সোমবার মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটার কিনে নিলেন আমেরিকার ধনকুবের ইলন মাস্ক। ৪,৪০০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩,৩৬,৯৪১ কোটি ২২ লাখ টাকা)-এর বিনিময়ে এই মাইক্রোব্লগিং সাইটের মালিকানা পেলেন তিনি। শেয়ার কেনার জন্য পুরো টাকাটাই মাস্ক নগদে দিচ্ছেন বলেও জানা গিয়েছে। এটা অজানা নয় যে এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি তিনি। কিন্তু জানেন কি তাঁর নিজের কোনও বাড়ি নেই? তাঁর রাত্রিযাপন বন্ধুদের বাড়িতে ঘুরে ঘুরে। সেই ইলন মাস্ক স্বীকার করেছেন, তাঁর একটি ব্যক্তিগত বিমান (প্রাইভেট জেট) আছে।
বিলাসবহুল সেই জেটের দাম ৬ কোটি ৬৫ লক্ষ ডলার (৫১০কোটি টাকার বেশি)। ২০১৬ সালে টেসলার সিইও সেই প্রাইভেট জেটটি কেনেন।
গাল্ফস্ট্রিম জি ৬৫০ ইআর এই প্রাইভেট জেটটি ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো এবং আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের খুব প্রিয়।
ইলনের শখ আকাশে ঘুরে বেড়ানো। শুধু ২০১৮ সালে তিনি আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়া জুড়ে ২৫০টিরও বেশি দেশে বিমান সফর করেছেন। এর জন্য খরচ করেছেন প্রায় সাত লক্ষ ডলার।
ইলনের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যায়, সেই জেট বিমানটি বর্তমানে কোথায় রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আস্টিনে টেসলার সদর দফতরে বিমনাটি অবতরণ করে।
একটি পত্রিকা এই সপ্তাহের শুরুর দিকে ৫০ জন ধনী ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করে, যাঁদের নিজেদের কোনও বাড়ি নেই। সেই তালিকায় ইলনও আছেন।
নিজেও জানিয়েছেন, থাকার প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে বন্ধুর বাড়ি খুঁজে নেন। তাঁদের বাড়ির অতিরিক্ত বেডরুমে রাত্রি কাটান।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি নিজের জন্য বাসস্থানের জন্য বিশাল অর্থ ব্যয় করেননি। তবে স্বীকার করে নেন যে তার একটি ব্যক্তিগত জেট বিমান রয়েছে।
ব্যক্তিগত জেট বিমান নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ইলন বলেন, ‘‘একমাত্র ব্যতিক্রম ওই বিমানটি। বিমানটি যদি আমি না ব্যবহার করি, তবে আমার কাজের সময় কমে যাবে।’’
একটি পত্রিকা জানিয়েছে, মাস্কের ৯৯ ফুট লম্বা বিলাসবহুল জেটটি একটি বাড়ির মতো। একাধিক বড়-স্ক্রিন টেলিভিশন রয়েছে ওই জেট বিমানে। এ ছাড়া তাজা বাতাস সঞ্চালন এবং জিনিসপত্র রাখার জন্য ১৯৫ বর্গফুট জায়গা করা রয়েছে।
জেট বিমানটিতে একটি প্রশস্ত গবেষণাগার রয়েছে। এ ছাড়া চারটি বড় বসার জায়গা রয়েছে, যেখানে ক্রিম রঙের চামড়ার আসন এবং কাঠের আসবাবপত্র রয়েছে।
বিমানটির মধ্যে একটি ভিআইপি কেবিন রয়েছে। যেখানে রয়েছে গোপন বৈঠক করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। এখানেও একটি টেলিভিশন স্ক্রিন রয়েছে।
কেবিনগুলিতে মোট ১৯টি বসার জায়গা রয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলিকে বিছানায় রূপান্তরিত করা যায়। বিমানের মধ্যে ভাঁজ করা টেবিলগুলি একত্রিত করে দিলে বড় ডাইনিং টেবিল হয়ে যায়, যেখানে বিমানে থাকা অতিথিরা বসে খেতে পারেন।
গত বছরেও টেক্সাসে যে বাড়িটি কয়েক দিন থাকার জন্য নিয়েছিলেন, তার ভাড়া দিয়েছিলেন ৫০ হাজার ডলার।
তবে একটি পত্রিকার দাবি, তিনি আসলে পেপ্যালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা কেন হাওয়ারির মালিকানাধীন অস্টিনের একটি বিলাসবহুল বাড়িতে থাকতেন।
বাড়িটি ৮ হাজার বর্গফুট এবং দাম এক কোটি ২০ লক্ষ ডলার। ২০১৮ সালে শহরের সব চেয়ে ব্যয়বহুল জায়গায় কেনা হয়।
যদিও ২০২০ সালে মাস্ক টুইটে লেখেন, ‘আমি সব স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করেছি। আমি কোনও বাড়ির মালিক হব না।’
সে বছরই মে মাসে তিনি পাঁচটি বাড়ি বিক্রি করেন। তাঁর লস অ্যাঞ্জেলেসের চারটি বাড়ি আমেরিকার সব চেয়ে দামি সম্পত্তির তালিকায় ওঠে।