কর্ণ জোহরের সঞ্চালনায় ‘কফি উইথ কর্ণ’ রিয়্যালিটি শোয়ের ‘কাউচ’ থেকেই নাকি বলিউডের অধিকাংশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বহু সুন্দর মুহূর্তেরও সাক্ষী থাকে সেই ‘কাউচ’। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমের পাতায় ঘোরাফেরা করছে একটি ভিডিয়োর ঝলক, যা দুই বলি তারকার পুরনো প্রেমের স্মৃতি উস্কে দেওয়ার পাশাপাশি উস্কে দিয়েছে পুরনো বিতর্কও।
করিনা কপূর খান এবং শাহিদ কপূরের সম্পর্ক নিয়ে বলিপাড়ায় কম আলোচনা হয়নি। দুই তারকার সম্পর্ক বহুচর্চিত হলেও তা টেকেনি। ২০১২ সালে বলি অভিনেতা সইফ আলি খানের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন করিনা। করিনার বিয়ের তিন বছর পর ২০১৫ সালে মীরা রাজপুতের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন শাহিদ। তবে সম্পর্কে থাকাকালীন শাহিদ-করিনার পুরনো ভিডিয়ো নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।
করিনা এবং শাহিদ সম্পর্কে থাকাকালীন কর্ণ সঞ্চালিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে গিয়েছিলেন। প্রশ্নোত্তর পর্বে শাহিদের পরীক্ষা নিচ্ছিলেন কর্ণ। করিনাকে ঠিক কতটা ভাল করে চেনেন শাহিদ, তা-ই পরখ করে দেখছিলেন কর্ণ।
করিনা প্রসঙ্গে শাহিদকে পর পর কয়েকটি প্রশ্ন করেছিলেন কর্ণ। শাহিদ উত্তরে যা যা বলেছিলেন, পরে করিনাকে একই প্রশ্ন করা হলে করিনাও একই উত্তর দেন কর্ণকে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় এই মিষ্টি মুহূর্তটি ধরা পড়ে। কিন্তু তার পাশাপাশি মাথাচাড়া দেয় পুরনো বিতর্কও।
শাহিদকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বলিউডে এমন কোন অভিনেতা রয়েছেন যাঁর সঙ্গে করিনা কোনও দিন অভিনয় করবেন না। এই প্রশ্নের উত্তরে শাহিদ নিয়েছিলেন বলি অভিনেতা জন আব্রাহমের নাম। করিনাকে পরে একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করায় তিনিও জনের নাম উল্লেখ করেছিলেন।
করিনা জানিয়েছিলেন, জন নাকি ভাবলেশহীন। তাই তাঁর সঙ্গে কাজ করতে চান না অভিনেত্রী। কর্ণের শোয়ের অন্য একটি পর্বে অতিথির আসনে দেখা গিয়েছিল জন এবং তাঁর তৎকালীন প্রেমিকা বিপাশা বসুকে। করিনার বক্তব্য তখন ভিডিয়ো ক্লিপের মাধ্যমে জন এবং বিপাশাকে দেখিয়েছিলেন কর্ণ।
করিনার উত্তর শুনে জন তেমন কোনও উচ্চবাচ্য না করলেও জনের পাশে বসে থাকা বিপাশা বলেছিলেন, ‘‘আর করিনা এমন এক ব্যক্তি যাঁর ভঙ্গিমার অভাব নেই।’’ করিনার উদ্দেশে কটাক্ষের সুর ভেসে উঠেছিল বিপাশার কথায়।
কর্ণের শোয়ে একটি পর্বে রানি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে অতিথি হিসাবে হাজির হয়েছিলেন করিনা। সেই পর্বেও একটি পুরনো ভিডিয়ো ক্লিপ চালিয়েছিলেন কর্ণ। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল জনের সঙ্গে কর্ণের কথোপকথন।
কর্ণের শোয়ে জন যখন অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন তখন তাঁকে বলিউডের অভিনেত্রীদের নিজের পছন্দ মতো নম্বর দিতে বলেছিলেন কর্ণ। জন তখন বলেছিলেন, ‘‘আমি রানির অনুরাগী।’’ এই কথোপকথনের অংশটুকু করিনা এবং রানিকে দেখিয়েছিলেন কর্ণ। এই ভিডিয়ো দেখে মন্তব্য করতে পিছপা হননি করিনা।
করিনা বলেছিলেন, ‘‘জন ওঁর প্রেমিকাকে নিয়ে খুব সচেতন থাকেন। অন্তত আমার তাই মনে হয়। ওঁর প্রেমিকা বাঙালি। রানিও বাঙালি। তাই রানির নামই উল্লেখ করেছেন জন।’’
করিনার মন্তব্য শুনে রানি বলেছিলেন, ‘‘আমার মনে হয় না জন কোনও রকম পক্ষপাত করেছেন।’’ যদিও রানির কথা শোনার পরেও নিজের মন্তব্যে অনড় ছিলেন করিনা।
করিনাকে জনের সঙ্গে কখনও একই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি। বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, বিপাশার কারণেই নাকি জনের সঙ্গে কাজ করতে চাননি করিনা।
বলিপাড়ার জনশ্রুতি, বিপাশার সঙ্গে করিনার তিক্ত সম্পর্ক রয়েছে। ২০০১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় অ্যাকশন থ্রিলার ঘরানার ছবি ‘অজনবি’। এই ছবিতে অক্ষয় কুমার এবং ববি দেওলের সঙ্গে অভিনয় করেন করিনা এবং বিপাশা। বলিউডে কান পাতলে শোনা যায়, এই ছবির সেটেই নাকি দুই অভিনেত্রীর মধ্যে অশান্তি হয়।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, করিনা এবং বিপাশার মধ্যে অধিকাংশ সময়েই মতের অমিল হতে দেখা যেত ‘অজনবি’ ছবির শুটিং সেটে। এই কারণে শুটিংয়ের সময় নাকি অনেক সমস্যাও হয়েছিল।
কানাঘুষো শোনা যায়, ‘অজনবি’ ছবির শুটিং চলাকালীন বিপাশাকে ‘কালো বিড়াল’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন করিনা। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, বিপাশাকে নাকি চড়ও মেরেছিলেন করিনা।
বলিপাড়ার অধিকাংশের দাবি, ২০০৮ সালে সইফের জন্মদিনে নাকি বিপাশাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন করিনা। দুই অভিনেত্রীর মধ্যে নাকি পুরনো অশান্তি মিটেও যায়। তবুও জনের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায়নি করিনাকে।