ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৪
Novel

চুয়ান্ন

সে বার দুর্গাপুজোও শুরু হয়েছিল অক্টোবরের শেষের দিকে। আর একটা ব্যাপার বেশ জোরালো ছিল সে বছর।

Advertisement

স্মরণজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:০১
Share:

ছবি: অমিতাভ চন্দ্র

পূর্বানুবৃত্তি: দীপ্যদার বাড়ি যেতে যেতে সাবু ভাবছিল পুঁটি আর এনার কথা। পুঁটি দেড় বছর এনার পিছনে ঘোরার পর সে সম্পর্কে রাজি হয়েছিল। আর রাজি হতে যথেষ্ট নাজেহালও করেছে পুঁটিকে। সাবুর কোনও সাবধানবাণী কানে না নিয়ে, অন্য মেয়ের দুঃখে সাবুর কাছেই চোখের জল ফেলত পুঁটি। ভাবতে ভাবতেই সাবু পৌঁছে যায় সল্টলেক। বাগান ঘেরা দুধসাদা রঙের চারতলা বাড়ি দীপ্যদাদের। চার দিকে প্রাচুর্যের চিহ্ন দেখে সাবুর মনে পড়ে যায় উপোসি পথশিশুদের মুখ।

Advertisement

হলোকস্ট নিয়ে এলি উইজিল-এর লেখায় পড়েছিলাম, ‘ব্রেড, স্যুপ— দিজ় ওয়্যার মাই হোল লাইফ। আই ওয়জ় আ বডি। পারহ্যাপ্স লেস দ্যান দ্যাট ইভন: আ স্টার্ভড স্টম্যাক। দ্য স্টম্যাক অ্যালোন ওয়জ় অ্যাওয়্যার অব দ্য প্যাসেজ অব টাইম।’

Advertisement

ওই সব ছায়া-ছায়া ক্ষুধার্ত মানুষ আর ছোট ছোট বাচ্চাদের দেখলে আমার এই লেখাটার কথা মনে পড়ে।

সেখানে দীপ্যদার বাড়িটা কেমন যেন অন্য পৃথিবীতে! আমি দেখেছি ব্রেকফাস্টে দীপ্যদাদের যত রকম খাবার থাকে তার সব ক’টার নামও আমি জানি না। আর ওরা খাবার নষ্টও করে দেদার। আমার এত কষ্ট হয়!

‘‘কী, আজ তোমার সময় হল?’’ আমি ঘরে ঢোকামাত্র দীপ্যদা প্রশ্নটা করল। গলায় বেশ অভিমান।

আমি বুঝলাম এখন যদি কাজের ব্যস্ততার

কথা বলি, তা হলে সেটা নিয়ে পনেরো মিনিট আক্রমণ চলবে।

আমি গিয়ে দীপ্যদার পাশেই বসলাম। ঘরে হাল্কা এসি চলছে। দীপ্যদার না শরীর খারাপ!

‘‘কী গো, এসিতে বসে আছ কেন?’’

দীপ্যদা বলল, ‘‘গরম লাগছে। আসলে রাতে সামান্য জ্বর ছিল। সকালেও। কিন্তু এখন নেই। উল্টে গরম লাগছে। তাই আর কী!’’

আমি দীপ্যদার কপালে হাত দিলাম। না, জ্বর নেই। তবে একদম যে ঠান্ডা, তাও নয়।

দীপ্যদা চোখ বন্ধ করে নিল কপালে হাত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। তার পর বলল, ‘‘কত দিন পরে কেউ আমার কপালে হাত দিল!’’

আমি বললাম, ‘‘তুমি আমায় ডেকেছিলে কেন গো?’’

দীপ্যদা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বলল, ‘‘আর কী বলি বলো। আমার সময়টা এমন যাচ্ছে!’’

