Crime Series

যৌনতা, খুন, নরমাংস ভক্ষণ! অপরাধ সিরিজ়েই কেন ঝোঁক বেশি দশর্কদের?

এমন শিউরে ওঠা সিরিজ়ের দর্শক-সংখ্যা মোটেও হেলাফেলা করার মতো নয়। এ ধরনের অপরাধমূলক সিরিজ়েই কেন ঝোঁকেন হাজারো দর্শক? এর পিছনে কোন মানসিকতা কাজ করে?

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২২ ০৭:১৩
Share:
০১ ১৮

অফিস-বাড়ির কাজ সামলে ফাঁক পেলেই গ্রোগাসে গিলতে থাকেন ক্রাইম থ্রিলার সিরিজ়? যাতে ছড়িয়ে থাকে সিরিয়াল কিলারের হাড় হিম করা কাণ্ডকারখানা, যৌনলিপ্সু খুনি বা নরমাংসভূকদের রক্তাক্ত কাহিনি?

ছবি: সংগৃহীত।

০২ ১৮

এমন শিউরে ওঠা সিরিজ়ের দর্শক-সংখ্যা মোটেও হেলাফেলা করার মতো নয়। এ ধরনের অপরাধমূলক সিরিজ়েই কেন ঝোঁকেন হাজারো দর্শক? এর পিছনে কোন মানসিকতা কাজ করে? এতে কি অজান্তেই মানসিক ক্ষতি হয়? কী ব্যাখ্যা দেন মনোবিশেষজ্ঞরা?

ছবি: সংগৃহীত।

Advertisement
০৩ ১৮

নেটফ্লিক্সের মতো বহু ওটিটি-তে আজকাল অপরাধমূলক সিরিজ়ের ছড়াছড়ি। যাতে ধারাবাবহিক খুন, যৌনতা বা রক্তাক্ত দৃশ্য ভরপুর। নেটফ্লিক্সের ‘ডাহমার – মনস্টার: দ্য জেফ্রি ডাহমার স্টোরি’-র কথাই ধরুন না! ২১ সেপ্টেম্বর প্রথম পর্ব থেকেই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে এ সিরিজ়। বিশ্ব জুড়ে এটি নাকি ৭০ কোটির বেশি ঘণ্টা দেখা হয়ে গিয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

০৪ ১৮

ক্রাইম সিরিজ়ের অনুরাগী এ দেশেও কম নেই। দিল্লির এক বহুজাতিক সংস্থার কর্মী সার্থক জৈন (নাম পরিবর্তিত) ওটিটি-তে ক্রাইম থ্রিলার পেলেই গোগ্রাসে গিলতে থাকেন। সম্প্রতি ‘ইন্ডিয়ান প্রিডেটর: দ্য ডায়েরি অফ আ সিরিয়াল কিলার’ নামের তথ্যচিত্রের সিরিজ়টি দেখে ফেলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘দারুণ টান টান সিরিজ়। এর নির্মাতারা ওই অপরাধীর বিচার করতে বসেননি। বরং সিরিয়াল কিলারের সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানিয়েছেন।’’

ছবি: সংগৃহীত।

০৫ ১৮

আজকাল ‘ডাহমার... ’-এ মজেছেন সার্থক। এ ধরনের সিরিজ়ই কেন টানে তাঁকে? সার্থকের ব্যাখ্যা, ‘‘সিরিয়াল কিলারের মনস্তত্ব বোঝার চেষ্টা করি। সেটাই আমাকে টানে। কেন অকল্পনীয় কাজ করেন এক জন সিরিয়াল কিলার? খুনির কি মনে হয় না যে, এক দিন সে ধরা পড়বেই।

ছবি: সংগৃহীত।

০৬ ১৮

সার্থকের মতে, এ ধরনের অপরাধমূলক থ্রিলার থেকে অনেক কিছু জানা যায়। তাঁর কথায়, ‘‘পুরোপুরি বিনোদনের টানে এ সব দেখি। সেই সঙ্গে একটা কৌতূহলও কাজ করে।’’

ছবি: সংগৃহীত।

০৭ ১৮

দর্শকদের এই মনস্তত্বকেই কি হাতিয়ার করে জাঁকিয়ে বসেছেন ‘ডাহমার... ’-এর মতো সিরিজ়গুলির নির্মাতারা? সার্থক অবশ্য অন্য কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘গোটা সিরিজ়ে একটা চাপা উত্তেজনা রয়েছে, সেটা বেশ পছন্দের। আর সত্য ঘটনা অবলম্বনে কোনও সিনেমা বা সিরিজ় তৈরি হলে এ ধরনের উত্তেজনা, ভয় বাড়তেই থাকে।’’

ছবি: সংগৃহীত।

০৮ ১৮

বাস্তবিকই জেফ্রি ডাহমারের কাহিনি বেশ ভয় ধরানো। সত্তরের দশকের শেষ ভাগ থেকে নব্বইয়ের দশকের গোড়া পর্যন্ত আমেরিকার ওহায়ো-সহ মিলওয়াকি স্টেটের উইসকনসিন শহরে একে একে ১৭টি খুন করেছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ।

ছবি: সংগৃহীত।

০৯ ১৮

ডাহমারের সব শিকারই নাকি ছিলেন অ-শ্বেতাঙ্গ ও বাদামি বর্ণের কিশোর এবং পুরুষ। ‘বশে’ আনতে তাঁদের সঙ্গে নাকি প্রথমে বন্ধুত্ব পাতাতেন তিনি। তার পর চলত রক্তকাণ্ড! তবে খুনের আগে শিকারের নাড়িভুঁড়ি, ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খেয়েই নাকি তাঁদের পালা সাঙ্গ করতেন ডাহমার। মৃতদের সঙ্গে যৌনসঙ্গমেও লিপ্ত হতেন বলে অভিযোগ। এর পর দেহগুলিকে অ্যাসিডের চুবিয়ে ফেলতেন।

