ছেলেবেলায় পুতুলের সঙ্গে ভাব জমাননি, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। হাল আমলে তো পুতুলের হাজারো রকমফের রয়েছে। পুতুল আর ছেলেবেলা— এই দুইয়ের সম্পর্ক তো চিরন্তন। কিন্তু ছোটবেলার খেলার সঙ্গীর সঙ্গেই কিনা সংসার যাপন! রক্তমাংসের মানুষ নয়। জীবনসঙ্গী হিসাবে র্যাগ ডল বা কাপড়ের পুতুলকেই বেছে নিয়েছেন ব্রাজ়িলের এই তরুণী।
মেইরিভোন রোচা মোরেসকে ঘিরে কৌতূহলের অন্ত নেই। পুতুলের সঙ্গে প্রেম আর তার পর ঘটা করে বিয়ে। শুধু কী তাই? পুতুলের সঙ্গে সঙ্গমে নাকি মা-ও হয়েছেন মোরেস!
ভাবছেন নিশ্চয়ই, এ আবার কী! পুতুলের সন্তানের মা? এ আবার হয় নাকি! এমন কাণ্ডই করে তো সাড়া ফেলে দিয়েছেন ৩৭ বছর বয়সি ওই তরুণী।
সম্প্রতি মোরেস জানিয়েছেন, তিনি আবার অন্তঃসত্ত্বা। দ্বিতীয় বার মা হওয়ার খবরে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত তিনি। নির্ঘাত ভাবছেন, কী আজগুবি গপ্প বলছি! তা হলে খোলসা করে বলা যাক, এই কাহিনি।
তখন মোরেস ‘সিঙ্গল’। জীবনে প্রেম আসেনি। মনের মানুষের খোঁজে ছিলেন তিনি। মাকে এক বার আক্ষেপ করে বলেছিলেন যে, তাঁর জীবনে কেউ নেই। নাচ করার সঙ্গী নেই।
মোরেসের এ কথা শুনে তাঁর মা কন্যার জন্য কাপড় দিয়ে একটি পুতুল তৈরি করেন। সেই পুতুলকে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যান মোরেস।
সেই কাপড়ের পুতুলকেই নিজের জীবনসঙ্গী করেন মোরেস। ওই পুতুলের নাম দেন মার্সেলো।
মার্সেলোর পরনে স্যুট-বুট। মাথায় কোঁকড়ানো চুল। দেখতে একেবারে সুপুরুষ। পুতুলরূপী সেই পুরুষের প্রেমেই মজে মোরেস।
গত বছর ঘটা করে পুতুলের সঙ্গে বিয়ে করেন মোরেস। পুতুলের সঙ্গে মানবীর সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে হাজির ছিলেন ২৫০ জন।
সাদা রঙের গাউনে কনের সাজে মোরেসকে বেশ মানিয়েছিল। কালো রঙের স্যুট পরে বিয়ে করেছিল সেই পুতুল।
এর পর থেকেই পুতুলের সঙ্গে সুখে সংসার করছেন মোরেস। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মতোই নিজেদের বৈবাহিক জীবন পুরোদমে উপভোগ করছেন তিনি।
মোরেস এবং তাঁর পুতুল বরের এক ‘পুত্রসন্তান’ রয়েছে। প্রথম যখন অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন মোরেস, সেই সময় তাঁর এই খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল।
এখনও নিশ্চয়ই ভাবছেন যে, পুতুলের সঙ্গে সঙ্গম! সেই কারণে অন্তঃসত্ত্বা তরুণী! কী সব আজগুবি কাণ্ড। আসলে মোরেস এবং তাঁর পুতুলসঙ্গীর ‘পুত্রসন্তান’ও আদতে একটি কাপড়ের পুতুল!
তাঁদের এই তিন জনের সংসারে এ বার আসছে আরও এক নতুন অতিথি। আবার নাকি ‘অন্তঃসত্ত্বা’ হয়েছেন মোরেস। এমনটাই দাবি করে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন ব্রাজিলের ওই তরুণী।
সমাজমাধ্যম ‘টিকটকে’ নিজের ‘প্রেগনেন্সি টেস্ট’-এর ফলও দেখিয়েছেন মোরেস। তাঁর এই কাণ্ডে হতবাক হয়ে গিয়েছেন সকলে।
মোরেস বলেছেন, ‘‘খুবই খুশি যে আমি আবার অন্তঃসত্ত্বা। এ বার মার্সেলো এবং আমার কন্যাসন্তান হবে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘মার্সেলো প্রায়ই বলত যে, আমাদের আবার কবে সন্তান হবে। আমি বলেছিলাম, এক দিন হবে।’’
এতেই শেষ নয়, পুতুলসঙ্গীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে নাকি চিড়ও ধরেছিল। তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় সন্তানের আগমনের খবরে আপাতত তাঁদের সম্পর্কের শৈত্য কেটেছে। এখন তাঁরা খুশি।
মোরেসের ‘অন্তঃসত্ত্বা’ হওয়ার খবরে সকলে হাঁ হয়ে গিয়েছেন। কেউ আবার তাঁকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন। কেউ আবার লিখেছেন, ‘‘পুতুলের সঙ্গে আমারও এ রকম একটা সম্পর্ক চাই।’’ কেউ আবার হেসে খুন হয়েছেন।
তবে যতই ঠাট্টা-ইয়ার্কি হোক না কেন, পুতুলের সঙ্গে সংসার করে বেজায় খুশি মোরেস। নিজের মতো করে সংসার গুছিয়েছেন তিনি।
আপাতত ‘নতুন অতিথি’র অপেক্ষায় মোরেস এবং মার্সেলো। তাঁদের সেই ‘সন্তান’কে দেখার জন্য মুখিয়ে অনেকেই। কেউ তো আবার গাইছেন, ‘‘কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়।’’