প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নোজ়োমি ওকুহারা। ভারতে খেলতে এসে চরম নাজেহাল হলেন তিনি। দিল্লি বিমানবন্দরে নামার পর থেকেই সমস্যায় পড়েন ওকুহারা। মান বাঁচালেন ঘরের মেয়ে পিভি সিন্ধু। ঠিক কী হয়েছিল?
ভারতে খেলতে এসে সমস্যায় পড়েছিলেন নোজ়োমি ওকুহারা। ব্যাডমিন্টনের প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তথা অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়নকে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিল দিল্লি বিমানবন্দরে। হোটেলে যাওয়ার জন্য ট্যাক্সি পেতেও সমস্যা হয়েছিল তাঁর।
এমনকি ৪ ঘণ্টা অপেক্ষার পরে তবেই হোটেলে ঘর পেয়েছিলেন ওকুহারা। শেষ পর্যন্ত ভারতের ব্যাডমিন্টন তারকা পিভি সিন্ধুর সাহায্য নিয়েছিলেন ওকুহারা।
নিজের সেই দুঃস্বপ্নের কথা জানিয়েছেন ওকুহারা। ওড়িশা ওপেন ব্যাডমিন্টন সুপার ১০০ প্রতিযোগিতা খেলতে ভারতে এসেছিলেন তিনি। হংকং থেকে দিল্লি বিমানবন্দরে নামেন জাপানের এই খেলোয়াড়। তার পর থেকেই শুরু হয় সমস্যা।
ওকুহারা বলেন, ‘‘আমি অনুমান করেছিলাম, কিছু সমস্যা হবে। কিন্তু এতখানি সমস্যা হবে, সেটা বুঝতে পারিনি। বিমানবন্দরে ব্যাগ পেতে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এক জন আমার ব্যাগের উপর নিজের ব্যাগ চাপিয়ে দিয়েছিলেন। প্রথমে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তার পরে মুখ খুলি। তা নিয়েও ঝামেলা হয়।’’
দিল্লিতে নেমে সেই রাতটি হোটেলে থাকবেন বলে ঠিক করেছিলেন ওকুহারা। বিমানবন্দর থেকে ১০ মিনিটের দূরত্বে ছিল সেই হোটেল।
কিন্তু হোটেলে যাওয়ার কোনও গাড়ি তিনি পাচ্ছিলেন না। একটি অ্যাপ ক্যাব বুক করলেও সেই গাড়ি আসেনি বলে অভিযোগ তাঁর।
ওকুহারা বলেন, ‘‘সেই সময় অনেক সন্দেহজনক ট্যাক্সিচালক আমার কাছে আসছিল। আমার অস্বস্তি হচ্ছিল। পরে এক জন বলেছিল যে, বিমানবন্দরের বাইরে গেলে ট্যাক্সি পাব। সেটাই করেছিলাম। কিন্তু ১০ মিনিটের রাস্তায় আমার কাছ থেকে ১৮৯০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়, যা আসল ভাড়ার ১০ গুণ। সেটাই দিতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত যে হোটেলে পৌঁছতে পেরেছিলাম, সেটাই অনেক।’’
পরের দিন ওড়িশায় পৌঁছে আরও সমস্যায় পড়েছিলেন ওকুহারা। বিমানবন্দরে কোনও গাড়ি পাঠানো হয়নি। নিজেই গাড়ি ভাড়া করে হোটেলে উপস্থিত হন।
সেখানে গিয়ে শুনেছিলেন, কোনও ঘর খালি নেই। হোটেলের লবিতে ৪ ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। আগে থেকে বলে রাখার পরেও কোনও ব্যবস্থা করেননি উদ্যোক্তারা, এমনটাই অভিযোগ করেছেন ওকুহারা।
তার উপর আবার সেই সময় ভারতীয় ব্যাডমিন্টন সংস্থার অনেকে এসে তাঁর সঙ্গে নিজস্বী তোলার আবদার করছিলেন। মানসিক ভাবে তখন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাই নিজস্বী তুলতে অস্বীকার করেছিলেন ওকুহারা।
কোনও উপায় না দেখে শেষ পর্যন্ত সিন্ধু ও এইচএস প্রণয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ওকুহারা। তাঁরা অন্য একটি হোটেলে ওকুহারার থাকার বন্দোবস্ত করে দেন। পরের দিন সকাল ৮টায় ছিল অনুশীলন।
সকাল ৭টায় তাঁকে হোটেল থেকে বেরোতে হত। কিন্তু সকাল ৯টার আগে হোটেল থেকে কোনও গাড়ি পাওয়া যাবে না বলে জানতে পেরেছিলেন ওকুহারা। সে ক্ষেত্রেও সিন্ধু তাঁর যাওয়ার বন্দোবস্ত করে দেন।
শেষ পর্যন্ত সব সমস্যা মিটলেও যে ভাবে বার বার তাঁকে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছিল, তাতে তিনি শারীরিক ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত বলে জানিয়েছেন ওকুহারা। যদিও এই বিষয়ে ভারতীয় ব্যাডমিন্টন সংস্থা এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।