আশির দশকে পরিচালক হিসাবে সুভাষ ঘাই এবং অভিনেতা হিসাবে অমিতাভ বচ্চন দু’জনেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছিলেন। কিন্তু চার দশকের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও কখনও একসঙ্গে কাজ করতে দেখা যায়নি অমিতাভ এবং সুভাষকে। এর নেপথ্যে নাকি রয়েছে দুই তারকার অহঙ্কারের লড়াই।
অমিতাভের সঙ্গে সুভাষের বন্ধুত্ব রয়েছে ঠিকই, কিন্তু পেশাগত জীবনে কখনও সুভাষ পরিচালিত ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি অমিতাভকে। বলিপাড়া সূত্রে খবর, সুভাষের পরিচালনায় একটি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েও নাকি করতে চাননি ‘বিগ বি’।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ১৯৮৭ সালে একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সুভাষ জানিয়েছিলেন যে ‘দেবা’ নামের একটি ছবির পরিচালনা করছেন তিনি। এই ছবির নায়ক হিসাবে অমিতাভকে পছন্দ করেছেন, সেই কথাও প্রকাশ্যে জানান তিনি।
‘দেবা’ ছবিতে অমিতাভের পাশাপাশি অভিনয় করার কথা ছিল বলি অভিনেত্রী মীনাক্ষী শেষাদ্রির। বলিপাড়া সূত্রে খবর, এই ছবিতে ডাকাতের চরিত্রে অভিনয় করতে হত অমিতাভকে।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ডাকাতের চরিত্রে অভিনয় করবেন বলে আগে থেকে ফোটোশুটও করে রেখেছিলেন অমিতাভ। ছবির শুটিংও শুরু করে দেন সুভাষ।
সুভাষের পরিচালনায় ‘দেবা’ ছবির শুটিং শুরু হওয়ার পর অমিতাভের চোখে সেই ছবির চিত্রনাট্যে কিছু সমস্যা নজরে পড়ে। তা নিয়ে সুভাষের সঙ্গে আলোচনা করতে চান অভিনেতা।
অমিতাভ তাঁর সহকারী মারফত সুভাষকে খবর পাঠিয়েছিলেন যে, তিনি পরিচালকের সঙ্গে দেখা করতে চান। কিন্তু সুভাষ নাকি তাতে রাজি হননি।
সুভাষ নাকি জানিয়েছিলেন, অমিতাভ যদি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান তা হলে তিনি নিজে এসে দেখা করছেন না কেন? কেন সহকারীর মাধ্যমে কথা বলছেন? এই কথা অমিতাভের কানে পৌঁছতেই তিনি রেগে যান।
বলিপাড়ায় গুজব শোনা যায়, ‘দেবা’ ছবির শুটিং সেটে পৌঁছনোর পর সুভাষের জবাব শুনে কাউকে কিছু না বলে সেট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অমিতাভ।
অমিতাভ হঠাৎ সেট ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও সুভাষ কোনও উচ্চবাচ্য করেননি। কানাঘুষো শোনা যায় যে, অমিতাভ এবং সুভাষ কেউই একে অপরের সঙ্গে সে দিন যোগাযোগ করেননি।
শুটিংয়ের পরের দিন সুভাষ যথারীতি অমিতাভের জন্য সেটে অপেক্ষা করছিলেন। বলিপাড়ায় গুঞ্জন শোনা যায়, অমিতাভ নাকি সে দিন সেটে যাননি।
পর পর সাত দিন সেটে অমিতাভের জন্য অপেক্ষা করার পর আশা ছেড়ে দেন সুভাষ। কানাঘুষো শোনা যায়, পরে একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সুভাষ জানিয়েছিলেন যে, তিনি ‘দেবা’ ছবির কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন।
তার পর অমিতাভ এবং সুভাষের মধ্যে ব্যক্তিগত স্তরে বন্ধুত্ব গড়ে উঠলেও পেশাগত জীবনে কখনও একে অপরের সঙ্গে হাত মেলাননি পরিচালক এবং অভিনেতা।
অমিতাভের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এক পুরনো সাক্ষাৎকারে সুভাষ বলেছিলেন, ‘‘অমিতাভ উঁচু মানের অভিনেতা। খারাপ দৃশ্যকেও অভিনয়ের মাধ্যমে ভাল করে তোলেন তিনি। আমার দুর্ভাগ্য যে ওঁর সঙ্গে কাজ করতে পারলাম না।’’
বলিপাড়ার জল্পনা, সুভাষ তাঁর পরিচালনায় একটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য আবার প্রস্তাব দিয়েছিলেন অমিতাভকে। কিন্তু হাতে অন্য ছবি থাকায় সুভাষের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ‘বিগ বি’।