ছবি: অমিতাভ চন্দ্র
পূর্বানুবৃত্তি: গাড়িতে যেতে যেতে বিতান আহিরীকে কয়েকটা ব্যাপার জানাল। আজকের ইন্টারভিউতে সে ইচ্ছে করে ফেল করেছে, আর এখন যে কাজটা করছে, সেটাও সে ছেড়ে দেবে ঠিক করেছে। সে আহিরীকে বলল তার ফ্ল্যাটে আসতে, সে নিজে হাতে কফি বানিয়ে খাওয়াবে। আহিরী গেল না।
বিতান নেমে যাওয়ার পর আহিরী গাড়ি স্টার্ট দিল। মিনিট পাঁচেক ড্রাইভ করার পরই বুঝল, তার মন খারাপ। খুব মন খারাপ। সে মোবাইল তুলে নম্বর টিপল।
‘‘মা, আমি এক বন্ধুর বাড়িতে কফি খেতে যাচ্ছি। ফিরতে দেরি হবে। আরে না না, ঘেরাও টেরাও নয়... গাড়ি চালাচ্ছি শুনতে পাচ্ছ না? উফ, কার বাড়ি তুমি শুনে কী করবে? আমি কি স্কুলে পড়ি? কার বাড়ি বললে নিশ্চিন্ত হবে? আমাদের এইচওডি চান্দ্রেয়ীদির বাড়ি বললে? খুশি?’’
মোবাইল ড্যাশবোর্ডে রেখে আহিরী নিজের মনে বলল, ‘‘মহিলার মাথাটা পুরো গেছে।’’
সামনের মোড় থেকে গাড়ি ঘোরাল আহিরী।
১২
‘‘তুমি শিয়োর?’’
সৌহার্দ্য বলল, ‘‘হ্যাঁ স্যর।’’
কমলেশ রায় স্থির চোখে তাকিয়ে থেকে বললেন, ‘‘কী ভাবে শিয়োর হলে জানতে পারি?’’
সৌহার্দ্য বলল, ‘‘স্যর, আমি আগে একটা ফার্মে কাজ করেছি। সেখানে সেম প্রবলেম হয়েছিল। হঠাৎ এক দিন সার্ভার ডাউন হয়ে গেল। সব কম্পিউটার একসঙ্গে ডাউন। ঠিক করার
পর দেখা গেল, অনেক ফাইল ডিলিট হয়ে যাচ্ছে। তার পর পি সি ধরে ধরে চেক করার সময় বিষয়টা ধরা পড়ে।’’
কমলেশ বলেন, ‘‘কী ধরা পড়ে?’’
সৌহার্দ্য শান্ত ভাবে বলে, ‘‘ধরা পড়ে ইট ওয়াজ নট আ টেকনিক্যাল ফল্ট স্যার। সিস্টেমে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভাইরাস ইনপুট করা হয়েছে।’’
কমলেশ ত্রিপাঠীর দিকে তাকালেন। মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে সে নার্ভাস। সৌহার্দ্যকে সে–ই জেনারেল ম্যানেজারের কাছে নিয়ে এসেছে। কম্পিউটার সারানোর পর সৌহার্দ্যই তাঁকে ভাইরাসের ঘটনাটা জানায়। বলে, এটা কেউ ইচ্ছে করে করেছে। ত্রিপাঠীর বিশ্বাস হয়নি। এতগুলো মেশিন ইচ্ছে করে শাট ডাউন করা যায় না কি!
সৌহার্দ্য বলল, ‘‘কেন যাবে না? ভাইরাস ঢুকিয়ে দিলেই সম্ভব। অফিসের সার্ভার অ্যাফেক্টেড হলেই তো সব কোলাপ্স করবে।’’
ত্রিপাঠী অবিশ্বাসের সুরে বললেন, ‘‘ইঞ্জিনিয়ার তো কিছু বলল না! বাইরে থেকে যে এল, সেও...’’