ছবি: সংগৃহীত।

১০ ১৮

এ হেন ধারাবাহিক হাড়হিম করা খুনিকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন আমেরিকান অভিনেতা ইভান পিটার্স। এর আগে ‘আমেরিকান হরর স্টোরি’, ‘পোজ়’ বা ‘মেয়ার অফ ইস্টটাউন’-এর মতো সিরিজ়ে যিনি প্রশংসিত।

ছবি: সংগৃহীত।

১১ ১৮

এ বার ফিরে আসা যাক সেই পুরনো প্রশ্নে। কিসের টানে দর্শকেরা গ্রোগাসে গিলতে থাকেন এ ধরনের সিরিজ়? গুজরাতের দ্বারকার এইচসিএমসিটি মণিপাল হাসপাতালের পরামর্শদাতা তথা মনোবিশেষজ্ঞ রুচি শর্মা বলেন, ‘‘এ ধরনের সিরিজ় দেখার পিছনে বহু কারণ রয়েছে। তবে মূল কারণ বোধ হয়, কৌতূহল।’’

ছবি: সংগৃহীত।

১২ ১৮

নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন রুচি। তিনি বলেন, ‘‘সিরিয়াল কিলার বা সাইকোপ্যাথের মগজে কী চলছে, তা জানার কৌতূহলই দর্শকদের টেনে আনে। ধীরে ধীরে কাহিনির পরত খোলার সময় যে উত্তেজনা টের পান তাঁরা এবং শেষমেশ অপরাধী ধরা পড়লে যা শান্তি পান, সেগুলিও সিরিজ়ের প্রতি ঝোঁকের কারণ।’’

ছবি: সংগৃহীত।

১৩ ১৮

অপরাধমূলক সিরিজ়ের মাধ্যমে সামাজিক ও বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থাও ফুটে ওঠে দর্শকদের। সেই সঙ্গে এ ধরনের ভয়ঙ্কর কোনও ঘটনা যে তাঁর জীবনে ঘটছে না, তাতেও স্বস্তি পান তাঁরা। এগুলি যে অদ্ভুত ‘গল্প’, সে বিশ্বাসও জন্মে তাঁদের। এমন দাবি রুচির।

ছবি: সংগৃহীত।

১৪ ১৮

মুম্বইয়ের কোকিলাবেন অম্বানী হাসপাতালের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের পরামর্শদাতা অপর্ণা রামকৃষ্ণণ আবার অন্য কারণ তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে, ‘‘বেশির ভাগ মানুষের মধ্যেই রহস্য বা ধাঁধার প্রতি স্বাভাবিক কৌতূহল রয়েছে। তার সমাধান করার প্রতিও ঝোঁক থাকে। এ ধরনের সিরিজ় সেই কৌতূহলেরই নিরসন করে।’’

ছবি: সংগৃহীত।

১৫ ১৮

অপর্ণা আরও বলেন, ‘‘আমাদের মতো দেখতে কিছু লোকজন (সিরিয়াল কিলারেরা) কেন যে এমন (অপরাধ) করেন, এ ধরনের সিরিজ়ে তা দেখানো হয়। এ সব সিরিজ়ের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতি, রীতিনীতি, তার বিকৃতি এবং পরিণতিও দেখতে পাই। ভাল এবং মন্দের চিরকালীন দ্বন্দ্বের প্রতি যে অন্তর্নিহিত আকর্ষণ রয়েছে আমাদের, তা নিয়েও খেলা করেন এ সিরিজ়গুলির নির্মাতারা।’’

ছবি: সংগৃহীত।

১৬ ১৮

ক্রাইম সিরিজ়গুলির প্রতি আকর্ষণের কারণ আরও সহজ ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন অপর্ণা। তাঁর মতে, ‘‘প্রাপ্তবয়স্ক গল্পে যেমন সতর্কবার্তা দেওয়া থাকলেও সেগুলির প্রতি ঝোঁক বাড়তে থাকে, তেমনই এ সিরিজ়গুলি টানে দর্শকদের।’’

ছবি: সংগৃহীত।

১৭ ১৮

অপর্ণার মতে, ‘‘নিজের ছাদের তলায় নিশ্চিন্তে বসে এ সব সিরিজ়ের মাধ্যমে মনুষ্যত্বের অন্ধকার দিকগুলি দেখতে পাই আমরা। আমাদের অন্তর্জগৎ, ভয়, উদ্বেগের মুখোমুখি হই। আবার, বিপদে পড়লে নিজের পরিবারকে কী ভাবে বাঁচানো যাবে, তারও একটা আবছা ধারণা মেলে। তবে সব শেষে অপরাধী শাস্তি পেলে শান্তি পান দর্শকেরা।’’

ছবি: সংগৃহীত।

১৮ ১৮

যদিও রক্তপাত, খুন, ধর্ষণের মতো যৌন অপরাধের দৃশ্য দেখানো সিরিজ়গুলির দর্শকদের মানসিক সমস্যা হতে পারে বলে মনে করেন মনোবিশেষজ্ঞরা। রুচি বলেন, ‘‘এ ধরনের সিরিজ় দেখার পর যদি অস্বস্তি, বুক ধড়ফড় করা বা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে এগুলি দেখা বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’’

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement