শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। ফুটবল জ্বরে কাঁপছে গোটা দুনিয়া। কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন ঘিরে সাজ সাজ রব। ফুটবলারদের উৎসাহ জোগাতে কাতার পাড়ি দেবেন তাঁদের স্ত্রী, প্রেমিকারাও। ব্যতিক্রম নন ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের সঙ্গিনীরাও। তবে তাঁদের জন্য থাকছে এলাহি ব্যবস্থা।
২০ নভেম্বর কাতারে শুরু হবে বিশ্বকাপ ফুটবল। সেখানে যাবেন ইংলিশ ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকারাও। তবে সঙ্গিনীদের সঙ্গে এক ছাদের তলায় থাকতে পারবেন না ফুটবলাররা।
কাতারে ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকাদের জন্য থাকছে বিশেষ থাকার ব্যবস্থা। কোনও বিলাসবহুল হোটেল নয়। আস্ত একটা প্রমোদতরীতে থাকবেন তাঁরা।
তবে এ যে সে প্রমোদতরী নয়। এই জাহাজ দেখলে চোখ ধাঁধাবে। বিনোদনের সব রকম রসদ মজুত থাকছে ওই প্রমোদতরীতে। তার নাম ‘এমএসসি ওয়ার্ল্ড ইউরোপা’।
জানা গিয়েছে, ওই প্রমোদতরীটি কোনও একটা জায়গায় নোঙর করা থাকবে। সেখানেই বিশ্বকাপ চলাকালীন রাত কাটাবেন ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকারা।
এই প্রমোদতরীর দাম জানলে চোখ কপালে উঠবে। জানা গিয়েছে, প্রমোদতরীটির দাম প্রায় ৯৩২৬ কোটি টাকা। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভাসমান প্রাসাদ’।
ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকারা যাতে কখনও মনে অনুভব করেন যে তাঁরা প্রমোদতরীতে রয়েছেন, সে জন্য বিলাসবহুল ব্যবস্থায় কোনও খামতি রাখা হয়নি। সেলুন, বুটিক, রেস্তরাঁ, পানশালা থাকছে সেখানে।
কাতারে মদ্যপান করা নিয়ে কড়াকড়ি রয়েছে। তবে ওই প্রমোদতরীতে নিশ্চিন্তে দেদার মদ্যপান করতে পারেন ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকারা।
কেউ কেউ বলেছেন, বিশ্বকাপে যদি ইংলিশ ফুটবলাররা ভাল খেলেন, তা হলে জয়ের উদ্যাপনে গমগম করতে পারে ওই প্রমোদতরী।
তবে শুধু ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকা নন, তাঁদের সন্তান ও পরিবারের অন্য সদস্যরাও প্রমোদতরীতে থাকতে পারবেন। বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্যও একাধিক মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা থাকছে। রয়েছে বাস্কেটবল, বাম্পার কার, রোলার ডিস্কো রিঙ্ক।
প্রমোদতরীতে একটি কেবিনে ডবল বেড ও বাঙ্কের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে চার জন ভাল ভাবে ঘুমোতে পারবেন। ওই কেবিনে ন্যূনতম চার রাত কাটাতে হলে রাতপিছু খরচ পড়বে ৪৫ হাজার ৩২৩ টাকা।
প্রমোদতরীতে আরও বিলাসবহুল কেবিনে থাকতে হলে গুনতে হবে ২৪ হাজার ২৪৭ থেকে ৩৫ হাজার ৯০৪ টাকা। আর যদি স্যুটে কেউ থাকেন, তা হলে প্রতি রাতে খরচ পড়বে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ১৯০ টাকা।
তবে ওই প্রমোদতরীতে যেতে পারবেন না ফুটবলাররা। অর্থাৎ বিশ্বকাপ চলাকালীন স্ত্রী ও প্রেমিকাদের সঙ্গে থাকতে পারবেন না তাঁরা। প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপে ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকাদের নিয়ে বিগত বছরগুলিতে হরেক চর্চা হয়েছে। ফুটবল খেলার থেকেও ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকাদের নিয়েই অনেক ক্ষেত্রে বেশি আলোকপাত করা হয়। আর এ ধরনের ঘটনা এড়াতে নাকি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইংল্যান্ডে ফুটবলাররা থাকবেন দোহার কাছে ‘সুক আল ওয়াকরা’ হোটেলে। সেখানে থাকবেন দলের কোচ, কর্মীরাও। তাঁদের জন্য ওই হোটেলে সব রকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, কাতারে থাকার বন্দোবস্ত খতিয়ে দেখতে নাকি ইতিমধ্যেই সেখানে ঢুঁ মেরেছেন ইংল্যান্ডের ফুটবলার হ্যারি কেনের স্ত্রী কেটি গুডল্যান্ড। ‘বনানা আইল্যান্ড রিসর্টে’ গিয়েছিলেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাতারের রাজধানী দোহায় নোঙর করা থাকবে ওই প্রমোদতরী। ইংল্যান্ডের অধিকাংশ ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকাই সেখানে থাকবেন।
ফুটবলার জ্যাকি গ্রেলিশের সঙ্গী সাশা অ্যাটউড ও গোলরক্ষক অ্যারন রামসডেলের সঙ্গী জর্জিনা আরউইন ওই প্রমোদতরীতে থাকতে পারেন বলে শোনা গিয়েছে।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকাদের জন্য এই বিলাসবহুল প্রমোদতরী এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বিশ্বকাপ শুরু হলে এই প্রমোদতরীতে তাঁরা কে কী করেন, তার অপেক্ষায় রয়েছেন ফুটবলপ্রেমীরা।