বলিপাড়ার কোনও পার্টিতে টিনসেল নগরীর বহু নক্ষত্রের দেখা মিললেও আমির খানের দেখা পাওয়া যেন ভাগ্যের ব্যাপার। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও আমির সেখানে যেতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না। এর নেপথ্যে নাকি রয়েছেন বলিপাড়ার এক অভিনেতা।
অভিনয়জগতে পা রাখার পর আমিরকে অবশ্য পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রায়ই দেখা যেত। এমনকি, নব্বইয়ের দশকে একাধিক বার যখন তাঁকে সেরা অভিনেতার তালিকায় মনোনিত করা হয়, তখন অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকতেন।
১৯৯২ সালে ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতাদের প্রাথমিক তালিকায় নাম ছিল আমিরের।
কিন্তু আমিরের পরিবর্তে পুরস্কার পান অনিল কপূর। ‘বেটা’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতা হিসাবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন অনিল।
১৯৯২ সালের পর আবার পরের বছর সেরা অভিনেতাদের মনোনয়নের তালিকায় এসেছিলেন আমির। ১৯৯৩ সালে ‘হম হ্যায় রাহি প্যার কে’ ছবির জন্য আমিরকে মনোনয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু ওই বছরেও আমিরের ভাগ্যে পুরস্কার জোটেনি।
‘বাজিগর’ ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন শাহরুখ খান। ১৯৯৩ সালে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সেরা অভিনেতার শিরোপা জোটে শাহরুখের ঝুলিতে।
পর পর দু’বার পুরস্কার না জেতার পরেও অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন আমির। ১৯৯৫ সালে আবার সেরা অভিনেতাদের প্রাথমিক তালিকায় নাম আসে আমিরের।
আমির নিশ্চিত ছিলেন যে অনিল এবং শাহরুখের পর ১৯৯৫ সালে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পাবেন তিনিই। কারণ ‘রঙ্গীলা’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতা হিসাবে মনোনীত হয়েছিলেন আমির।
‘রঙ্গীলা’ ছবির জন্য দর্শকের কাছে ভালবাসার পাশাপাশি বলিপাড়ার বিশেষ়জ্ঞদের কাছেও প্রশংসা পান আমির। কিন্তু সে বছরেও সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান শাহরুখ।
১৯৯৫ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় আদিত্য চোপড়া পরিচালিত ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’ ছবিটি। এই রোম্যান্টিক ঘরানার ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন শাহরুখ।
শাহরুখের সেই ছবি বক্স অফিসে ব্লকবাস্টার হয়। এমনকি আজও মুম্বইয়ের মরাঠা মন্দির হলে ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’ দেখার জন্য ভিড় জমান দর্শক।
আমিরের ‘রঙ্গীলা’র সঙ্গে তখন মুখোমুখি শাহরুখের ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’। দুই অভিনেতার ‘ডুয়েলে’ জয়ী হন শাহরুখ। সেরা অভিনেতা হিসাবে পুরস্কৃত হন তিনি।
তার পরের বছর থেকে আমিরকে আর কোনও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। বলিপাড়ার একাংশের অনুমান এর নেপথ্যে রয়েছেন শাহরুখ।
পর পর দু’বার সেরা অভিনেতার সম্মান শাহরুখকে দেওয়ায় আমির নাকি জুরি সদস্যদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে যান। অন্দরমহলে কানাঘুষো শোনা যায়, আমির নাকি মনে করেছিলেন শাহরুখের প্রতি জুরির সদস্যেরা পক্ষপাতিত্ব করছেন।
একাধিক বার মনোনীত হওয়ার পরেও আমিরের পরিবর্তে শাহরুখ পুরস্কৃত হয়েছেন। সেই কারণেই নাকি কোনও বলিপাড়ার কোনও অনুষ্ঠানে দেখা মেলে না আমিরের। তবে এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি অভিনেতা।