সৌহার্দ্য বলল, ‘‘কেন বলেনি আমি বলতে পারব না স্যর। মনে হয় ধরতে পারেনি।’’
এর পরই ত্রিপাঠী ঘাবড়ে গিয়ে কমলেশ রায়কে ফোন করেন। এই ছেলের কথা তিনি পুরোপুরি উড়িয়ে দিতে পারেননি। ক’দিন আগেই সৌহার্দ্য তাদের চমকে দিয়েছে। যে ভুল এত বছরেও কেউ বুঝতে পারেনি, মাত্র ক’দিন এসে তা খুঁজে বের করেছে। একে দুম করে অবিশ্বাস করা মুশকিল। সৌহার্দ্য তাঁর ঘর থেকে চলে যাওয়ারই পরেই তিনি জেনারেল ম্যানেজারকে ফোন করেছেন। সৌহার্দ্যকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর ঘরে এসেছেন। সৌহার্দ্য খুব সহজ ভাবেই কথা বলেছে। তার চোখমুখ বলছে, ঘটনা সম্পর্কে সে নিশ্চিত।
কমলেশ রায় বললেন, ‘‘ইচ্ছাকৃত ভাবাটা আমাদের বেশি হয়ে যাচ্ছে না তো? বাইরে থেকেও তো ভাইরাস ঢুকতে পারে। সারা পৃথিবীর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ।’’
ত্রিপাঠী বললেন, ‘‘উই ইউজ় লেটেস্ট অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার, স্যর।’’
সৌহার্দ্য বলল, ‘‘হতে পারে স্যর। তবে আমার পুরনো অফিসের এক্সপিরিয়েন্স অন্য কথা বলছে। সেখানেও অ্যান্টি-ভাইরাস প্রোটেকশন ছিল। যে কাজটা করেছিল, সে জেনেবুঝেই করেছিল।’’
কমলেশ চেয়ারে হেলান দিলেন। সৌহার্দ্য ছেলেটাকে তিনি বোঝার চেষ্টা করছে। ছেলেটা কি তার সঙ্গে কোনও খেলা খেলতে চাইছে? সে কি তার মায়ের সঙ্গে কমলেশ রায়ের রিলেশনের কথা জানে? জানে বলেই প্রথম দিন বাবার নাম জিজ্ঞেস করায় মায়ের নামও জুড়ে দিয়েছিল! বহু দিনের লুকিয়ে থাকা ভুল খঁুজে বার করে নজরে পড়তে চেয়েছে। পড়েছেও। এক লাফে জেনারেল ম্যানেজারের ঘর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। তার পর কাপ ভেঙে সাবধান করেছে। বুঝিয়ে গিয়েছে, আমি কিন্তু ছাড়ব না। আর আজ এসে বলছে, অফিসে সাবোটাজ হয়েছে! এই পর্যন্ত ভেবে কমলেশ মনে মনে নিজেকে ধমক দিলেন। কী উদ্ভট কথা ভাবছেন তিনি! তাঁর যুক্তিবুদ্ধি কি সব লোপ পেল? সৌহার্দ্য তাঁর কথা জানবে কী করে? তার মা নিশ্চয়ই নিজের ভেঙে যাওয়া প্রেমের গল্প ছেলের কাছে করবে না। ত্রিপাঠীর কথায় ঘোর কাটল কমলেশের।
‘‘স্যর, হোয়াট শুড উই ডু নাউ?’’
