজি হয়নি। সকলের মুখে এক কথা। রাস্তায় গন্ডগোল হচ্ছে, যাব না। সাম্যব্রত বুঝে গিয়েছেন, এদের মধ্যে একটা যোগসূত্র আছে। রাস্তায় গন্ডগোল থাক আর না-ই থাক, তিনি রাজুর অ্যাম্বুল্যান্স নিতে বাধ্য। এবং রাজু যে টাকা চেয়েছে সেটা দিতেও বাধ্য।

অগত্যা আবার রাজুর কাছে। সে ড্রাইভারের আসনে বসে রিয়ার ভিউ মিররের দিকে তাকিয়ে নিজের মনে ডায়ালগবাজি করছে। “বাবুমশাই, জ়িন্দেগি বড়ি হোনে চাহিয়ে, লম্বি নেহি।”

সাম্যব্রত বললেন, “বলছ ‘আনন্দ’ সিনেমার ডায়ালগ, আর আমাদের দিচ্ছ কষ্ট! ”

ডান হাত দিয়ে টেরি ঠিক করে রাজু বলল, ‘“আই হেট টিয়ার্স, পুষ্পা!’ শুনুন স্যর, একটা কথা আগেভাগে বলে দিই। আপনাদের ভাগ্য খুব ভাল যে আমার সঙ্গে যাচ্ছেন। এই রাজু হেলা খরাজ পার্টির নেতা। জেলার আপৎকালীন যানচালক সমিতির এক মাত্র যুগ্ম সম্পাদক।”

“এক মাত্র যুগ্ম সম্পাদক ব্যাপারটা কাঁঠালের আমসত্ত্বর মতো শোনাচ্ছে। অন্য জন কি তোমার যমজ ভাই, যে কুম্ভমেলায় হারিয়ে গিয়েছে?” বলল দরিয়া।

“আওয়াজ দিচ্ছেন ম্যাডাম?” দরিয়ার দিকে তাকিয়ে রাজু বলল, “ভাবছেন ফালতু ড্রাইভারের রোয়াব কত! তাই না? মনে রাখবেন, এই আনপড় রাজুই এখন আপনার ভরসা।” কথাটা বলেই সাম্যব্রতর কাছে হাত পেতে রাজু বলল, “টাকাটা দিন।”

পাঁচ হাজার টাকা রাজুর হাতে দিয়ে সাম্যব্রত ভাবলেন, কুড়ি হাজার টাকা নিয়ে বেরিয়েছিলেন। হাতে রইল পনেরো হাজার। সরকারি হাসপাতালে টাকা লাগার কথা নয়। কিন্তু যদি লাগে? যদি পনেরোতে না হয়? আজকাল ডেবিট কার্ড না ক্রেডিট কার্ড... কী সব পাওয়া যায়। সাম্যব্রতকে ব্যাঙ্ক থেকে একটা কার্ড দিয়েছিল। কী করে ব্যবহার করতে হয়, শেখেননি। পাড়াতেই গোটা চার এটিএম আছে। কোনও দিনও ঢোকেননি। কী করে টাকা বার করতে হয় জানেন না। আজ মনে হচ্ছে শিখে রাখলে ভাল হত।

জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দরিয়া দেখতে পাচ্ছে, লিলুয়ার গলি থেকে বেরিয়ে ফ্লাইওভার ধরেছে অ্যাম্বুল্যান্স। ফাঁকা উড়ালপুল দিয়ে সাঁইসাঁই করে চলে এল রেললাইনের এ পারে। ওয়ান ওয়ে রাস্তায় হাওড়ার দিকে যাওয়া নিষেধ। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য ছাড় আছে। তা ছাড়া চারদিকে যা গন্ডগোল হচ্ছে, তার মধ্যে মোড়ে কোনও ট্রাফিক পুলিশ দেখতে পেল না দরিয়া। পাঁচ মিনিটের মধ্যে হাওড়া চলে এল রাজুর অ্যাম্বুল্যান্স। এখানে মেট্রো রেলের কাজ চলছে পুরোদমে। জি টি রোড আংশিক ভাবে বন্ধ। এ গলি-সে গলি দিয়ে রাজু চলে এসেছে হাওড়ার গুলমোহরে।

