অক্ষয় কুমার এবং রানি মুখোপাধ্যায়— বলিপাড়ার এই দুই তারকা প্রায় তিন দশক সময় কাটিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু এত বছর একই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেও একসঙ্গে কোনও ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি অক্ষয় এবং রানিকে। সুযোগের অভাব নয়, এর নেপথ্যে রয়েছে দুই তারকার ঠান্ডা লড়াই।
নব্বইয়ের দশকের গোড়াতেই বলিপাড়ায় পদার্পণ করেছিলেন অক্ষয়। অন্য দিকে বাংলা ছবির মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেছিলেন রানি।
রানি যখন হিন্দি ছবিতে কাজ করা শুরু করলেন, তখন তাঁর কাছে ‘খিলাড়িয়ো কা খিলাড়ি’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব আসে। রানি প্রথমে এই ছবিতে কাজ করার জন্য রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে অভিনেতার নাম শুনে তিনি পিছিয়ে যান।
‘খিলাড়িয়ো কা খিলাড়ি’ ছবির অভিনেতা ছিলেন অক্ষয় কুমার। অক্ষয়ের বিপরীতে অভিনয় করতে হবে শুনে নাকি রানি ছবি নির্মাতাদের প্রস্তাব খারিজ করে দেন।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, অক্ষয় তখন বলিপাড়ায় নবাগত ছিলেন বলেই নাকি রানি ‘খিলাড়িয়ো কা খিলাড়ি’ ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। রানির বদলে রবিনা টন্ডনকে ওই চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
‘খিলাড়িয়ো কা খিলাড়ি’ ছবির প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ার তিন বছর পর মুক্তি পায় তনুজা চন্দ্র পরিচালিত ‘সংঘর্ষ’ ছবিটি। এই ছবিতে নায়িকার চরিত্রের জন্য ছবি নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ ছিল রানিকে।
কিন্তু রানি যখন জানতে পারেন যে, তাঁকে অক্ষয়ের বিপরীতে অভিনয় করতে হবে তিনি আবার ছবির প্রস্তাব খারিজ করে দেন। রানির পরে প্রীতি জ়িন্টাকে সেই ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রীতি এই ছবিতে কাজ করতে রাজিও হন।
‘সংঘর্ষ’ ছবি মুক্তির পরেও আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। তিন বছর কেটে যাওয়ার পর ‘আওয়ারা পাগল দিওয়ানা’ ছবি মুক্তি পায়। এই ছবির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বিক্রম ভট্ট। অক্ষয় এই ছবিতে অভিনয় করেন।
অক্ষয় পরে জানতে পারেন যে, নায়িকার চরিত্রে বিক্রম প্রথমে রানিকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু রানি নাকি তাঁর প্রস্তাব খারিজ করে দেন। অক্ষয়ের বুঝতে আর দেরি হয়নি। তিনি বুঝে যান যে, তাঁর কারণেই রানি এই ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
তিন বার একই ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর অক্ষয় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে, তিনিও রানির সঙ্গে কোনও ছবিতে অভিনয় করবেন না। সেই সুযোগ পেয়েও যান অভিনেতা।
রানি যখন তাঁর কেরিয়ারের মধ্যগগনে, তখন পর পর তাঁর তিনটি ছবি ফ্লপ করেছিল। ‘লাগা চুনারি মে দাগ’, ‘থোড়া প্যার থোড়া ম্যাজিক’ এর মতো কয়েকটি ছবি তারকাখচিত হলেও বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।
রানির স্বামী আদিত্য চোপড়া তখন স্ত্রীর কেরিয়ার আবার আগের ছন্দে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। আদিত্য তখন নিজেই একটি ছবি তৈরির পরিকল্পনা করেন।
কিন্তু ছবির নায়ক হিসাবে অক্ষয়কে পছন্দ করেছিলেন আদিত্য। নায়কের কাছে ছবির স্ক্রিপ্ট নিয়েও যান তিনি। এ বার অক্ষয়ের কাছে সুযোগ আসে।
অক্ষয় যখন জানতে পারেন যে, ছবির নায়িকা হিসাবে আদিত্য তাঁর স্ত্রী রানিকে বেছে নিয়েছেন, সেই মুহূর্তে আদিত্যকে মুখের উপর মানা করে দেন অভিনেতা।
কেরিয়ারের শুরুতে দুই তারকার মধ্যে যে অদৃশ্য লড়াই চালু হয়েছিল, সেই লড়াইয়ে আর দাঁড়ি টানেননি অক্ষয় এবং রানির মধ্যে কেউই। প্রায় তিন দশক হিন্দি ফিল্মজগতে কাজ করেও কোনও ছবিতে অক্ষয় এবং রানিকে একসঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায়নি।