কমলেশ চিন্তিত ভাবে বললেন, ‘‘ভাবতে হবে। সৌহার্দ্য যা বলেছে তা যদি সত্যি হয় সেটা একটা ক্রাইম। মেজর ক্রাইম। ফলে আমাদের আগে মোর দ্যান হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিয়োর হতে হবে। বাইরে থেকে কাউকে এনে স্টাফেদের পি সি চেক করতে গেলে সবারই সন্দেহ হবে। আপত্তিও করতে পারে। একেই কিছু দিন আগেই প্রোডাকশন ম্যানেজার আদিত্য সাহার ঘটনাটা ঘটেছে। আমাদের প্রতিটা স্টেপ ভেবেচিন্তে ফেলতে হবে।’’
সৌহার্দ্য বলল, ‘‘স্যর, আপনারা যদি অনু্মতি দেন আমি এক বার চেষ্টা করতে পারি।’’
ত্রিপাঠী অবাক হয়ে বললেন, ‘‘তুমি চেষ্টা করবে! কী চেষ্টা করবে?’’
সৌহার্দ্য বলল, ‘‘স্যর, একটা সময় আমি কম্পিউটার নিয়ে কিছু পড়াশোনা করেছি। নিজের ইন্টারেস্টেই। আমার ধারণা, খুব বেশি সার্চ করতে হবে না। প্রোডাকশন আর অ্যাকাউন্টসের মেশিনগুলো একটু দেখলেই হবে।’’
কমলেশ বললেন, ‘‘কেন?’’
সৌহার্দ্য মাথা নামিয়ে বলল, ‘‘কেন তা এখনই বলতে পারব না। তবে মনে হচ্ছে।’’ একটু থেমে সৌহার্দ্য হাসল। বলল, ‘‘আমি অবশ্য চাইব, আমার এই সন্দেহ মিথ্যে প্রমাণ হোক।’’
কমলেশ ও ত্রিপাঠী মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন। বসের ইঙ্গিত বুঝতে পারলেন ত্রিপাঠী। সৌহার্দ্যকে বললেন, ‘‘তোমার কথা শুনলাম। আমরা একটু কথা বলে নিই। দেন উই শ্যাল টেক আ ডিসিশন।’’
সৌহার্দ্য উঠে দাঁড়াল। চেয়ার সরিয়ে ওঠার সময় কমলেশ খুব মন দিয়ে নজর করলেন, ছেলেটার বঁা হাতটা ঠিক কোথায় থাকে। সামনে রাখা চায়ের কাপে ধাক্কা মারে কি?
না, সৌহার্দ্য স্বাভাবিক ভাবেই হাত সরিয়েছে। তা হলে সে দিন কী ঘটেছিল? প্রথম দিনের নার্ভাসনেস? এ নার্ভাস হওয়ার মতো ছেলে নয়।
সৌহার্দ্য ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে ত্রিপাঠী বললেন, ‘‘কী করব স্যর? আমার তো মনে হয় এই ছেলের ওপর ডিপেন্ড না করে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। সে কিছু সাসপেক্ট করছে কি না জানা দরকার।’’
কমলেশ ভুরু কুঁচকে বললেন, ‘‘অবশ্যই। ত্রিপাঠী, আমার বিশ্বাস, ছেলেটি বেশি বলছে।’’
ত্রিপাঠি বললেন, ‘‘মোটিভ?’’
কমলেশ অস্ফুটে বললেন, ‘‘পুরোটা বুঝতে পারছি না। হয়তো কোম্পানির অ্যাটেনশন চাইছে।’’
ত্রিপাঠী বললেন, ‘‘অলরেডি তো কিছুটা পেয়েছে। আজও পেল। অ্যাটেনশন পাওয়ার মতোই ছেলে। ও যা বলছে তা যদি সত্যি হয়...’’
কমলেশ বললেন, ‘‘এখনই ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলো। দরকারে আমিও বসব। ইট’স আ ভেরি সিরিয়াস ম্যাটার। দেরি করা ঠিক হবে না।’’
ত্রিপাঠী চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে বললেন, ‘‘আমি যোগাযোগ করছি স্যর। মুম্বই থেকে ঘটনার একটা রিপোর্ট চেয়েছে। আমি প্রাইমারি একটা লিখে আপনার মেলে পাঠিয়ে দিচ্ছি। দেখে নিন।’’
ঘর ফাঁকা হলে চেয়ারে হেলান দিলেন কমলেশ রায়। কয়েকটা দিনের মধ্যে অনেকগুলো ঘটনা পর পর ঘটে গেল। সৌহার্দ্যর সঙ্গে যোগাযোগ, এত বছর পরে কোথা থেকে যেন ভেসে এল শ্রীকণা, আহির বিয়ের জটিলতা, অফিসের সমস্যা। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে নবনীর সঙ্গে দূরত্ব। জীবনের এটাই নিয়ম। যখন ঘটনা ঘটতে থাকে তারা আসে পর পর, ঢেউয়ের মতো। খুব দ্রুত ঘটতে থাকে।
শ্রীকণার সঙ্গে সম্পর্কের শেষটুকুও খুব দ্রুত ঘটেছিল। ঘটেছিল, না কি তিনি ঘটাতে বাধ্য হয়েছিলেন?
কমলেশ ইন্টারকমে আর এক কাপ চা চাইলেন। অফিসে সত্যি যদি সাবোটাজ হয়ে থাকে সেটা তাঁর জন্য মোটেও ভাল নয়। কেরিয়ারে একটা খুঁত থেকে যাবে। আর ক’টা দিনই বা কাজ করবেন? হেড অফিস থেকে যতই বলুক, তিনি এ বার এক্সটেনশন নেবেন না। একটাই চিন্তা, বাড়িতে সারা দিন থাকা যাবে না। একটা ইনভল্ভমেন্ট খুঁজে নিতে হবে।
শ্রীকণার সঙ্গে আলাপ কলেজে। থার্ড ইয়ার তখন। ফার্স্ট ইয়ার আসার পর প্রতি বছরের মতো সে বারও হইহই করে ‘ফ্রেশার্স ওয়েলকাম’ হল। পড়াশোনায় মনোযোগী ছাত্র কমলেশ এই সবের মধ্যে থাকতেন না। ফাংশনের সময় পিছনে বসে খানিকটা সময় কাটিয়ে পালিয়ে যেতেন। সে বারও তাই প্ল্যান ছিল। এই ফাংশনের একটা মজা ছিল, ফার্স্ট ইয়ারের নতুন ছেলেমেয়েদের জোর করে স্টেজে তুলে দেওয়া। তারা গান, আবৃত্তি, নাচ করবে। না পারলে দুটো কথা বলবে। তাও যদি না চায় শুধু হাত নাড়লেও চলবে। কিন্তু স্টেজে এক বার উঠতেই হবে। সে দিনও এই সব হচ্ছিল। কমলেশ উঠব উঠব করছেন, এমন সময় জড়োসড়ো ভাবে একটি মেয়ে স্টেজে এল। বাকিদের মতোই শাড়ি, আর চুলের বেণীতে ফুলের মালা জড়ানো। এই ধরনের ফাংশনে অল্পবয়সি মেয়েরাও ‘বাঙালি’ সাজতে খেপে ওঠে। কমলেশ ওঠার আগে মেয়েটির দিকে তাকান। শরীর ঝনঝন করে ওঠে। মেয়েটি যে খুব রূপসি এমন নয়, কিন্তু দুটো চোখে এ কী মায়া! এমন চোখ কমলেশ আগে দেখেননি। মেয়েটি মাথা নিচু করে গান শুরু করল, দিবস রজনী আমি যেন কার আশায় আশায় থাকি/ তাই চমকিত মন, চকিত শ্রবণ, তৃষিত আকুল আঁখি...
উদ্দাম হুল্লোড় নিমেষের জন্য যেন থমকে গেল। কমলেশ গানবাজনা বোঝেন না। মেয়েটি ভাল গাইছে না মন্দ, কোনও ধারণাও তার নেই। কিন্তু এটুকু বুঝলেন, লাজুক, সাধারণ এই মেয়েটিকে পাশে না পেলে তাঁর জীবনটাই অর্থহীন, শূন্য হয়ে যাবে। এই মায়াভরা চোখের দিকের তাকিয়ে তাঁকে সারা জীবন পথ চলতে হবে।
যারা প্রেমের পাশ দিয়ে কখনও যায় না এবং পণ করে থাকে, ‘আর যাই করি, প্রেমে পড়ে সময় নষ্ট করব না’, তারা হঠাৎ প্রেমে পড়লে বিরাট সমস্যা। একটা ঘোর তৈরি হয়। যুক্তি, বু্দ্ধি সব লোপ পায়। কমলেশ রায়ের তা-ই হল। মেয়ে হিসেবে শ্রীকণা সত্যি সাধারণ। মধ্যবিত্ত পরিবার, সংসার চলে টেনেটুনে। শ্রীকণার বাবা দুই ছেলেমেয়েকে কষ্ট করে লেখাপড়া শেখাতেন। কোনও উচ্চাশা ছিল না। ছেলে চালিয়ে নেওয়ার মতো একটা চাকরি পাবে, মেয়ের মোটামুটি একটা ঘরে বিয়ে হবে। বুদ্ধিদীপ্ত, লেখাপড়ায় চৌখস, স্বভাব–চরিত্রে ভাল, সুদর্শন একটি তরুণ তার প্রেমে পড়েছে জেনে শ্রীকণা প্রথমটায় যত না অবাক হয়েছিলেন, তার থেকে বেশি ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। সেই পর্যায় কেটে যাওয়ার পর তিনিও কমলেশকে আকুল হয়ে ভালবাসতে শুরু করলেন।
শ্রীকণার বাড়িতে জানাজানি হল। খুব ঢাকঢোল পিটিয়ে নয়, কিন্তু বাবা–মা, এমনকি কাছের কয়েক জন আত্মীয়ও জেনে গেল— এই সাধারণ বাড়ি এক অসাধারণ ছেলেকে পেতে চলেছে। শ্রীকণার বাবা গদগদ হয়ে পড়লেন। মা মাঝে মাঝেই নাকি আনন্দে চোখের জল মুছতেন। মেয়েকে সকাল-বিকেল বিরক্ত করতেন।
‘‘কী রে! আর কত দিন?’’
শ্রীকণা বলতেন, ‘‘উফ মা, সে কি চার্টার্ড পড়া ছেড়ে বিয়ের পিঁড়িতে লাফ দিয়ে এসে বসবে?’’
‘‘তা না। তবে দু’বাড়ির মধ্যে তো একটা পাকা কথা হওয়া দরকার।’’
শ্রীকণা বলেতেন, ‘‘না, ওরা ঠিক আমাদের মতো ছাপোষা মানুষ নয়। সময় হলে সব করবে। ও তো বাড়িতে বলে রেখেছে।’’
শ্রীকণার বাবাও মেয়ের কথা সমর্থন করতেন। স্ত্রীকে বলতেন, ‘‘ছেলেটাকে লেখাপড়া করতে দাও তো!’’
কমলেশ এ সব শ্রীকণার মুখে শুনেছিলেন। মুখে হাসলেও মনে মনে হালকা চিন্তিত হতেন। তত দিনে নিজের উজ্জ্বল কেরিয়ার দেখতে পাচ্ছেন কমলেশ। বুঝতে পারছিলেন, তার জন্য একটা ঝকঝকে জীবন অপেক্ষা করে আছে। তবে শ্রীকণাকে ভালবাসায় কোনও খামতি দেখাননি। শ্রীকণাও উজাড় করে দিয়েছিলেন। যাবতীয় মধ্যবিত্ত ট্যাবু সরিয়ে রেখে কমলেশের শরীরের ভালবাসাও গ্রহণ করেছেন তিনি। সেই মিলনের আগাম কোনও পরিকল্পনা ছিল না। একেবারে হঠাৎই হয়েছিল।
ক্রমশ