অতীতে এখানকার রেল কলোনিতে একাধিক গুলমোহর গাছ ছিল। দরিয়া ছোটবেলায় সাম্যব্রতর সঙ্গে এখানকার মাঠে অনেক বার সার্কাস দেখতে এসেছে। গাছগুলো আর নেই। তাদের স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে গুলমোহর নামের এক ম্লান বাসস্টপ। দরিয়া সাম্যব্রতকে বলল, “এখান থেকে বঙ্গবাসী হাসপাতাল হাঁটা রাস্তা।”

সাম্যব্রত নিচু গলায় দরিয়াকে চুপ করতে বললেন। দরিয়া ঘাড় তুলে দেখল, হাওড়া বাস স্ট্যান্ডের দিক থেকে গণতান্ত্রিক মোর্চার একটা মিছিল এ দিকে আসছে। মিছিলের একদম সামনে বড় ব্যানার নিয়ে হেঁটে আসছে দু’জন মাঝবয়সি লোক। দু’জনের পরনেই জিন্‌স আর জ্যাকেট। পিছনে শ’দেড়েক লোক। তাদের হাতে গণতান্ত্রিক মোর্চার পতাকা। দূর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, পতাকার ডান্ডাগুলো ধাতুর তৈরি। রোদ পড়ে চকচক করছে। কারও কারও হাতে কৃপাণ এবং কাতানও রয়েছে। দরিয়া সাম্যব্রতকে বলল, “প্রসূতির অ্যাম্বুল্যান্সে ওরা ঝামেলা করবে না। তুমি চিন্তা কোরো না।”

সাম্যব্রত বললেন, “চিন্তা তো করতেই হবে। যে দু’জন ব্যানার ধরে আছে, তাদের এক জনের নাম বাবিন। সদ্য খরাজ পার্টি থেকে গণতান্ত্রিক মোর্চায় গিয়েছে। পাল্টি খাওয়া লোকরা ভয়ানক হয়।”

রাজু অ্যাম্বুল্যান্সের ইঞ্জিন বন্ধ করে চুপচাপ বসেছিল। বলল, “ঠিক বলেছেন স্যর। বাবিন আগে আমাদের সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ছিল।”

টেনশনের মুহূর্তেও সাম্যব্রত ফিক করে হেসে ফেলেছেন। “এই তা হলে তোমার সেই কুম্ভমেলায় হারিয়ে যাওয়া যমজ ভাই!”

“বিপদের টাইমে কেন উংলি করছেন স্যর? বাবিন আমাকে দেখতে পেলে হেব্বি বাওয়াল দেবে,” কাঁপা গলায় বলল রাজু। এখন রাজু হেলা তার রাজেশ খন্না অবতার থেকে বেরিয়ে এসেছ।

মিছিল আরও এগিয়ে এসেছে। বাবিন হাঁক পাড়ছে, “খরাজ পার্টির কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও।” বাকিরা ধুয়ো দিচ্ছে, “ভেঙেদ্দাও, গুঁড়িয়েদ্দাও!”

“খরাজ পার্টি জেনে রাখো, হামলা হলে পাল্টা হবে।”

“হামলা হলে পাল্টা হবে।”

মিছিল এখন অ্যাম্বুল্যান্সের পাশ দিয়ে হাঁটছে। সাম্যব্রত জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে, দরিয়া আধশোওয়া হয়ে দেখছে। রাজু ড্রাইভারের আসনে বসে মাথা নিচু করে আছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে, গাড়ির মেঝেয় কিছু পড়ে গেছে। রাজু সেটা খুঁজছে।

ক্রমশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement