কনজারভেটিভ পার্টির অন্দরে ভোটাভুটিতে জয়ী হয়েছেন। তার পরেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে বসেছেন লিজ ট্রাস। তিনি ব্রিটেনের তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ইউরোপে এই মুহূর্তে তিনি একা নন। ইউরোপের ৪৫টি দেশের মধ্যে ১৫টি দেশেই প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি পদে রয়েছেন কোনও মহিলা।
মার্গারেট থ্যাচার, টেরেসা মে-র পর লিজ ট্রাস তৃতীয় মহিলা, যিনি ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা হলেন। নিজের দলে প্রতিপক্ষ ঋষি সুনককে হারিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে বসেছেন।
ব্রিটেনের এক কালের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্রান্সেও ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী পদে বসেছেন এক জন মহিলা। নাম এলিজাবেথ বোর্ন। ৩০ বছর পর সে দেশে এই পদে বসেছেন কোনও মহিলা। তার আগে দেশের শ্রমমন্ত্রী ছিলেন ৬১ বছরের এলিজাবেথ।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছে মেট ফ্রেডরিকসন। ২০১৯ সালের জুন থেকে তিনি ওই পদে। মাত্র ৪১ বছর বয়সে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস গড়েছেন সোশাল ডেমোক্র্যাট নেত্রী। এর আগে এত কম বয়সে কেউ দেশের প্রধানমন্ত্রী হননি। মেটের আগে মাত্র এক জন মহিলাই এই পদে ছিলেন।
ইউরোপের আর এক দেশ এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন ৪৫ বছরের কাজা কালাস। ২০২১ সালে এই পদে বসেন। ২০১৮ সাল থেকে শাসক দল রিফর্ম পার্টির নেত্রী কাজা। ২০১৯ সাল থেকে পার্লামেন্টের সদস্য। ইউক্রেন যুদ্ধে সে দেশের পাশে দাঁড়িয়ে নজর কেড়েছেন কাজা। বহু অস্ত্র পাঠিয়ে ইউক্রেনকে সাহায্যও করেছেন।
২০১৯ সাল থেকে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন সান্না মারিন। মাত্র ৩৩ বছরে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন সান্না। সেই থেকেই শিরোনামে। তবে বহু বার বিতর্কেও জড়িয়েছেন। তাঁর উত্তাল পার্টি করার ছবি দেখে আঙুল তুলেছিলেন রক্ষণশীলরা। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০২০ সালে বিয়ে করেন সান্না।
২০২০ সালের ১৩ মার্চ থেকে গ্রিসের প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন ক্যাটরিনা সাকেল্লারোপোলু। ক্যাটরিনাই সে দেশের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট। এই পদে বসার আগে গ্রিসের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালতের প্রধান পদে ছিলেন ৬৬ বছরের এই ইন্ডিপেনডেন্ট নেত্রী।
২০২২ সালে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন কাটালিন নোভাক। মাত্র ৪৪ বছরে সে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন তিনি। তাঁর আগে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট পদে বসেননি কোনও মহিলা। সেদিক থেকেও ইতিহাস গড়েছেন তিনি।
আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্যাটরিন জেকবসডট্টির। ২০১৭ সাল থেকে ওই পদে রয়েছেন তিনি। মাত্র ৪১ বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। এর আগে আইসল্যান্ডের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন তিনি।
কসোভোর প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছে ভিজোসা ওসমানি। ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল ওই পদে বসেছেন ৪০ বছরের ভিজোসা। আলবানিয়ান, ইংরেজি, তুর্কি, সার্বিয়ান, স্প্যানিশ— এতগুলি ভাষা গ়ড়গড়িয়ে বলতে পারেন ভিজোসা।
লিথুনিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদেও রয়েছেন এক মহিলা। নাম ইনগ্রিডা সিমোনাইট। ২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ওই পদে রয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দেশের অর্থমন্ত্রীর পদও সামলেছেন তিনি।
২০২১ সাল থেকে মলডোভার প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছে নাতালিয়া গাভ্রিলিটা। এর আগে দেশের অর্থমন্ত্রী ছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী। ৪৪ বছরের নাতালিয়া দেশের ১৫তম প্রধানমন্ত্রী এবং তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী।
মলডোভার প্রেসিডেন্ট পদেও রয়েছেন এক জন মহিলা। নাম মাইয়া সান্ডু। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট হন। তার আগে ২০১৯ সালের জুন থেকে নভেম্বর ছিলেন মলডোভার প্রধানমন্ত্রী।
সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন আনা বার্নাবিক। ২০১৭ সাল থেকে এই পদে ৪৬ বছরের আনা। এর আগে সার্বিয়ায় প্রধানমন্ত্রী পদে কোনও মহিলা বসেননি। সেদিক থেকে ইতিহাস গড়েছেন আনা। পাশাপাশি অন্য একটি ইতিহাসও গড়েছেন। সে দেশে তিনিই প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী।
২০১৯ সাল থেকে স্লোভাকিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন জুজানা কাপুটোভা। দেশের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট তিনি। ৪৫ বছর বয়সে নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড গড়েছেন এই আইনজীবী তথা পরিবেশকর্মী।
২০২১ সাল থেকে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছে মাগডালেনা অ্যান্ডারসন। অর্থনীতিবিদ মাগডালেনার বয়স ৫৫।