দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় ফিল্ডারের ‘লাথি’ খেয়েছেন পাক সঞ্চালিকা জাইনাব আব্বাস। বাউন্ডারির পাশে দাঁড়িয়ে ধারাভাষ্য দিতে দিতে পড়ে গিয়েছেন হুড়মুড়িয়ে।
নজিরবিহীন এই ঘটনার ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। ভিডিয়ো আকারে তা ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি। যদিও ভাইরাল ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি লিগে সানরাইজার্স ইস্টার্ন কেপের বিরুদ্ধে এমআই কেপটাউনের ম্যাচ চলছিল। মাঠেই বাউন্ডারির পাশে দাঁড়িয়ে ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন জাইনাব।
ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, সানরাইজার্সের ইনিংসের ১৩তম ওভারের শেষ বলে স্যাম কারেনকে মিড উইকেটে তুলে মারেন মার্কো জানসেন। বাউন্ডারির দিকে যেখানে বল যাচ্ছিল, সে দিকেই জাইনাব দাঁড়িয়েছিলেন।
বাউন্ডারি বাঁচাতে দু’দিক থেকে দু’জন ফিল্ডার ছুটে আসেন। দু’জনেই বল লক্ষ্য করে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তবে চার আটকানো যায়নি। উল্টে টাল সামলাতে না পেরে জাইনাবের গায়ে সজোরে ধাক্কা মারেন এক ফিল্ডার।
ফিল্ডারের পা সোজা গিয়ে লাগে জাইনাবের পায়ে। তিনি উল্টো দিকে চিত হয়ে পড়ে যান। তবে বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ধুলো ঝাড়তে ঝাড়তে উঠে পড়েন পাক সঞ্চালিকা। দেখা গিয়েছে, ফিল্ডারের দিকে তাকিয়ে তাঁর চওড়া হাসিও।
পাক সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ নাম জাইনাব। তিনি দেশের প্রথম সারির ক্রীড়া সাংবাদিক। দেশ-বিদেশে নানা খেলায় ধারাভাষ্যকার হিসাবে দেখা যায় জাইনাবকে।
জাইনাবের বাবা নাসির আব্বাস পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন দীর্ঘ দিন। তাঁর মা আন্দলীব আব্বাস রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ইমরান খানের পাকিস্তান তারিখ-ই-ইনসাফ দলের নেত্রী তিনি। সাংসদ হিসাবেও নির্বাচিত হন।
২০১৯ সালে হামজা কর্দারের সঙ্গে বিয়ে হয় জাইনাবের। তাঁর শ্বশুর পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রথম অধিনায়ক আব্দুল হাফিজ় কর্দারের পুত্র। ক্রিকেটের আবহেও বড় হয়ে উঠেছেন জাইনাব। বিয়েও করেছেন ক্রিকেটঘেঁষা পরিবারে।
পাকিস্তানের এই দাপুটে টেলিভিশন সঞ্চালিকার কেরিয়ারের সূচনা কিন্তু মেকআপ শিল্পী হিসাবে। ২০১৫ সালে দেশের একটি ক্রীড়া বিষয়ক টিভি চ্যানেলে অতিথি সঞ্চালক হিসাবে যান জাইনাব। সেখান থেকেই তাঁর কেরিয়ারের মোড় ঘুরে যায়।
এর পর ওই চ্যানেলটির স্থায়ী সঞ্চালিকা হিসাবে কাজ শুরু করেন জাইনাব। টেন স্পোর্টস, সোনি এবং স্টার স্পোর্টসের মতো চ্যানেলেও কাজ করেছেন। একাধিক পাক তারকা ক্রিকেটারের সাক্ষাৎকার নিয়ে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন তিনি।
২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রথম মহিলা সাংবাদিক এবং ধারাভাষ্যকার হিসাবে দেখা যায় জাইনাবকে।
সম্প্রতি টি২০ বিশ্বকাপে অপ্রস্তুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন জাইনাব। পাকিস্তানের কোচ তাঁকে ‘অপমান’ করেছিলেন বলে মত অনেকের।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পাকিস্তান নিউ জ়িল্যান্ডকে হারানোর পর পাক বোলিং কোচ শন টেটের সঙ্গে মাঠেই কথা বলতে গিয়েছিলেন জাইনাব।
দেখা যায়, সিডনির মাঠে টেটকে বার বার পিছন দিক থেকে ডাকছেন জাইনাব। কিন্তু তাঁর দিকে ফিরেই তাকাচ্ছেন না অস্ট্রেলিয়ান।
জাইনাব অবশ্য এই উপেক্ষা হজম করে নেন সহজাত দক্ষতায়। তিনি অপ্রস্তুত না হয়ে নিজের কাজ করে গিয়েছিলেন। মাঠের পরিস্থিতি বর্ণনা করেছিলেন ক্যামেরার সামনে। তবে টেটের সঙ্গে তাঁর এই সাক্ষাতের ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
৩৪ বছর বয়সি লাস্যময়ী এই পাক সঞ্চালিকা কর্মক্ষেত্রে একাধিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। ২০১৯ সালে তিনি ‘স্পোর্টস টিভি হোস্ট অফ দ্য ইয়ার’ বা বছরের সেরা সঞ্চালিকার পুরস্কার পান।