‘‘কী হয়েছে? দিদি কিছু বলেছে?’’ আমি জিজ্ঞেস করলাম।

‘‘দিদি! মলি!’’ মাথা নেড়ে হাসল দীপ্যদা, ‘‘উইন্ড অব চেঞ্জ! ওর আর আমার জন্য সময়

নেই। বুঝলে!’’

‘‘মানে?’’ আমি অবাক হলাম।

‘‘লাস্ট সেভেন ডেজ় নো কানেকশন। কিছু না। মে বি উই আর ড্রিফটিং আপার্ট...’’

‘‘ধ্যাত, কী বলছ!’’ আমি ভুরু কুঁচকে তাকালাম।

দীপ্যদা বলল, ‘‘মৃত সম্পর্ক বয়ে বেড়াবার কারণ নেই।’’

আমি দেখলাম দীপ্যদার মুখ লাল। মানে সিরিয়াস ব্যাপার! এই রে, দুজনে ব্রেক আপ করে নিল না কি? আজকাল তো প্রেম জিনিসটা মেড ইন চায়না হয়ে গিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়।

‘‘দীপ্যদা, কী হয়েছে? দিদি কি তোমার সঙ্গে ব্রেক আপ করেছে না কি?’’

‘‘জানি না, কিছু জানি না,’’ দীপ্যদা মাথা নাড়ল, ‘‘আমি শুধু জানি, আমার মনে হচ্ছে আমাদের ঠিক ম্যাচ হচ্ছে না। সেই কানেকশনটা নেই।’’

আমি কী বলব বুঝতে পারলাম না।

দীপ্যদা বলল, ‘‘আমি ফিল করছি বেশ কিছু দিন ধরে। আমি যেমন মেয়ে চাই, মলি তেমন নয়।’’

আমি হাঁ হয়ে গেলাম। এ সব কী শুনছি! জিজ্ঞেস করলাম, ‘‘কেমন মেয়ে পছন্দ তোমার?’’

দীপ্যদা থেমে গেল সামান্য। মাথা নিচু করে নিল কয়েক মুহূর্তের জন্য। তার পর আচমকা আমার দিকে ঝুঁকে আমায় নিজের দিকে টেনে নিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট রাখল।

গরম ভেজা ঠোঁট! সিগারেটের গন্ধ! আরও কেমন একটা পুরনো পেতলের গন্ধ যেন! গা গুলিয়ে উঠল আমার।

দীপ্যদা এ বার ঠোঁট সরিয়ে নিয়ে চোখে চোখ রাখল আমার। বলল, ‘‘এমন মেয়ে! বুঝলে?’’

পুঁটি (দিন : সাতাশ)

এ বার একটা ফ্ল্যাশব্যাক দেব। অনেক ক্ষণ প্রেজ়েন্টের গল্প হয়েছে। অনেক ক্ষণ এনাকে নিয়ে ঘ্যানঘ্যান করেছি। এ বার আপনাদের একটা ব্রেক দেব। আমার স্কুল লাইফের একটা ছোট্ট ঘটনা বলব আপনাদের। তার পর আবার ফিরে এসে এনাকে নিয়ে ঘ্যানঘ্যান করব।

আসলে আজ অফিসে আমার তেমন কাজ নেই। গত দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। অর্ধেক কলকাতা জলের তলায়। লেক মার্কেট দেখে মনে হচ্ছে আর একটু হলেই আটলান্টিক হয়ে যাবে। নর্থ কলকাতাতেও শুনেছি যা-তা অবস্থা। লোকে এখন নর্থ পেরিয়ে সাউথে আসাটাকে প্রায় ইংলিশ চ্যানেল পেরনোর মতো ভাবছে। আমাদের অফিসে সব মিলিয়ে বত্রিশ জন স্টাফ। তাদের মধ্যে আজ মাত্র ন’জন এসেছে। স্বাভাবিক। এই আবহাওয়াতেও যে এই ক’জন এসেছে এটাই অনেক।

গত পরশু যখন বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তার ঠিক আগে আগে রিজু গিয়ে বাগালের অফিসে সব পেপার জমা করে দিয়ে এসেছে। হ্যাঁ, ইমেলে সফট কপি গিয়েছে, কিন্তু তাও টেকনিক্যাল অফারের হার্ড কপি, লে-আউট, টোপোগ্রাফি ড্রয়িং-সহ, থ্রিডি ইমেজিংয়ের ড্রয়িং সব জমা করা হয়ে গিয়েছে। এখন ওরা টেকনিক্যাল ইভ্যালুয়েশন করবে। তার পর সেই নিয়ে ওদের কমেন্ট দেবে। সেই হিসেবে আবার রিভাইস্ড অফার দিতে হবে। সে সব মিটে গেলে আসবে প্রাইস।

আসলে এর মধ্যে একটা ঝামেলা হয়ে গিয়েছে।

সেই যে ভিলেনের কথা বলেছিলাম, চন্দন সিং, তাকে বাগালে প্রায় ঘাড় ধরে অফিস থেকে বের করে দিলেও, সে ব্যাটা অন্য একটা সোর্স লাগিয়ে এই কাজের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। আসলে বাগালের সম-পদে এক জনকে এনে বসিয়েছে ওদের কোম্পানি। কারণ এতগুলো প্রজেক্ট একা কারও পক্ষে হ্যান্ডল করা যে মুশকিল, সেটা কোম্পানি বুঝতে পেরেছে। এই নতুন লোক, মানে মিস্টার লালকে চন্দন সিং হাত করেছে।

লাল লোকটা খারাপ নয়। কিন্তু সে চন্দন সিংয়ের আসল চেহারাটা জানে না। সে ম্যানেজমেন্টকে এই বলে কনভিন্স করিয়েছে যে, কম্পিটিশন থাকলে প্রাইসের দিক থেকে কোম্পানি লাভবান হবে।

লাভবান না ছাই। বাইরের একটা ফার্মকে ঢুকিয়েছে লাল। আমরা তো জানি আন্ডারকোট করে কাজ নেয় চন্দন সিং। তার পর যে কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দিল, তার থেকে পাঁচ থেকে সাড়ে সাত পার্সেন্ট দালালি নিয়ে কেটে পড়ে। তখন সেই কোম্পানি পড়ে ফাঁপরে। তারা না পারে ওই কম টাকায় কাজ শেষ করতে, না পারে চলে যেতে। ফলে জগাখিচুড়ির মধ্যে আসল প্রজেক্টটাই ঝুলে যায়।

প্রত্যন্ত গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি হবে বেশ কয়েকটা। তার মধ্যে থেকে দুটো প্রজেক্ট আমাদের দেওয়ার কথা। বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায় কাজ হচ্ছে। ফলে কোনও মতেই প্রজেক্ট স্টল করা যাবে না। কিন্তু চন্দন সিং ঢুকলে সেখানে কিছু একটা গোলমাল হবেই।

আমি বাগালে-কে বলেছি এ সব। বাগালেও বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু মিস্টার লাল বুঝেও যেন বুঝতে পারছেন না! বলছেন, ঠিক দেখে নেবেন।

জেঠু আর ছোটকা এই নিয়ে চিন্তিত হয়ে আছে। এত বড় কাজ। ওই চন্দনের জন্য যদি ঘেঁটে যায় খুব বাজে হবে।

কিন্তু বাবাকে এখনও এ সব বলা হয়নি। বাবা চার দিন হল বাড়িতে এসেছে। এখনও সপ্তাহ দুয়েক রেস্ট নিতে হবে। তার পর আবার সব টেস্ট হবে। সেই টেস্ট ঠিক থাকলে বাবা কাজে যোগ দেওয়ার ছাড়পত্র পাবে। আপাতত বাবার কমপ্লিট বেড রেস্ট দরকার।

তাও বাবা সবাইকে অফিসের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। আমরা কেউ কিছু বলি না। এর আগেও চন্দন সিংয়ের পাল্লায় পড়ে আমাদের অনেক টাকা লস হয়েছে। বাবা আবার ওই জন্তুটার এই কাজে ঢুকে পড়ার কথা কথা জানলে টেনশন শুরু করবে।

অফিসে এই সবই বসে ভাবছিলাম। তার পর কী মনে করে ড্রয়ার থেকে বার করেছিলাম একটা পুরনো ডায়েরি। আগে আমি ছোটখাটো কার্টুন আঁকতাম। এমনি বসে না থেকে তাই বার করেছিলাম ডায়েরিটা। আর তার ভিতর থেকেই বেরিয়ে এসেছিল দুটো পুরনো ছবি। ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা, ম্যাট পেপারে প্রিন্ট করা। আমার স্কুল লাইফের।

ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা ছবির নীচের ডেটটাও দেখা যাচ্ছে। কুড়ি ডিসেম্বর, দু’হাজার বারো। আমাদের ক্লাস ইলেভেনে ওঠার পর বিদিশার বাড়িতে তোলা পার্টির ছবি।

ছবিটা হাতে পাওয়ার পরেই কেমন যেন একটা লাগল। মনে হল, ফোর্থ ওয়াল ব্রেক করে আপনাদের যখন সবটাই বলছি, তখন এটাই বা বাদ যাবে কেন? আমি জানি না এই ঘটনাটা আদৌ আমাদের গল্পে রেলেভেন্ট কি না। তাও শুনে নিন।

দু’হাজার বারো সালটা আমার কাছে বেশ অন্য রকম ছিল। সে বছর আমরা মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হয়েছিলাম ক্লাস ইলেভেনে। বয়েজ় স্কুল থেকে একেবারে নামী একটা কো-এডুকেশন স্কুলে। আমরা যারা বয়েজ় স্কুল-লাঞ্ছিত জীবন কাটিয়েছি, তারা জানি এই পরিবর্তনটি চাঁদে প্রথম বার পা দেওয়ার চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়!

তা ছাড়াও সে বছর ছিল লন্ডন অলিম্পিক্স। যাতে আমাদের দেশ বেশ ভালই ফল করেছিল। পঁচিশ মিটার র‌্যাপিড ফায়ার পিস্তলে বিজয় কুমার আর ছেষট্টি কেজি ফ্রি-স্টাইল কুস্তিতে সুশীল কুমার রুপো জিতেছিলেন। এ ছাড়াও গগন নারঙ্গ, সাইনা নেহওয়াল, মেরি কম ও যোগেশ্বর নিজেদের নিজেদের বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। সে এক অসাধারণ কৃতিত্ব!

সে বার দুর্গাপুজোও শুরু হয়েছিল অক্টোবরের শেষের দিকে। আর একটা ব্যাপার বেশ জোরালো ছিল সে বছর। একটা ধুয়ো উঠেছিল এই বলে যে, একুশ ডিসেম্বর নাকি পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে! হ্যাঁ, মায়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নাকি সে রকমই বলা ছিল! তাই আমরা যারা ক্লাস ইলেভেন ছিলাম সে সময়, তারা ঠিক করেছিলাম, বলা তো যায় না, সত্যি হয়তো পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেল, ফলে তার আগের দিন আমরা পার্টি করব।

বিদিশাদের বাড়ি ছিল আলিপুরে। বিশাল বড়লোক ছিল ওরা। অনেক উঁচু পাঁচিল ঘেরা বাড়ি ছিল ওদের। সে দিন বিদিশার মা-বাবা বা দাদারা কেউ ছিল না। শুধু কাজের লোকজন ছিল। তাই আমরা ঠিক করেছিলাম বিদিশাদের ওখানেই মোচ্ছবটা করব।

ফ্ল্যাশব্যাক ২০১২

আমরা যে বাড়িতে থাকি সেটা বেশ বড়। চারতলা। কিন্তু বিদিশাদের বাড়ির কাছে সেটা কিছু নয়।

বিদিশাদের বাড়িটা যেন কেল্লা। গেট দিয়ে ঢুকেই আমি ভাবলাম এখানে ম্যাপ হাতে না থাকলে হারিয়ে যাব শিয়োর।

কলকাতার ভিতর যে এমন বিরাট বড় বাড়ি থাকতে পারে, সেটা নিজে চোখে না দেখলে আমি বিশ্বাস করতে পারতাম না।

আমি রিজুকে বললাম, ‘‘এ কোথায় এলাম রে! বিদিশাকে দেখলে তো বোঝা যায় না এমন বাড়ির মেয়ে! ও তো এমনি বাসে করে, মেট্রো করে স্কুলে আসে। আর সব মেয়েদের সঙ্গে গড়িয়াহাট থেকে ট্র্যাঙ্গুলার পার্ক অবধি উইন্ডো শপিং করে!

তা হলে?’’

রিজু আমার কথায় খুব একটা গুরুত্ব না দিয়ে বলল, ‘‘তুই পানু দেখিস?’’

‘‘আরে!’’ আমি থমকে গেলাম। রিজুর কোনও কাণ্ডজ্ঞান নেই! ও জানে এ সব নিয়ে আমি সবার সঙ্গে কথা বলতে পছন্দ করি না, তাও

জিজ্ঞেস করবে।

রিজু বলল, ‘‘শোনো কাকা, ও সব সবাই দেখে। ফালতু ন্যাকা সেজে লাভ নেই।’’

‘‘তোর পয়েন্টটা কী?’’ আমি বিরক্ত হলাম।

‘‘পয়েন্ট হল, টাকা থাক আর না থাক, সব মেয়েরাই উইন্ডো শপিং করতে ভালবাসে। বুঝলি? জুলিয়া রবার্টস থেকে জয়ার মা, সবাই এক। আমাদের কাছে পানু দেখা আর মেয়েদের দোকানে দোকানে ঘুরে কাচের আড়ালে সাজানো জিনিস দেখার উত্তেজনা এক।’’

আমি কিছু বললাম না। বলার কিছু নেই। রিজু শিয়োর পৃথিবীর মানুষ নয়। অন্য কোনও গ্রহ থেকে ওকে তাড়িয়ে দেওয়ায় এখানে এসে রয়েছে। ওখানে কে ওর এত হাবিজাবি কথা সহ্য করবে!

এক বার বলেছিল, ‘‘জানিস, আমি না সে দিন কৃষ্ণনগর যাওয়ার পথে কালীনারায়ণপুর জং-এ নেমে পড়েছিলাম!’’

আমি বলেছিলাম, ‘‘ওখান থেকে শান্তিপুরের লাইন যায়, না? জংশন তো ওটা!’’

‘‘জংশন নয়, জং,’’ রিজু গম্ভীরভাবে বলেছিল।

‘‘মানে? দুটোই তো এক!’’ আমি ভুরু কুঁচকে তাকিয়েছিলাম রিজুর দিকে।

রিজু তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলেছিল, ‘‘কিছুই জানিস না, এ দিকে মাধ্যমিকে নাইন্টি পারসেন্ট নাম্বার পেয়েছিস! আরে, ছোট জংশনকে জং বলে, বুঝলি! বড় হলে জংশন!’’

একে আমি আর কী বলব! তাই মেয়েদের উইন্ডো শপিংয়ের থিয়োরি মেনে নিয়ে আমি বাড়ির ভিতরে ঢুকেছিলাম।

ক্লাসের বিয়াল্লিশ জন স্টুডেন্টই উপস্থিত আজ। কিন্তু সত্যি বলতে কী, আমার চোখ ছিল এক জনের দিকেই। সর্বোত্তমা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement