স্বজনপোষণের কথা উঠলে বলিপাড়ায় সবার আগে নাম উঠে আসে ছবি নির্মাতা কর্ণ জোহরের। অধিকাংশ সময় বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে দেখা যায় তাঁকেই। বলি তারকাদের সন্তানদের ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক হয় কর্ণের হাত ধরেই। কর্ণের পাশাপাশি এই বিষয়ে ‘সুনাম’ রয়েছে বলিপাড়ার এক অভিনেতারও। তিনি দর্শকের প্রিয় ‘ভাইজান’ সলমন খান।
সলমনের দৌলতে বড় পর্দায় বহু নতুন মুখ দেখা গিয়েছে। ক্যাটরিনা কইফ, সোনাক্ষী সিনহার মতো বহু অভিনেত্রী সলমনের বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় কাজ করে কেরিয়ারের সিঁড়িতে চড়েছেন।
সম্প্রতি সলমনের হাত ধরে বড় পর্দায় কাজ শুরু করছেন ‘বিগ বস্’ রিয়্যালিটি শো খ্যাত শেহনাজ গিল। ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যাবে শেহনাজকে।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায় যে, প্রথম নায়িকা ভাগ্যশ্রীর পুত্র অভিমন্যু দাসানিকে অভিনয়ের সুযোগ দেবেন সলমন।
১৯৮৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেছিলেন সলমন। কিন্তু পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
এক বছর পর ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবিতে প্রথম মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল সলমনকে। তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন ভাগ্যশ্রী। সে ক্ষেত্রে সলমনের প্রথম নায়িকা হিসাবে ভাগ্যশ্রীর নামই আসে।
ভাগ্যশ্রীর পুত্র অভিমন্যু যখন অভিনয় জগতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বলিপাড়ায় কানাঘুষো শুরু হয়েছিল, তখনই সলমনের নামও জড়িয়ে গিয়েছিল।
বলিপাড়ার একাংশ অনুমান করেছিলেন যে, সলমনের হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক হবে অভিমন্যুর। এমনকি, সেই সময় ভাগ্যশ্রীও নাকি সলমনের ভূয়সী প্রশংসা করতে শুরু করেছিলেন।
কিন্তু সব জল্পনায় জল ঢেলে দেন ভাগ্যশ্রী নিজেই। তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানান যে, অভিমন্যু যে অভিনয় করবেন তা সত্যি। কিন্তু সলমন তাঁকে সাহায্য করছেন না। মিথ্যা রটনা বলে এই ঘটনাটিকে দাগিয়ে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
সলমনের সাহায্য ছাড়াই ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন অভিমন্যু। ২০১৮ সালে ভাসান বালা পরিচালিত ‘মর্দ কো দর্দ নেহি হোতা’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পদার্পণ করেন অভিমন্যু।
যেখানে সলমন বন্ধু বা পরিচিতদের পুত্র-কন্যাদের বলিউডে অভিষেকের ক্ষেত্রে পিছপা হন না, সেখানে ভাগ্যশ্রীর পুত্রের থেকে তিনি কেন মুখ ফিরিয়ে নিলেন তা নিয়ে বলিজগতে চর্চা শুরু হয়। সলমনের সঙ্গে ভাগ্যশ্রীর ঝামেলা হয়েছে বলেও অনেকে দাবি করেন।
নিজের কেরিয়ারের পাশাপাশি বলিপাড়ার বহু নতুন মুখ এনেছেন সলমন। ‘এক থা টাইগার’ ছবির সহ-পরিচালক হিসাবে সলমনের সঙ্গে কাজ করেছিলেন সুরজ পাঞ্চোলি। আবার সলমনের হাত ধরেই অভিনয়ে নেমেছিলেন তিনি।
২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হিরো’ ছবিতে সুরজকে অভিনেতা হিসাবে দেখা যায়। এই ছবির প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন সলমন নিজেই।
২০১৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে ‘নোটবুক’ নামে একটি রোম্যান্টিক হিন্দি ছবি মুক্তি পায়। এই ছবির মুখ্যচরিত্রে দেখা যায় নতুন মুখ। নায়কের ভূমিকায় ছিলেন জাহির ইকবাল।
জাহির সম্পর্কে সলমনের বন্ধুর পুত্র। তাই বলিজগতে জাহিরের অভিষেকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সলমন। ‘নোটবুক’ ছবিও প্রযোজনা করেছিলেন অভিনেতা নিজেই।
২৬ বছর ধরে সলমনের নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করছেন গুরমীত সিংহ জলি ওরফে শেরা। শেরার পুত্র আবিরকে হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছেন সলমন।
আবিরের বিপরীতে যে অভিনেত্রী কাজ করবেন তাঁকেও পছন্দ করবেন খোদ সলমন।
এমনকি, সলমনের বোন অলভিরা খান অগ্নিহোত্রীর কন্যা আলিজে বড় পর্দায় তাঁর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। সলমনই সেই দায়িত্বভার নিয়েছেন।
নেটফ্লিক্সে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জামতারা’ ওয়েব সিরিজ়ের পরিচালক সৌমেন্দ্র পাধির সঙ্গে বড় পর্দায় কাজ করতে চলেছেন আলিজে।
এত নতুন মুখ অভিষেকের মাঝে সলমন কেন ভাগ্যশ্রীর পুত্রের কেরিয়ার তৈরির দিকে নজর দিলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। যদিও ভাগ্যশ্রীর মতে, সলমন নাকি অভিমন্যুর কেরিয়ার তৈরির কোনও দায়িত্বভারই নেননি। তবে, যা রটে তার কিছু তো ঘটে। আসল ঘটনা জানেন কেবল এক জনই।